সোমবার, ১ আগস্ট, ২০১৬

হলে সিট পাওয়ার কাহিনী

১৯৭৬ সালের প্রথম দিকের কথা।তখনো সেকেন্ড ইয়ারে উঠি নাই। মিরপুরে বোনের বাসা থেকে ক্লাস করতাম। বন্ধুবর মোশারফকে একদিন বললাম, আমার হলে একটি সিট দরকার।। মোশারফ ছাত্র ইউনিয়ন করতো এবং সূর্যসেন হলে থাকতো। মোশারফ আমাকে জসীম উদ্দীন হলে সাজ্জাদের কাছে পাঠিয়ে দেয়।সাজ্জাদও আমাদের বন্ধু। বাংলা বিভাগ পরিবর্তন করে আইন বিভাগে চলে গিয়েছিলো।বাড়ী নোয়াখালীর হাতিয়ায়। খুবই বন্ধু বৎসল ছেলে। সাজ্জাদও ছাত্র ইউনিয়ন করতো। আমি সাজ্জাদকে বললাম,মোশারফ পাঠিয়েছে, হলে আমার সিট দরকার। সাজ্জাদ বললো, সিট পাবি কিন্তু তোকে ছাত্র ইউনিয়ন করতে হবে।আমার চোদ্দ গোস্ঠী করে আওয়ামী লীগ আর আমাকে কিনা হতে হবে কমিউনিস্ট। তারপরেও প্রস্তাবে রাজি হলাম।কারণ হলে আমার সিট দরকার। তখন সকাল এগারোটা বাজে।সাজ্জাদ বিছানায় শুয়ে শুয়েই কথা বলছিলো।ও তখনো নাস্তা করে নাই। পকেট হতে দুই টাকা বের করে দিয়ে ও আমাকে ফরমাস করলো, দুটো কলা আর একটি পাউরুটি কিনে এনে দিতে।আমি তালুকদার বংশের ছেলে। ওর এই ফরমাস শুনে খুবই সম্ভ্রমে লাগলো।কি আর করবো,আমার যে হলে সিট দরকার। সাজ্জাদের কাছ থেকে দুই টাকা নিয়ে কলা আর পাউরুটি কিনতে যাই।সূর্য সেন হলের কাফেটেরিয়ার পাশে একটি টং দোকান ছিলো। দোকানদারকে বললাম, মামু,আমাকে দুটো পচা কলা আর একটা বাসি পাউরুটি দাও। দোকানদার তাই করলো। সাজ্জাদকে কলা আর পাউরুটি এনে দিলাম।সাজ্জাদ হেসে বললো,এগুলো কি এনেছিস রে? বললাম, দোকানে এইগুলিই ছিল। সাজ্জাদ এতোই ভালো ছেলে ছিলো যে, আমাকে  ঠিকই হলে সিটের ব্যাবস্থা করে দিয়েছিলো।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন