বুধবার, ৩০ নভেম্বর, ২০১৬

যে অপেক্ষায় আছে

বসন্তের যামিনী তোমার আমার
 প্রেম দোলায় দুলবে আমাদের প্রাণ
 আনন্দলোকের গাওয়া  কোনো গান নয়
 আনন্দ বীর্য ঘুরবে সেখানে নিরন্তর
 আমাদের দায় আছে প্রজন্মের কাছে,
যে অপেক্ষা করছে- ও পাশের দরজায়
যে আসতে চায়- আনন্দ ধারায়।


ঘরেও আছি,বাগানেও আছি

এখন শিশিরের সকাল, রোদ্র শুরু হয়েছে আরো সকালে
তুমি ঘুমহীন থাকো, বিছানায় এলোমেলো রাতের পোষাক
সকালের ঘুম শুরু মধ্যরাতে, চা্ঁদ ছিলো না কাল যামিনীতে
তোমার গ্রীবা নতো হয় নাই, আমার চু্ম্বনের সময়ে
তুমি যদি সকালের ঘুম ভেঙ্গে যেতে চাও,যাবে-
মিটিয়ে আমার সকল চাহিদা যতো, যদি থাকতে চাও,থাকবে-
 দুপুরের রোদ্রে হেটে বেড়াও গোলাপের বাগানে
যদি প্রজাপতি এসে পড়ে তোমার গালে
তাকে তুমি চুম্বনে ফেরাও ঠো্ঁটে
আমি তোমার ঘরেও আছি,বাগানেও আছি
যেখানে মধুকর ্প্রজাপতি ঘুরে বেড়ায়,আমি সেখানেও আছি
আমি তোমার থেকেই অমৃত সুধা করবো পান।


আমাদের প্রেম

অনেকদিন আমরা একে অপরে আলিঙ্গন করিনি
আমাদের বুক হয়ে গেছে তাই মরুভূমির ধূধূ মাঠ
অনেকদিন আমরা একে অপরে চুম্বন আ্ঁকিনি
আমাদের ঠো্ঁট হয়ে গেছে তাই শুস্ক নদীর ঘাট
অনেকদিন আমরা একে অপরে মিলিত হইনি
আমাদের অস্থি হাড় হয়ে গেছে তাই চৌচির বালুচর                                                                                             আমাদের একে অপরে মাঝে কোনো প্রেম নেই
আমরা  ম্লান হয়ে গেছি তাই শূণ্যতার গহীন ভিতর
 অরণ্য ছেড়ে আমরা চলে গিয়েছি দূরের পথ ছাড়িয়ে
আমাদের পায়ের ছাপগুলি পথের ধূলিতে গেছে হারিয়ে।

জীবনের পরিসংখ্যান

কোনো কিুই আজ আর মেলাতে পারি না।জীবনের কতোগুলো সময় আলস্যে কর্মহীন ভাবে পার করেছিলাম। কতোগুলো দিন ছিলো নির্মল আনন্দের।কতোগুলো দিন ছিলো দুঃখ আর বেদনার।কার কাছ থেকে কতোটুকু অনাদর পেয়েছিলাম, কে কতো ভালোবাসা দিয়েছিলো । জীবনের এই প্রান্তবেলায় অনেক কিছুই মিলছে না। তারচেয়ে বরং হিসাবের এই পাতাটি বন্ধ করে রাখি।

নক্ষত্রের রাত

নক্ষত্রের রাত বলি আর তারার রাতই বলি
পূর্নিমার রাত বলি কিংবা অমানিশার রাতই বলি
তোমাকে পাওয়ার জন্য সব রাতই মধুর।
নক্ষত্র ঝরে পড়ে আকাশ থেকে,
পূর্ণিমার জ্যোৎস্নায় স্নাত হয় পৃথিবীর জমিন
তুমি তখন শুয়ে থাকো ঘাসে
রাতের কালো ঝালর জড়িয়ে থাকে তোমার শরীরে
কালো পর্দার নিচে থাকে তোমার বু্ঁনো রূপ
যে রূপ দেখে নক্ষত্রের আকাশ
যে রূপ দেখে বিমুগ্ধ হয় লতা গুল্ম ঘাস
আমাকেও তুমি কেড়ে নাও তখন
আমাকেও তখন মগ্ন থাকতে হয় নক্ষত্রের জলে
তখন পতন হতে থাকে সৌরজগতের সকল গ্রহ তারা
সব গ্রহ তারারা হারায় তখন তার আপন কক্ষপথ
আমরা তখন আত্মহত্যায় মেতে উঠি জমিনের উপর।




মঙ্গলবার, ২৯ নভেম্বর, ২০১৬

হৈমন্তিক শুভেচ্ছা

এই হেমন্তে এবার আর গ্রামে যাওয়া হলো না।দেখা হলো না সেই ছোট নদীটির তীরে ভোরের শিশির ভেজা ধানক্ষেত।এই শহরের ইট পাথরের মাঝেই চলছে জীবন। চলতে চলতেই কতো হেমন্ত চলে গেল।সময় বহিয়া যায়,আমাদের বার্ধক্যের বলিরেখাগুলি উজ্জ্বল হতে থাকে।প্রাণশক্তিও কালের স্রোতে হারিয়ে যায়।সবাইকে হৈমন্তিক শুভেচ্ছা।

হেমন্তের জনারণ্যে

অনেকটা হঠাৎ করেই দেখা হয়ে গেলো আজ দু'জনের
শহরের পিচ পথে লাইট পোস্টের নীচে যেখানে অন্য কেউ ছিলো না
আলো আধারের নিমগ্নতায় তোমাকে দেখলাম
শুস্ক খুসকো খুসকো ঠো্ঁট যেখানে চুম্বনের দাগ পড়েনি অনেককাল
দেখলাম বুকের ্আঁচল ম্রিয়মান, যেখানে কোনো সুগন্ধি ছিলো না
মনে হলো কতোকাল এই বুকে কারো একটি আলিঙ্গন পড়েনি।

আজ আর তোমার হাতখানি ধরা হলো না
 মেহেদিহীন কোমল নোখগুলো হয়ে গেছে পর
হাটছিলাম এলোমেলো দু'জন এভাবে হাটে না কোনো ্প্রেমিক প্রেমিকা
তোমার সেই কাজল আ্ঁকা চোখ দু'টো দেখছিলাম বার বার
কাজল নেই সেখানে কালচে পড়েছে জল পড়া  নুরীর মতো
যেখানে কোনো দুঃখ ছু্ঁইতে দেইনি কোনো সময়ে কোনো অনাদরে
সেই তোমাকে দেখছি আজ হয়ে গেছো দীনহীনা অভাগীর মতো।

পথচারীরা আজ কোনো দুঃখ দেখলো না তোমার
এরাই সাক্ষী ছিলো একসময় কতো ভালোবাসার স্পর্শের
কতো চুম্বন দেখেছে পার্কের পাখী,কতো আলিঙ্গন দেখেছে বনের কাকাতূয়া
আজ এই হেমন্ত সন্ধ্যায় সে সবই দুঃখ জাগানিয়া নস্টালজিক
কোনো কথা না বলে কোনো চুম্বন আর আলিঙ্গন না রেখেই
 বিষাদময় এই সন্ধ্যায় জনারণ্যে তুমি হারিয়ে গেলে।

সোমবার, ২৮ নভেম্বর, ২০১৬

তুমি আছো

আমি যখন কবিতা লিখি সে কবিতার শব্দ উপমা হয়ে তুমি আসো
আমি যখন গান লিখি সে গানের ছন্দ ও সুর হয়ে তুমি চলে আসো
আমি যখন গল্প লিখি সে গল্পের অতৃপ্ত চাওয়া পাওয়া হয়ে তুমি ধরা দাও
আমি যখন উপন্যাস লিখি সে উপন্যাসের দুঃখ বেদনাগুলি তুমি হয়ে যাও
আমি যখন আমার জীবনী লিখি সেই জীবনীর সবটাই জুড়ে তুমি থাকো
তুমি কখনো শ্বাস কখনো প্রশ্বাস কখনো দীর্ঘশ্বাস হয়ে ঝরে পড়তে থাকো
তুমি আছো ভোরের পাখীর গানে তপ্ত দুপুরে আর নীশিথ অন্ধকারে
তুমি আছো সকল কর্মে সকল নির্ঘুম স্বপ্নে আর আমার ক্লান্ত অবসরে।


প্রেমিক তুমি

আমার মাথায় জিপসীদের মতো বড়ো বড়ো চুল
পিছন থেকে দেখে মনে হয় আমি একজন তরুণী
পরনে ছে্ঁড়া তালি দেওয়া জিন্স প্যান্ট
হাতে পিতলের ব্রেসলেট,কাউবয়ের মতো মুখে দাড়ি
ঠো্ঁটে জ্বলে থাকে জ্বলন্ত সিগারেট সর্বক্ষণ
তুমি বললে-আমি এমন ছেলেকেই প্রেমিক করি।

মাঝে মাঝে ইয়াবা খাই,গা্ঁজাও টানি
খাওয়া নাওয়া নেই ঠিকমতো,মলিন কাপড় পড়ে থাকি
দুপুরের রোদ্র্রে পিচ ঢালা পথে হাটি একা একা
পায়ে চপ্লল কানে জ্যাক লাগিয়ে গান শুনি
তুমি বললে- এই ধরণের ছেলেই আমি লাইক করি।

নিজের ঘর নেই ঘর বাধা্ঁর স্বপ্নও নেই
সংসার বৈরাগ্যেই আমি সুখ খু্ঁজে বেড়াই
তারপরও পার্কের ব্রেঞ্চে বসে একদিন চৌচির দুুপুরে
তোমার এলোমলো চুলের সুগন্ধি নিয়ে বললাম
তুমি আমার বউ হবে ? তুমি বললে-ে না,
এমন ঊড়নচন্ডিদের আমি বিয়ে করি না।'

শান্তি ও সৌম্যের পথে ফিরে আসে

ধর্মীয় জঙ্গি এবং নাস্তিক এই দুটো গোস্ঠীর কারণে পৃথিবী আজ এতো অশাান্ত হয়ে উঠেছে। আমি এদের নিপাতও চাইনা, ধ্বংসও চাইনা। আমি এদের জন্য মঙ্গল প্রার্থণা করি,এরা যেনো শান্তি ও সৌম্যের পথে ফিরে আসে।

রবিবার, ২৭ নভেম্বর, ২০১৬

ঘুম

মানুষ যখন ঘুমিয়ে থাকে সে তখন বুুঝতে পারে সে একটি জগতে আছে।কারণ ঘুমেরও একটি জগৎ আছে,সে জগৎ কিছু স্বপ্ন দ্বারা আচ্ছন্ন থাকে।সে স্বপ্নগুলি বাস্তব ও লৌকিক জীবনের মতোই। যখন ঘুম ভাঙ্গে তখন আমি অন্ততঃ বুঝতে পারি, এতোক্ষণ আমি অন্য একটি জগতে ছিলাম।তেমনি মানুষের মৃত অবস্থারও একটি জগৎ আছে।সেটা অনেকটা ঘুমের মতোই।মৃতের জগৎটা হয়তো গভীর কোনো স্বপ্ন দ্বারা আচ্ছন্ন থাকবে।সে স্বপ্নগুলোতে সে তার প্রিয় মানুষগুলো ও লৌকিক জীবন দেখতে পাবে।পার্থক্য এইটুকুই ঘুমের ঘুম ভাঙ্গে,কিন্তু মৃতের ঘুম আর ভাঙ্গে না।

আমি তো তোমারে চাহিনি

সিডি রাখার রেকর্টিতে ধুলো জমে গেছে।আগের মতো আর সিডিতে গান শোনা হয়না।আজ রেকটির ধূলো পরিস্কার করতে যেয়ে রজনীকান্তের লেখা এবং হেমন্তের গাওয়া একটি পুরানো সিডি পেয়ে যাই।এই সিডিটি আমার স্তীকে দিয়েছিলো আমাদের কোলকাতার বন্ধু হিমাদ্রি চক্রবর্তী ২০০৮ সালে।হিমাদ্রির পূর্বপুরুষেরা ঢাকার সাভারের ছিলো।ওর স্ত্রীর নাম পৃথা চক্রবর্তী।শান্তি নিকেতনের মেয়ে।ওদের আতিথীয়তায় সেবার সেখানে তিনদিন ছিলাম।শান্তি নিকেতনের আমতলায় সবুজ ঘাসে বসে হিমাদ্রি খালি কণ্ঠে গেয়ে শোনায়েছিলো রজনীকান্তের লেখা এই গানটি।হিমাদ্রি আর নেই।পৃথা গত বছর আমাদের দু'জনকে উদ্দেশ্য করে একটা মেইল পঠিয়েছিলো, সেই মেইলের কিছু অংশ এই রকম ছিলো- 'কর্কটের কাছে হিমাদ্রির দেহ হার মেনেছে কিন্তু ওর চিত্ত পরাভূত হয়নাই।বেলেভিউর কেবিনের অ্ন্তিম শয্যায় শুয়ে শুয়ে হিমাদ্রি তোমাদের কথা অনেক বলেছে।তোমরাতো ভুলেই গেছো । সেই যে চলে গেলে আর এলে না।হিমাদ্রির ছাই ভস্ম রেখে দিয়েছি।যদি আসো আর একবার তাহলে তোমাদেরকে দিয়ে দিব এই ছাই ভস্ম।এগুলো ফেলে দিবে হিমাদ্রির পূর্বপুরুষদের বংশী নদীর জলে।' এবার শুনি রজনীকান্তের সেই গানটা-
আমি তো তোমারে চাহিনি জীবনে তুমি অভাগারে চেয়েছ;
আমি না ডাকিতে, হৃদয় মাঝারে নিজে এসে দেখা দিয়েছ।।
চির-আদরের বিনিময়ে সখা! চির অবহেলা পেয়েছ......."

পৃথা,কে বলে হিমাদ্রি আর নেই। আমরা  আবার আসবো শান্তি নিকেতনে,বসবো আমতলার সবুজ ঘাসে।সেদিনও  হিমাদ্রি গেয়ে শোনাবে এই গান।

সেলিয়া - ফিডেলের প্রেম

তারা দু'জনই দ্রোহ করেছিলো বাতিস্তার বিরুদ্ধে একসাথে
তারা দু'জনই বিপ্লবী, যুদ্ধ করেছিলো  রনাঙ্গনে একসাথে
তারা কি প্রেম করেছিলো দু'জনই হৃদয়িক বিপ্লবে একসাথে?

সেলিয়া ফিডেলকে বলেছিলো তুমি আমার প্রেম
ফিডেল বলেছিলো আমি তোমার দেশপ্রেম
যুদ্ধমাঠে সেলিয়া  বিপ্লবী যোদ্ধাদের সেবা করেছে
সেলিয়া যুদ্ধমাঠে ফিডেলকে শুধুই কি সেবা করেছে ?

সেলিয়া তোমার রূপ কি বারুদের গন্ধে মেশেনি কিউবার আকাশে ?
তোমার অপরূপ রূপ কি একবারও বিমোহিত করেনি ফিডেলকে ?
তা্ঁবুতে তা্ঁবুতে সেদিন কি কেবলই অস্তের ঝনঝনানি বে্ঁজেছে-
তোমার অন্তরদোলায় একবারও কি দুলে ওঠেনি ফিডেলের অন্তর আকাশ ?

ময়মনসিংহ জংশন

অনেক দিন আগের সে কথা। নতুন বিয়ের পরে বউকে নিয়ে ময়মনসিংহে এক আত্মীয়ের বাড়ীতে বেড়াতে গিয়েছিলাম।যেদিন ঢাকায় ফিরবো সেদিন ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিলাম ময়মনসিংহ জংশনে।ট্রেন আসতে অনেক লেট।স্টেশনের একটু পূর্বদিকে পুরানো একটা ব্রেঞ্চে বসে আমরা অপেক্ষা করছিলাম।একজন পঞ্চাশোর্ধ লোক তখন আমাদের কাছে ঘুর ঘুর করছিলো,বার বার তাকিয়ে দেখছিলো আমার বালিকা বধূকে।কিন্তু তার সেই চাহনীতে কোনো লাম্পট্য ছিলো না। খুব মায়া করে দেখছিলো ওকে।এক পর্যায়ে লোকটি আমাদের পাশে এসে বসে।এবং আগ বাড়িয়ে সেই কথা বলছিলো বেশী।সে নেত্রকোনা যাবে।লোকটি আমাদের এটাওটা কিনে খাওয়াতে চায়।আমরা বিরক্ত হই।সে আমার বউয়ের সাথে টুকটুক করে কথাও বলছিলো । হঠাৎ লোকটি উঠে চলে গেলো।মনে মনে ভাবলাম,যাক,বা্ঁচলাম। ঢাকার ট্রেন আসতে তখনো আরো দেরী।আমরা বসেই আছি। প্রায় আধা ঘন্টা পরে লোকটা আবার ফিরে আসে।তার হাতে একটি প্যাকেট। আমার স্ত্রীকে প্যাকেটটি দিয়ে বলে- মা,এই তা্ঁতের শাড়ীটি তোমার জন্য্ এনেছি।' আমার দিকে তাকিয়ে বলে- বাবাজি ঠিক ওর মতো দেখতে আমার একটি মেয়ে ছিলো।মাত্র একমাস আগে আমার সেই মেয়েটি মারা গেছে।' ওনার চোখে মুখে একটি মায়ময় পিতৃমুখ দেখতে পেলাম।  ওনার হাত থেকে শাড়ীর প্যাকেটি আমার স্ত্রীকে নিতে বলি।আমাদের ট্রেন হুইসেল বাজিয়ে তখন স্টেশনে এসে পৌ্ঁছে ।খুব তাড়াহড়ো করে লোকটির কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আমরা ট্রেনে উঠে পড়ি।ট্রেনের সিটে বসে আছি, আমার স্ত্রী খুব মন খারাপ করে বলছিলো- তুমি ওনাকে আমাদের বাসার ঠিকানাটা দিয়ে আসো।' ভাবলাম নেমে গিয়ে ঠিকানাটা দিয়ে আসি । কিন্তু নামা হলো না।ট্রেন ছাড়বার হূইসেল তখন বেজে উঠেছে। ঝিকঝিক করে ট্রেনটি ছেড়ে চলে আসতে থাকে ঢাকার দিকে।

শনিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৬

শত সহস্র দিনের অপেক্ষা

আমার স্বপ্নগুলো এখন আর স্বপ্নে নেই
সহস্র দিনের অপেক্ষার পর আজ পূর্ণতা পেলো প্রেম
আজ এখানে সুখের ঝলক আজ এখানে বইছে আনন্দধারাা
স্বপ্নেও যে চুম্বনগুলো কখনো পাইনি
আজ শত সহস্র চুম্বন যেনো ঝরে পড়ছে কপাল থেকে কপোলে।

আজ আর স্বপ্ন দেখা সেই রাত্রি নেই
যে মধুময় রাতের জন্য শত সহস্র রাত অপেক্ষা করেছিলাম
আজ এই রাতে অপেক্ষাগুলো অনন্ত ভালোবাসা হয়েছে
বঞ্চনার প্রেমগুলো পূর্ণ হলো এই অপার রাতের মহিমায়।

আজ এখানে আর কোনো স্বপ্ন নেই
আজ এখানে কেবল ভালোবাসার জয়োৎসব চলছে
যে প্রেম ছিলো দূর আকাশের মিটিমিটি এক নিস্প্রভ তারা
সে তারা আজ রাতে এখানে পূর্ণিমার চা্ঁদ হয়ে জ্বলছে।

তুমি, নির্মল কর

 ফিডেল ক্যাস্ট্রো বলেছিলেন, 'আমি হিমালয় দেখিনি, কিন্তু শেখ মুজিবকে দেখেছি।' কথাটা এখন প্রায় কিংবদন্তি।   ফিদেল ক্যাস্ট্রো বঙ্গবন্ধুকে বুকে জড়িয়ে ধরে বলেছিলেন, 'মুজিব তোমার মত আমারও শোষকের বিরুদ্ধে শোষিতের সংগ্রাম।'কিউবার এই সাড়া জাগানো বি্প্লবী কমিউনিস্ট নেতা আনুষ্ঠানিকভাবে শোসিত মানুষগুলোর কাছ থেকে আজ বিদায় নিয়ে  চলে গেলেন।পৃথিবী আর কখনো ফিরে পাবে না ক্যাস্ট্রোর মতো এই রকম একজন বিপ্লবী মহান কমরেডকে ? হে ধরিত্রী, হে ঈশ্বর-
'তুমিনির্মল করমঙ্গল করে মলিন মর্ম মুছায়ে। তব, পূণ্য-কিরণ দিয়ে যাক্, মোর মোহ-কালিমা ঘুচায়ে।'

শুক্রবার, ২৫ নভেম্বর, ২০১৬

মধ্যরাতের কবিতা

তুমি শোনো আমার কথা,প্রেম নেবে আমার ?
শরীর গে্ঁথে নেবে তোমার শিল্পে,
আমাকে দেনমোহরে বা্ঁধতে চাও ?
তোমার রূপ রূপকথার রূপবানের মতো
আমি দাড়িয়ে তোমার চোখের মায়া দেখি
আমি তোমাকে লিখে রাখি আমার কবিতায়
তুমিতো একসময়ে ছিলে খৈয়ামের রূবাইয়াতে
আমি সরাব শেষ করি,তুমি তখন সাকী হও
তোমাকে যখন ভালোবাসি তখন সীমান্ত মানি না
নো ম্যান্স ল্যন্ড মানি না
তোমাকে তখন শরীর শিল্পে বে্ঁধে রাখি,
তুমি মধ্যরাতের ্প্রেমগুলো আমাকে দিয়ে দাও                                                                                                  তোমাকে আমি শিল্প করে রাখবো  কবিতায়।

তোমাকেই বাসিতে ভালো

তোমার কাছেই আনন্দ চাই তোমার কাছেই চাই যে সুখ
মুছে দাও যাতনা যতো মুছে দাও তুমি আমার মলিন মুখ
নয়ন খুলে দেখতে চাই না আধার, দেখতে চাই আলো
তোমাকেই মনে রাখতে চাই তোমাকেই বাসিতে ভালো।

বৃহস্পতিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৬

যে পথগুলোতে পায়ের চিহ্ন আ্ঁকা আছে-

কাল মেয়েকে নিয়ে নিলক্ষেত গিয়েছিলাম ওর একটি বই কিনতে।কি মনে করে ওর হাত ধরেে হেটে হেটে চলে যাই বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে। যে পথ দিয়ে ওকে নিয়ে হাটছিলাম সে পথগুলো দিয়ে একসময় আমি অনেক হেটেছি।প্রথমেই মহসিন হলের মাঠের পশ্চিম পাশে রাউফুন বসুনিয়ার ছোট্র মূর্তিটি দেখালাম,বললাম-এই ছেলেটি স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে শহীদ হয়েছিলো।তারপর চলে যাই কলাভবনের সামনে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে।বললাম-এটি নির্মাণ করেছে ভাস্কর আব্দুল্লাহ খালিদ।এই ভাস্কর্যটি মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম একটি সেরা ভাস্কর্য। কলাভবনের দোতালায় হাত দেখিয়ে বললাম- ঐখানেই আমাদের বাংলা বিভাগ- যেখানে আমি পড়েছিলাম ছয় বছর।আমাদের শিক্ষক ছিলেন- ডঃ আহমদ শরীফ,ডঃ নীলিমা ইব্রাহীম,ডঃ মনিরজ্জামান,ডঃ আবু হেনা মোস্তফা কামাল প্রমুখ। তা্ঁরা কেউ আর আজ বে্ঁচে নেই। কলাভবনের বটতলা দেখিয়ে বললাম,এখানেই একদিন আমাদের দেশের পতাকা প্রথম উত্তেলিত হয়েছিলো।তারপর আস্তে আস্তে হেটে চলে যাই মধুর রেস্তোরার দিকে।ডানদিকে গুরুদ্বুয়ারা নানক সাইয়ের মন্দিরটি দেখিয়ে বলি,এটি একটি শিখ উপসানালয়।মধুর রেস্তোরার পুরানো একতলা বিল্ডিংটি দেখিয়ে বলি,এই সেই রেস্তোরা যেখান থেকে আমাদের দেশের সমস্ত আন্দোলনগুলো পরিচালিত হয়েছিলো। এটির মালিক ছিলেন,শহীদ মধু দে।তা্কে বেওনেট দিয়ে কুচিয়ে ুকুচিয়ে ্হত্যা করেছিলো পাকসেনারা। ওখান থেকে হেটে হেটে লাইব্রেরীর দিকে চলে যাই। নভেরার তৈরী ভাসকর্যগুলো দেখিয়ে বলি,এই শিল্পীটি আর বে্ঁচে নেই।সুদূর ফরাসী দেশে নিঃসঙ্গ একাকী নির্বাসিত অবস্থায় মারা গেছেন।তারপর দুজন লাইব্রেরীর বারান্দায় এসে বসি।ভাষা ইনিস্টিউটের পূর্ব জায়গাটা দেখিয়ে বলি,এইখানে বা্ঁশের চালার শরীফ মিয়ার ক্যান্টিন ছিলো।একদিন গরম সিঙ্গারা খেতে যেয়ে আমি আমার জিহবা পুড়ে ফেলেছিলাম।বাম দিকের খালি ঘাসের চত্বরটি দেখিয়ে বলি,এটির নাম হাকিম চত্বর।ঐ যে কড়ই গাছটি দেখছো,ওখানে বসে হাকিম মিয়া চা বিক্রী করতো।আমরা চা খেয়ে অনেক সময় পয়সা দিতাম না। বলতাম 'আজ নেই।' কিছুু বলতো না হাকিম মিয়া। সেও আজ বে্ঁচে নেই।অনেকদিন পর হাকিম মিয়ার ছেলের কাছ থেকে আমরা দুজন চা খেলাম।মেয়ের হাত ধরে হাটতে হাটতে টিএসসি র দিকে যাই,ডানদিকে রোকেয়া হলটি দেখিয়ে বলি-এই হলে তোমার বকুল ফুপি থাকতো। সামনে পূর্ব দিকে এগিয়ে যেতেই বাম দিকের সৌধটি দেখিয়ে বললাম-এটি শহীদ ডাঃ মিলন স্মৃতি সৌধ।নব্বইয়ে গণআন্দোলনে ঠিক এই জায়গাটিতে তিনি শহীদ হয়েছিলেন।তখন সন্ধ্যা হয়ে গেছে।মেয়েকে নিয়ে স্বোপার্জিত স্বাধীনতা মূর্তির পাদদেশের কাছে যেয়ে দাড়াই।মূর্তির দিকে তাকিয়ে থেকে বললাম-একাত্তরের অনেক নাম না জানা শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে এটি নির্মিত হয়েেছে।প্রখ্যাত ভাস্কর শিল্পী শামিম সিকদার এটি তৈরী করেছেন।আমি মেয়েকে নিয়ে ভা্স্কর্যের পাশে পাকা সোপানের উপর বসি। নিরব হয়ে বসে আছি,কোনো কথা বলছিলাম না। মেয়ে একটু উদ্বেগের সহিত বলছিলো-বাবা,তুমি কি ক্লান্ত ? আমি বললাম- না মা।

শেষ প্রান্তরেখা

মুহূর্তেই জীবন ফুরিয়ে গেল।আজ সকালে যে রং যে আভা দেখলাম,কাল সকালে তা খু্ঁজে পাওয়া যায় না।পলকেই সবকিছু বদলে যায়।জীবন যে রেখা থেকে শুরু হয়েছিলো সে রেখায় ফিরে যাবার কোনো পথ নেই।চলতে চলতে পথের মাঝেই জীবন শেষ হয়ে গেলো। আজ যেখানে দাড়িয়ে আছি সেখান থেকে পথের শেষ প্রান্তরেখাটি দেখা যায়।

যদি আর ঘুম না ভাঙ্গে

আধার নেমে এসেছে পৃথিবীতে,জোনাকীরা জ্বালিয়েছে সব আলো
একে একে জ্বলে উঠেছে সব তারা- ্ধ্রবতারা,অরূন্ধতী,স্বাতি
নয়ন মেলে দেখো আমাকে আর একবার
ঘুমিয়ে পড়ার আগে সব চুম্বনগুলো আমাকে দিয়ে দাও
যদি আর ঘুম না ভাঙ্গে কাল সকাল বেলায়।

‘বেথেলহেম ফুল’

রাতের রানী ( Night Queen) নিয়ে পৃথিবী জুড়ে বহু কাহিনী বিখ্যাত হয়ে আছে। দু'হাজার বছর আগে বেথেলহেম শহরের এক রাত্রি। শহরের প্রত্যেক বাড়িতে ফুটে আছে রাতের রানী । সবাই ভালোবাসে এই ফুলটিকে।সবাই নিজ নিজ বাড়িতে ফুল ফুটতে দেখে কৌতূহলী হয়ে পাশের বাড়িতে ছুটে যায় জানাতে, গিয়ে দেখে তাদের বাড়িতেও ফুটেছে নাইট কুইন। আরেক বাড়িতে ছুটে যায়,অন্য জন অন্য বাড়িতে। তারা সবাই অবাক ! প্রতিটি বাড়ীতে নাইট কুইন ফুটে আছে। প্রকৃতি কেন এমন অজানা উৎসবে মেতে উঠল কেউ বুঝতে পারলো না। পরে সবাই বুঝতে পারলো, সেই রাতে বেথেলহেমের ঘোড়ার আস্তাবলে জন্ম হয়েছিল এক মহাপুরুষের, তিনি যিশু খ্রিস্ট। বেথেলহেমের সব রাতের রানী (Night Queen) মেতে উঠেছিল প্রভু যিশুর জন্মোৎসবে। এজন্য আজও ‘বেথেলহেম ফুল’ নামে সারা বিশ্বে পরিচিত এই নাইট কুইন !  

অমরাবতী

তুমি ভালোবাসায় পুড়ে ছাই হলে,ছাই হয়ে উড়ে চলে গেলে অমরাবতীতে।তুমি আমাকেও পোড়ালে,আমিও ভস্মিত হলাম, আমার ভস্মগুলো উড়ে চলে গেলো সেই পুণ্যভূমিতে,যেখানে অমরাবতী হয়ে তুমি অপেক্ষা করছো আমারই জন্যে।

ভালোবাসা ঝরে পড়লো অনাদরে

আমি তোমার উঠানে ফুল হাতে দাড়িয়েছিলাম,তোমার খোপায় ফুল পড়াবো বলে।দুপুর পর্যন্ত ঠায় অপেক্ষা করলুম, তারপরও তুমি আসলে না। পাথরের মূর্তির মতো শুয়ে রইলে।আমার হাতের সব ফুল রোদ্রে পুড়ে ঝরে গেলো,।যেনো সব ভালোবাসা ঝরে পড়ে গেলো অনাদরে।পাষাণির কোনো মন খারাপ হলো না।

এই শহরের মায়া

এই শহরে যৌবনের সেই প্রথম প্রহর থেকে  মায়ায় বে্ঁধে আছি। অট্রালিকার ফা্ঁকে যে চা্ঁদ আমি দেখি,তা আমি দেখেছিলাম জারুল আর বা্ঁশঝারের ফা্ঁক দিয়ে আমাদের গ্রামে।এখানেও নদী আছে, স্বচ্ছ জল আছে,রবীন্দ্র সরোবর আছে। পীচ ঢালা মসৃন পথ আছে। এখানে পথের পাশে ইট সুরকি বালি ফেলে রাখা আছে। ছে্ঁড়া কাগজ বাতাসে উড়ছে। সেই কাগজ থেকেএকটি কাগজ কুড়িয়ে পড়ে দেখো- সেখানে আমার নাম লেখা আছে।

তোমার আনন্দে

তোমার আনন্দে আমি আনন্দিত হই।আমার হৃৎপিন্ডের রক্তের চলাচল তখন গতি পায়।শরীরের সকল ধমনীগুলো প্রাণ পায়,হিল্লোলিত হয় হৃদয়।যখন তুমি দুঃখে থাকো,তখন রক্তক্ষরণ হয় হৃদয়ে,ধমনীগুলো অবশ হয়ে যায়।নিঃশ্বাস নিতে কস্ট হয়।আবার যখন ভালোবাসা দাও, তখন আমার সমস্ত যাতনাগুলো সুখ হয়ে যায়।

দুঃখিনী উপমা

আমার ভালোবাসাগুলো স্বপ্ন বানিয়ে রাখতে চাইনা।স্বপ্নের মধ্যে ভালোবাসা থাকুক এটাও চাইনা।তুমি আমার স্বপ্ন নও,স্বপ্নচারিণীও নও।তুমি আছো দিবস রজনীতে,আমার কর্মে,আমার কবিতা লেখায়।কখনো সুখের শব্দ হয়ে,কখনো দুঃখিনী উপমা হয়ে।

বুধবার, ২৩ নভেম্বর, ২০১৬

স্নাত হবো

জ্যোৎ্স্না রাতের গান আমি শুনতে চাইনা।রূপকথার রাজকুমারীদের কথাও নয়।আমি পূর্ণিমার মধ্যে অবরুদ্ধ করে রাখতে চাই তোমাকে।যেখানে বাইরের কোনো আলো স্পর্শ করবে না। অন্য কারোর পাপ নয়,পুণ্যও নয়।যে পূর্ণিমায় স্নাত হবো শুধু তুমি আর আমি।

নার্গিস

গ্রীক পুরাণের সুদর্শন যুবক নার্সিসাসের প্রেমে পড়ে মায়াময়ী কন্যা ইকো। কিন্তু নার্সিসাস ইকোর প্রেম প্রত্যাখান করে। প্রেমের দেবী  ভেনাসের অভিশাপে এবার নার্সিসাস নিজের প্রেমে পড়েন। বনের মাঝে ঘুরে বেড়াতে বেড়াতে পিপাসার্ত নার্সিসাস হঠাৎ এক ঝরনার সন্ধান পেয়ে আসেন পানি পানের আশায়।আজলা ভরে পানি মুখের কাছে নিতেই সে পানিতে প্রতিবিম্বিত হয় এক অনিন্দ্য সুন্দর মনুষ্য মূর্তি_নার্সিসাসের নিজের মুখশ্রী। সেই অনিন্দ্য সুন্দর রূপ দেখে স্তম্ভিত হয়ে যান নার্সিসাস। কিন্তু কয়েক মুহূর্তেই আঙুলের ফাঁকা দিয়ে আঁজলার পানিটুকু পড়ে যায়। প্রতিবিম্বিত চেহারাটা হারিয়ে যায়। আবার আঁজলা ভরে পানি তোলেন। কিন্তু পানি মুখের কাছে আনতেই আবার সেই নিজেরই মুখশ্রী।এভাবেই নার্সিসাসের আঁজলায় পানি উঠতে থাকে আর পড়তে থাকে, পিপাসার নিবারণে একবিন্দু জলও পৌ্ঁছেনা ঠোঁটে কিংবা জিভে। পিপাসার যন্ত্রণায় প্রেম প্রত্যাখ্যানের পাপে অভিশপ্ত নার্সিসাসের এক কঠিন করুণ মৃত্যু হয়। পিপাসার যন্ত্রণাহত নার্সিসাসের এই মৃত শরীর থেকে প্রকৃতির আশীর্বাদে জেগে ওঠে একটি ফুল। গ্রীক মিথে সেই ফুলের নাম নার্গিস।

Forget Me Not

ঈশ্বর একদিন পৃথিবীতে বৃক্ষ ফুল লতাগূল্মের খো্ঁজ খবর নিচ্ছিলেন, কিন্তু এই ছোট্র ফুুলটির কাছে তিনি আসছিলেন না। তখন পাশ থেকে এই ফুলটি বলেছিলো- 'Forget me not' । সেই থেকে এই ফুলটির নাম হয়ে যায় 'Forget Me Not' বা 'আমাকে ভুলে যেওনা'।
একদিন হয়তো আমি এখানে থাকবো না। স্টাটাস লিখবে না কেউ আর এই পাতায়।তখন আমি কেবলই Remembering কোনো জন। এই ছোট্র ফুলটির মতো তাই বলে যাই,সেদিন যেনো তোমরা- Forget me not.


মঙ্গলবার, ২২ নভেম্বর, ২০১৬

সকালের শুভাশীষ

সকালবেলায় ঢাকার আকাশকে আজ ভালো লাগছে না,  ভোরের এই বাতাস, সূর্যোদয়, এই রৌদ্র কোনো কিছু না।ইচ্ছা হচ্ছে গ্র্রামের সেই সরিষা ক্ষেতের মাঠ মারিয়ে শিশিরে পা ভিজিয়ে দৌড়ে দৌড়ে চলে যাই, দিগন্তজোড়া সেই প্রান্তরের দিকে, যেখানে স্বপ্নগলো মিশিয়ে আছে দূরের নীলিমায়। সবাইকে সকালের শুভাশীষ।

ক্ষমতা

আমি তোমার সব দুঃখ মুছে ফেলতে চাই,কি্ন্তু কিছু দুঃখ আছে মানুষ চাইলেই মুছিয়ে ফেলতে পারে না।এই ক্ষমতাটা ঈশ্বর তার হাতে রেখে দিয়েছে।আমি আমার অসীম ভালোবাসা দিয়ে তোমার জীবনটাকে ভরে তুলতে চাই।এটা আমি করতে পারবো,কারণ এই ক্ষমতাটা ঈশ্বরের হাতে নেই, এই ক্ষমতা আমার হাতেই আছে।

তোমার চোখ

সকালে জেগে দেখি- তুমি ঘুমিয়ে আছো, যেনো ঘুমের ঐ চোখ দুটো আমার দিকেই তাকিয়ে আছে।দেখলাম- চোখের পাতায় কোনো অশ্রু কনা নেই,আবার হাসিরও কোনো ঝিলিক নেই।কিন্তু তোমার চোখ দেখে মনে হলো- এই চোখ রাতে কে্ঁদে কে্ঁদে ঘুমিয়ে গিয়েছে।

সাগর স্নান

প্রথম আমি যেদিন সাগরের জলে পা রেখেছিলাম তখন মনে হয়েছিলো এ জল আমারই,জলে নেমে তাই সেদিন স্নান করেছিলাম।এর কয়েক বৎসর পর আবার যেদিন সাগরে গিয়েছিলাম, জল দেখে মনে হয়েছিলো,এ জল আমার নয়। তাই জলে নেমে স্নান করা হয়নি। পাপটা কখন ছিলো এখনো জানতে পারিনি।

যতো দূরেই যাই

আমি যতো দূরেই যাই,তোমার দৃস্টির সীমার মধ্যেই থেকে যাই।তুমি দেখতে পাও আমার  চোখ তোমার দিকেই চেয়ে আছে।যদি কখনো প্রাণহীন হয়ে যাই, মাটির ছায়ায় ঢেকে যায় সবকিছু, তখন আর দেখতে পাবে না আমাকে।আমিও দেখতে পাবো না,তোমার চোখ আমার জন্য কা্ঁদছে কিনা ?

তোমার আকুলতা

তুমি তাকিয়ে ছিলে আমারই দিকে,আমি দেখছিলাম তোমার নিষ্করুণ মুখখানি।অস্তগামী সূর্যের রক্তিম আলো এসে পড়েছিলো তোমার মুখে।দেখলাম- আমার ভালোবাসা পাওয়ার জন্য তোমার মুখখানি কাঙ্গাল হয়ে আছে।আমিতো তোমার অজান্তে আমার সমস্ত ভালোবাসা তোমাকে আগেই দিয়ে দিয়েছি।এখন আমি নিজেই ভালোবাসার জন্য কাঙ্গাল হয়ে আছি।

সোমবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৬

চিপাচসের ৪০তম বছর পূর্তি উদযাপন

চিপাচসের ৪০তম বছর পূর্তি উদযাপন এবং মহান বিজয়দিবসকে সামনে রেখে গত ২১ শে নভেম্বর ২০১৬ ইং তারিখে বাংলাদেশ শি্ল্পকলা একাডেমীর চিত্রশালা মিলনায়তে এক বর্নাঢ্য অনুষঠানমালার আয়োজন করা হয়। অনুষঠানটি দুটি পর্বে সাজানো ছিলো। প্রথম পর্বে ছিলো নাসির উদ্দীন ইউসুফ নির্মিত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র 'গেরিলা' ছবির প্রদর্শনী,যেটি দেখানো হয়েছিলো বিকেল পা্ঁচটায়। আর ২য় পর্বে ছিলো আলোচনা অনুযঠান। আলোচনা অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ত করেন চিপাচসের সভাপতি জনাব সুসীল সূত্রধর, স্বাগত বক্তব্য রাখেন চিপচসের সাধারণ সম্পাদক জনাব জিয়া খোন্দকার,  আলোচনার বিষয়বস্তু ছিলো;"বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র নির্মাণের অন্তরায়ঃ সরকারী আন্তরিক পৃষ্ঠোপোষকতা ও অনুদানের অর্থের অপ্রতুলতা।" অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথীর আসন অলংকৃত করেছিলেন গনপ্রজাতন্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় তথ্যমন্রী জনাব হাসানুল হক ইনু এম,পি । আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন সাধারণ সম্পাদক, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ ফিলম সোসাইটির জনাব বেলায়েত হোসেন মামুন, , বিশিষ্ঠ  চলচ্চিত্র নির্মাতা জনাব আকরম হোসেন,  চলচ্চিত্র নির্মাতা জনাব আবুু সাঈদ, বিশিষ্ঠ চলচ্চিত্র গবেষক জনাব অনুপম হায়াৎ ও তরুণ কথা সাহিত্যিক জনাব স্বকৃত নোমান। দর্শক সারিতে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ঠ মিডিয়া ব্যক্তিত্ত ও চিপাচসের  সাবেক সাধারণ সম্পাদক জনাব শফিউজ্জামান খান লোদী,বিশিষ্ঠ মিডিয়া ব্যক্তিত্ত জনাব শামিম আলম দীপেন ও চিপাচসের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য জনাব কোয়েল তালুকদার। সমগ্র অনুষঠানটি সঞ্চলনা করেন জনাব ..........।

--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

চিপাচসের সভাপতি সুসীল সূত্রধরের জোড়ালো আমন্ত্রণে নাসির উদ্দীন ইউসুফ নির্মিত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র 'গেরিলা' ছবিটি দেখলাম। চলচ্চিত্রের প্রতি অনিহার কারনে ছবি দেখা বন্ধ করে দিয়েছি বহু বছর ধরে। যার ফলে কিছু ভালো ছবি দেখা হয়নি। তেমনি একটি missing ছিলো গেরিলা ছবিটি।আমরা নাসির উদ্দীন ইউসুফকে ্রধানতঃ নাট্যজন হিসাবে জানি, তিনি যে একজন ভালো চলচ্চিত্রকারও তা গেরিলা ছবিটি না  দেখলে জানা যাবে না।
চলচ্চিত্রটি মূলত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে নির্মিত। সৈয়দ শামসুল হকের ‘নিষিদ্ধ লোবান' উপন্যাস অবলম্বনে নির্মাণ করা হয়েছে ৷ চিত্রনাট্য করেছেন যৌথভাবে নাসির উদ্দীন ইউসুফ ও এবাদুর রহমান। গেরিলা ছবিটিতে অভিনয় করেছেন সহস্রাধিক শিল্পী। প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন জয়া আহসানফেরদৌসএটিএম শামসুজ্জামানরাইসুল ইসলাম আসাদ, পীযুষ বন্দ্যোপাধ্যায়, শতাব্দী ওয়াদুদ, শম্পা রেজা, গাজী রাকায়েত প্রমুখ।


ছবির শুরুতেই আমরা দেখি ছবির প্রধান চরিত্র বিলকিস বানু (জয়া আহসান) এবং হাসানকে (ফেরদৌস), হাসান, বিলকিসের স্বামী এবং পেশায় সে সাংবাদিক। পরে আমরা দেখি যে তাকে পাকিস্তানি সেনা বাহিনী গুম করে ফেলে এবং বিলকিস বানু তখন তার সাংবাদিকতার দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নিয়ে বের করেন গেরিলা নামক একটি পত্রিকা এবং এখান থেকেই শুরু হয় ‘গেরিলা’ ছবির কাহিনী।
বিলকিস বানু নিজের ব্যাংকের চাকরী, নিখোঁজ হাসানের খোঁজ নেয়ার পাশাপাশি ঢাকার গেরিলা মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে নিজেকে জড়িয়ে নেয়। তার মতোই আরো অনেক নারী চাকুরী বা নিজ সামাজিক অবস্থানের ছত্রছায়ায় গেরিলা যুদ্ধের নানা সাংগঠনিক যোগাযোগ ও পরিবহনের মাধ্যম হিসেবে নিয়োজিত থেকে গেরিলা যুদ্ধকে সম্ভব করে তুলেছিলেন।
সময়ের আবর্তে ১৯৭১ এর আগষ্ট মাসের শেষ দিকে একটি বড় অপারেশনের পর ঘটনা পরিক্রমায় ঢাকা ছাড়তে হয় বিলকিসকে। তসলিম সর্দার নিহত হন, আলতাফ মাহমুদ মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র রাখার দায়ে পাকিস্তানী আর্মি কর্তৃক ধৃত হন। একাকী বিলকিস নিজগ্রাম রংপুরের জলেশ্বরী যাবার জন্য ট্রেনে পাড়ি জমায়।বাড়ির পথে নানা ঘটনার পাশাপাশি নিজের বাড়ি লুট হওয়া আর আপন মামার উপর মিলিটারী-রাজাকারদের নির্যাতন দেখে শিউরে উঠে সে। অতঃপর একমাত্র ভাই খোকনকে দেখবার তীব্র আকাঙ্ক্ষায় যুদ্ধের ডামাডোলে জীবনের সকল সূত্র হারানো এক নারী, বিলকিস। কিন্তু দুর্ভাগ্য, এরইমধ্যে জবাই করা হয়েছে খোকনকে। ভাইয়ের লাশ দাফন করতে গিয়ে বন্দি হয় পাকিস্তানী মিলিটারীর হাতে। তবে শেষ পর্যন্ত বীরের মতো আত্নাহুতি দেয় বিলকিস। নিজের সাথে উড়িয়ে দেয় একটি গোটা মিলিটারী ক্যাম্প।    
                                                                                                                                                    ‘গেরিলা’ ছবির চিত্রগ্রহনের কাজটি করেছেন ভারতের সমীরণ দত্ত। তার চিত্রধারণের কাজে আমরা হাই এঙেল, লো এঙেল, লংশট, মিড লংশট, ক্রেন শট, মিড ক্লোজ-আপ এবং হ্যান্ড-হেল্ড শটের কিছু ভালো প্রদর্শন পাই তবে চমৎকৃত হওয়ার মতো কোনো কাজ আমরা দেখিনা। কিন্তু বেশ ভালো কিছু ফটোগ্রাফি সিনেমাটিতে রয়েছে অন্ধকারে প্রদীপের আলো খূঁজে পাওয়ার মতো।ছবিটিতে শিল্প নির্দেশনা দিয়েছেন অনিমেষ আইচ। শিল্প নির্দেশনার এই কাজটি তিনি দক্ষতার সাথেই করেছেন। সংগীতের ব্যবহার খুবই দুর্বল। মু্ক্তিযুদ্ধচলাকালীন সময়ে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে বাজানো গানগুলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের প্ররণা দিয়েছিলো তার ব্যবহার গেরিলা ছবিতে উপেক্ষিত হয়েছে।

রবিবার, ২০ নভেম্বর, ২০১৬

আমার সম্তর্কগুলি

তোমার সাথে আমার সম্পর্ক মাথার চুল পর্যন্ত
তুমি বললে তার নীচে কি আর কিছু নেই ?
আমি বললাম আছে-সুবর্ণরেখার একটি কপাল আছে
কপালের নীচে বা্ঁকা চা্ঁদের দুটো ভ্রু আছে
ভ্রুর নীচে কাজল কালো চোখ আছে।
তুমি বললে তারপর কি আছে ? আমি বললাম-
কৃষ্ণের বা্ঁশির নাক আছে,গোলাপ পাপ্ঁঁড়ির গাল আছে
লজ্জাপাতার ঠো্ঁট আছে,ঠো্ঁটের নীচে কপোল আছে
গলায় তোমার পু্ঁতির মালা আছে
মালার নীচে চোলী আছে, চোলীর নীচে -----
তুমি বললে থামলে কেনো ? বলো কি আছে ?
আমি বললাম- এখানে আসলেই চোখ আমার থেমে যায়
আর সম্পর্কটাও নাভীর নীচ পর্যন্ত নেমে যায়।

তিন পর্বের জীবন

তুমি যখন ছিলে না-
কোনোদিন ঘরে সন্ধ্যা বাতি জ্বালানো হয়নি
ঘরের দেয়ালে আর ছাদে ঝুল জমে থাকতো
টেলিফোনের রিসিভারের নীচে জমে থাকতো ধূলো
বাড়ীর আঙ্গিনা আগাছায় ভরে যেতো
সকালের ঘুম ভাঙ্গতো দুপুরে, সন্ধ্যাকে মনে হতো সকাল
দুপুরের ভাত খেতাম রাতে-
রাতের ঘুমগুলো দুঃস্বপ্ন হয়ে যেতো নির্ঘুমে।

তুমি যখন আসলে-
ট্রাউজার্স পরিপাটি,হ্যাঙ্গারে ইস্ত্রারী করা সার্ট ঝুলে থাকে
জুতার সক্ গুলোতে সুগন্ধি দেওয়া থাকে, ফুলদানিতে ফুল
মেঘের আকাশ হয় তারাভরা রাত, আলোয় ভরে ওঠে ভূবন
মেঝেতে বে্ঁজে উঠলো তোমার পায়ের শব্দ
আমার একাকীত্বগুলো পেলো প্রাণ,প্রেম হলো গান
সন্ধ্যার কলিরা ফুল হয়ে ফোটে রাতের পূণ্যতায়।

তুমি যখন থাকবে না-
সাদা চুলগুলোতে আর কলপ মাখা হবে না
গো্ঁফ হয়ে যাবে ঋষিদের মতো শভ্র সমুজ্জল
পার্কের বেঞ্চে শুয়ে থাকবো রৌদ্রছায়ায়
ঘরে ফেরা হবে না অস্তমিত সন্ধ্যাবেলায়
রেল লাইনের স্লিপারের উপর দিয়ে বিপন্ন পথিকের মতো
হাটতে হাটতে চলে যাবো দূরের কোনো স্টেশনে
হূইসেল বাজিয়ে ট্রেন আসবে,ট্রেন চলে যাবে
 উদাসীন পথে হেটে হেটে আর ফেরা হবে না ঘরে।



শনিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৬

তৈলচিত্র

 মৃত্যুর পর আমার লাশ তৈলচিত্র করে রেখে দিও তোমার ঘরে
আমিতো ছিলাম তোমার সুখহীনতার এক অপ্রাণ পুরুষ
আমার লাশ তুমি মমী করে রেখে দিও তোমার শয়ন ঘরে
আমার ষৌবনগুলো ছিলো পোড়া মাটির মতো পুড়ে থাকা গন্ধের
আমার যৌনতাগুলো ছিলো বিদর্ভ্ নগরের অন্ধকারের মতো বিমর্ষ
আমার নির্মোহ ভালোবাসার চোখ তোমার জন্য কে্ঁদেছে বারবার
তোমার উদাসীন শরীর কালো ্আলোয় ঢেকে যেতো চা্ঁদনী রাতে
নিঃশেষিত এই জীবন সায়াহ্নে তুমি অবমুক্ত করো আমাকে
 মৃত্যুর পর আমার লাশ তৈলচিত্র করে রেখো দিও তোমার ঘরে ।

সম্পর্ক

তোমার সাথে আমার সম্পর্ক নাভির নীচ পর্যন্ত নেমে গেছে।

শুক্রবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১৬

তোমাকে পাওয়া হলোনা।

তোমার জন্য আমার এইযে এতো ভালোবাসা
সেতো তোমাকে ভালোবাসার কারণে
তোমার জন্য আমার এইযে এতো হাহুতাস
সেতো তোমার উদাসীন থাকার কারণে
তোমার জন্য আমার এইযে এতো হাহাকার
সেতো তোমার দূরে দূরে থাকার কারণে
তোমার জন্য আমার এইযে এতো দীর্ঘশ্বাস
সেতো তোমার প্রেম না পাওয়ার কারণে
আমার ভালোবাসা,হাহুতাস, হাহাকার,দীর্ঘশ্বাস
কোনোকিছু দিয়েই তোমাকে পাওয়া হলোনা। 

ক্যামেলিয়া

বাড়ীর আঙ্গিনায় দাড়িয়ে যে আকাশ আজ দেখলাম,সে আকাশ যেনো মৌনতায় কা্ঁদছে।বাগানে যে ক্যামেলিয়া ফুলগুলো হেমন্তের গোলাপ হয়ে ফোটার কথা ছিলো,ওরা তা ফোটে নাই।গোবিন্দগঞ্জের ঐ কালো সাওতাল মেয়েটার কানে আজ আর ক্যামেলিয়া ফুল নেই।এই সুন্দর শ্যামল মাটিতে  নেই আর সেই সোদা গন্ধ।ভেবেছিলাম ক্যামেলিয়ার সুবাস মেখে আজকের দিনটা শুরু করবো,তা আর হলো না।

তোমার প্রস্থানের পথ

তুমি চলে যেতে চেয়েছো, কিন্তু কেন তুমি চলে যাবে ?
তুমি চলে গেলে এক ফুৎকারে নিভে যাবে ল্যাম্পপোস্টের সব আলো
 করুণ সাইরিন বাজিয়ে হাসপাতালের দিকে ছুটতে থাকবে
মুুমূর্ষ রোগীবাহী সব এ্যাম্বুলেন্সগুলি।

তুমি চলে গেলে মাতালগুলো উল্লাস করবে রাজপথে
রঙ্গিন জলের নহর বইবে মেট্রোপলিটনের স্ট্রীটগুলোতে
শহরের পানশালায় নর্তকীদের নুপুরের নিক্কণ ধ্বনিত হবে                                                                               রাতের বারবনিতারা ফিরে যাবে না ঘরহীন সংসারে।

তুমি কেন চলে যাবে ? কেন রক্তপাত ঘটাও আমার হৃৎপিন্ডে
আমার ভালোবাসার স্বপ্ন দোলায় তুমিতো দুলেছিলে
আজ কেন সেই মায়াবী পর্দা কালো করে নামিয়ে ফেলা
কেন আধারে ঢেকে ফেলতে চাও এই ঝলমলে রাত।

আত্মার আত্মহত্যা যদি তুমি চাও তাও দেবো তোমাকে
তবু তুমি বন্ধ করো,থামিয়ে দাও তোমার এই প্রস্থানের পথ।

যদি আর গন্ধ না বিলায়

আর যদি কখনো ফিরে না আসি,সন্ধ্যার আকাশে যদি আর একটি তারা না জ্বলে,ষদি আর গন্ধ না বিলায় কোনো সন্ধ্যা মালতীর ঝা্ঁর, তখনো কি তুমি বসন্ত রাতে দীপ জ্বেলে অপেক্ষা করবে আমারই জন্যে ? হয়তো হ্যা্ঁ হয়তো না।

বৃহস্পতিবার, ১৭ নভেম্বর, ২০১৬

স্বপ্নচারিনী

সারাদিনের কর্মশেষে যখন সন্ধ্যা হয়,ক্লান্ত শরীর নিয়ে  ফিরে আসি ঘরে,তখন সন্ধ্যা প্রদীপ জ্বেলে তুমি আলো করে বসে থাকো। আমি এলেই তোমার অপেক্ষাগুলি প্রাণ পেয়ে যায়।আমার ক্লান্তি সব মুছে যায় তোমার ছো্ঁয়ায়।রাতের স্বপ্ন আর তখন স্বপ্নে থাকে না। সব স্বপ্ন ভেঙ্গে পড়ে শয্যায়, তখন তুমি কেবলই হয়ে ওঠো স্বপ্নচারিনী।

বুধবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১৬

সুরের কোমলগান্ধার

 তোমার সকল অস্তিত্তগুলো আমার মাঝে উঞ্চতায় ধরা দেয় বারবার
তোমার উষ্ণতায় সূর্য জ্বলে ৃপ্রেম জ্বলে আগুনে পুড়ে হয় সব ছারখার
তুমি ভস্ম হও ভস্মতায় হিমালয় পোড়াও,থাকেনা কোনো শূভ্র তুষার
তুমি শুচি হও,শূচিতে অন্তর বাজাও,সুরে ভরে ওঠে ঐ কোমলগান্ধার।

জগতে আনন্দ যতো

তুমি ভালবাসলেই আমার স্বপ্নগুলো পেম হয়
আমার প্রেমগুলো তখন  তোমার স্বপ্ন হয়ে যায়                                                                                                        
তুমি থাকলে জগতে আনন্দ হয় যতো
তুমি না থাকলে জগতে দুঃখ বেদনা ততো

তুমি আমার থাকলেই আমি বে্ঁচে থাকি
তুমি না থাকলে তখন আমি মরণকে ডাকি।

আমি ভালোবাসলে

আমি ভালোবাসলে ভালোবাসা হয়
না বাসলে হয়না
আমি চাইলে তুমি আমার হও
না চাইলে হওনা
আমি স্বপ্ন দেখলেই তুমি স্বপ্ন দেখো
না দেখলে দেখোনা
স্বপ্ন ঝালরে তোমাকে বা্ঁধলেই তুমি বে্ঁধে থাকো
না বা্ঁধলে বাধো্ঁনা
দুঃখ বেদনা নৈরাশ্য তোমাকে দিলেই নাও
না দিলে নাওনা
জীবন তোমার মাঝেই থেমে যেতে চায়
তবে তাই থেমে যাকনা
তুমি আর আমি আর আমাদের প্রেম
চির অমরতা পাকনা।


পদ্মকমল

আমি না থাকলে তুমি জলে ভিজে হয়ে থাকো পদ্মকমল
যেদিন বৃস্টি থাকেনা সেদিন কোথা পাও এতো জল
জলে ভেজে পদ্ম পাতা জলে ভেজে তোমার চোখ
আমি না থাকলে কে্ঁদে প্রকাশিত করো যতো শোক
জল থাকুক আর বৃস্টি না ঝরুক তুমি হয়ে থাকো পদ্মকমল
যখন জলও থাকেনা বৃস্টিও ঝরেনা তখন কোথায় পাও অশ্রুজল।

গোপন দীর্ঘশ্বাস

আজ এই ধূসর সন্ধ্যায় মন কেমন যেন বিষন্ন হয়ে উঠলো।কি ভেবে এই মন খারাপ হওয়া বুঝতে পারছিনা।সুখের আতিশয্যে তো জীবন চলছে, তবে কেন এই বিষাদ,কেন এই বিষন্নতা ! অতীতের কোনো গ্লানি কিংবা কোনো কিছু না পাওয়ার আর্তি নেইতো ? যা গোপনে এই ধূসর সন্ধ্যায় দীর্ঘশ্বাস হয়ে ঝরে পড়ছে। 

প্রেমময় কবিতা

প্রথমে যে চোখ দেখেছিলাম সে চোখে কাজল ছিলো না
তোমার কাজল কালো চোখ আমার চাহনী কেড়ে নিয়েছিলো
দেখেছিলাম ভ্রূ-যুগল যেনো দ্বিতীয়ার চাঁদ হয়ে ঝুলে আছে
দেখেছিলাম তোমার মেঘবরণ চুল
যে চুলে কালো মেঘের  জল ঝরতো অনবরত
তোমার ঠো্ঁট সব সময় হলুদ গা্ঁদা ফুল হয়ে থাকতো
আমি নিঃশ্বাসে তার সুবাস নিতাম
 আমার ঠো্ঁট তখন কে্ঁপে উঠতো
তোমার পরনে শাড়ি ঝিলমিল করে উড়তো বাতাসে
আমি দেখতাম নদীর বা্ঁকের মতো ভরা শরীর তোমার
তোমার আ্ঁচল উড়তো দমকা হাওয়ায় অসভ্যতায়
আমার চোখ তখন গিরিশৃঙ্গে আটকে যেতো
সন্ধ্যার নীল নীল আলোয় তূমি শরীরে সুবাস ছড়াতে
প্রজাপতি মাতাল হতো তখন মহুয়া বনে
আকাশের সব মেঘ হিম হয় আসতো
সব বৃস্টি ঝরে পড়তো তোমার শরীরের উপরে।


মঙ্গলবার, ১৫ নভেম্বর, ২০১৬

ঝরা পাতার গান

আজ খুব ভোরবেলায় ঘুম ভেঙ্গে যায়।সূর্য তখনো ওঠে নাই।কম্পিউটারে বসে ফেসবুকে নিউজ ফিডগুলো দেখছিলাম।হঠাৎ বন্ধু নেয়ামুলের টাইমলাইনে রবীন্দ্র সঙ্গীতের একটি অডিও ক্লিপের উপর চোখ স্থির হয়ে যায়।অনেক বৎসর আগে এক চৈত্রের পাতা ঝরা দুপুরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পুকুরপাড়ে বসে এই গানটি গেয়ে শোনায়েছিলো একটি মেয়ে। জীবনের পাদপ্রদীপের আলোয় সে মেয়ে আজ আর নেই।সেই গান সেই ভালোলাগার মুহূর্তগুলোও বিস্মৃত হয়ে গেছে । আমি অডিও ক্লিপটা অন্ করলাম, শুনলাম সেই গানটি-
"তুমি রবে নীরবে হৃদয়ে মম. নিবিড় নিভৃত পূর্ণিমানিশীথিনী-সম॥ মম জীবন যৌবন মম অখিল ভুবন. তুমি ভরিবে গৌরবে নিশীথিনী-সম॥ জাগিবে একাকী তব করুণ আঁখি,তব অঞ্চলছায়া মোরে রহিবে ঢাকি। মম দুঃখবেদন মম সফল স্বপন. তুমি ভরিবে সৌরভে নিশীথিনী-সম॥"
গানটি শুনতে শুনতে চোখ চলে যায়- সেদিনের সেই  উদ্যানের পুকুরপাড়ে। চৌচির করছে গাছগাছালি, খা্ঁখা্ঁ করছে রোদ্দুর। তপ্ত হাওয়ায় কড়ই গাছটি থেকে জীর্ণ পাতাগুলি ঝরে পড়ছে।

সোমবার, ১৪ নভেম্বর, ২০১৬

উপত্যাকার সেই মেয়ে

চেঙ্গী ভেলী, চেঙ্গী নদী দুটো নামই অনেক শুনেছি
কেমনই সে নদী কেমনই সে উপত্যাকা ? আমি শুনেছি-
পাহাড় আছে সেখানে, গিরি আছে সেখানে, ঝর্ণা আছে সেখানে,
আমি দেখিনি সে পাহাড়, দেখিনি সেই গিরি, দেখিনি সেই ঝর্ণা,
ঐ ঝর্ণাপাড়ে অরণ্য ছিলো, গাছগাছালি ছিলো, জুম চাষ ছিলো,
চেঙ্গী নদীর পাড়ে একটি গ্রাম ছিলো
সে গা্ঁয়ে এক মেয়ে ছিলো, হরিণীর মতো তার চোখ ছিলো
পরনে তার পিরান ছিলো, পায়ে তার নুপুর ছিলো,
নদীর জলে সে পা ভিজিয়েছিলো,
উপত্যাকায় ঘাস ছিলো,,মাধবীর ঝা্ঁড় ছিলো,
পাখী ছিলো, ভোরের দোয়েল ছিলো, শালিক ছিলো,
সেখানেে নীল আকাশ ছিলো, শ্রাবনের মেঘ ছিলো,
সেখানেও চা্ঁদ উঠতো, সেখানেও পাখী গান গাইতো,
চেঙ্গী ভেলী এখনো আছে, চেঙ্গী নদী এখনো বয়ে চলেছে
উপত্যাকায় অরণ্য আছে,,নদীতে জল আছে,
সেখানে আজো পূর্ণিমা হয় ,আজো বসন্ত আসে,
উপত্যাকার সেই পাহাড়ী মেয়েটা আছে কিনা
 এখনো সেখানে সে থাকে কিনা জানা নেই।

আলোর ঝর্ণাধারা

এমন রাক্ষুসে জ্যোৎস্নার আলোর ঝর্ণাধারা এ জীবনে আর আসবে না।গৃহত্যাগ করে নিরুদ্দেশ হওয়ার যে ক্ষণ আমি জীবনভোর খু্ঁজেছিলাম তা আজ রাতে আমারই দুয়ারের সামনে চলে এসেছিলো।কিন্তু সংসারের মানুষগুলোর মায়ার টানে আমার সেই লালিত গৃহত্যাগ করার স্বপ্ন আজ পূরণ হলোঁ না।

কাগজের নৌকা

অনেক দিন আগের কথা।একদিন দোকান থেকে সাতরঙ্গের সাতটি রঙ্গিন কাগজ কিনে নিয়ে আসি।ঘরের সব দরজা জানালা বন্ধ করে কাগজগুলো দিয়ে সাতটি নৌকা তৈরী করি। জীবনের এক উদ্দাম তারণ্য সময়ে একটি মেয়েকে আমি সাত নামে ডাকতাম,কিন্তু একসময়ে সে নামগুলোতে ডাকার প্রয়োজন ফুরিয়ে যায় ।একটি রঙ্গিন কলম দিয়ে সাতটি নৌকায় সেই সাতটি নাম লিখি। সেদিন ছিলো রর্ষার এক বিকেল।আকাশে মেঘ ছিলো।কোথাও রোদ নেই।আবার বৃস্টিও নেই। কবিদের মতো একটি ঝোলানো ব্যাগে করে নৌকাগুলো নিয়ে চলে যাই বালুর নদীর তীরে।একটি নি্র্জন নদীর কূল বেছে নেই। একটি স্টার সিগারেট ধরাই।মনে পড়ছিলো কি তখন কারো কোনো মুখের কথা ? নদীতে সেদিন স্রোত ছিলো।দমকা বাতাসও বইছিলো। আমি একে একে নাম লেখা কাগজের নৌকাগুলো বালুর নদীর জলে ভাসিয়ে দেই। দেখলাম- প্রবল স্রোতের টানে আর দমকা হাওয়ায় নৌকাগুলো  ভেসে ভেসে অনেক দূর চলে গেলো। 

দোলনচাঁপা

পূর্নিমারাতে রাধা সাদা শাড়ি পড়ে বের হতো।গলায় থাকতো শূচিশুভ্র কূ্ঁচের মালা,খোপায় পড়তো দোলনচা্ঁপা।জ্যোৎস্নার রঙ্গের সাথে সব মিলে যেতো, যেনো তাকে কেউ দেখতে না পায়।দোলনচা্ঁপা ফোটে বর্ষায়,আবার শরৎ হেমন্তেও ফুটতে দেখা যায়।ওর পাপ্ঁড়িগুলো হয় সাদা,গন্ধও দারুণ কাছে টানে।যেমন করে কাছে টানতো রাধা কৃষ্ণকে।
আজ শুক্লা চতূর্দশী চা্ঁদের রাত।সারা বোটানিক্যাল গার্ডেন ঘুরে খু্ঁজেছি দোলনচা্ঁপা,,কোথাও একটি  দোলনচা্ঁপাও পাইনি।আজকের এই Super Moonlit Night কি তবে ব্যর্থ হয়ে যাবে !

রবিবার, ১৩ নভেম্বর, ২০১৬

এই যে সকাল

এতোদিন পৃথিবীর অনেককিছুই হেলাফেলা করে দেখেছি।এই যে সকাল,দখিন দিক হতে এই যে ঝিরিঝিরি বাতাস,এই যে আম্রকাননে পাখীদের গান গাওয়া, এসব আগেও ছিলো। তখন এই সৌন্দর্যগুলি চোখে পড়ে নাই। এ রকম কতো মোহনীয় সকাল দিনের রোদ্রে হারিয়ে গেছে।তার ইয়াত্তা নেই।,আর এখন এই সকাল দেখি মু্গ্ধ নয়নে, এখনকার এই সকালের মাঝে বেলাশেষের বেদনার সুর শোনা যায়। সবাইকে ভোরের শুভেচ্ছা।

তিন ভূবনের তিনজন

১. মোহাম্মদ খুরশীদ আলম

কিছু সুর চির অম্লান, কিছু কণ্ঠ চির অমলিন। সেই সব কণ্ঠের বিচ্ছুরণ ঘটছে বাংলার প্রকৃতিতে, সব শ্রেণীর মানুষের কাছে। তেমনি এক কণ্ঠের জাদুকর মোহাম্মদ খুরশীদ আলম। যিনি দরদমাখা কণ্ঠে গান গেয়ে চলেছেন আজ পর্যন্ত। প্রথম প্লে ব্যাক করেন ১৯৬৯ সালে বাবুল চৌধুরীর পরিচালনায় এবং ইফতেখারুল আলমের প্রযোজনায় আগন্তুক ছবিতে। ১৯৬৯ থেকে আজ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিনশ ছবির গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। বাংলা সিনেমার সুবর্ণ সময়ের একজন খ্যাতিমান প্লে-ব্যাক সিঙ্গার খুরশিদ আলম। একটা সময় ছিল বাংলা সিনেমার গান মানেই খুরশিদ আলম। বাংলা চলচ্চিত্র সংগীতকে তিনি অনেক কিছু দিয়েছেন। অসাধারণ কণ্ঠ তার,সাবিনা ইয়াসমিনের সঙ্গে সর্বাধিক গান গেয়েছেন কণ্ঠশিল্পী খুরশিদ আলম। তার স্ত্রী রীনা আলম এবং দুই মেয়ে মেহরিন আলম ও মেহনাজ আলম। মোহাম্মদ খুরশীদ আলমের গান নিয়ে কেটে যায় সারাদিন।  যতদিন তিনি জীবিত আছেন, ভালো গান গেয়ে বেঁচে থাকতে চান।

২. আমজাদ হোসেন
আমজাদ হোসেন  একাধারে অভিনেতা, প্রযোজক, পরিচালক, চিত্রনাট্যকার, কাহিনীকার, সংলাপকার, গীতিকার, নাট্যকার, গল্পকার, ঔপন্যাসিক। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত গুণী এই ব্যক্তি ১৯৭০ সালের মুক্তিপ্রাপ্ত তাঁর লেখা চলচ্চিত্র জীবন থেকে নেয়া, পরবর্তীতে বাংলাদেশের মানুষের কাছে বিপুল জনপ্রিয়তা পায়। আমজাদ হোসেন নিজেও চলচ্চিত্র পরিচালনা করে খ্যাতি অর্জন করেন। তাঁর পরিচালিত গোলাপী এখন ট্রেনেসুন্দরীজন্ম থেকে জ্বলছিদুই পয়সার আলতাভাত দে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বাংলা চলচ্চিত্র।আমজাদ হোসেন অপূর্ব সৃষ্টিশীল একজন মানুষ। আমাদের দেশে তারমতো চলচ্চিত্র পরিচালকের আদৌ জন্ম হবে কি না সন্দেহ আছে।’ একজন আমজাদ হোসেন আমাদের বাঙালি জাতির অহঙ্কার। একজন আমজাদ হোসেন আমাদের চলচ্চিত্রের গর্ব, একজন আমজাদ হোসেন প্রবীণ শিল্পীদের অহঙ্কার। একজন আমজাদ হোসেন নিজেই একটি ইন্ডাস্ট্রি, যাকে নিয়ে নতুন প্রজন্ম গবেষণা করলে হয়তো নিজেদের মেধার বিকাশে তা কাজে লাগাতে সক্ষম হবেন।

৩. নায়করাজ রাজ্জাক
নায়করাজ রাজ্জাক একজন জীবন্ত কিংবদন্তী। জহির রায়হানের সুনিপুণ হাতের ছোঁয়ায় অসাধারণ লক্ষ্মীন্দর হয়ে দর্শকদের সামনে উপস্থিত হয়েছিলেন, সঙ্গে অপূর্ব সুন্দরী বেহুলারূপী সুচন্দা। ১৯৬৬ সালে মুক্তি পেল ‘বেহুলা’। ছবি সুপারহিট। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র পেল একজন নায়ক, যিনি পরবর্তী সময়ে এ দেশের চলচ্চিত্র শিল্পের অপরিহার্য নায়কে পরিণত হলেন। ঢাকার সিনেমা হলগুলোতে তখন পাক-ভারতীয় ছবির দাপট। ভারতের রাজকাপুর, দিলীপ কুমার, নার্গিস, পাকিস্তানের মোহাম্মদ আলী, জেবা, সুধির, শামীম আরা, ওয়াহিদ মুরাদ এবং কলকাতার ছবি বিশ্বাস, উত্তম কুমার, সুচিত্রা সেন, বিশ্বজিৎ, সৌমিত্রদের ছবির সঙ্গে পালা দিয়ে চলতে শুরু করল ঢাকার নির্মাতাদের নির্মিত ছবি। আব্দুল জব্বার খান, রহমান, শবনম, খলিল, ফতেহ লোহানী, খান আতা, সুমিতা দেবী, আনোয়ার হোসেন, সুচন্দাদের সঙ্গে যোগ হলো আরো একটি নাম ‘রাজ্জাক’।তারপর তার  নায়করাজ হওয়ার কাহিনী।তিনি হয়ে গেলেন বাংলা চলচ্চিত্রের মুকুট পরিহিত সম্রাট।

তোমাদের পাশে কেউ নেই

সিধু,কানু,চা্ঁদ,ভাইরব এরা এখন সবার কাছে বিস্মৃত নাম।ইতিহাসের পাতায় এদের আত্মত্যাগের কথা লেখা থাকলেও আমরা এদের নাম চিহ্ন ভুলে গেছি।আজ থেকে ১৬০ বছর আগে এদের নেতৃত্বে ইংরেজ শাসক,নীলকর,জমিদার,মহাজন,সুদখোর,এর বিরূদ্ধে এরা সসস্ত্র বিদ্রোহ করেছিলো।এই সিধু কানুদের সাথে যোগ দিয়েছিলো ত্রিশ হাজার সাওতাল সম্প্রদায়ের মানুষ। তাদের সেইদিনের আ্ন্দোলনের সাথে আরো একাত্ম হয়েছিলো কুমার,কামার,ডোম,তেলী,কর্মকার,চামার,মমিন সম্প্রদায়ের গরীব মুসলমান ও গরীব হিন্দু জনসাধারণ।

    গোবিন্দগঞ্জের নির্যাতিত অসহায় এই সাওতাল সম্প্রদায়ের মানুষগুলোর পাশে আজ একজন মানুষও নেই।

সূর্যের কাছে

আমি সূর্যকে কাছে টানতে চাই
প্রচন্ড উত্তাপে বুকে জ্বালাতে চাই আগুন
যে আগুন ছড়িয়ে যাবে উ্দ্যানে ধানক্ষেতে
যে আলোয় মেঘ জল হবে,জলে ভরবে নদী
আমি সেই আগুনের পুড়ে খার হতে চাই।
গিরি আগ্নেয়গিরি উপত্যাকা জ্বলবে লেলিহানে
জ্বলবে বৃক্ষ গাছগাছালি বন অরণ্য যতো
আমি সেই দগ্ধতার মতো তোমার প্রেমে
 প্রজ্জ্বলিত হয়ে জ্বলতে চাই অবিরত।

বংশী নদীর পাড়ে

তখন একে অপরের প্রতি মায়া জন্মাবার কাল। মাঝে মাঝে কঠিন শব্দে কথা বলতে ভালো লাগতো। একদিন ছুটির দিনে তাকে গানের ভাষায় বলি- চলো না ঘুরে আসি দূর কোনো অজানা থেকে।কপালকুন্ডলার মতো মৃদুস্বরে বললো- কোথায় থেকে ? বললাম- বংশী নদীর পাড়ে।এবার বনলতা সেনের কনঠে বললো- কিসে যাইবে ? আমি বললাম- গরুর গাড়ীতে।সে পড়লো কমলা রঙ্গের শাড়ি,আমি পড়লাম সবুজ পান্জাবী।বিকেলের আগেই পাবলিক বাসে আমরা সাভার পৌছে যাই।সেখান থেকে রিক্সায় বংশী নদীর পাড়ে।দু'ঘন্টার জন্য একটি ছোটো ডিঙ্গি নৌকা ভাড়া করি। আমরা ঘুরছি,নৌকা মাঝ দরিয়ায় চলে যায়। সন্ধ্যা নামছে, আকাশের লাল আভা বংশীর জল সোনাবরণ করে তুলেছে।বক,ডাহুক,শংখচিল ডানা ঝাপটে উড়ে যাচছে।মাঝিকে বললাম- গান গাও।সে গান গাইলো না।ছলাৎ ছলাৎ শব্দে বৈঠা বাইছে। তাকে বললাম- তুমি গান গাও। তার মুখেও গান নেই।কথা বলছে হাসিতে। দূর থেকে একটি পানসি নৌকা আসছে,কাছে আসলে দেখতে পাই,এটী একটি গ্রামের বিয়ের নৌকা,ভিতরে রূপবানের মতো বউ বসে আছে। কলের গানে বাজছিলো তখন- 'ও কী ও বন্ধু কাজল ভ্রমরারে কোন দিন আসিবেন বন্ধু কয়া যাও কয়া যাও রে।। যদি বন্ধু যাবার চাও ঘাড়ের গামছা থুইয়া যাও রে বন্ধু কাজল ভ্রমরারে কোন দিন আসিবেন বন্ধু কয়া যাও কয়া যাও রে..'

শনিবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৬

আকাশের সমান

জানালা দিয়ে বাগানবিলাসের ফুলগুলো ছু্ঁয়ে নেই ।মুহূর্তেই মন আমার সতেজ হয়ে যায়। এই জানালা দিয়েই একদিন চা্ঁদের আলো তোমার মুখে এসে পড়েছিলো।সেদিন যেনো সব ভালোবাসা ঘরে এসে আছরে পড়লো জ্যোৎস্নায়। আমি কতোবার রাজপথ দিয়ে হেটে গেছি দুপুরের রোদ্রে।মেঘ আর বৃস্টি চেয়েছি কতো,একফোটা জলও সেদিন ঝরেনি। দিনের বেলায় ল্যাম্পপোস্টের নীচে ভিখারীরা বসে থাকেনা,পথগুলো তাই খালি খালি লাগতো। কতোদিন একাকী চলে যেতে চেয়েছি পাহাড়ের উপর, ছু্ঁইতে চেয়েছি মেঘ, ধরতে চেয়েছি আকাশ,কিন্তু পারিনি। আমি পারি কেবল আকাশের সমান  ভালোবাসা তোমাকে দিতে।

এতো প্রেম,এতো মায়া

আমি থাকবো না তুমি থাকবে না প্রেম থাকবে না স্বপ্ন থাকবে না
আমাদের কোনো অভিজ্ঞান নেই কোনো চিহ্ন নাম নেই
আমরাতো এই ব্রহ্মাণ্ডেই ছিলাম,হেটেছিলাম পথে প্রান্তরে,যমুনার পাড়ে
আমাদের প্রেম দেখেছে উত্তরার আকাশ,দিয়াবাড়ীর কাশবন
আমাদের প্রেম দেখেছে তুরাগ নদীর তীরের বক ডাহুকেরা
বাড়ীর চন্দ্রতলায় কতো পূর্ণিমার আলো শরীরে মেখেছি
আমরা মিশেছি কতো মায়াবী রাতের নিঝুম গহীনেে
এই যে আমাদের এতো প্রেম,এতো মায়া- এর কোনো চিহ্ন থাকবে না !

সন্ধ্যার শুভেচছা

 আজকের এই সন্ধ্যায় তুরাগ নদীর তীরে দাড়িয়ে আছি।এই নদীর পাড়ের চরাচরে আধারে ঢেকে যাবে ,এই যে সূর্যাস্ত,এই যে দূরের লাল আভা -এগুলোও একটুপর থাকবেনা।সূর্য ডুবে যাবে,চা্ঁদ উঠবে, সে চা্ঁদ সারারাত আকাশে প্রদীপ হয়ে জ্বলবে। সবাইকে সন্ধ্যার শুভেচছা।

দূর আকাশর তারা

যারা চিরতরে চলে যায় তারা নাকি দূর আকাশে তারা হয়ে জ্বলে থাকে।এরকম অসংখ্য তারা আমি দেখি সন্ধ্যা রাতে,যে তারায় খু্ঁজে বেড়াই বাবা মা'কে। আমরা দু'জন যখন মারা যাবো তখন এমনি করেই কোথাও কোনো আকাশে তারা হয়ে থাকবো।আমাদের ছেলে মেয়েরা অন্তর্জালে বে্ঁধে থাকে, ওরা আমাদের মতো সন্ধ্যার আকাশ দেখেনা।হয়তো খুব কাছের কোনো আকাশে আমরা জ্বলে থাকবো কিন্তু আমাদেরকে ওরা খু্ঁজবেনা,দেখবেওনা।

শুক্রবার, ১১ নভেম্বর, ২০১৬

তোমাকে এভাবে চাইনি

তোমাকে এভাবে চাইনি,যেভাবে পাহাড় থেকে জলে ভরে নদী
যেভাবে আকাশ নেমে পড়ে সাগরে।
কিভাবে হবে তোমার সাগরে মিশে যাওয়া
কিভাবে শরীর হবে নদী  প্রেম হবে সাগর
কিভাবে তুমি আমার হবে,জ্যোৎস্না নেই পূর্নিমা নেই
আমি পাহাড়ের কাছে যাই,আমি নদীর কাছে যাই
 নমিত হই সাগরে, যেখানে নদী হয়ে তুমি মিলেছো।

আমার অশ্রুজলগুলো

তোমাকে ভালোবাসার আগেই আমার মায়াগুলো তোমার হলো
তোমাকে ভালোবাসার আগেই আমার স্বপ্নগুলো তোমার হলো
তোমার জন্য আমার সারা বিকেলের অপেক্ষাগুলো তোমার হলো
তোমাকে পাওয়ার জন্যে আমার আকুলতাগুলো তোমার হলো
তোমাকে না পাওয়ার দীর্ঘশ্বাসগুলো তোমার হলো
যে চুম্বনগুলো দেওয়া হয় নাই সেই অতৃপ্তিগুলো তোমার হলো
তোমাকে না পাওয়ার সকল গ্লানি ক্লেদ তোমার হলো
তোমার জন্যে অন্ধকারে এই যে বসে থাকা তাও তোমার হলো
আমার সকল কান্নার অশ্রুজলগুলো তোমার হলো
আমার এই সমস্ত সকল দুঃখের ভার আজ থেকে তোমার হলো।


সেই আসমার কথা

সিরাজগঞ্জ থেকে রাতের ট্রেনে ঈশ্বরদী যাচ্ছিলাম।ডাউন ট্রেন,অতো ভীড় ছিলো না। পথে উল্লাপাড়া থেকে স্কুল শিক্ষকের চেহারার এক লোক ওঠে,এবং এসে বসে আমারই সামনে।প্রথমে পাত্তা দিতে চাইছিলাম না, কিন্তু একাকী থাকলে যা হয়।ওনার সাথে অনেক কথা হয়।উনি একজন মুক্তিযোদ্ধা,পলাশডাঙ্গা যুব শিবিরের সদস্য ছিলেন।লতিফ মির্জা ছিলো তার কমান্ডার। পরে গণবাহিনী করেছেন। তারপরে যেটি করেন তা তিনি আকারে ইঙ্গিতে বলেছেন- নিষিদ্ধঘোষিত পূর্ববাংলা সর্বহারা পার্টি।আমি আর রাজনীতির দিকে কথা এগুলাম না।ওনাকে বললাম- ভাই আপনার নামটি জানা হলো না।উনি বললো:  সামাদ আসমী।বললাম: ছেলেমেয়ে? উনি বললো- বিয়ে করা হয়নাই।আমি বললাম নামের শেষে আসমী কেন ? একটু চুপ থেকে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলছিলো-  'আসমী নামে একটি মেয়েকে আমি ভালোবাসতাম,....'বলতে বলতে থেমে যায়।..ট্রেন তখন খটখট আওয়াজে বড়াল ব্রীজ অতিক্রম করছিলো।ওপারেই স্টেশন, ট্রেনটি থেমে যায় স্টেশনে। আসমী ভাইকে বললাম: তারপর ?  ওনার  চোখ জলে ছলছল করছিলো। বললো: আমি এই স্টেশনেই নেমে যাচ্ছি,যদি আবার কখনো দেখা হয়,তখন বলবো হতভাগী সেই আসমীর কথা।

বৃহস্পতিবার, ১০ নভেম্বর, ২০১৬

জীবনে জীবনে

 তুমি আছো জীবন থেকে জীবনান্তরে।দায়টা আমারই ছিলো তোমাকে ভালো রাখার।তা কি পেরেছি আমি ? যে প্রাচূর্যে দেবার কথা ছিলো তা হয়তো পাওনি,কিন্তু দুহাত ভরে তোমাকে ভালোবাসা দিয়ে গেছি। জীবন জুড়ে জড়া,অসুখ,যাতনা এসে হানা দিয়েছে বার বার।আমাদের  সত্ত্বার,মাঝে ভালোবাসাগুলোই রয়ে গেছে।এ জীবনে আর কাউকে নয়- 'তোমারেই করিয়াছি জীবনের ধ্রুবতারা,. এ সমুদ্রে আর কভু হব নাকো পথহারা। যেথা আমি যাই নাকো তুমি প্রকাশিত থাকো,. আকুল নয়নজলে ঢালো গো কিরণধারা ।'

সাফ কথা

আমি তোমাকে আজ সাফ সাফ বলে দিচ্ছি-
তুমিই আমার প্রথম প্রেম, প্রথম বিরহ, প্রথম চাওয়া, প্রথমা পাওয়া, প্রথম দ্বন্দ, প্রথম কলহ, প্রথম দিন, প্রথম রাত্রি, প্রথম ক্লেশ, প্রথম শ্লেশ,প্রথম আবেগ, প্রথম ঘৃণা,প্রথম দীর্ঘশ্বাস, প্রথম অশ্রু।
তোমার জন্যেই হয়েছিলো আমার প্রথম জন্ম, তোমার জন্যেই হবে আ্মার শেষ মৃত্যু।

শিপ্রা নদীর পারে

তারণ্যের সময়ে একবার শিপ্রা নদীর পাড়ে বেড়াতে গিয়েছিলাম। পাশেই ছিলো ঘন বন জঙ্গল,একটু ভিতরেই ছিলো একটি কাঠের দোতালা বাড়ী। নির্জন নিরিবিলি, চারদিক। বাড়ীটি থেকে সতেরো আঠারো বছরের একটি মেয়ে বের হয়ে আসে। অপরূপ সুন্দরী,পড়নে তার ঘাঘড়া, মুখে তার লোধ্ররেনু,,কপালে চন্দনের টিপ, নিম্ন নাভি,যেনো প্রথম যুবতী বিশ্বস্রষ্টার । আমি বিস্ময়ে তার দিকে তাকাতেই সে এসে আমার একটি হাত ধরে বলে- আমি শকুন্তলা।আমাকে নিয়ে যায় শিপ্রা নদীর পারে।একটি স্বর্ন অশোথের তলায় যেয়ে দু'জন বসি। সামনে স্রোতহীন স্বচছ জলের শিপ্রা নদী।আমি দূর্বাঘাসের উপর শুয়ে আছি। শকুন্তলা শিপ্রা নদীর জলে যেয়ে নামে ।আমাকে বলে যায়, আমি নগ্ন হয়ে স্নান করবো, তুমি চোখ বন্ধ করে থাকবে।আমি চোখ বন্ধ করে আছি, দক্ষিনের ঝরো বাতাসে অশোথের গাছ থেকে শতো শতো ঝরা পাতা আমার মুখের উপরে ঝরে পড়তে থাকে। যখন চোখ খুলি- দেখি শকু্ন্তলা নেই। কালিদাসের শকুন্তলা বইটি আমার বুকের উপর পরে আছে।

বুধবার, ৯ নভেম্বর, ২০১৬

রাত্রি মানো না, দিন মানো না

রোদ্রতাপে উষ্ণ হয়ে তুমি হেটে আসো আমার দিকে
ঘোমটা নেই মাথায়,বুকের আ্ঁচল এলোমেলো
তুমি তখন দুপুর মানো না, তুমি নির্জনতা মানো না ।
তোমার শরীর ভেজে শ্রাবন সন্ধ্যার বৃষ্টির জলে
রাতের অন্ধকার ঢাকে তারার আকাশ
তুমি তখন জ্যোৎস্না মানো না, শুকতারা মানো না।
ভালোবাসা রোদ্রে জ্বলে, শরীর ভেজে বৃষ্টিতে
শিহরিত হয় তোমার গ্রীবা, শিরা উপশিরা
তুমি তখন রাত্রি মানো না, দিনও মানো না ।

হায় স্বপ্নের দেশ !

এক মনিকার জন্য বেচারা ক্লিনটনের কতোই না গঞ্জনা আর বদনামি শুনতে হয়েছিলো।মনিকার আবেদনময়ী শরীরের উষ্ণ বাতাসে সেসময়ে হোয়াইট হাউজের প্রেসিডেন্টের চেয়ার কে্ঁপে উঠেছিলো।আজ কি দেখলাম- একজন রমণীমোহনকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করে হোয়াইট হাউজের প্রেসিডেন্টের চেয়ারে বসিয়ে দিলো।শুনতে পাচ্ছি নিকোল এ্যানিস্টন,সারা জে, মিয়া খলিফার মতো বিখ্যাত হটেস্ট পর্ণ স্টাররা হোয়াইট হাউজে চাকুরী করার জন্য উতলা হয়ে উঠেছে।বড়ো বড়ো ফ্যাসান হাউজগুলোতে লেটেস্ট স্টাইলের বিকিনি,ব্রা,প্যান্টি,প্যান্টিহুজ বানানোর ধূম পড়েছে।স্বয়ং মেলোনিয়াও নাকি নগ্ন সাতারে অংশ নিয়ে এ বিজয়কে সেলিব্রেট করবে। হায় কলিকাল ! হায় স্বপ্নের দেশ !

মঙ্গলবার, ৮ নভেম্বর, ২০১৬

পথের ধারের ভিকারিনী

উত্তরা ৫নং লেকের ওয়াকওয়ের পাশে এই ভিখারিনী বসে থাকে।মলিন কাপড় পড়ে করুণভাবে চেয়ে থাকে মানুষের দিকে,কেউ দুটো টাকা  তাকে দেয় কিনা।আমি দেখা হলেই পা্ঁচ দুই টাকা দেই।প্রতিদিন এই ভিখারীর শীর্ণ করুণ মুখখানি দেখতে দেখতে কেমন যেনো মায়া জন্মে গেছে, আজ সেই হতশ্রী করুণ মুখের এই ছবিটি তুললাম। আজ আর কোনো ভিক্ষা নয়, আজ এমনিতেই মমতায় তাকে একশত টাকা দিয়ে দেই।মূহূর্তেই তার দুঃখের মুখ খুশীতে ভরে যায়, তার সেই খুশীর ঝিলিক সকালবেলায় লেকের পানিতেও যেনো ঝিলমিল করে উঠেছিলো।

নিরুদ্দেশের পথ

আজ কয়েকদিন ধরে কি একটা ব্যাপার ঘটেছে আমার মধ্যে।কাউকেই ভালো লাগছে না।সংসারের প্রতি কেমন যেনো অনাসক্তি দেখছি।ঘর থেকে পথে বের হলে অনেক পথ দেখতে পাই।কোন্ পথ দিয়ে হেটে গেলে জীবন শুদ্ধ হবে, কোন পথ দিয়ে ফিরে আনবে মায়ার টানে ঘরে। আমি  কিছুই বুঝতে পারছি না। আমাকে কোনো নিরুদ্দেশের পথ হাতছানি দিয়ে ডাকছেনা তো ? , 

যতোদিন বে্ঁচে আছি

যতোদিন বে্ঁচে আছি নির্মোহ থাকতে চাই।যতোদিন বে্ঁচে আছি সিক্ত হতে চাই ভালোবাসায়।যতোদিন বে্ঁচে আছি পাখীরা গান গাক, বাগানে ফুল ফুটুক,অরণ্যে লাগুক দোলা।যতোদিন বে্ঁচে আছি ভরা নদী কল্লোলিত হোক।কপোতেরা মেলুক পাখা ঐ নীল আকাশে। শান্তির গানগুলি ভেসে বেড়াক বাতাসে।

কতোটুকু ভালোবাসলে

কতোটুকু তোমাকে ভালোবাসলে আকাশে মেঘ হবে
মেঘগুলো জল হবে,পূর্ণতা পাবে নদী
কতোটুকু তোমাকে ভালোবাসলে বসন্তে ফুটবে ফুল
মৌবন হবে পল্লবে সুশোভিত, মৌমাছিরা গাইবে গান
কতোটুকু তোমাকে ভালোবাসলে কবিতায় তোমাকে পাওয়া যাবে
 পাবো তোমার কস্তরী সুগন্ধ ললাট,কাজল চোখ আর কূচবরণ কেশ
কতোটুকু ভালোবাসলে তুমি হবে আমার গীতি কবিতা।

নয়নতারা

রাস্তার পাশে ঝোপে ঝাড়ে ওরা ফুটে থাকে।কেউ দেখে কেউ দেখেনা।সন্ধ্যা মালতীর মতো পাগলকাড়া গন্ধ ওদের নেই।তাই কেউ ঠিকমতো কাছেও টানতে চায়না।কেন ওর প্রতি এতো অনাদর এতো অবহেলা ? যুগে যুগে কতো প্রেমিক তার প্রেয়সীকে আদর করে ডাকতো নয়নতারা।আজ উত্তরা ১৩ নংসেক্টর লেকের ওয়াকওয়ের পাশে নয়নতারাকে দেখতে পাই।প্রথমে হাত দিয়ে ওকে স্পর্শ করি, তারপর একটি তারা ছি্ঁড়ে ঠো্ঁটে,গালে,চোখে ছু্ঁয়ে দেই। স্পর্শের অনুভুতিগুলি ঠিক প্রেয়সীদের মতোই মনে হলো। সবাইকে সুপ্রভাত।

সোমবার, ৭ নভেম্বর, ২০১৬

তোমার দেওয়া সেই রাখী

আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ের কথা। একটি সরকারী প্রকল্পের মূল্যায়নের কাজে বাগেরহাট গিয়েছিলাম।আমাদের টিমে ছয়জন ছেলেমেয়ে ছিলো, তারমধ্যে একজন হিন্দু,মেয়ে ছিলো। যেদিন ঢাকা ফিরবো, সেদিনই আমার দু'চোখ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়। নাইট কোচে ঢাকা আসতে আসতে চোখ আরো বেশী ফুলে যায় এবং যন্ত্রণায় কস্ট পাচ্ছিলাম।আমি তখন দক্ষিনখানে নিজ বাড়িতে একাকী থাকি, এ কথা আমার সহকর্মী সবাই জানতো। বাস যখন সকালে গাবতলি পৌ্ঁছে, তখন নিজেকে খুব অসহায় লাগছিলো। আজ এতোদিন পর কাউকে ছোট করছি না, সেদিন কেউই আমাকে তাদের বাসায় নিয়ে যাবার কথা বলে নাই। একমাত্র সেই হিন্দু মেয়েটি আমাকে ওদের বাসায় নিয়ে যায়। একজন ভাইরাস রোগীকে বাসায় তিন দিন রেখে বোনের সেবা দিয়ে ভালো করে তোলে।তারপর আমাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।
       আজ তিরিশ বছর হয়ে গেছে, আমার সেই 'মালাউন' বোনটির সাথে কোনো যোগাযোগ নেই।যদি কখনো ওর দেখা পাই,তাহলে ওর পড়িয়ে দেওয়া অদৃশ্য সেই রাখীটি ফিরিয়ে দিয়ে বলবো- এটির মর্যাদা এখন আর আমার কাছে নেই।

ডেসডিমোনা নেই প্রেম আছে

সেক্সপীয়ারের অথেলো নাটকে ডেসডিমোনার ট্র্যাজিক মৃত্যু আমাদের ব্যথিত করে।বেশিরভাগ সময় সে নিষ্ক্রিয় তবু তার সারল্য,স্বভাবের মাধুর্য্য,নোংরা দিকের অজ্ঞতা,ওথেলোর প্রতি চূড়ান্ত ভালবাসা তার প্র্রতি আমাদের মমত্তবোধ বাড়িয়ে দেয়।
ডেসডিমোনা সংসার জীবনে অনভিজ্ঞ বলেই ওথেলোর ভেতরের ক্রোধ চোখে পড়ার আগেই তাকে মৃত্যু বরন করতে হয়।শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তার বাঁচার আকুতি আমাদের স্পর্শ করে। তাকে নির্বাসিত করার জন্য ওথেলোকে অনুরোধ করে।কিন্তু ওথেলো তখন উন্মত্ত।

অথেলোর প্রতি তার অকৃত্তিম ভালোবাসা ও আবেগ কখনো কমেনি,মৃত্যুর পূর্বেও হত্যাকারী হিসেবে সে তার স্বামীকে অভিযুক্ত করে নাই।এমিলিয়ার প্রশ্নের উত্তরে তাই সে বলে-
Nobody- I myself, Farewell
Commend me to my kind lord. O farewell

এই যে এতো জল

আমার  চোখ সেই পথের দিকে চেয়ে থাকে,যে পথের সকল লতা গুল্ম ঘাস পায়ে মাড়িয়ে তুমি চলে গেছো।তারপর আকাশে জমেছে মেঘ,ঝরেছে জল, সব পথ কা্দাজলে ভেসে গেছে কিন্তু মেঘের নীচে কাদায় হেটে কেউ আর ফীরে আসেনি । এই যে এতো জল,এতো মেঘ- যে জলে ভিজে ভিজে আমি একাই হাটছি, আমার এই বৃষ্টি ভেজা একাকাী ভালোবাসা উপভোগ করলো না কেউ।

রবিবার, ৬ নভেম্বর, ২০১৬

ঊষা চক্রবর্তী

আমার বিবাহের মেয়ে দেখবে। তাই ছুটি নিয়ে ঢাকা থেকে বাড়ীতে এসেছি। বাড়ীতে মা আর এক দু'জন কাজের মানুষ ছাড়া আর কেউ নেই। শরীর ক্লান্ত ছিলো,খাওয়া দাওয়া করে একটু তাড়াতাড়িই শুয়ে পড়ি। আমি একাকী এক ঘরে শুয়েছিলাম।হেরিকেন এক কোনে টিম টিম করে জ্বলছিলো।গ্রামের রাত। ক্রমেই  নিঝুম হয়ে আসছে কিন্তু ঘুম আসছিলো না । ঝি্ঁঝি্ঁ পোকা আর পিছনের বা্ঁশ ঝাড় থেকে থেমে থেমে পে্ঁচার ডাক শোনা যাচ্ছিলো।রাতও গভীর হতে থাকে।হঠাৎ,দড়জায় কড়া নারার শব্দ শোনা যায়।আমি কান পেতে আছি, দড়জা খুলছি না। একটুু পর  মেয়ে কণ্ঠের গুমরে গুমরে কান্নার ধ্বনি শোনা গেলো।ভাবলাম কে কা্ঁদছে ? আমি হেরিকেনের আলোটা বড়ো করে দরজা খুলে দেই। দেখি- সাদা ধবধবে একটি শাড়ি পড়ে আমাদের গ্রামের ঠাকুরবাড়ীর অকাল বৈধব্য ঊষা চক্রবর্তী দাড়িয়ে আছে।ও সোজা ঘরে ঢুকে আমার বিছানায় বসে পড়ে। তখনও সে কাঁদছে। ঊষা আমার সাথে একই স্কুলে পঞ্চম ক্লাশ পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। অসম্ভব সুন্দরী মেয়ে,সুচি্ত্রা সেনের মতো চোখ।আমি ওকে বললাম, তুমি এতো রাতে একাকী আমার ঘরে আসিলে কেন ? উষা বলিলো- তুমি আমাকে ঢাকা নিয়ে যাও। যদি না নাও, তাহলে কালকেই আমি আত্মহ্ত্যা করিব। মনে মনে ভাবিলাম-বিবাহের পাত্রি দেখিতে আসিয়াছি, এ কোন্ আপদ ! আমি বলিলাম- আমিতো তোমাকে কখনো ভালোবাসি নাই। তুমি এসব কথা বলিতেছো কেন ? উষা বলিল- তুমি ভয় পাইয়ো না,আমি তোমার ঘর করিবো না। তুমি কেবল আমাকে কাশীতে যাওয়ার ব্যবস্থা করিয়া দেবে।'এই বলে ঊষা চক্রবর্তী ঘর হতে বের হয়ে চলে গেলো।

        পরের দিন ভাবলাম- আপদটি আবারও যদি আজ রাতে আসে, তাই ভয়ে মা'কে সরল মনে ঘটনাটি বলে দেই। মা বিস্ময়ে বললো- ঊষা চক্রবর্তী আসবে কোত্থেকে ?ওতো  দুই দিন আগে ওদের বাড়ীর বকুল গাছের ডালে ফা্ঁসি দিয়ে   আ্ত্মহত্যা করেছে।

শনিবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৬

পুরানো জীর্ণ প্রেমকথা

অনেক আগের একটি ঘটনার কথা। বাড়ীতে সেদিন আমি একা ছিলাম, তখন অনেক রাত্রি হইয়াছে। হঠাৎ চিত্ত কেমন যেনো উতলা হইয়া উঠিলো।ভাবিলাম বুকের নীচের কিছু কথা কবিতায় লিখিয়া রাখি কিন্তু লিখিতে পারিলাম না। কোনো শব্দই মনে আনিতে পারিতেছিলাম না। একটি সিগারেট ধরাই, দরজার খিরকি খুলিয়া বাহিরে বারান্দায় চলিয়া যাই। সেদিন ছিলো হেমন্তের কৃষ্ণপক্ষের রাত্রি।চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার।আকাশে একটি তারাও দেখিতে পাইলাম না।কেমন যেনো দম বন্ধ হইয়া আসিতেছিলো। হাতের সিগারেটের পোড়া অর্ধেকটা উঠানে ফেলিয়া দিয়া রুমের মধ্যে চলিয়া আসি।টেবিলের উপর ল্যাম্টটি তখনো মিটি মিটি করিয়া জ্বলিতেছিলো। টিনের ট্রাংক হইতে পুরানো ডায়েরীটা বাহির করিয়া, ল্যাম্পের আলোয় পাতা উল্টাইয়া পড়িবার চেস্টা করি কিন্তু পড়িতে পারিলাম না। চোখ ঝাপসা হইয়া আসিতেছিলো। কয়েকদিন পর আমার বিবাহের সানাই বাজিয়া উঠিবে। ভাবিলাম- পুরানো এ জীর্ণ প্রেমকথা ডায়রীর পাতায় রাখিয়া লাভ কি ! কয়েকটি পাতা টানিয়া ছিড়িয়া ফেলিলাম। ছে্ঁড়া টুকরাগুলো জানালা দিয়া বাহিরে ফেলিয়া দেই, অন্ধকারে সে টুকরোগুলো দমকা বাতাসে ধূলোবালিতে হারিয়ে গেলো !

শুক্রবার, ৪ নভেম্বর, ২০১৬

মুক্তি যুদ্ধের গান


মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কে্ন্দ্র থেকে অনেক সুন্দর সুন্দর দেশাত্ববোধক গান বাজানো হতো, যা রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের প্রেরণা দিতো, আপামর জনগণকেও উদ্বুদ্ধ করতো যুদ্ধে যাবার। সেই রকমই একটি উদ্দীপনামূলক গানের কথা আজ খুবই মনে পড়ছে। যে গানটি এই অস্থির সময়ে সবারই শোনা প্রয়োজন। দুঃখ এই যে সেইসব গানগুলি এখন আর বাজানো হয় না।এবার শোনা যাক সেই গানটি-

আমার এ দেশ সব মানুষের, সব মানুষের।।
চাষাদের, মুটেদের, মজুরের ।।
গরিবের নিঃস্বের ফকিরের
আমার এ দেশ সব মানুষের, সব মানুষের।।
নেই ভেদাভেদ হেথা চাষা আর চামারে,
নেই ভেদাভেদ হেথা কুলি আর কামারে।।
হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ।।
দেশ মাতা এক সকলের।

(শিল্পীঃ রথীন্দ্র নাথ রায়, সুরকারঃ খাদেমুল ইসলাম বসুনিয়া
গীতিকারঃ আলী মহসিন রাজা, বছরঃ ১৯৭১,
পরিবেশনা: স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র।)

বৃহস্পতিবার, ৩ নভেম্বর, ২০১৬

নীল অপরাজিতা

 ইতিহাস তার গৌরব-গর্ব ও কলঙ্ক দায়কে একসূত্রে গেঁথে  রাখে। এই গেঁথে রাখা পথ বেয়েই মানুষের প্রবাহমান জীবনস্রোত বয়ে চলে কাল থেকে কালান্তরে। ইতিহাসের এমনি এক ধূসর পথে সীমান্ত-শহর মেহেরপুরের কোল ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে আমঝুপি। এই পথে একদিন মোঘল-সেনাপতি মানসিংহের বিজয়-রথ ছুটেছে, এই পথে ভাস্কর পণ্ডিতের বর্গীদল ধূলি উড়িয়ে গেছে লুণ্ঠনের কালো হাত বাড়িয়ে, বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার অধিপতি নবাব আলীবর্দ্দী খাঁ-র মৃগয়ায় স্মৃতিও রয়েছে এইখানে। পলাশীর পরাজয়ের নীল-নকশাও রচিত হয়েছিল এইখানে-এই আমঝুপিতে। 
                         অনেকদিন আগে কোনো এক হেমন্তের সকালে কাজলা নদীর তীরে আমঝুপিতে নীলকুঠি দেখতে গিয়েছিলাম।আমার সাথে ছিলো জেসমিন নামে একটি মেয়ে। মেহেরপুর থেকে আধাপাকা পথে রিকসায় যাচ্ছিলাম আমরা। পথে যেতে যেতে রাস্তার দু'পাশে দেখেছিলাম নীল অপরাজীতার ঝা্ঁড়। একটি কাকতালীয় ঘটনা সেদিন ঘটিছিলো- জেসমিনের পরনে ছিলো নীল রংএর সালোয়ার কামিজ,আমার পড়নে ছিলো নীল টি-সার্ট, রাস্তার দু/পাশে নীল অপরাজীতা - দেখতে যাচ্ছি আমজুপির নীলকুঠি। কি মুগ্ধ  চোখে দেখেছিলাম সেদিনের সেই অপরাজিতা,যার রং ছড়িয়ে গিয়েছিলো জেসমিনের চোখে মুখে। তারপর  কাজলা নদীর তীরে ইতিহাসের ধূলি পথে আমরা হেটেছি। তারপর চলে গেছে তিরিশ বছর, জেসমিন নামের  সেই মেয়েটির  আর দেখা পাইনি।

তাদের স্নেহগুলি

 হঠাৎ করেই হাত পা হিম হয়ে আসে। কোনো কাজ হাতে উঠতে চায় না। আকাশের দিকে তাকিয়েও কোথাও ছায়া খু্ঁজে পাই না।শীতল ছায়া দেয়ার মানুষগুলো এখন আর পৃথিবীতে নেই। একে একে চলে গেছেন জননী ও বড়ো দুই বোন।যারা মায়ের আসন থেকে আপন ছায়ায় ঢেকে রেখেছিলো আমাকে।এদের শূণ্যতায় বড়ো একা লাগে।একটু স্নেহ পাওয়ার জন্য মন কাঙ্গাল হয়ে যায়।একটু ছায়ার জন্য প্রাণ আকুল হয়ে থাকে।

সন্ধ্যা মালতী

এই ফুলটি ফোটে সন্ধ্যা বেলায়, তাই ওর নাম সন্ধ্যা মালতী। সারারাত মাতাল করে গন্ধ বিলায়,পরের দিন দুপুরের আগেই সে ঝরে যায়। ফুলটির প্রচন্ড ক্ষমতা আছে দয়িতকে কাছে টানার। তাইতো মেয়েরা  রাতের বেলায় ওকে খোপায় বে্ঁধে রাখতে পছন্দ করে। যেনো - 'ঐ মালতীলতা দোলে পিয়াল তরুর কোলে, পূব হাওয়াতে।' 'আজ সকালে পথে হাটতে হাটতে এক বাড়ীর সামনে ওর দেখা পাই। তখনও সে সতেজ ছিলো, গন্ধও ছিলো রাতের সুবাসের মতোই।তাইতো ওকে ক্যামেরায় বন্দী করে ফেললাম।


বুধবার, ২ নভেম্বর, ২০১৬

মনোরম বিকেলের রোদ্র

সূর্য তখন পশ্চিমে।বিপরীত দিক থেকে বিকেলের রোদ্র এসে পড়েছে উত্তরা লেকের পূ্র্ব পাড়ে কলাগাছের ঝাড়ে,লেকের জলও তখন চিকচিক করছিলো। এই মনোরম দৃশ্যটি ধারণ করি আমার Canon FOS ক্যামেরায়।
ছবি Credit: Myself
Glamour Image Photography


নিরুদ্দেশের পথে

আজ সন্ধ্যায় ইজি চেয়ারে  হেলান দিয়ে বসে ভাবছিলাম,সারাটা জীবন কেবল ভুলের পিছনে ছুটেছি।যেখানেই গিয়েছি সেখানেই মায়া মরিচীকার দেখা পেয়েছি।যে পথ দিয়ে ছুটে গিয়েছি তা ছিলো গ্লানির।জীবনের সেই দুরন্ত পাগল হাওয়া আজ আর নেই, যা দিয়ে জীবনটাকে পরিশুদ্ধ করবো কিংবা এমন কেউ নেই যে সঠিক পথ দেখিয়ে দেবে। আজ এই  পরন্ত বেলায় দিগন্তে চোখ মেলে ভাবছি- এই থেমে থাকা জীবন কোথায় কোন্  নিরুদ্দেশের পথে যেয়ে শেষ হবে।

মঙ্গলবার, ১ নভেম্বর, ২০১৬

ইন্টারনেট

ইন্টারনেটে কতো ফেক্ ব্যাপারই যে ঘটে, তা যাছাই বাছাই না করে ' আগে ভাং মন্দির !'
কতো ইবলিশ কতো ভূয়া জিনিসই যে পোস্ট দেয়, সেগুলো যাছাই বাছাই না করে ' আগে ভাং দেবী মূর্তি !'
কতো বেজন্মা আছে,অন্য একজনের ছবি দিয়ে ভূয়া আইডি তৈরী করে ভূয়া পোস্ট দেয়, এসবের কোনো যাছাই বাছাই না করে, 'আগে জ্বালাও বাড়ি ঘর !'
হায় এদের বিদ্যা, হায় এদের বিদ্যা বুদ্ধির দৌড় !
অথচ, আমাদের দেশে আইসিটি আইন আছে, সংক্ষুব্ধ হলে যে কেউ এ আইনে মামলা করতে পারে।


আমিই লিখবো কবিতা যতো

মায়াবতি মেয়ে,পরিপাটি করো তোমার এলোমেলো চুল
পরনের নীলাম্বরীর আ্ঁচলওতো ছু্ঁয়ে ছু্ঁয়ে চলেছে ঘাস
চোখের কাজলও কালি হয়ে আছে চোখে, ভ্রূকুটির সংকেত তাই বোঝা যায়না
মায়াবতি মেয়ে ভালো করে আ্ঁকো তোমার ঠোটের রং
পায়ের ঘুঙ্গুরের শব্দের তাল ঠিক নেই, বেসুর হয়ে আছে কোমলগান্ধার।

মায়াবতি, তুমি এলোমেলো কবিতার পংতিমালার মতো ছন্দহীন
কিভাবে আসবে এই পারিজাতে এই উদ্যানে,কিভাবে শুয়ে দেখবে আকাশ
কিভাবে দেখবে তুমি- কে লুব্ধক, কে কালপুরুষ, কে পরপুরুষ !
মায়াবতি, রাতের শরীরে বাজে তোমার সন্ধ্যা আরতির গান
তুমি তাই হয়ে ওঠো আমারই ধ্রুপদি কবিতার মতো দ্রোপদী একজন
 এই রাত্তিরে আমিই কবিপুরুষ তোমার, আমিই লিখবো কবিতা যতো, যতো গান।