রবিবার, ১৩ নভেম্বর, ২০১৬

তিন ভূবনের তিনজন

১. মোহাম্মদ খুরশীদ আলম

কিছু সুর চির অম্লান, কিছু কণ্ঠ চির অমলিন। সেই সব কণ্ঠের বিচ্ছুরণ ঘটছে বাংলার প্রকৃতিতে, সব শ্রেণীর মানুষের কাছে। তেমনি এক কণ্ঠের জাদুকর মোহাম্মদ খুরশীদ আলম। যিনি দরদমাখা কণ্ঠে গান গেয়ে চলেছেন আজ পর্যন্ত। প্রথম প্লে ব্যাক করেন ১৯৬৯ সালে বাবুল চৌধুরীর পরিচালনায় এবং ইফতেখারুল আলমের প্রযোজনায় আগন্তুক ছবিতে। ১৯৬৯ থেকে আজ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিনশ ছবির গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। বাংলা সিনেমার সুবর্ণ সময়ের একজন খ্যাতিমান প্লে-ব্যাক সিঙ্গার খুরশিদ আলম। একটা সময় ছিল বাংলা সিনেমার গান মানেই খুরশিদ আলম। বাংলা চলচ্চিত্র সংগীতকে তিনি অনেক কিছু দিয়েছেন। অসাধারণ কণ্ঠ তার,সাবিনা ইয়াসমিনের সঙ্গে সর্বাধিক গান গেয়েছেন কণ্ঠশিল্পী খুরশিদ আলম। তার স্ত্রী রীনা আলম এবং দুই মেয়ে মেহরিন আলম ও মেহনাজ আলম। মোহাম্মদ খুরশীদ আলমের গান নিয়ে কেটে যায় সারাদিন।  যতদিন তিনি জীবিত আছেন, ভালো গান গেয়ে বেঁচে থাকতে চান।

২. আমজাদ হোসেন
আমজাদ হোসেন  একাধারে অভিনেতা, প্রযোজক, পরিচালক, চিত্রনাট্যকার, কাহিনীকার, সংলাপকার, গীতিকার, নাট্যকার, গল্পকার, ঔপন্যাসিক। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত গুণী এই ব্যক্তি ১৯৭০ সালের মুক্তিপ্রাপ্ত তাঁর লেখা চলচ্চিত্র জীবন থেকে নেয়া, পরবর্তীতে বাংলাদেশের মানুষের কাছে বিপুল জনপ্রিয়তা পায়। আমজাদ হোসেন নিজেও চলচ্চিত্র পরিচালনা করে খ্যাতি অর্জন করেন। তাঁর পরিচালিত গোলাপী এখন ট্রেনেসুন্দরীজন্ম থেকে জ্বলছিদুই পয়সার আলতাভাত দে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বাংলা চলচ্চিত্র।আমজাদ হোসেন অপূর্ব সৃষ্টিশীল একজন মানুষ। আমাদের দেশে তারমতো চলচ্চিত্র পরিচালকের আদৌ জন্ম হবে কি না সন্দেহ আছে।’ একজন আমজাদ হোসেন আমাদের বাঙালি জাতির অহঙ্কার। একজন আমজাদ হোসেন আমাদের চলচ্চিত্রের গর্ব, একজন আমজাদ হোসেন প্রবীণ শিল্পীদের অহঙ্কার। একজন আমজাদ হোসেন নিজেই একটি ইন্ডাস্ট্রি, যাকে নিয়ে নতুন প্রজন্ম গবেষণা করলে হয়তো নিজেদের মেধার বিকাশে তা কাজে লাগাতে সক্ষম হবেন।

৩. নায়করাজ রাজ্জাক
নায়করাজ রাজ্জাক একজন জীবন্ত কিংবদন্তী। জহির রায়হানের সুনিপুণ হাতের ছোঁয়ায় অসাধারণ লক্ষ্মীন্দর হয়ে দর্শকদের সামনে উপস্থিত হয়েছিলেন, সঙ্গে অপূর্ব সুন্দরী বেহুলারূপী সুচন্দা। ১৯৬৬ সালে মুক্তি পেল ‘বেহুলা’। ছবি সুপারহিট। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র পেল একজন নায়ক, যিনি পরবর্তী সময়ে এ দেশের চলচ্চিত্র শিল্পের অপরিহার্য নায়কে পরিণত হলেন। ঢাকার সিনেমা হলগুলোতে তখন পাক-ভারতীয় ছবির দাপট। ভারতের রাজকাপুর, দিলীপ কুমার, নার্গিস, পাকিস্তানের মোহাম্মদ আলী, জেবা, সুধির, শামীম আরা, ওয়াহিদ মুরাদ এবং কলকাতার ছবি বিশ্বাস, উত্তম কুমার, সুচিত্রা সেন, বিশ্বজিৎ, সৌমিত্রদের ছবির সঙ্গে পালা দিয়ে চলতে শুরু করল ঢাকার নির্মাতাদের নির্মিত ছবি। আব্দুল জব্বার খান, রহমান, শবনম, খলিল, ফতেহ লোহানী, খান আতা, সুমিতা দেবী, আনোয়ার হোসেন, সুচন্দাদের সঙ্গে যোগ হলো আরো একটি নাম ‘রাজ্জাক’।তারপর তার  নায়করাজ হওয়ার কাহিনী।তিনি হয়ে গেলেন বাংলা চলচ্চিত্রের মুকুট পরিহিত সম্রাট।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন