শনিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৬

অহংকার ছিলো যৌবনের

তোকে যেদিন প্রথম দেখেছিলাম,অহংকার ছিলো যৌবনের
অহংকারে হেটেছিস তোর বাড়ীর উঠানে
কাঁদা লাগাসনি পায়ে,জলে ভিজাসনি শাড়ি
বলেছিলাম তোকে- বু্ঁনো জ্যোৎস্নায় স্নান করতে এক সাথে
তুই খুলেসনি শাড়ি,খুলেসনি অন্তর্বাস,
কিসের এতো অহংকার ছিলো তোর ?

যৌবনতো শুকিয়ে ফেলেছিস,অহংকার চূর্ণ করেছিস বলিরেখায়
নদীর জল শুকিয়ে ফেলেছিস
কোথায় সেই ফেনায়িত ঝর্ণাধারা ?
অনুর্বর ভুমি,শুকিয়ে চৌচির হয়েছে মৃৃত্তিকা
এমন অনুর্বর ভুমি এমন জলহীন নদী পছন্দ করিনা

যদি পারিস আবার নদী হ,আবার জলে ভর্ নদী
আবার উর্বর কর্ ভূমি
তবেই আমি লাঙ্গলের ফলা চালাবো,সাঁতরাবো নদী।

জীবন যেখানে যেমন

আজ তিরিশ উত্তর প্রথম দিন।সময়ের সংখ্যা নীচের দিকে নামছে।শেষ সেকেন্ডের পর প্রথম সেকেন্ড শুরু হবে।আতশবাজি করে সেলিব্রেশন নয়।আকাশে উড়ানো যাবেনা কোনো আলোর ছটা।পানশালা বন্ধ থাকবে।নুপুরের নিক্কনও বাজবেনা।গানও হবেনা এই রাতে।খোকা খুকুদের ঘরে ফিরতে হবে রাত আটটার মধ্যে।সব আনন্দ বন্ধ ঘরের মধ্যে দম বন্ধ হয়ে আসে।জন্মেছি এই দেশে। হায় ! জীবন যেখানে যেমন।

্প্রবেশাধিকার

কানে কানে কোনো কথা শুনতে চাইনা
বুকে বুকে ব্যর্থ প্রেমের উচ্ছাস নয়
সাগরের ঢেউ ভাঙ্গুক উদোম বালুকাবেলায়-
যদি থাকে প্রেম যদি জ্বলে আগুন অন্তর্জালায়
কোনো আপোষ করো না প্রেম কস্তরী লাভে
হৃদয়ে হৃদয়ে বাজুক সুর কোমল গান্ধার                                                                                                           শরীর কেন্দ্রবিন্দুতে হোক ্প্রবেশাধিকার।

শুক্রবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৬

সামনে শ্বাস পিছনে দীর্ঘশ্বাস

মহাকাল কেড়ে নিলো আর একটা বছর।আয়ু থেকে ঝরে গেলো আর একটা ঝরা পাতা।জীবন কেবল নিঃশেষই হয়।পরিপূর্ণ হওয়ার আগেই উপচে পড়ে জল।সামনের জীবনটা শ্বাস,পিছনের জীবন দীর্ঘশ্বাস।শেষ রোদ্র আর শেষ সূর্যাস্তের সাথে মিলিয়ে গেলো বছরের যতো সুখ দুঃখ হাসি বেদনার নির্যাস।দিন চলে যায়,আসে আগামী। চলছি কালের স্রোতে ভেসে মহাকালের দিকে, চলছি ধেয়ে শেষ প্রা্ন্তরেখার দিকে।সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা।

বৃহস্পতিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৬

যদি চলে যাই

আসছে বসন্ত দিনে- যদি না থাকি
যদি চলে যাই যেখানে বসন্ত নেই
যদি না থাকি তোমাদের কাছে
তারপরে তো ফুল ফুটবে
পৃথিবী ঘুরবে সূর্যের চারদিক
সন্ধ্যাতারা জ্বলে উঠবে সন্ধ্যাবেলায়
আমার তখন প্রয়োজন নেই।

আমি কি জানতে পারবো
সামনে বসন্ত আসার আগেই চলে যাবো
মৃত্যু এতো ভিখারী কেন ?
দিতে চাইনা ভিক্ষা-
তবু ঘরের দরজায় চলে আসে।

 যদি চলে যাই সামনের বসন্তে
তোমরা কি মনে রাখবে- এই পাখীকে
সন্ধ্যারাতের নিষ্প্রভ এই তারাকে
আর এক কোনো বসন্ত সন্ধ্যায়।

যা কিছু দেখি

বুক থেকে খসে পড়ে প্রেম
ঠো্ঁট থেকে চুমু
চোখ থেকে তারা,
যা কিছু দেখি তাই খসে পড়ে
প্রেম চুমু তারা।

আজন্ম প্রেমিক

আজন্ম প্রেমিক আমি,বুদ হয়ে থাকি আনন্দে
আনন্দ আমার পূর্বপুরু্ষ থেকে পাওয়া অধিকার
তুমি কি আনন্দ করতে পারবে ?
পারলে পারবে,না পারলে চলে যাবে
যেমন চলে গেছে পূর্বের অক্ষম প্রেমিকারা
আমিতো ভিখারী রাঘব নই
আমৃত্যু আনন্দ করা আমর অধিকার।

বুধবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৬

আগুন

নয়নে নয়ন রেখে দেখলাম তোমাকে,তুমি চাইলে অন্তর।অন্তরে অন্তর ছু্ঁয়ে ভালোবাসতে চাইলাম,চাইলে বুক।বুকে বুক রাখতেই শীতের সকালে চারদিকে আগুন জ্বলে উঠলো।আগুনের লেলিহান ছড়িয়ে গেলো দেহ থেকে দেহান্তরে।তুমি জ্বললে,আমাকেও পুড়ে ছারখার করলে।দেহ ছাই ভস্ম হয়ে আকাশে উড়ছে।

গীত ও সংগীত

রাতের নির্জনতায় অন্তর মহলের দরজাটা খুলে দাও।এই তো তুমি আছো, তোমার মতো করে। হৃদয় ভরে নিয়ে শিউলি আর চন্দনের গন্ধে ! সব দুঃখকে ভুলে দিতে পারো তুমি। আমি চাই বাগদাদের একটি রাত অথবা রাজস্থানের একটি সকাল।যেখানে রাতের ভলোবাসা শরাব আর সাকীতে বিভোর থাকে এবং সকালবেলা ধবনিত হয় মীরা বাঈয়ের কণ্ঠে প্রভুর জন্যে গাওয়া গীত ও সংগীত  ।

হে রমণী

 বসন্তরাতে যদি কোনো ভ্রমর এসে পড়ে তোমার বুকে
যদি সে ভক্ষক হয় মধুর তাকে তুমি তাড়িয়ে দিওনা,
তোমার বুকের ছায়ায় তাকে তুমি আগলে রাখো
যদি সে ধ্বংসন করে তবে তাই করুক
মায়াবী নাভীর সুবাস দিয়ে তাকে সুরভিত করো
যদি লুকিয়ে রাখতে চাও চন্দনের ঝাড়ে তবে তাই রাখো
যদি পেয়ে যাও পেশীময় কোনো যুবকের অগ্নি রশ্মি,
তবে ঝলসে ফেলো তোমার শরীরের সুবর্ণরেখা
কাঞ্চন শোভার তোমার নাভীমূলে মুক্তা ছড়াও
কাঠপোড়া রোদ্রের আগে  প্রার্থণা করো জলের
যদি দীঘির জলে পদ্ম হয়ে সিক্ত হতে চাও তাই হও
তবুও কোনো সঙ্গমের আমন্ত্রণকে ফিরিয়ে দিওনা।




সোমবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৬

প্রেমের কবি

গ্রীক দার্শনিক প্লেটো মনে করতেন,কবিরা মানুষের মনের যত বেহায়া আবেগ উসকে দেয় । সেই আবেগের ফলে মানুষের মাথা হয়ে যায় খারাপ।দেশের উন্নতির জন্য যা যা করা দরকার,তা না করে কাব্য পড়া দুর্বল চিত্ত মানুষেরা নিম্নগামী আবেগে মজে। আদর্শ রাষ্ট্রে কবিদের ঠাঁই নেই, তাদের নির্বাসিত করা উচিত।বিশেষ করে প্রেমের কবিদের–এইটাই প্লেটোর ফতোয়া ।

ঝরে পড়ুক স্বেদ বিন্দু

মধ্যরাতে চা্ঁদ ডুবে যায়, তারাও ডুবে যায় কৃষ্ণগহ্বরে
তোমার শরীর ডুবে থাকে আলো আ্ধা্ঁরের ছায়াতলে
কে্ঁপে ওঠে আকাশ,কেঁপে ওঠে বুক,কে্ঁপে উঠি আমি
 ঠো্ঁটের বিষাক্ত লালা লেগে থাকে সাপের ফনায়
তুমি উন্মোচন করো, দেখাও কিংবদন্তীর কারকার্য
দেখাও রূপ রহস্য লুকিয়ে আছে দেহের ভাজে ভাজে
আমার লোহিত কনা ঊষ্ণতায় জ্বলতে থাকে
কামাতুর বাজপাখী শিকার খো্ঁজে নিশীথ রাতে
 অবদমনের জল প্রবাহিত হয় তোমার শরীরে থেকে
আমি ভালোবাসি তোমার যতো অসংলগ্ন অসংযম,
তুমি ধ্বস্ত হও,নিংড়ে নিংড়ে ঝরে পড়ুক স্বেদ বিন্দু।



রবিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৬

বসন্ত দিনের কথা

অনেক বৎসর আগে কোনো এক ভুলে যাওয়া বসন্ত দিনের কথা। এক বিকালে আমি আর মনিকা নামে একটি মেয়ে বোটানিক্যাল গার্ডেনের ভিতরে পাকা পথ ধরে হাটছিলাম।দু'পাশের গাছ তখন আজকের মতো এতো বড়ো ছিলোনা। পিছনে বেড়ী বাধও তখন হয়নি।আমরা হাটতে হাটতে চলে যাই ঝিলের পাড়ে।সাইবেরিয়া থেকে আসা শীতের পাখীরা সেদিনও ছিলো। মনিকা আমার বন্ধু।আমরা বাফা'র নাচের ক্লাসের ছাত্র ছিলাম।ঝিলের পাড়ে হাটতে হাটতে আমরা কথা বলতে থাকি।দু'দিন পর মনিকার এ্যানগেজমে্ন্ট,পানচিনি অনুষ্ঠান হবে, এই সব কথা বলেছিলো মনিকা।সাথে আরো অনেক কথা।তারপর আমরা ফিরে আসি গার্ডেনের বাইরে মেইন রোডে।একটি বেবী ট্যাক্সিতে উঠে মনিকা চলে যায় শ্যামলী।আমি চলে যাবো মিরপুর ৬নং সেকশনে।মনটা খুব উদাস লাগছিলো।কি মনে করে আমি আবার ঢুকে যাই গার্ডেনের ভিতর।একাকী হাটতে হাটতে চলে যাই ঝিলের পাড়ে।বসি একটি ছাতিম গাছ তলায়।পশ্চিমের সূর্য তখন অস্তাচলের দিকে যাচ্ছিলো। ভাবছিলাম- মনিকা আমার জীবনে কি না হতে পারতো ! আজ থেকে সে আমার কেউ না। কি এক মায়ায় মনটা বিষাদ হয়ে যায় । ধূসর সেই সন্ধ্যায় দূর আকাশে লাল আভার দিকে তাকাই।সেখানে মনিকার করুণ মুখচ্ছবিই দেখতে পাচ্ছিলাম।

ঠিক কবে থেকে

ঠিক কবে থেকে তোমাকে ভালো লেগেছিলো
ঠিক কবে থেকে তুমি আমার হয়েছিলে-
স্বপ্নটা তৈরী হয়েছিলো ঠিক কখন থেকে                                                                                                         কখন থেকে তোমাকে পাওয়া হয়েছিলো শুরু।

শ্রাবন বৃষ্টি থেমে গিয়েছিলো তোমার চোখে
বাতাস বেগ পেয়েছিলো তোমার জানালায়
সন্ধ্যা তারার আলো ঝরেছিলো  উঠোনে
হাস্নাহেনা মাতাল হয়েছিলো তোমার ঘরে
 ভালোবাসার উৎসবের শুরু ছিলো সেখান থেকেই
 সেখান থেকেই দুই আত্মা একাত্মা হয়ে গিয়েছিলো ।  

শুক্রবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৬

এই সমাধি তোমার নয়

দূরে বহুদূর থেকে ক্রন্দন ধবনি শোনা যায়
তুমি কখনোই ছিলেনা আমার প্রেমে অপ্রেমে
এখানে যার সমাধি রচিত হবে সে তোমার নয়
তুমি কেবল সমুদ্র চোখ লবনাক্তই করতে পারো
যে প্রেম তৈরী হয়েছিলো এক নিঃসঙ্গ সময়ে
সে প্রেমে কখনোই তুমি ছিলেনা
এখানে যার সমাধি হবে,সে আমার প্রথম সৃষ্টি
প্রথম উল্লাস,প্রথম দুঃখ প্রথম অশ্রুপাত
তুমি কেবল ক্রন্দন ধবনি শোনো একাকী
খুরতে যেওনা মাটি পা রেখোনা এর মৃত্তিকায়।

বেশ্যারও হৃদয় আছে

বেশ্যারও হৃদয় আছে,তারও আছে তারাখচিত বুক
তারও আছে নীলাভ ঠো্ঁট,চুলে মাখে চন্দনের সুবাস
তার বুকেও সুগন্ধী আছে,চকিত অস্থির দু'চোখ
যার কাছে নমিত হয়ে রক্ত ঝরায় নস্ট পুরুষ।

আমি বে্শ্যাকে বে্শ্যা বলতে চাইনা
সেতো বেসাতি করে রূপের, বিকায় টগবগে যৌবন
তারও ভালোবাসা আছে,মুক্তার দানা আছে নাভীমূলে
কি সব অচেনা গন্ধ ভেসে আসে মুখের লালা থেকে।

আমি বে্শ্যাকে বে্শ্যা বলিনা, সে এক ময়ুরাক্ষী
 যৌবনের ফুল দিয়ে শয্যা পাতে ক্ষূধার্ত প্রজাপতির।

বৃহস্পতিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০১৬

দুঃখ বেদনা

যেদিন জ্যোৎস্নার রাত থাকে সেদিন কোনো দুঃখ থাকেনা আমার। তুমি জ্যোৎস্না থেকে আমার দুঃখগুলো তোমার দু'হাতের আজলায় ভরে তোমারই চোখে মুখে মেখে ফেলো কিন্তু আরেক অন্ধকার রাতে সব দুঃখগুলো এসে আমার হৃদয় বেদনায় পূর্ণ করে তোলে।

তুমি চলে গেলে

তোমাকে শেখালাম,স্বপ্নের ভিতর কিভাবে ভালোবাসতে হয়
কিভাবে শিকারী শিকার করে ,কিভাবে ডাহুক হয় তীরবিদ্ধ
কিভাবে আগুন জ্বালাতে হয় দিয়াশলাই দিয়ে চন্দন কাঠে-
সভ্যতা কিভাবে ভাঙ্গে,কিভাবে ভাঙ্গতে হয় পূর্বপুরুষদের ঐতিহ্য !

এরপরেও কি ভালোবাসা গান হয়ে উঠবেনা,তুমি চলে গেলেও ?
ছাতিম তলায় বসে উষ্ণতায় যে দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ছিলো
এক লহমায় তা কি সব ম্লান হয়ে যাবে ?
 তুমি চলে যাবে,উত্তরাধিকারের কোনো দায় না মিটিয়েই ?

কতো প্রেমইতো ব্যর্থ হয়, স্মৃতিতে ঝরে পড়ে শিশির
সূ্র্যরশ্মি ম্লান হয়, মন্দিরের ঘন্টাধ্বনি থেমে যায়
তুমি চলে গেলে দীর্ঘশ্বাস ক্লান্ত হয়,গোপনে ভাঙ্গতে হয় হৃদয়
এতো কিছুর পরেও কি আমাদের প্রেম স্বর্গীয় হয়ে উঠবেনা  ?

বুধবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৬

রক্তাক্ত হয় ডাহুকের পালক

অপেক্ষায় থাকি  চা্ঁদের আলোয় দেখবো তোমাকে
 দেখবো তোমার শাড়ির আ্ঁচল তুলে পিঠের আ্ঁচিল
দেখবো কালো তিলক যেখানে আছে, খু্ঁজবো বাটি চালিয়ে
 রমণীর কাছে কবিরা পরপুরুষ, প্রেমভোগী প্রজাপতি
ভালোবাসে পরকীয়া চা্ঁদের আলোয় একাকী-
নরম মাংসের শরীর শুয়ে আছে গ্রীবা বা্ঁকিয়ে নদীর মতো
ঝরে জ্যোৎস্না কা্ঁপে বসন্তের বাতাস দিগ্বিদিগ ঊর্ধশ্বাসে
 ভালোবাসি কলাবতী নারীর শরীর করি প্রণাম পত্রপল্লবে
দেখি তার ভোগচিহ্ন,যখন রক্তাক্ত হয় ডাহুকের পালক।

ভোরের আলোর জন্য

রাতের নির্জনতার মধ্যেই ঘুম ভেঙ্গে যায়।এখনও সকাল হওয়ার বাকি। চোখ বন্ধ করে রাতের শব্দ শুনছি। চারিদিকের অন্ধকার ঘরের মধ্যে প্রবেশ করছে, যেন গ্রাস করছে আমার সমস্ত সত্তাকে।বুকের ওপর দুটো হাত রেখে চেষ্টা করি চোখ খুলতে, তখনই চোখ চলে যায় জানালার ওপারে আকাশের দিকে।একঝাঁক তারা সেখানে মিটমিট করে জ্বলছে। তারাদের আলোতে অন্ধকার কিছুটা কেটে আসে।এখন শুধু অপেক্ষা,এই রাত শেষ হওয়ার, অপেক্ষা করছি ভোরের আলোর জন্য!

আমাকে ফিরিয়ে নাও

ভালোবাসাহীন পৃথিবী দেখলেই মনটা অস্থির হয়ে ওঠে।নিজেকে তখন একাকী লাগে। মনে হয় দূরে কোথাও চলে যাই। যেখানে কেউ থাকবেনা। সামনে থাকবে সুউচ্চ পাহাড় না হয়  কোনো উদ্দাম জলরাশি।সেখানেই নিজেকে ঈশ্বরের কাছে সমর্পণ করতে চাই, তাকে বলতে চাই - তুমি আমাকে ফিরিয়ে নাও।আমার আত্মাকে তুমি গ্রহণ করো।

বালিকার সুখ দুঃখ

জানতাম না কি ভাবে প্রেম করে, সে পাঠ তুমিই দিলে প্রথম
জানতাম না কেন মুখে শ্লেশ তৈরী হয়,শুস্ক হয়ে েযায় ঠো্ঁট,
জানতাম না রজঃক্রিয়া কি,কেন হয়- কেনই বন্ধ হয়ে যায়
এক শরীরে এতো রহস্য এসব জানতাম না এই অবুঝ আমি
কবে কি ভাবে মায়াবী পর্দা ছি্ঁড়ে রক্তাক্ত হয়েছিলো অকস্মাৎ
তাও জানিনা- হয়েছিলো বা ঋতুকালীন কোনো এক অসময়ে।

একাকী একজন মানুষ কি ভাবে আরেক অস্তিত্বে মিশে যায়
রাজহংসী কিভাবে সা্ঁতার কাটে দীঘিতে,কি ভাবে জলে ভাসে
কি ভাবে শরীর ভিজাতে হয়,কিভাবে খেতে হয় জল,তাও শেখালে
ছিলাম আমি বালিকা,হয়ে উঠি যুবতী তোমার স্পর্শের উৎসবে।

মঙ্গলবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০১৬

সুবাস ছড়িয়ে দাও

 সকালবেলা কানে কানে বাতাস যে কথা বলে যায়- হিমালয় থেকে আজ শৈত্য প্রবাহ আসবে ।শীতের রৌদ্রে যতোটুকু উত্তাপ পাও, তাই দিয়ে উষ্ণতা দাও প্রিয় মানুষকে।যদি কোথাও চন্দ্রমল্লিকা ফুটে থাকে,যদি কোনো চম্পা বকুল গন্ধ বিলিয়ে যায়- তাই দিয়ে দয়িতার দেহ মনে সুবাস ছড়িয়ে দাও।দেখতে পাবে কেমন করে মাতাল হয় দখিনা বাতাস।সুপ্রভাত সবাইকে।

সোমবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৬

তুমি স্বৈরিণী নও

পুরুষকে তুমি কি মনে করো ? পুরুষ মানেই মধুকর ?
তুমি স্বৈরিণী নও,ময়ুরাক্ষীও নও,তুমি প্রেমিকা
আমি চাইলেই স্ত্রৈণ হতে পারিনা,তুমি পারো না স্বৈরিণী হতে,
আমরা যাই হই,স্ত্রৈণ কিংবা স্বৈরিণী
আমরা প্রেম বুভূক্ষু এক যুগল,ভালোবাসি প্রেম
যে প্রেম উৎসব করে দেহে,স্বর্গে কিংবা নরকে।



ফিরিয়ে নেবো প্রেম

 হঠাৎ একদিন দেখি তুমি বদলে গেছো
বদলে গেছে তোমার চুলের সি্ঁথি,
বদলে গেছে তোমার টিপের রং
অন্য কারো দেনমহরে বে্ঁধেছো ঘর
আমি তো বহুগামী প্রজাপতি ছিলামনা
নস্ট নর্দমার জলও ছিলামনা
আমি নিজকে কখনো রাজহংসও ভাবিনি
তবে তুমি বদলে গেলে কিসের জন্যে।

আমি চলে যেতে চাই অজ্ঞাতে কোনো নিরুদ্দেশে
তার আগে তুমি ফিরিয়ে দাও আমার যতো চুম্বন
ফিরিয়ে দাও বসন্ত দুপুরে দেওয়া যতো আলিঙ্গন
ফিরিয়ে দাও আমার প্রজন্মের জল
যে জলে ভিজিয়েছিলে তোমার উর্বর ভূমি
আমি কোনো অভিজ্ঞান চিহ্ন রেখে যেতে চাইনা
ফিরিয়ে নেবো প্রেম,যতো দুঃখ,যতো গ্লানি ।

শুচি হবে ভালোবাসা

তুমি কোথায় যাবে ? যাওয়ার রাস্তা নেই কোথাও
তুমি অন্ধকারেই দাড়িয়ে থাকো ,তোমার মুক্তি নেই আলোর,
ভালোবাসা চৌচির করেছো চৈত্রের ধূধূ মাঠের মতো
শুকিয়ে ফেলেছো সব ্শ্রাবণের জল।

জল আবার তোমাকেই ঝরাতে হবে
তোমাকেই আনতে হবে জোয়ার
কবে ভাসবে তুমি জলে আকুল হয়ে
তোমার জন্যেই আমি কুলে বসে আছি
তুমি জলে নামো, ভিজাও শরীর
মুছে ফেলো পাপ,শুচি করো ভালোবাসা।

নীল নীল- নীল আকাশ

দিনের বেলায় অনেকটা অসময়ে ঘুমিয়ে যাই।ঘুমের মধ্যে স্বপ্ন দেখি ছেলেবেলার।সাবানের ফেনায় ফু্ঁ দিয়ে শতো শতো বেলুন উড়িয়ে দিচ্ছি আকাশের দিকে।উড়ে যাওয়া বেলুন দেখতে দেখতে- ঘুম ভেঙ্গে যায়।ঘুম ভেঙ্গে শুনতে পাই ঘরের কার্নিশে বসে একটি কাক কা-কা করে ডাকছে।ডাকটা কর্কস মনে হলোনা।ওতো পাখী,এটি ওর কথা, কান্নাও হতে পারে। খোলা জানালা দিয়ে আকাশের দিকে তাকাই, নীল নীল মেঘে ঢাকা নীল আকাশ দেখতে পাই।আহা ! পাখি কিংবা মেঘ হয়ে যদি উড়ে যেতে পারতাম। মনে মনে ভাবি- এই জীবনের চেয়ে আকাশের ঐ নীল মেঘ হয়ে থাকা অনেক ভালো ! নীল মেঘেই যেন জীবনের সৌন্দর্যগুলি লুকিয়ে আছে !

রবিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৬

অনন্ত রাত

কেউ একজন কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বলছে - তুমি ঘুমাও।যে রাতটা তুমি দেখছো, এটি একটি অনন্ত রাত।তুমি কেবল স্বপ্নই দেখতে পাবে।যে স্বপ্ন দেখা কোনো দিন শেষ হবে না।

কতো স্বপ্ন ছিলো

সারাটা জীবন একটা ঘোরের মধ্যেই কাটিয়ে দিলাম। জীবনটা যেনো একদিন আর এক রাত্রির সমান।দিন শেষে ঘুমালাম, ঘুম ভেঙ্গে দেখি- জীবনই শেষ।কতো স্বপ্ন ছিলো,সে সব আর দেখা হলোনা। সব স্বপ্নই কি এক রাত্রিতে দেখে শেষ করা যায় ? সব চাওয়া পাওয়া অপূর্ণই রয়ে গেলো।

পথ খু্ঁজে পাবে

প্রতিক্ষায় থাকি তুমি আসবে, তাই ঘরের দরজা খুলে রাখি। উঠানের কাছে এসে থেমে গেলে তুমি।মনে হলো পথ ভুল করেছো। না চিনেই চলে গেলে।তুমি না আসো।আমার দেহ এক সময় নীল হবে।নীল পাথরের দ্যূতি ছড়াবে তোমার ঘরের পথ পর্যন্ত । সে আলোয় তখন তুমি পথ খু্ঁজে পাবে আমাকে খু্ঁজে পাবার।তখন এসে পাথরে লিখো তোমার নাম।

ভালোবাসা কারে কয়

জীবনে কাউকেই ভালোবাসিতে পারি নাই।এখন বউকে ভালোবাসিতেছি। ভালোবাসা কারে কয়,এ কথা আজো বুঝিতে পারি নাই। লোকে বলে প্রেমের মরা নাকি জলে ডোবে না।এ কথার অর্থও বুঝি নাই।এ রকম অনেক কিছু না বুঝিয়াই জীবন শেষ হইয়া গেলো। ভাবি, আবার একটা জীবন হয়তো পাইবো, সেই জীবনেই সবকিছুই অসুল করিয়া ফেলিবো। কিন্তু এই ভাবনাটাও যে একজন গাধার।এ কথাও দেরীতে বুঝিতে হয়।

তুমি যতো দূরেই রাখো

আমাকে তুমি যতো দূরত্বেই রাখো
তারচেয়ে বেশী তোমাকে স্বপ্নে কাছে রাখি
উৎসবহীন সময় কাটে উদাসীনতার টেবিলে
মেঘ নেই তবু বৃস্টি নামে এই অসময়ে
জলে ভিজে যায় দু'চোখ,দুঃখও তখন জল হয়
তুমি যতোটুকু দুরত্ব তৈরী করেছো
তারচেয়ে বেশী তোমাকে অন্তরে রাখি
নিঃসঙ্গ দুপুর কেটে যায়,দুরাগত পাখির কান্না শুনে
জীবনের পূর্ণতাগুলি আজ অপূর্ণতার চাদরে ঢাকা
জীবন থেমে যায়,ক্লান্ত পথিকের পা থামে যেভাবে
তবুও চলছে জীবন যে ভাবে চলে চন্দ্র সূর্য গ্রহপথে
তুমি যতোটুকু দূরত্ব সৃস্টি করেছো
তারচেয়ে বেশী তোমাকে মায়া মমতায় বে্ঁধে রাখি।

শনিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৬

করবী

'যখন বিদায়-বাঁশির সুরে সুরে
শুকনো পাতা যাবে উড়ে সঙ্গে কে র'বি ।'
'আমি রব, উদাস হব ওগো উদাসী, 
আমি তরুণ করবী ।' 
 করবী ফুল সম্পূর্ণ বিষাক্ত। সুন্দর ফুলের জন্য বাগানে লাগানো হয়। লাল (রক্তকরবী), সাদা(শ্বেতকরবী) আর গোলাপি রঙের ফুল গাছ পাওয়া যায়। গোলাপি রঙের করবী ফুলের ডাবল ফুলের জাত আছে, একে বলে পদ্মকরবী। পদ্মকরবীর পাপড়ি অনেকগুলো, দেখতেও সুন্দর। প্রায় সারা বছরই করবী ফুল ফোটে। গাছের মূল, কান্ড, পাতা, ফুল, ফল- সবই বিষাক্ত।
এই করবী ফুলের কথা লিখতে গিয়ে একটি ঘটনার কথা মনে পড়ে গেল।১৯৮৫ সালে একটি অফিসিয়াল এ্যাসাইনমে্ন্টে তামাবিল/জাফলং গিয়েছিলাম।উঠেছিলাম তামাবিল রেস্টহাউজে।পাহড়ী টিলার উপর নির্জন পরিবেশে বাংলোটির অবস্থান।এই বাংলোর কেয়ার টেকার হচ্ছে আমির আলী।বয়স ৩৫ হবে।সুঠাম দেহ ও সুদর্শন। বিয়ে করে নাই,বৃদ্ধা মাকে নিয়ে বাংলোর পিছনে একটি ছোটো কাঠের বাড়ীতে থাকে।একদিন বিকালে ওর বাড়ীটির দিকে যাই।দেখি বাড়ীর চারদিকে করবী ফুলের বাগান।ফুল দিয়ে ঢেকে গেছে ছোট্ট কাঠের বাড়ীটি।আমি আমির আলীকে জিজ্ঞাসা করি- তুমি মনে হয় করবী খুব পছন্দ করো।দেখলাম ওর মুখটা বিষাদে ভরে উঠলো।একদিন বাংলোয় আমির আলীকে ডেকে জানতে চাই,এই করবী ফুলের রহস্য। ও বলতে চায়নি,তারপরও শুনি আমির আলীর কথা-

মেয়েটির নাম বৈজয়ন্তীমালা।খাসিয়া মেয়ে। জাফলং নদীর ওপারে ভারতের অংশে পাহাড়ের ঢালে ওদের বাড়ী।জাফলং নদীতে পাথর কুড়াতে যেয়ে ওর সাথে পরিচয়।মেয়েটি আমাকে ভালোবাসতো,আমি ঠিক ততোটা নই।পাহাড়ের ঢালে একটা জায়গা ছিলো,করবী ফুলের ঝারে ঢাকা।আমরা সেখানে প্রায়ই মিলিত হতাম।একদিন ঐ করবী ফুলের ঝারে বসে বৈজয়ন্তীমালার সাথে কথা হচ্ছিলো-
বৈজয়ন্তী:  তুমি আমাকে তোমার বাড়ীতে নিয়ে যাও।বিয়ে করো।
আমি:   এখন না। আমি তোমাকে ভালোবাসি,কিন্তু বিয়ে এখন না।পরে।
বৈজয়ন্তীমালা আমার ছলনাটুকু বুঝতে পেরেছিলো।বৈজয়ন্তী বললো- তাহলে আমি যাই।
যাবার সময় ওর খো্ঁপায় একটি করবী ফুল পড়িয়ে দিয়েছিলাম।
সেদিন ছিলো দোল পূর্ণিমা।শুনেছি- সেই রাতেই ঐ করবীর ঝারে করবী ফুল খেয়ে বৈজয়ন্তীমালা আত্মহত্যা করেছে।ময়না তদন্তের রিপোর্ট ছিলো-ও নাকি দুই মাসের অন্তঃস্বত্তা ছিলো। কিন্তু কেউ জানতো না,ঐটি ছিলো আমারই দেওয়া একটি পাপ।











তুমি শুধু আমার

চা্ঁদে আকাশ ভরেছে
তারায় আকাশ জ্বলেছে
আমার মন আলোয় ভরেছে
চিত্ত ঝলমলিয়ে উঠেছে
মন খারাপের মুখে হাসি ফুটেছে
জীবন প্রফু্ল্লিত হয়েছে
তুমি আছো আকাশের কাছে
তুমি জ্বলছো তারার পাশে
ঐ চা্ঁদ শুধু আমার
ঐ তারা শুধুু আমার
ঐ আকাশ শুধু আমার
তুমি শুধু তুমি আমার।

শুক্রবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৬

সা্ঁতার কাটি রাজহংসের মতো

পরম মমতায় কাছে টেনে করেছো চুম্বন
ঢেলেছো লালা জিহবা থেকে ঝর্ণাধারার মতো
গলার মাদুল ঝুলেছিলো উদোম বুকের মধ্যখানে
দুদিকের প্রজ্জ্বলিত শিখায় ্জ্বলছিলো কালো দুই বিন্দু
আলিঙ্গনের উত্তাপে পুড়ছিলো পর্বতমালা
তুমি টানতে থাকো নাভিতলের দিকে
যেখানে জলে ভেসেছে,যেখানে প্লাবন হয়েছে
যেখানে রাজহংস কাটবে সা্ঁতার
তুমি তখন মৎস্য কন্যার মতো উন্মূল পাখা মেলো
চরম উত্তেজনায় কাছে টানো যেনো আমি জলে ডুবি
যেনো আমি সা্ঁতার কাটি রাজহংসের মতো উন্মত্ততায়।

কথা ছিলো

কথা ছিলো- আমাদের ভালোবাসার কথা কবিতায় বলা হবেনা
যমুনার তীরে কাশবনের বালিয়ারীতে পড়েছিলো শয্যা চিহ্ন
ডিঙ্গি ভাসিয়ে সারারাত ভেসেছিলাম আমরা জলে
আধার বিদীর্ণ করে জোনাকিরা জ্বেলেছিলো আলো
কথা ছিলো- সেই জোনাক জ্বলা রাতের কথা কবিতায় বলা হবেনা।
স্বপ্নভূক চা্ঁদ ডুবেছিলো মেঘে,লুব্ধক হারিয়েছিলো নৈঋতে
আমরা হারিয়েছিলাম রাতের নির্জন অন্ধকারে কাশঝা্ঁরে
শিয়াল বাজপাখী বু্ঁনো হাস দিয়েছিলো আমাদের পাহাড়া
আমরা রাতকে করেছি কুটিকুটি,তারাদের পাঠিয়েছি মেঘে
ভালোবাসায় শরীর ভেঙ্গেছি,শীৎকারে কে্ঁপেছে হৃদয়
কথা ছিলো- আমাদের সেই ভাঙ্গনের কথা কবিতায় বলা হবেনা।


বৃহস্পতিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৬

তুমি একা নও

নিজেকে নিয়ে কি ভাবছো তুমি
হে রমণী হে বৃক্ষ,তুমি কি খুবই একা
তুমিতো প্রেমভূক ,হরিদ্রাভ তোমার বুক
 তোমার চিবুক,তোমার গভীর অন্তরতল
তুমি খুলে ফেলো পৃথিবীর পরিধান
এই সভ্যতা তোমার জন্যে নয়
ভিতরের সব আলো জ্বলুক ঈষাণে
তুমি একা নও,পুরুষ এখানে সত্য
রাতের সফল সঙ্গম শেষে চলে যাও
সমস্ত রক্ষণ ভেঙ্গে পরম শুদ্ধতায়।


ছোবল

রাতের অন্ধকারে কোথাও দেখা হোক
যেখানে আকাশ দেখতে পায় না মাটি
দীঘির জলে কোনো বৃক্ষের ছায়া নেই
আমাদের দেখা হোক কোনো বদ্ধ ঘরে
কাঠ চোকির উপর তুমি উন্মোচিত হও
কাল সাপের বিষাক্ত বিষ উঠবে মগজে
 আ্ঁচলে ঢাকতে পারবে না সেই ছোবল।

Victory Day Celebration

কাল বিজয় দিবস।কাল চলে যবো পার্কের পাশে বড়ো রাস্তার উপর।ওখানে যেয়ে বা্ঁশি বাজাবো।সে বাজাবে হারমনিকা।ছেলে উড়াবে আকাশে রঙ্গিন ঘুড়ি।বড়ো মেয়ে বাজাবে কাগজের ঝুনঝুনি আর ছোটো মেয়ে পায়ে আলতা মেখে নুপুর পড়ে রাস্তার উপর নাচবে তা ধিন্ ধিন্, তা ধিন ধিন্ তা ! তারপর আমরা ফুসকা আর বেলপুরি খাবো। সন্ধ্যায় পা্র্কে শুনবো শিল্পীদের কণ্ঠে বিজয়ের গান -
                                                                                                                                                              "পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে রক্ত লাল, রক্ত লাল, রক্ত লাল 
জোয়ার এসেছে জন-সমুদ্রে রক্ত লাল, রক্ত লাল, রক্ত লাল 
বাঁধন ছেঁড়ার হয়েছে কাল, হয়েছে কাল, হয়েছে কাল।"

অপার আনন্দধারায়

 তুমি আমার কাছে এসেই ত্রস্ত হরিণীর মতো ছটফট করো, তাড়া করো চলে যাবার। দ্রোপদীও এমন করেনা দেবতার সাথে মিলন পর্বে । ,তোমার অম্লান দেহখানিি ধূসর ধূলায় মিশিয়ে দাও।আমি পেতে চাই সৃষ্টির সুখের উল্লাস ।ভালোবাসার আকুলতায় কোনো কান্না রাখতে নেই।তুমি থেকে যাও এখানেই, আমার বাহু লগ্নে, এই অপার আনন্দধারায়।

বুধবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৬

ফসল

কানামাছি খেলতে যেয়ে ছু্ঁয়েছি তোমার চোখ
গোল্লাছুট খেলতে যেয়ে চিবুক,
এক্কা দোক্কায় ছি্ঁড়েছি তোমার ঠো্ঁট
ফুসকার ঝালের মতো চুম্বনে আভা ঝরেছে,
এসবই কোনো খেলা ছিলোনা কোনো সময়।
জরায়ুর উর্বর ভূমির জন্য লাঙ্গলের ফলা খুঁজে বেড়াও
 মেঘের দিকে চেয়ে জলের জন্য চাতকী হও
 আমার শুক্রাণু তখন ছুটতে থাকে ফুৎকারে
 তোমার উর্বর ভূমির দিকে ফসল ফলাতে।





বুভূক্ষু এক হরিণী

তোমার ঠো্ঁট থেকে খসে পড়ে শুষ্ক আশ্লেষ
বুক থেকে নেমে আসে পাথরের ঘর্ষণ
ভারী প্রস্তুরের আলিঙ্গনে আমি ক্লান্ত হইনা
তৃষ্ণার্ত হরিণীরা জল খায় শীতল নদীর জলে
আমিও বুভূক্ষু এক হরিণী তোমার কাছে
যে মায়া্ নাভী তলে শূল বিদ্ধ হয় অস্থির সৈনিকের
আমি আমার রক্তা্ক্ত ভ্র্রূণের ভিতর আনন্দ খু্ঁজি
পৃথিবী যে ভাবে ঘুরছে তার কক্ষপথে
 আমিও ঘুরছি তেমনি তোমার ছায়াপথে                                                                                                           মেতে থাকি প্রজন্ম জন্ম দেবার উৎসবে।

একজন ভাই/বোন

আমরা এখন পা্ঁচ ভাই বোন জীবিত আছি।ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা একটাই- আমার মৃত্যু যেনো সবার শেষে না হয়।কারন,আমার মৃত্যুর পর কোনো একজন ভাই/বোন কা্ঁদবে না,তাই কি হয় ?

সকালের শিশির

তুমি কাছে থাকলে সকালের শিশির হয়
ভালোবাসার মুক্তা বিন্দু ,
তুমি কাছে না থাকলে সকালের শিশির হয়
আমার দুঃখের অশ্রু বিন্দু।

নতুন আরেক পৃথিবী

তুমি আমার জীবনকে জ্যোতির্ময় করেছো।সূর্য চন্দ্র গ্রহ তারা আলোকিত হয়েছে।নদী সাগর পোতাশ্রয়ে জলের বান ডেকেছে।আমরা হেটেছি আমাদের কক্ষপথে অনন্তকাল।আমাদের প্রেম উদ্ভাসিত হয়েছে তপ্ত আগ্নেয়গিরির দাবানলে।আমাদের ভালোবাসা লুপ্ত হয় নাই।এই ব্রহ্মাণ্ডের সব আলো বাতাস আকাশ একদিন মহাপ্রলয়ে ধ্বংস হয়ে যাবে।কিন্তু আমাদের দেহ আত্মা অবিনশ্বর থাকবে। আমাদের প্রেম ধ্বংসস্তুপের উপর জন্ম দেবে আর একটা গোলাপের। যে গোলাপ সৌরভ ছড়াবে নতুন আরেক পৃথিবীকে।

মঙ্গলবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৬

বালুঘাট থেকে শিলিগুড়ি

নব্বই দশকের কথা।পশ্চিম বঙ্গের বালুঘাট থেকে বাসে উঠেছি শিলিগুড়ি যাওয়ার জন্য।বাসে উঠেই দেখি আমার পাশের সিটে একটি বাইশ তেইশ বছরের তরুণী বসে আছে।আমি অনেকটা দ্বিধা নিয়েই ওর পাশে বসে পড়ি।মেয়েটির সি্ঁথিতে সি্ঁদুর নেই,হাতে শঙ্খ চূড়ি নেই।মনে হলো মেয়েটি কুমারী হবে।বাস চলছে।আমাদের মাঝে কোনো কথা নেই। ঢাকা থেকে রাতের বাসে হিলি এসেছিলাম।চোখে তাই ঘুম ঘুম ভাব ছিলো।অনেকটা পথ ঘুমে অনেকটা পথ তন্দ্রাচ্ছন্নে আমি চলতে থাকি।মেয়েটিকে খেয়াল করা কিংবা আগ বাড়িয়ে কথা বলা হয়ে ওঠে নাই।এই ভাবেই কখন তিন/চার ঘন্টা কেটে গেছে বুঝতে পারিনি।বাসটি তখন বিহার টেরিটরী অতিক্রম করছিলো।এ্যাটেনডেন্ট বলছিলো,সামনে ইসলামপুর স্টপেজ।মেয়েটিকে দেখলাম,রেডী হচ্ছে নামার জন্য।মন চাইলো ওর সাথে একটু কথা বলি-
আমি:  Can you speak in Bengali ?
মেয়েটি: আমি বাঙ্গালী,বাংলাদেশের মেয়ে।
আমি: আমিতো বাংলাদেশ থেকে এসেছি।বাংলাদেশে কোথায় তোমার বাড়ী ?
মেয়েটি:  সিরাজগজ্ঞের ঢলডোব গ্রামে।
আমি চমকে উঠি।বললাম,আমার বাড়ীও তো সিরাজগঞ্জে, আমি বাগবাটি স্কুলের ছাত্র ছিলাম।ঢলডোব গ্রামে আমার একজন সহপাঠি ছিলো,নাম মিহির কুমার বৈদ্য।মেয়েটি বলে: মিহির আমার বড়দা,আমি ওনার ছোটো বোন নির্মলা বৈদ্য।১৯৭১ সনে স্মরণার্থী হয়ে আমরা এদেশে এসেছিলাম।তারপর আর যাওয়া হয় নাই।  এই ইসলামপুরেই আমরা থেকে যাই। নির্মলার দিকে তাকিয়ে আমার চোখ ছলোছলো করে ওঠে। ওকে দেখেছিলাম ওর দুই বছর বয়সে।কোলেও নিয়েছিলাম।বাসটি এসে ইসলামপুর থামে।নির্মলা এখানেই নেমে যায়।নামার সময় বলেছিলো- দাদা নেমে যান।বাড়ীতে বড়দা আছে।দেখা করে যান।' আমার আর নামা হয় নাই।কর্কস স্বরে হর্ণ বেজে ওঠে।বাসটি তখন চলতে থাকে শিলিগুড়ির দিকে।

স্বপ্ন

আমি স্বপ্ন দেখতে খুব ভালোবাসি,কিন্তু যাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখবো- সে সব সময় আমার কাছেই থাকে।যদি কখনো সে দূরে চলে যায়, তখন আমি স্বপ্ন দেখবো, আর সেই স্বপনগুলোর মধ্যে সে আমার কাছেই থাকবে।

রাতের ব্লাক আউট

রাত্রির একাকীত্ব আমাকে অন্ধকারের মধ্যে নীল করে রাখে
আমি তোমার মধ্যে কোনো দায় দেখিনা
আমার প্রেমের সব অস্ত্র তোমার আলিঙ্গন থেকে দূরে থাকে
আমার যন্ত্রণার কোনো নিষ্কৃতি নেই
অসীমের পরে কোনো শেষ আছে কিনা জানিনা
আমার শরীর ধুসর হয়ে পড়ে থাকে রাতের চিবুকে
জীবনের সব প্রেমই কি ভুল ছিলো
আজকের রাতের ব্লাক আউট,আহত নদীর ঢেউ
তোমার মৃগানাভি তলে মিশে যেতে থাকে সব ক্লান্তি
আমি তখন নিঃশব্দতার ভিতর ঘুমিয়ে পড়ি
তোমার তন্দ্রাহীন জাগরণের বিপরীতে।

সোমবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০১৬

প্রথম প্রেম, প্রথম বিষন্নতা

আমি অবাক বিস্ময়ে চেয়ে দেখেছি
তুমি যমুনা নদীর তীরে দাড়িয়ে আছো
যেনো তুমি রাধা, তুমি পান্ডবদের দ্রোপদী
তুমি কৃষ্ণপক্ষের আমার স্বপ্ন
তুমি উন্মত্ত বসন্তের এক ঝরো বাতাস
চোখে তোমার হিমালয় পর্বতের কুয়াসা
তুমি চর্যাপদের মায়ময় হরিণী
আমার প্রথম প্রেম, প্রথম বিষন্নতা
শ্লেশে আর ভোগে নস্ট জলে আমি মিশিনি
ঋতুবতী মেঘ হয়ে তুমি উড়ে গেছো বসন্ত বাতাসে।



এই হেমন্ত রাতে

এই হেমন্ত রাতের অন্ধকারে
আমার আকাঙ্খা কি ম্লান হয়ে যাবে ?
আকাশের তারা মেঘের ফা্ঁকে
কি আড়াল হয়ে যাবে ?
ভোরের আলো স্পর্শ পর্যন্ত
আমি অপেক্ষা করবো
আমার রাতের কালো ভূষন
ধবল তুষারপাতে শুভ্র হবে
যতোক্ষণ পতিত না হয় ততোক্ষণ।

কোনো সভ্যতা মানিনা

ওখানে কোনো সভ্যতা নেই
ব্রহ্মারও তপস্যা ভাঙ্গতো
অনার্যরাও মত্ত হতো প্রেমে,
নদীও নগ্ন হয়
আমি কোনো সভ্যতা মানিনা
অসভ্যতাও কোরবো না
তোমাকে ভেজাতে চাই জলে
যে জলে সাগর ভিজে যায়।

রবিবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৬

তুমি হবে নদী

তোমাকেই অন্তরের মধ্যে রেখে মুগ্ধতায় আচ্ছন্ন হয়ে ছিলাম।বারান্দায় দাড়িয়ে দেখেছি শ্রাবন ধারার উৎসব। কখনো সন্ধ্যা রাতে স্বপন দোলায় চলে গেছি মাধবী তলায় ,শুনেছি ঝি্ঁঝি্ঁ পোকাদের গান।সেখানেই দাড়িয়ে কতো যে চুম্বন আমরা এ্ঁকেছি । আমরা দেখেছি নদী, ভেসেছি জলে উন্মত্ততায়।প্রেমের পূর্ণতার জন্য, তুমি হয়েছিলে উত্তাল এক সাগর,আমি হয়েছিলাম তার অবাধ্য জল।

যখন তোমাক দেখি

আমি তাকিয়ে থাকি যখন তোমার মুখের দিকে
 তোমার মুখ থেকে তখন অমৃত ঝরতে থাকে
তোমার নয়ন শোভায় স্নিগ্ধ হয় আমার চোখ
যখন তোমাক দেখি,সব দুঃখ যেনো হারিয়ে যায়।

দহনে জ্বলতে থাকি

তুমি সবসময় আমাকে কা্ঁপাও
তোমার প্রেমে আমার শরীর কা্ঁপে
নদীর ঢেউ উন্মাতাল হয়
আগুনে পুড়ে দূরের পাহাড়
যেমন করে পোড়াও আমার অন্তর,
আমি তখন দহনে জ্বলতে থাকি
নদী ভেবে তোমার শরীরে দেই ঝাপ।

কেড়ে নাও তুমি সময়

হেমন্তের দুপুর সবসময় মাদকতাময় হয়
আমি বসে আছি একাকাী,
সূর্য রোদ ছড়াচ্ছে পৃথিবী মন্ডলে
সময়গুলো কি একাকী ক্ষয় হতে থাকবে-
কেউ কি আসবে না এই সময় উদযাপনের সঙ্গী হতে !
এই হেমন্ত দুপুরে ূ তুমি আসো
কেড়ে নাও তুমি সময়,আমার যতো প্রেম।


উৎসবের যতি চিহ্ন

চোখের উপরে ঝরে পড়ে ক্লান্ত দুপুরের ঘুম
পাখীদের গান নেইৃ,পথগুলোতে গাড়ীর হর্ণ নেই
নির্জনতা এখন ঘরে,নির্ঘুম স্বপ্ন এখন চোখে
বন্ধ সব জানালা,নীল আকাশও দেখা যায়না
দিনের অন্ধকারের ভিতর খু্ঁজি অচিনপুর
যেখানে প্রেম বিমুগ্ধ হবে এই ক্লান্ত দুপুরে
আমাদের উৎসবের যতি চিহ্ন পড়বে তখনই।  

শনিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০১৬

কতো অফুরন্ত ভালোবাসা

জীবনের কতো অফুরন্ত ভালোবাসা এখনো পাওয়া হয়নি, এখনো হাঁটা হয়নি হেমন্তের শিশির ভেজা দূর্বাঘাসের পথে, এখনো শোনা হয়নি কোজাগরী পূর্ণিমা রাতের গান,বোস্টুমিদের কীর্তন, এখনো দেখা হয়নি চন্দ্রাহত কোনো প্রেয়সীর জীবনের সুখ দুঃখের আলেখ্য।এই সব আকুলতাগুলো আছে দেখেই এখোনো পৃথিবীর পথে পথে ঘুড়ে বেড়াই।

বিমুগ্ধ অন্তর্জল

 স্বর্গীয় মুগ্ধতায় নির্ভাজ জরায়ুর আরষ্ঠতা ভেঙ্গে
উন্মোচন হয় এক  হেমন্তের শিশির ভেজা ভোর,
প্রেমে থাকেনা পাপ, জলে থাকেনা কোনো বিষাদ
 উৎসবের আনন্দে তোমার লজ্জা ভাঙ্গে শয্যায়
দরজার ওপাশে ভ্রুনেরা ঝা্ঁকে ঝা্ঁকে উড়তে থাকে
 নির্জন সরোবরে ছুটতে থাকে তৃষ্ণাতুর অশ্বারোহী
তোমার লোহিত কনিকাগুলি কামাতুর হয়ে ওঠে
বিমুগ্ধ অন্তর্জল তখন গড়তে থাকে প্রজন্মের দিকে।
                                                                                                                                                                   

শুক্রবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০১৬

আমাদের আনন্দ থেকে

একটা একটা করে প্রেম বুঝে নিব
একটা একটা করে শরীরের ভা্ঁজ শবদেহ হবে
রাত্রি নিশীথে নৈঃশব্দরা চিৎকার করে উঠবে
কঠিনের সমস্ত স্পর্শে ক্ষতবিক্ষত হবে জরায়ু গহ্ববর
ভালোবাসার উৎসবে ভাসবে রাত্রিতে
ভ্রুণেরা জেগে উঠবে শত সহস্রবার
আমাদের আনন্দ থেকেই জন্ম নেবে শিশু।

আনন্দ কোথায় আছে

আমাকে ডাকছে ঘর
প্রেম ছু্ঁইতে চায় আকাশ
কোথায় শব্দ হচ্ছে জলপতনের
জলের মধ্যে প্রেম খু্ঁজি
নাভিতলে কিসের এতো নৈঃশব্দ
কোথায় আলো জ্বলে
কোথায় লুকিয়ে থাকে নীলাভ প্রেম
আনন্দ চাই চতুর্দিক থেকে
যন্ত্রণারা লুপ্ত হোক অতল গহবরে
এতো প্রেম এতো জল ভরেছে জীবন
আনন্দ কোথায় আছে কোন উচ্চতায়।

স্পন্দন শুনি শরীরে

কিছু সময় আসে ভালোবাসা উন্মাতাল হয়
তোমার নম্র বুকের উপত্যাকায় মেলে রাখি চোখ
শরীর থেকে অচেনা গন্ধ ভেসে আসে
যেখানে স্বপ্ন ভেঙ্গে দমরে মুচরে যায়
মনের গভীরতা ছিড়ে টুকরো টুকরো হয়
শরীর থেকে শরীরে হয় লেনদেন
বেহিসাবী চাওয়া পাওয়া পায় পূর্ণতা
প্রাচীন জল পতনের শব্দ ভেসে আসে
স্পন্দন শুনি শরীরে,সে এক প্রগাঢ় আলোড়ন।

আমি তোমার যন্তণা

আমি তোমার প্রেম আমি তোমার যন্তণা
যা তুমি আরধ্য করেছিলে তা অভিশাপের জ্যোৎস্নায় ঢাকা
কণ্ঠে তোমার বেঁধে আছে হেম পাথরের মালা
বিপন্ন সময়ে কোনো ভালোবাসাই মমত্ব পায়না
সংসারী হতে যেয়ে হয়েছো বৈরাগ্য
হেমন্তের পূর্ণিমার চা্ঁদ হয়েছে তোমার যন্ত্রণা
আমার প্রেমে নেই মদিরতা,নেই গোলাপের সুবাস
না পারো আমাকে ছাড়তে,না পারো ভালোবাসতে।

বৃহস্পতিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০১৬

তোমার চোখের অশ্রু

তুমি সুন্দর করে ঘর দুয়ার গোছাও,ঝকঝকে রাখো ঘরের মেজে।পরিপাটি রাখো আলনা।বারান্দায় ঝুল পড়েনা।আসবাবপত্রে জমে না ধূলো।মাঝে মাঝে ভাবি,আমি না থাকলে তুমি এমনি করেই কি ঘরদুয়ার গোছাবে ? ফুলদানিতে সাজাবে ফুল ? কিংবা জ্বালবে সন্ধ্যা বাতি ঠিক আগের মতো করেই ? আঙ্গিনার ধুলোবালি মুছতে যেয়ে আমার পায়ের চিহ্নগুলিও একদিন মুছে ফেলবে। আমার জন্যে কে্ঁদে থাকা  তোমার চোখের অশ্রুবি্ন্দুগুলিও একদিন শুকিয়ে যাবে, মুখে ভাসবে তখন তোমার করুণ কোনো হাসি।

আকাশ ছো্ঁয়ার স্বপ্ন

একবার দার্জিলিং এ যাবার পথে আমরা কার্সিয়াং নেমেছিলাম।পাহাড়ের গা কেটে রাস্তা। সেই রাস্তার উপর দাড়িয়ে দূরের পাহাড় দেখছিলাম।পিছেনেও পাহাড়,সামনেও পাহাড়,মাঝ দিয়ে ছড়ার মতো নদী।আমরা যে জায়গাটাতে দাড়িয়ে ছিলাম,একটু পা বাড়ালেই গিরি খাদ।পাহাড়ের ফা্ঁক দিয়ে দূরের নীল আকাশ দেখা যায়।এমন নৈসর্গিক ও স্বর্গীয় জায়গায় দাড়িয়ে ওকে বললাম- চলো,আমরা পাহাড়ের উপরে ঐ নীল আকাশ ছু্ঁইয়ে আসি।সে বললো- এটা কেবলই স্বপ্ন।আমি বললাম,তাহলে নীচে ঐ গিরি খাদে ঝাপ দিয়ে পাতালপুরী দেখে আসি।ও তখন বললো, এটা পারবে,এখানে মৃত্যু আছে।আমি তখন বললাম- আমি তোমাকে নিয়ে পাহাড়ের উপর আকাশ ছো্ঁয়ার স্বপ্নই দেখতে চাই, এতে করে গিরি খাদে পড়ে যদি আমাদের মৃত্যু হয়, তবে তাই হোক।

বুধবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০১৬

অতলান্ত জল

তোমাকে নিয়ে সাগরের জলের দিকে চোখ রেখে বলেছিলাম- এ জল সব আমার।তুমি বলেছিলে- এই জল যদি কখনো আমার চোখের জল হয়,তাও কি তোমার ? বলেছিলাম- চোখে এতো জল হয় নাকি ? উদ্দাম সাগরের অতলান্ত জল রাশির দিকে তাকিয়ে সেদিনের সেই বিষন্ন সূর্যাস্তবেলায় তুমি বলেছিলে- এই রকমই চোখের জলে সাগর হবে আমার,যেদিন তুমি থাকবে না।

বিদায়ী পংতিমালা

যে ছেলেটি একদিন ্ট্রেনে করে এসেছিলো এই ঢাকা শহরে
সে আজ শববাহি যাত্রি হয়ে চলে যাচ্ছে তারই শহরে,
তার জ্বলজ্বলে চোখ ভালোবেসেছিলো বাংলাদেশের মানচিত্র
উদ্দাম তারুণ্যে বার বার হেটে গেছে রবীন্দ্র সরোবরের কাছে
যেখানে নিহত হয়েছিলেন স্থপতি,জাতির পিতা
 ইতিহাসের সেই আদর্শিক পিতার ছবিকে করেছো কুর্নিশ।
তুমিতো বহিমিয়ান ছিলে না,তুমি লিখতে কবিতা
জীবন থেকে শব্দ তুলে এনে লিখতে গল্প
কি অভিমান ছিলো তোমার ! ধূসর এই হেমন্ত সন্ধ্যায়
চলে গেলে তুমি বহ্মপুত্রের তীরে,শেষ খেয়াটির অপেক্ষা না করে।

যমুনা পাড়ের মাঝি

জীবনে যশ খ্যাতি কোনাটাই হলো না। তারচেয়ে যমুনা পাড়ের খেয়া নৌকার মাঝি হতাম,অথবা কোনো জেলে।অদ্বৈত মল্লোবর্মণের তিতাস পাড়ের বাসন্তির মতো কোনো মালো মেয়েকে বিয়ে করতাম অথবা পদ্মাপারের কোন এক মালাকে। সেখানেও কপিলার মতো যৌবনবতী কারো সাথে পরকিয়া করতাম। নিঝুম চরে শেয়াল ডাকা ঘুটঘুটে অন্ধকারে রাত নামতো।বয়ে চলা নদীর শো-শো শব্দে হৃদয় কা্ঁপতো  কপিলা অন্ধকার ঘরে কেরোসিনের কুপি জ্বেলে অপেক্ষা করতো।রাতের আকাশে দেখা দিতো ভরা পূর্ণিমার চাঁদ। নিঝুম রাতে কপিলাকে নিয়ে নদীর তীর ঘেষে হেঁটে হেঁটে চলে যেতাম অনেক দূরে । উদ্দাম জনশূন্য নদীর জলে খেয়া নৌকায় ভাসতাম দু'জন।রাতভোর জ্যোৎস্নাা ঝরতো সেই কালো নৌকাটির ভিতর।

মঙ্গলবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১৬

যানজটের তলায়

এই শহর আর ভালো লাগে না।রাজপথে যানজটের তলায় পিষ্ট হয় প্রিয় সময়।আমার ঘরে ফেরার জন্য স্ত্রীর অপেক্ষা  ক্রমাগত লম্বা হয়।বাড়ীর গেটে গাড়ীর হর্ণ শোনার জন্য কন্যাটি কান পেতে বসে থাকে।বেলা গড়িয়ে যায়,সে হর্ণ আর বাজে না।



সংসারভূক

একটি কোমল হাতের স্পর্শে ঘুম ভেঙ্গে যায়।সে কি ছু্ঁয়েছিলো আমার কপাল ? ঘুম ভাঙ্গবার আগে হাতের চুড়ির রিনিঝিনি শব্দ বেজেছিলো কি ? চোখ মেলে রাতের স্বপ্নগুলি মনে করতে পারিনি কিছুতেই। চুম্বনগুলো কি স্বপ্নের মধ্যে ছিলো ? তার দিকে অপলক চেয়ে থেকেই সকাল শুরু হয়ে যায।কোর্টের বোতাম লাগাতে লাগাতে সে অফিসের চাবীটাও তুলে দিয়েছিলো আমার হাতে।এতো যে ভালোবাসা,এতো যে টান,তারপরও নিজকে আজো সংসারভূক করতে পারিনি।

শাকিল ভাই

 প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী,সদা হাস্যজ্বল মাহবুবুল হক শাকিল ভাই আর নেই।তার সাথে.আমার পরিচয় হয়েছিলো ফেসবুকে,তার লেখা আমার ভালো লাগতো,আমার লেখাও তিনি পছন্দ করতেন।আাাচমকা আজ তিনি আমাদের ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন ।কস্টে বুকটা ভারী হয়ে আসছে। কি লিখবো।আপনি জান্নাতবাসী হন শাকিল ভাই।
ফেসবুকে তার শেষ স্টাটাসটা ছিলো একটি কবিতা।সেই কবিতার ক'টি লাইন-
"তোমাদের দরজায় দাঁড়িয়ে থাকবে এক প্রগাঢ় দীর্ঘশ্বাস,
আরো একবার তোমাদের মোথিত চুম্বন দেখবে বলে।
মৃতদের কান্নার কোন শব্দ থাকে না, থাকতে নেই,
নেই কোন ভাষা, কবরের কোন ভাষা নেই।
হতভাগ্য সে মরে যায় অকস্মাৎ বুকে নিয়ে স্মৃতি,
তোমাদের উত্তপ্ত সৃষ্টিমুখর রাতে।ভালবাসা, তোমার জন্য।"

My death note

আমার দায়ভার যখন শেষ হবে,তখন অপেক্ষাই বা কেন করবো ? সেই উদ্দাম,আনন্দময় জীবন যদি আর নাই থাকে, অক্ষমতা আর বোঝা হয়ে থাকা এই সুন্দর পৃথিবীর কাছে গ্লানিকর।সব সু্ন্দর শেষ হবার সন্ধিক্ষণেই ঘরের জানালা দরজা সব খুলে রাখতে চাই। আত্মার ্প্রস্থানের সাথে মানুষের সকল দুঃখের নাকি পরিসমাপ্তি ঘটে।পৃথিবী থেকে চলে যাবার আনন্দটাই তখন সেখানে।

সোমবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০১৬

নতুন দিন

আয়নায় মুখ চেয়ে ভাবছিলাম জীবনে কি পেয়েছি।ভাবতে যেয়ে গ্লাসটি হাত থেকে পড়ে খান খান হয়ে ভেঙ্গে গেলো।কবিতা লিখতে যেয়ে অনেক কবিতাই যেমন অসমাপ্ত রাখতে হয়েছে,ছন্দ মেলাতে পারি নাই।তেমনি জীবনের অনেক প্রাপ্তি আছে,অনেক আলিঙ্গন আছে যা অতৃপ্তই রয়ে গেছে। বঞ্চনা আর না পাওয়ার ব্যাথা বেদনা নিয়েই জীবন এগিয়ে চলছে।এই যে আমি এখনো জেগে আছি।তারপরেও চোখে ঘুম আসবে।ঘুমিয়ে যাবো।তারপর সকাল হবে।পাখী ডাকবে।আরো একটি নতুন দিন আবার শুরু হবে।

মৌন বেদনা

কাল অর্ধেক রাতে ঘুম ভেঙ্গে যায়।জানালা খুলে দেখি বাইরে শিশির ঝরছে।রাতের অন্ধকারে কুয়াশাগুলো পাখা মেলে উড়ে যাচ্ছে।খুব ইচ্ছা করছিলো বাইরে যেয়ে শিশিরে ভিজে আসি।একাকী নয়,দু'জনে মিলে।এই রকম আদিগন্ত শিশির ঝরা রাতে স্নাত হতে মন চাইছে।কিন্তু আমি জেগে আছি,সে জেগে নেই।আমি ব্যাকুল হয়েছি,সে হয় নাই।এ রকম কতো ইচ্ছা,কতো আকাংখা মায়াবী রাতের গভীরে লীন হয়ে গেছে।সে মৌন বেদনাগুলো আমিই একাকী পেয়েছি।সে পায় নাই।আবার এমনও তো হয়তো অনেক হয়েছে , তারও অনেক কামনা বাসনা আমি পূরণ করি নাই।তার সেই মৌন বেদনাগুলি সে লুপ্ত রাখিয়াছে, এমনি করে সেও একাকী ভোগ করিয়া গিয়াছে।সে খবর আমি রাখি নাই।

আমাদের ভালোবাসাগুলো

মাঝে মাঝেই কেমন অস্থির হয়ে উঠি।পরিপূর্ণ করে তোমাকে ভালোবাসতে পারিনা। কোনো এক চোরাবালিতে মায়া মমতার সৌরভগুলো হারিয়ে যায়, কোথায় কোন্ বালিয়ারিতে চলতে যেয়ে বাধা পড়ে যাই।তুমিও এ জন্যে বিষন্নতায় কা্ঁদো । ভালোবাসার অনুভবগুলো এই রকমই মনে হয়- এই মেঘ হয়ে জল ঝরে, আবার শুস্ক নদীর মতো সব  যেনো শুকিয়ে যায়।

রবিবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০১৬

সবাইকে ভোরের শুভেচ্ছা

নদী যেমন চলতে চলতে এক জায়গায় এসে থমকে সরোবর হয়,তেমনি কোন দেবতার মঙ্গল আলোকের মতো অসিম ভালোবাসা নিয়ে সে আমার কাছে এসে সরোবর হয়েছে। যেনো পলাতকা কোনো ঝর্নার জল,প্রতিদিন জলে ভরি। তার মনটি আজ সকালের শিশির ঝরার মতো ঝির্ ঝির্ করে কাঁপছে। সবাইকে ভোরের শুভেচ্ছ।

ভালোবাসা

ভালোবাসার প্রথম পা‌ঠ নিয়েছিলাম কোনো নদীর কাছে, খোলা আকাশের নীচে, মূর্তে-বিমূর্তে, গ্রীষ্মের প্রখর দীপ্তিতে, বর্ষার ধারায়, শীতের উষ্ণতায়, প্রাণখোলা বসন্ত বাতাসে,শরতের ঔদার্যে, হেমন্তের পেলবতায়, সৌন্দর্যে আর বীভৎসতায়, উৎস আর মোহনায়, নগ্নতায় এবং আড়ালে, ধূসর সাম্রাজ্যে নিষিদ্ধ সেই সব শব্দগুলির সাথে তোমার নামটিই জড়িয়ে আছে।

শূণ্য নদী তীরে

নব্বই দশকের কথা।বাড়ী থেকে হঠাৎ খবর পেলাম মা অূসুস্থ।অফিস থেকে তৎক্ষণাৎ ছুটি নিয়ে সোজা মহাখালী বাস স্ট্যান্ডে চলে যাই।তখন টাংগাইলের ভূ্ঁয়াপুর পর্যন্ত বাসে যেয়ে লঞ্চে সিরাজগঞ্জ যেতে হতো।,মহাখালী বাস স্ট্যান্ডে চলে আসি। মহাখালী থেকে বাস ছাড়ে দুপুর একটায়।ভূ্ঁঁয়াপুরের চর গাবসারা পৌ্ঁছতে পা্ঁচটা বেজে যায়।চর গাবসারা থেকে আরো দেড় মাইল বালুচর পায়ে হেটে লঞ্চ ঘাটে পৌ্ঁছি। ঘাটে পৌ্ঁছে দেখি লঞ্চ ছেড়ে মাঝ দরিয়া পর্যন্ত চলে গেছে।ঐটি ঐদিনের শেষ লঞ্চ ছিলো। ভট ভট শব্দ করে লঞ্চটি ছুটে চলেছে।আমি সারেংকে ইশারা করে ডাকলাম,কিন্তু কে শুনে কার কথা।কে জানবে আমার মা যে গুরুতর অসুস্থ।আমাকে যে যমুনা পাড়ি দিতে হবে। সেদিনের আর কোনো লঞ্চ নাই, কোনো নৌকাও রাত করে যেতে রাজি হলো না । কি করবো। তখন সন্ধ্যা ঘনে এসেছে।শূণ্য নদীর তীরে নির্জন বালুচরে একাকী পড়ে রইলাম।

শনিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০১৬

একটাই স্বপ্ন দেখা

এক সময় মনে হতো আমি সবার রাজকুমার।বিয়ের পরে হয়ে গেলাম শুধু তোমার।আগে সাগরের জলে ভেসেছি এখন দিঘীর জলে ভেসে বেড়াই।আগে রঙ্গিন চশমায় দেখতাম পৃথিবী,এখন স্বচ্ছ গ্লাসে তোমাকে দেখি।আগের স্বপ্ন গুলো ছিলো এলোমেলো, এখন স্বপ্ন দেখি একটাই- তোমাকে নিয়ে সুখের ঘরবা্ঁধা।

আমার বর

কিশোর বয়সে পাড়ার এক ভাবীর গোলাপী গালে টোকা দিয়ে বলেছিলাম- খুবই সুন্দর তোমার গাল। আর একদিন তার কাজল কালো চুলের গন্ধ নিয়ে বলেছিলাম- তি্ব্বত কদুর তেলের সুবাস আমার ভালো লাগে।আর একদিন, পিছন থেকে তার চোখ চেপে ধরেছিলাম- বলতে হবে কে ? সে ভুল করে বলছিলো- আমার বর।

এসো রাত্রি এসো জ্যোৎস্না

এসো রাত্রি এসো জ্যোৎস্না এসো তুমি
এসো আলোতে এসো আধারেতে
এসো নৈঃশব্দে এসো একাকীত্বে
দখিন দুয়ার খোলা,দখিন জানালাও খোলা
এসো বুকে এসো অলক্ষ্যে এসো আনন্দলোকে
এসো যামিনী এসো ওগো কামিনী
এসো চরণ নাচিয়ে এসো বক্ষ দুলিয়ে
এসো রাত্রি এসো জ্যোৎস্না এসো তুমি
খোলো বাস খোলো অনর্বাস,হবে সহবাস।

ভালোবাসি

 নির্জন শ্মশাণ ঘাটের পুড়ে থাকা করোটি আর হাড়গোরের গন্ধের মধ্যে বসে তোমাকে আমি বলতে পারি- ভালোবাসি।গোরস্থানের কবরের বাঁশের চাটাই আর কাফনের কাপড়ে বসে রাত্রি নিশীথে ঝি্ঁঝিঁ পোকাদের গান শুনতে শুনতে তোমাকে আমি বলতে পারি- ভালোবাসি। শিয়াল,কুকুর,সরিসৃপ,গিরগিটি,,কীট পতঙ্গ ঘেরা কোনো জঙ্গলে ভয়লেশহীন কন্ঠে তোমাকে বলতে পারি- ভালোবাসি।

ধরিত্রীর উষ্ণতা

কি করে ভুলে থাকতে পারি এই আকাশ, ধরিত্রীর উষ্ণতা, বাতাসের সতেজতা, জলের ঝিকিমিকি। এই ধরিত্রীর প্রতিটি অংশই আমার  কাছে পবিত্র। পাইন গাছের প্রতিটি চকচকে ডগা, বালুকাময় প্রতিটি সমুদ্রতট, অন্ধকার বনভূমিতে জমে থাকা কুয়াশা, প্রতিটি প্রান্তর, প্রতিটি পতঙ্গ আমার পবিত্র। কি করে ভুলতে পারি ধানক্ষেতের ভিতর দিয়ে বয়ে চলা সেই ঝিলিমিলি বাতাস।অশোথের গাছ থেকে ঝরে পড়া পাতার শব্দ।এই সবই আমাকে ঘর থেকে টেনে বের করে নিয়ে যায়।

শুক্রবার, ২ ডিসেম্বর, ২০১৬

তুমি আসো বসন্ত দিনে

তোমার প্রতিটি অঙ্গ প্রতঙ্গ আমার প্রিয়
এই যে আনত গ্রীবা বে্ঁকে আছে প্রথমা চা্ঁদের মতো
তোমার করতল,তোমার কু্চকানো ভ্রু,গালের পাশে খয়েরী তীল
কখনো প্রিয় হয় রোদ্রের ঝিলিক মাখা ঠো্ঁট
যেখানে গোলাপের পা্ঁপড়ি ঝরে পড়ে সকাল বিকেল
আমার ভালোলাগে জলভরা চোখ
যে কা্ঁদে মেঘে কা্ঁদে বৃস্টিতে কা্ঁদে
আমার কাছে তোমার আসাটা প্রিয় হয়
তুমি আসো কখনো তপ্ত দুপুরের রোদ্রে পুড়ে
তুমি আসো কাদাজল ভেঙ্গে বূস্টিতে ভিজে
তুমি আসো বসন্ত দিনের উদ্ভ্রান্ত বাতাসে।

এই দেশ আমাদের মা

তোমার সন্তানদের বলবে যে এই মাটিতে মিশে আছে শহীদদের রক্তের দাগ, পায়ের তলায় যে মাটি তাতে আছে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের দেহাবাশেষ।আমাদের স্বজনদের,আমাদের পূর্বপুরুষদের প্রাণ মাটিতে মিশে একে সমৃদ্ধ করেছে, তাই এই মাটিকে যেন তারা শ্রদ্ধা করে। তোমার ছেলেমেয়েদের শিখিও- এই দেশ আমাদের মা।মায়ের মতোই একে ভালোবাসতে হবে।যদি প্রাণ দিতে হয়- দেবে প্রাণ।

নাফ নদীর কান্না

 আরাকান,জ্বলছে রাখাইন,জ্বলছে মংডু,জ্বলছে
 রোহিঙ্গাদের,মারছে রোহিঙ্গা,গণহত্যা চলছে
ধর্ষিত হচ্ছে তরুণী,যুবতী,দাসী,যৌনকর্মী
রক্তে ভাসছে কালাদান,লেশ্রু,মায়ু নদী
রক্ত গড়িয়ে  নামছে সাবরিনি,কাইন দিয়ে
লুসাই পাহাড় দেখছে গণহত্যার বিভৎসতা,
ইয়োম পর্বতমালা শুনছে রোহিঙ্গাদের গগনবিদারী কান্না                                                                                 নারী শিশুর আর্তনাদে ভারি হয়েছে লংগিয়েতের বাতাস
রোহিঙ্গাদের দীর্ঘশ্বাসে বিষন্ন পেরিসের আকাশ।

ছি! অংসান সূচি ! কি লজ্জা ! কি শান্তির ছো্ঁয়া তোমার নভেল পদকে
পদদলীত করি তোমার পুরস্কার,তুমি শুনে যাও এসে নাফ নদীর কান্না,
এই যে এতো মৃত্যু এখানে এই উপত্যাকায়
কোথায় এ্যামনেস্টী ? কোথায় জাতিসংঘ ? মানবধীকার ধ্বজাধারী্রা ?
ধিক্কার মুসলিম জাহান, আহা ! কোথায় পাকিস্তান ?
কোথায় আরব বিশ্ব ? কোথায় ইরান,তুরান, আফগানিস্তান ?
ছি! ধিক্কার দেই,অভিশাপ দেই,থুথু দেই তোদের চোখে মুখে।

নাফ নদী দিয়ে ভেসে আসা লাশ দাফন করতে হবে আমাদেরকে
নাফ নদী দিয়ে ভেসে আসা মানুষের কান্না থামাতে হবে আমাদেরকে
যতো দায় যেনো আমাদের, বাংলাদেশের, এ দেশের মানুষের !


তুমিতো বিরহিনী নও

তুমি আমাকে না বলে দিগন্তে নেমে আসা আকাশ ছু্ঁইতে গিয়েছিলে
তুমি একা পাহাড়ের ঝর্ণাতলায় স্নান করে শীতল হতে গিয়েছিলে                                                                     পাথরে রেখেছিলে পা, জলে ভিজিয়েছিলে চোখ,মুুখ ও শরীর।
তুমি একদিন বকুল তলায় একা হেটে হেটে গান গেয়েছিলে
নীল রং শাড়ী পড়ে একাকী দাড়িয়েছিলে বিকেলের বারান্দায়
দখিনের হাওয়ায় উড়েছিলো তোমার চুল,শাড়ীর আঁচল
তুমি রাতের আধার দিয়ে একা ঢেকে রেখেছিলে তোমার মুখ
তুমিতো বিরহিনী নও,তবে কেন নিজেকে এমন একা করে রাখা।


এই জীবন,এই পথ

ঘর হতে বেরিয়ে আলোতে এসে দাড়াই।বাইরে এতো আলোর ছ্বটা, ঝলমল করছে বৃক্ষরাজি,অ্ট্টালিকা,পশু,পাখী, পাহাড়,নদী,সাগর ।মনে হচ্ছে এই আলো মেখে পরিপূর্ণ করি আমাদের জীবন।আমাদের স্বপ্ন দেখা শেষ হয় নাই, জীবন পরিপূর্ণ হয় নাই। আমার সাথে তো একজন সাথী আছে, সে এখনো আমার হাত ধরে আছে। যে আলো আজ দেখছি সে আলোয় দু'জনে মিলে পথ চলে যেতে পারবো অনেক দূর। জীবন কোথাও শেষ করতে চাইনা। পথ চলাও না।এই জীবন,'এই পথ কোনো দিন যেন শেষ না হয়।'

বৃহস্পতিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১৬

সুন্দর আছি

মুঠোফোনে আজ আমাকে একজন বললো- সুন্দর আছেন তো ? ওপাশে ছিলো সুন্দরী বিবাহিত এক রমণী।তার চোখ দিয়ে কি সুন্দর দেখতে চেয়েছেন- জানি না।আমি পরকিয়ায় অভ্যস্ত নই। অবিবাহিত পরকিয়ারও কোনো অভিজ্ঞতা নেই। খুবজোড় আমি তাকে নিয়ে লিখতে পারি একটি কবিতা।সেখানেই বলে দিতে পারি, সুন্দরের সব কথা।আমি সেই রমণীকে বললাম- সুন্দর আছি।ওপাশ থেকে কোনো কথা বললো না । তখন আমি আবার বললাম- You may check your Inbox tomorrow.

আধারে তোমাকে খু্ঁজি

তুমি নেই আমার মন ঘুরে বেড়ায় তোমার ছায়ায়
যে বিকেলে বিছিয়েছো তোমার আ্ঁচল অসীম মায়ায়
সে বিকেলও সন্ধ্যা আসার আগেই অস্তমিত হয়ে যায়                                                                                        দূরে কোথাও বাজে কেবলই তোমার নিঃশব্দ পদধ্বনি
রাতের গভীরে সে পদধ্বনিও নীলিমায় যায় মিলিয়ে
রাতের আধারে তোমাকে খু্ঁজি ভিজায়ে চোখের জল
সে রাতও কখনো ভোর হয় নাই হয়েছি কেবল আকুল।