রবিবার, ৩১ জুলাই, ২০১৬

জিনাত আমান

সে ছিল আমাদের তরুন বয়স, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের উঁচু ক্লাসে পড়ি , যাকে বলে যৌবনকাল আসার সময়। সে বয়সে কত কি ঘটে! হঠাৎ চুমুর দ্বিধা,অমরাবতীর পাশেই লুকনো থাকে রঙ্গীন স্বপাবলী। প্রথম সিগারেট টানার রোমাঞ্চ এবং হঠাৎ করে নারীশরীরের এলোমেলো বা্ঁক দেখে যে কাপ্ঁন হতো তা কোথাও গিয়ে যেনো মিলিয়ে যেতো। ঐ সেই বয়স, -সত্তরের প্রথম ভাগ, সেই বয়সে মেরিলিন মনরোর অনাবৃত পোস্টার মমতায় লুকিয়ে রেখেছি। আমাদের মেরিলিন মনরো ছিলেন তখন জিনাত আমান, যার ছবি ভিডিওতে দেখার জন্য বেগম বাজারের অলিতে গলিতে ছুটে গিয়েছি। তিনি আদরে মমতায় তরুন জেনারেশনের কৌতহলী গোপন পথ আলগে রেখেছিলেন। শরিরী আলোছায়ার জটিল নকশাগুলো আমাদের চোখের সামনে মেলে ধরেছিলেন। 

বন্যার জল

খুব ছোটবেলার কথা। স্মৃতিতে পুরু ধূলো জমে গেছে। হাতড়িয়ে বের করতে কষ্ট হচ্ছে। সম্ভবতঃ ওয়ান অথবা টু ক্লাসে পড়ি। তখন থৈ থৈ বর্ষাকাল।পুকুর,গাং,নদী বানের পানিতে উছলে উঠেছে। ফসলি প্রান্তরও জলে টইটুম্বর।অথৈ দরিয়ার মতো লাগতো।একদিন দুপুরের পরে আমাদের বাড়ীর কৃযি কর্মী আবুল ভাই আমাকে ডিঙ্গি নৌকায় করে বন্যার পানি দেখাতে নিয়ে যায়। সারা বিকেল সন্ধ্যা পর্যন্ত নৌকায় ঘুরেছি। এক পুকুর থেকে আরেক পুকুরে, কখনো গাংএ, কখনো নদীতে। পাল তোলা নৌকার সারি চলে যেতে দেখেছি। জেলেদের মাছ ধরা দেখেছি।ঝা্ঁকে ঝাঁকে হা্ঁসদের জলে ভাসতে দেখেছি।পানকৌ্ড়ি, মাছরাঙ্গা আর বকদের পাখা ঝাপটার শব্দ শুনেছি।দখিণা বাতাসে ঢেউয়ের ছলাৎ ছলাৎ আওয়াজ শুনেছি। জলে ভাসা আমন ধানের ভিতর দিয়ে চলেছে ছোট ডিঙ্গিখানি। আমার মনে আছে দক্ষিনের এক বিল থেকে আবুল ভাই আমাকে শালুক উঠিয়ে দিয়েছিলো।
এখন আর সেই বন্যা নেই। সে জলও নেই।বাধ পড়েছে যমুনার দুই পাড়ে। ২০১২ সালে  একবার বাড়ীতে গিয়েছিলাম। আবুল ভাইয়ের সাথে দেখা হয়েছিল।সে তখন সত্তরোর্ধ এক বৃদ্ধ।আবুল ভাইকে বললাম: খুব ছোটবেলায় তুমি আমাকে নৌকায় করে বন্যার জল দেখাতে নিয়ে গিয়েছিলে।মনে আছে সে কথা ? আবুল ভাই মাথা নেড়ে বলেছিল- আছে।বলেছিলাম, আবার একবার বন্যার জল দেখাতে নিয়ে যাবে আমাকে ? আবুল ভাই কেবল ছল্ ছল চোখে আমার দিকে তাকিয়েছিলো। হ্যা না কিছুই বলে নাই।

শনিবার, ৩০ জুলাই, ২০১৬

সুসিলা দেবী

সুসিলা দেবী। আমাদের পাশের গ্রামের এক পৌঢ়া মহিলা, বিধবা এবং নিঃসন্তান। ডিস্টিক বোর্ডের কা্ঁচা রাস্তার পাশে তাহার বাড়ী।বাড়ীর সামনে সান বাধা্ঁনো পুকুর। বাড়ীর ভিতর পাকা ই্দাঁরা। সারা বাড়ী বিভিন্ন ফল আর ফুল গাছে ঢাকা ।এই ছায়া সুনিবিড় বাড়ীটির পাশ দিয়াই ছোটবেলায় স্কুলে যাইতাম।যখন বাড়ীটি অতিক্রম করিতাম তখন পায়ের চলার গতি থামিয়া যাইতো, শুধু মাত্র সুসিলা দেবীকে এক নজর দেখিবার জন্য। খুবই পরিপাটি সুন্দরী মহিলা ছিল।সাদা ধবধবে ধুতি শাড়ি পড়িতো। চুলগুলোও ছিলো সাদা। কোনো কোনো দিন দেখিতাম সুসিলা দেবী একাকী ঘাটে কাপড় ধৌত করিতেছে। আবার কোনো কোনো দিন দেখিতাম,ফুল বাগানের কা্ঁটালতা পরি্স্কার করিতেছে।আবার কোনো কোনো দিন দেখিতাম সে খুব বিষন্নভাবে কেদেরায় একাকী বসিয়া আছে।
তখন ছোট ছিলাম তাই বুঝিতাম না সুসিলা দেবীর নিঃসঙ্গতা ও বেদনার কথা। অস্তগামী সূর্য্ অস্তাতলে যাইবার সময়ে হয়তো তাহার মনে পড়িতো যৌবনকালের কোনো সুখ স্মৃতির কথা। প্রিয়তম স্বামীর কথা, বুকে টানিয়া নেওয়া গভীর কোনো চুম্বনের কথা। তখন চোখের কোন্ জলে ভরিয়া উঠিতো। দীর্ঘশ্বাস বাতাসে মিলিয়া যাইতো। দূর হইতে হাটিয়া যাইবার সময় আমি এইসবের কিছুই দেখিতে পাইতাম না।

মুক্তিযুদ্ধের সময় সুসিলা দেবী ভারতে চলিয়া যায়। তারপর আর ফিরিয়া আসে নাই। দেশ স্বাধীন হয়। আমার স্কুল খুলিয়া যায়। সুসিলা দেবীর বাড়ীর পাশ দিয়া প্রতিদিন স্কুলে যাইতাম, বাড়ীটির দিকে তাকিয়া থাকিতাম কিন্তু তাহাকে আর কখনো দেখিতে পাই নাই।

শুক্রবার, ২৯ জুলাই, ২০১৬

প্রিয় সখা

এক সময়ের আমার প্রিয় বন্ধু মোশারফ। অনেক বছর পর এই  face book-এ গতকাল তার সাথে দেখা হলো।আমেরিকায় থাকে।কি কথা হয়েছিলো আমাদের সাথে ? দেখুন।

প্রিয় সখা, পৃথিবীর অপর গোলার্ধ থেকে অভিবাদন। যখন তোমার friend request দেখলাম তখন অফিসে এবং ব্যস্ত। ছোট্ট করে ইংরেজিতে একটু response করে দিয়েছি। এখন আমি লাঞ্চে। মনের আনন্দে বাংলায় লিখছি। তোমার কিছু post দেখলাম। আগের মতোই আছো মনে হচ্ছে। প্রকৃতির মতো। কোনো কপটতা নেই। তোমাদের সম্বন্ধে জানিয়ো। লুসী তোমার কথা বলেছে। আমরা ভালো আছি। নিত্য কুশল কামনায়, -মোশারফ।

আমি উত্তরে লিখিয়াছিলাম-
মোশারফ,তোমাকে আবার দেখিলাম ছবিতে। এই ঢাকা শহরের পথে পথে এমনিতেই তোমাকে অনেক খু্ঁজিয়াছি। পাই নাই। তোমরাতো অনেক দূরের মানুষ হইয়া গিয়াছো। তাও আবার অন্য গোলার্ধে। দেখিব কি ভাবে? মাঝখানে আটলান্টিক আর প্রশান্ত মহাসাগর। কবে আসিতেছো দেশে। আসিলে দেখা করিও। ভালোো থেকো।
-----কোয়েল।

হিলারির প্রতি

আজকের পত্রিকার খবরে পড়িলাম, হিলারি ক্লিনটন বলিয়াছে- সে প্রেসিডেন্ট হইলে কোনো ধর্মকেই নাকি নিষিদ্ধ করিবে না। ভালো কথা, কিন্তু এ সব কথা কেন মুখে আনো হিলারি ?
পৃথিবী অস্থির ও আতঙ্কিত হইয়া ওঠে। তোমার দেশে একজনও যদি অগ্নি উপাসক থাকে, তাহার ধর্মকে তোমরা নিষিদ্ধ করিতে পারো না। আর হ্যা্ঁ. কোনো ধর্মকে যদি নিষিদ্ধ করিতেই চাও,তাহা হইলে খ্রীষ্ট ধর্মকে আগে করিও,দেখিব পারো কিনা ।

বৃহস্পতিবার, ২৮ জুলাই, ২০১৬

টুনি আপু

মুক্তিযুদ্ধ সময়কার কথা। এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে পাকবাহিনী সিরাজগঞ্জ শহর দখল করে নেয়। তারো কয়েকদিন আগে থেকেই শহর থেকে মানুষ গ্রামের দিকে চলে আসতে থাকে। আমাদের গ্রামের বাড়ীতে তখন তিন চারটে পরিবার আশ্রয় নিয়েছিলো। টুনি নামে একটি মেয়ে এসেছিলো একটি পরিবারের সাথে।কলেজে ফার্সট ইয়ারে পড়তো। আমার চেয়ে দুই/তিন বছরের বড়ো হবে। আমি টুনিকে টুনি আপু বলেই ডাকতাম। খুব সুন্দরী মেয়ে। টানা টানা মায়াবী চোখ তার। লোকে বলতো: তো দেখি মধুবালা। গ্রামের সমস্ত মানুষ আর বউঝি'রা টুনি আপুর দিকে উৎসুক নয়নে তাকিয়ে থাকতো।  সুন্দর গান করতো। সময়কার  সিনেমার ভালো ভালো গান গুলো সে গাইতো। যেমন- 'গানেরই খাতায় স্বরলিপি লিখে' ,'মন যদি ভেঙ্গে যায় যাক', তুমি যে আমার কবিতা'
সহজ সরল বালক ছিলাম আমি। জন্য মনে হয় টুনি আপু আমাকে একটু বেশীই আপন করে নিয়েছিলো
এক মাস ছিলো টুনি আপু'রা। তারপর অধিক নিরাপত্তার জন্য আমাদের বাড়ী থেকে আরো উত্তরদিকে দূরে অজ পাড়া গা্ঁয়ের দিকে  তারা চলে যায় যেদিন চলে যায় তার আগের দিন সন্ধ্যা রাতে বাড়ীর খোলা আঙ্গিনায় মাদুরে বসে  টুনি আপু সবাইকে গান  শোনায়ে গিয়েছিলো। সেদিন আকাশ ভরা তারা ছিলো। সারা গ্রামময় পূর্ণিমা ছিলো।আপু গেয়েছিলো- 'একি সোনার আলোয় জীবন ভরিয়ে দিলে ওগো বন্ধু কাছে থেকো।'
তারপর পয়্ঁতাল্লিশ বছর চলে গেছে। এর মাঝে টুনি আপু' সাথে আর কখনো দেখা হয় নাই

শুধু মনে হয়,যদি আর একবার মক্তিযুদ্ধ হতো, যদি আর একবার টুনি আপু'রা আসতো আমাদের গ্রামে !

বুধবার, ২৭ জুলাই, ২০১৬

কোকিল ডাকে

ডঃ সাঈদ উর রহমান স্যার আমাদের মধ্য যুগের বাংলা গীতিকবিতা পড়াতেন। একবার এক ক্লাসে স্যার বিদ্যাপতি পড়াচ্ছিলেন। স্যারের আলোচনায় সেদিন অনেক প্রসঙ্গই উঠে এসেছিল- রাধিকার প্রেমলীলা,কৃষ্ণের বা্ঁশি, শৃঙ্গার রস, প্রকৃতি যেমন বর্ষাকাল, মেঘ গুরুগম্ভির বৃষ্টি, বর্ষায় কোকিল ডাকা ইত্যাদি। আমি দাড়িয়ে স্যারকে প্রশ্ন করেছিলাম- 'স্যার,বর্ষাকালে কি কোকিল ডাকে?' স্যার একটু হচকিত হইলো মনে হয় কিন্তু পরক্ষনেই স্মিতহাস্যে উত্তর দিয়াছিল: 'বৃন্দাবনে ডাকে।'

মঙ্গলবার, ২৬ জুলাই, ২০১৬

গা্ঁজা ও প্রসাদ

১৯৭৬ সালের শীতের এক সন্ধ্যা রাতের কথা। তখন সবে মাত্র কবি জসিম উদ্দীম হলে উঠেছি। কি মনে করে একাকী  রেসকোর্স ময়দানের ভিতর দিয়ে হেটে হেটে হাইকোর্টের মাজারের দিকে যাচ্ছিলাম।ইচ্ছা হয়েছিল এক পুইরা গা্ঁজা কিনে জট্ ফকিরদের মাঝে বসিয়া তাতে টান দিব।ফকিরদের কাছে এগিয়ে যেতেই দেখলাম, গুরু (নির্মলেন্দু গুণ) সেখানে বসিয়া আছে। আমি আর ওদিকে গেলাম না। আস্তে আস্তে হেটে হেটে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দক্ষিণ পাশে রমনা কালী মন্দিরের দিকে  যাই। পেটে খিদে ছিলো, ভাবিলাম- মন্দিরে সাধু সন্যাসীদের মাঝে বসিয়া প্রসাদ খাইবো। সামনের দিকে এগিয়ে যেতেই দেখি আরেক গুরু ( মহাদেব সাহা ) সেখানে বসিয়া আছে। সেদিকেও আর এগুলাম না। কি আর করবো ! গা্ঁজায় টান আর প্রসাদ খাওয়া কোনোটাই হলো না। মনের দুঃখে সেদিনের সেই সন্ধ্যায় হলে ফিরিয়া আসিয়াছিলাম।

সোমবার, ২৫ জুলাই, ২০১৬

তুমি আমার অর্ধেক আকাশ

কেন বুদ্ধ সবকিছু ছেড়ে বেরিয়ে পড়েছিলেন ? আর বেরিয়ে কৃচ্ছসাধনের মার্গ থেকে এক নিঃসঙ্গতার বিশ্বে ,পরম শূন্যতার বিশ্বে- তিনি কি খুঁজে পেয়েছিলেন? নীরবতা? শান্তি? জীবনের চরম অর্থহীনতা? না অর্থপূর্ণতা?
এই জটিল কথাগুলো যখন ভাবছিলাম ঠিক তখনি আমার স্ত্রী আসিয়া বলিল: কি ভাবিতেছো ?
বলিলাম ,ভাবিতেছি  - হে প্রিয়তমা,তুমি আমার অর্ধেক আকাশ !
স্ত্রী পুনরায় বলিল: বাকি অর্ধেক তাহলে কার ?
বলিলাম: ঐ অর্ধেকও আমার,পরজনমের জন্য রেখে দিয়েছি।

অনন্ত লেকের জলে চাঁদ পড়ে আছে

অনন্ত লেকের জলে চাঁদ পড়ে আছে

তারপর একদিন আমরা জেগে উঠি দীর্ঘ নিদ্রার পর। রূপকথার মতো, নারীর মতো, প্রেমের মতো সেইসব প্রথম ভোরের আলোয় সত্যের মুখ দেখা যায়। সেই অনাস্বাদিত ভোরবেলায় আমি ফিরে আসি গন্তব্য ছেড়ে, লাস্ট ট্রেন মিস করে নিজের শিকড়ের কাছে। 

আমার মুক্তি আলোয় আলোয়

এক একটি গান হঠাৎ করে কেমন জানি পেয়ে বসে আমাকে ।  ঘুরে ফিরে –সারাদিন সেই গান মনের মধ্যে একটানা বেজেই চলে । অনেক সময় দীর্ঘ দিন ধরে  সে গানের কথাগুলি, সুরের সেই মূর্নাছনাগুলি অন্তরে অনুরনিত হতে থাকে ।,এমনি একটি গানের কথা মনে পড়ছে - 'এই আকাশে আমার মুক্তি আলোয় আলোয়” – তরুণ বয়সে এই গানটি আমাকে যে কি গভীর ভাবে প্রভাবিত করেছিল সেই স্মৃতি আজও অম্লান হয়ে আছে ।

চন্দ্রনাথ মন্দির দর্শন

১৯৮৫ সালের জানুয়ারী মাসে সীতাকুন্ডের চন্দ্রনাথ মন্দির দেখতে যাই।আমার সাথে সহযাত্রী হিসাবে ছিলো আমার দুই সহকর্মী, একজনের নাম মোতাহার আর একজনের নাম তাজুল।
চন্দ্রনাথ মন্দির উঠার  রাস্তাটি  সীতাকুণ্ড কলেজ রোড দিয়ে সোজা গিয়ে বাঁধানো সিঁড়ি সংযুক্ত যে পথে  সেই পথ।   ১১৫০ ফুট উ্চু চন্দ্রনাথ পাহাড়। আমরা সিড়ি বেয়ে বেয়ে উপরে উঠতে থাকি।
হাঁপাতে হাঁপাতে উঠছি আর বিশ্রাম নিচছি।  নিজের শ্বাস-প্রশ্বাস অস্বাভাবিক হয়ে আসতো। ডানে-বায়ে দুদিকে চিরহরিৎ বর্ণের চাদরে ঢাকা পাহাড়, পেছনে সারি সারি ছোট-বড় পাহাড়-টিলা সবুজে ঢেকে আছে। সামনে একটু নিচু এক পাহাড়ের চূড়োয় একটা মন্দির ছোট্ট খেলনা বিন্দুর মত লাগতো। আরেকটু সামনে তাকালে বঙ্গোপসাগরের অংশ চোখে পড়ে। তারপরে দিগন্ত রেখায় লম্বা কালো একটা টান, ক্রমশ সমুদ্রতলে হারিয়ে যেতে থাকা দ্বীপ ভূখণ্ড ‘সন্দিপ’। একটা সময়ে আমরা মন্দিরে পো্ঁছে যাই। তখন মনে হচছিলো-- আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে....।                                                                      (নীচের ছবি দুটির একটি সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ মন্দির এবং অপরটি মন্দিরে ওঠার খাড়া সিড়ি। )

রবিবার, ২৪ জুলাই, ২০১৬

গুলিস্তান

গুলিস্তানে গুলিস্তান সিনেমা হলটি আর নেই। ভেঙ্গে হয়েছে মার্কেট। হলের নামেই পরিচিত ছিল জায়গাটি। ঢাকা শহরের ডাউন টাউন। মানুষ মফস্বল থেকে ঢাকা এসে  গুলিস্তানকে দর্শনীয় স্থান হিসাবে দেখতো। তা শুধু হলটির কারনেই।১৯৭০ সালে আমি প্রথম 'নাচের পুতুল' সিনেমাটি এই হলে দেখেছিলাম। এই হেরেটিজটি ভাঙ্গা হলো। আমরা কেউই তা দেখলাম না। কেউ কিছু বললোও না।

শনিবার, ২৩ জুলাই, ২০১৬

বহিমিয়ান

তারুণ্যের একটা সময়ে ইচছাকৃতভাবে মাঝে মাঝে বহিমিয়ান হতাম। নিজকে ভবগুরে করে রাখার মধ্যে একধরনের ভালোলাগা ছিল। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি।হলে থাকি। ফন্দি করে এক ঈদের ছুটিতে বাড়ীতে গেলাম না। হলেই থাকলাম।ঈদের দিন ঘুম থেকে একটু দেরী করেই উঠলাম।হলের ডাইনিং বন্ধ।কাটাবন মসজিদের পিছনে তখন বস্তি ছিল। ওখানকার এক ইটালিয়ান হোটেলে বসে নাস্তা করলাম। নামাজ পড়তে গেলাম না।কলাভবনের দিকে ফিরিয়া আসিলাম। ভবনের সামনের সিড়িতে বন্দধ দরজায় হেলান দিয়ে বসেে থাকলাম।জনমানব শূ্ণ্য। ক্যাম্পাসে কেউ নেই।
খুব জোরে জোরে গান ধরিলাম। দেখিলাম আমার গান শুনে সব কাকেরা উড়ে চলে গেল।
পরেরদিন রুমে শুয়ে আছি। সকালেও খাইনি,দুপুরেও খাইনি। সত্যিকারই মনখারাপ লাগছিলো। মিরপুরেে আমার বোন দুলাভাই থাকতো। তারা কেমন করে খবর পেয়েছে আমি ঈদে বাড়ী যাইনি। বিকেলবেলায় আমার দুলাভাই এসে রুমে হাজির। গম্ভির কন্ঠে আমাকে বলিল- " হিমু হইয়াছো ? কবি ! বসে বসে কবিতা লিখো ! মাথায় আবার বাবরি চুল।বাউল !..." অনেকটা কান ধরার মতো করিয়া দুলাভাই সেদিন আমাকে তা্ঁর বাসায় নিয়ে গিয়েছিলো।

শুক্রবার, ২২ জুলাই, ২০১৬

এক সন্ধ্যা রাতের কথা

১৯৭৮ সালের কোনো এক সন্ধ্যা রাতের কথা। আমি তখন কবি জসিম উদ্দীন হলের আবাসিক ছাত্র। বিকালের ক্লাস শেষ করে বন্ধুবর সুচিন্ত্য কুমার সাহা'র সাথে আড্ডা দেবার জন্য ওর হলে গিয়েছিলাম। সুচিন্ত্য জগন্নাথ হলের বর্ধিত ভবনের নীচ তলার একটি রুমে থাকতো। সেদিন দুজনের অনেক কথাই হয়েছিল। কথা আর আড্ডার মাঝে কোনো কারনে আমাদের মন খারাপ হয়েছিলো কিনা মনে নেই। ঠিক কালি সা্ঁজবেলা দু'জন গিয়েছিলাম পুরানো ঢাকার তা্ঁতি বাজারে। পলেস্তরা খসে যাওয়া একটি জীর্ন বাড়ীর দোতালার উপরে ছাদে বসে দু'জন সুরাপান করেছিলাম।খোলা আকাশের নীচে ঝিম ধরে বসেছিলাম অনেকক্ষণ।দূর আকাশে তারাগুলো খুব অনুজ্জ্বল লাগছিলো।পাশের সরু গলিতে কুকুরেরা করছিলো ঘেউ ঘেউ। সুরা খেয়ে সিড়ি ভেঙ্গে নীচে নেমে আসি দু'জন। পাশেই ছিলো মন্দির। সুচিন্ত্য মন্দিরের দেবী পদতলে নমিত হ'য়ে পূ্জাঁ করেছিলো। মাথায় সিদু্ঁর দেওয়া দূ' তিন জন মাঝ বয়সী রমণী তখন ধূপ জ্বালিয়ে উলুধ্বনি দিচ্ছিলো।
সুরাপানে দু'জনই ছিলাম নবীন। মাথা ঝিমঝিম করছিলো। ভাগ্য ভালো ছিলো সেদিন- পথ ভুলে ওয়াইজ ঘাটের স্টার সিনেমা হলের পাশের কোনো অন্ধকার গলির দিকে যাইনি দুজন।

বুধবার, ২০ জুলাই, ২০১৬

সিনেমা সেই সময়

আমার প্রথম সিনেমা দেখা ১৯৬৬ সালে। ছবির নাম বেহুলা। ছবিটি দেখেছিলাম সিরাজগঞ্জ শহরে মমতাজ সিনেমা হলে। তারপর সেই সময়ে একে একে দেখেছিলাম এতটুকু আশা, নীল আকাশের নীচে, সাত ভাই চম্পা, আবির্ভাব, অবান্চিত, স্বরলিপি ও জীবন থেকে নেয়া'র মতো চলচ্চিত্রগুলো। ঈদের দিন পা্ঁচ মাইল দূরে পায়ে হেটে সিরাজগঞ্জ শহরে আমরা বাল্য বন্ধুরা সিনেমা দেখতে যেতাম। প্রথমে দেখতাম ম্যাটেনী শো, তারপর ইভেনিং, তারপর নাইট শো। সিনেমা দেখে রাতে রাতেই বাড়ী ফিরে আসতাম।
সেই সময়ের সিনেমাগুলোর কি সুন্দর সুন্দর নাম ছিলো, কখনো আসেনি, সুতরাং, কাগজের নৌকা, ধারাপাত, পীচ ঢালা পথ। গান লিখতো সৈয়দ শামসুল হক, ডঃ মনিরুজ্জামান। জহির রায়হান, আব্দুল জাব্বার, এহতেশাম, সুভাষ দত্ত, খান আতা'র মতো ছিলো বরেণ্য পরিচালকেরা। মিস্টি মিস্টি নায়িকা ছিল,সুমিতা,শবনম,শাবানা,কবরী ছিল। রহমান, আজিম আর রাজ্জাকের মতো নায়ক ছিল।
এখন কী আছে, আর কী হচছে ! খাইছি তরে, পারলে ঠেকাও নামে সিনেমা হচছে। রসগোল্লা মার্কা নায়িকা'রা শরীর দোলাচছে। আলু পটল মার্কা নায়কেরা নাচের নামে লমপ ঝম্প করছে। সিনেমা হল ভেঙ্গে মার্কেট হচ্ছে। সিনেমার সেই সোনালী সময় এ জীবনে আর হয়তো দেখে যেতে পারবো না।


মঙ্গলবার, ১৯ জুলাই, ২০১৬

নেদু ঘোষ

আমাদের গ্রামের নেদু ঘোষের কথা এখনো মনে পড়ে। খুব সুন্দর দই,ঘোল,ছানা ,সন্দেশ আর ঘি বানাতো। ভোর বেলায় প্রায়ই যেতাম ঘোল কিনতে। নেদু ঘোষের বউ কাঠের টুল এনে বসতে দিতো। তারপর নেদু ঘোষ প্রথমেই এক গ্লাস ঘোল খেতে দিতো, এটির কোনো পয়সা নিতো না। নেদু ঘোষ এবং তার বউ দু'জনই এখন স্বর্গীয়। তাদের ছেলেরা এখনো আছে এবং ব্যবসাটি ধরেৃ রেখেছ।

মৃত্যুর সময়

মৃত্যুর জন্য কোন্ সময়টা শ্রেষ্ঠ সময় ? আমার কাছে সুবেহ্ সাদিক! একটা সময় আসবে আমি মরনেও থাকবোনা, জীবনেও থাকবো না, ঐ মৃত্যু সন্ধিক্ষন সময়টুকুতে আমার স্ত্রী-সন্তানেরা আমার শয্যাপাশে বসা থাকবে। আমার নিষ্করুণ চোখ ওদেরকে  দেখতে দেখতে বন্ধ হয়ে যাবে। তারপর আমার আত্মা বেরিয়ে যাবে। দূরে মসজিদগুলোতে তখন ফজরের আযান ধ্বনিত হতে থাকবে।

কাঞ্চনজঙ্গা

কাঞ্চনজঙ্গা খুব কাছ হইতে দেখিবো বলে একবার নেপাল গিয়াছিলাম। হিমালয়ের পাদদেশে দাড়াইয়া কাঞ্চনজঙ্গা দেখিবার জন্য উপরের দিকে তাকিয়েছিলাম কিন্তু দেখিতে পারি নাই। আরেকবার দার্জিলিং-এ গিয়াছিলাম, অনেক দূর হইতে পাহাড়ের উপরে দাড়াইয়া ভোরবেলায় দেখিয়াছিলাম শুভ্র তুষারে ঢাকা, কাঞ্চনজঙ্গা।
প্রিয় মানুষেরা যতো দূরেই থাক্ না কেন, তাহাদেরকে আমি দূর হইতেই দেখিতে পাই।

সোমবার, ১৮ জুলাই, ২০১৬

কদমফুল

বর্ষা এলেই খুব করে গ্রামে যেতে ইচ্ছা করে। গ্রামে যেয়ে কদমফুল দেখতে ইচ্ছাা করে। শুনেছি আমাদের বাড়ির পুকুরপাড়ের  কদম গাছটি এখনো আছে। এখনো সেখানে নাকি ফুল ফোটে। এখনো বৃষ্টিতে ভিজে থাকে সব ফুুল।

রবিবার, ১৭ জুলাই, ২০১৬

সেই পথগুলো

সেই বালক বেলায় যে পথগুলো দিয়ে হেটে হেটে স্কুলে যেতাম সেই পথগুলোর কথা মনে পড়ে। ১৯৬৭/৬৮ সালের কথা। নিঝুম পাড়াগা্ঁয়ের এক স্কুলে পড়তাম। পড়নে থাকতো সাদা হাফসার্ট,পায়জামা আর পায়ে স্পন্জের চপ্পল। হাতে থাকতো ক'খান বই খাতা।  বাড়ি থেকে আড়াই মাইল দূরের স্কুল। গ্রামের মেঠো পথ দিয়ে হেটে হেটে স্কুলে যেতাম। কিছু পথ ছিলো ডিস্টিক বোর্ডের কা্ঁচা রাস্তা। বর্ষার কাদামাটি ভেঙ্গে, রোদ,বৃষ্টিতে ভিজে আর ধূলোর পথ পেরিয়ে স্কুলে যেতাম।
বালক বেলার এই পথগুলোর কথাই মনে পড়ে। যদিও এখন সেই পথগুলো বেশীরভাগ পাকা হয়ে গেছে। তারপরেও।

শনিবার, ১৬ জুলাই, ২০১৬

বাংলা বিভাগ

১৯৭৫-১৯৮১ সময়কাল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা  বিভাগের ছাত্র আমি। এই যে অপরাজেয় বাংলা,  পিছনেই কলা ভবন। ঠিক দোতালেই বাংলা বিভাগ। অপরাজেয় বাংলা'র পিছনের গাছগুলো তখন ছিলনা। আমাদের মুখর পদচারনা ছিল কলা ভবনের দোতালায় সেমিনার রুমের সামনে।এখানে দাড়ালেই দেখা যেতো বটতলা। মান্না-ওবায়দুল কাদেরদের ভাষন শুনতাম এখানথেকেই। আকরাম স্যার, আহমদ শরীফ স্যার রা খট খট হেটে যেতো ! এখনো সেখানেই অপরাজেয় বাংলা আছে, কলা ভবন আছে, বাংলা বিভাগ আছে। শুধু আমি নেই।সহপাঠিরা নেই।আমাদের কেউ নেই।


শুক্রবার, ১৫ জুলাই, ২০১৬

শ্রাবনের প্রথম দিন

আজ শ্রাবনের প্রথম দিন। সকাল থেকেই ঢাকার আকাশে বৃষ্টি আর মেঘ। এই রকম মেঘ দেখলেই আমার রামগিরি পর্বতে যেতে করে। তবে যক্ষ বেটার মতো একা নয়। সঙ্গে থাকবে একজন দয়িতা। সারা পর্বতময় ঘুরে ফিরে কেবল দুজনের বৃষ্টিতে ভেজা আর ধবল মেঘের নীচে মেঘে মেঘে নিজদেরকে ঢেকে রাখা।

বৃহস্পতিবার, ১৪ জুলাই, ২০১৬

এপিটাফ

আমি কোয়েল তালুকদার, 
যার জন্ম একদিন কার্তিকের শেষ রোদের বিকেলে,
সিরাজগন্জের যমুনার পাড়ে বড়ো হতে হতে-
আমার মা বাংলাদেশের মতো রাবেয়া খাতুন।
মাটি আর মানুষের আমার বাবা হারন-অষ-রশিদ তালুকদার।

লালনীয় জীবন

আমার জন্ম যদি ফকির লালন শাহ্ এর সময়কালে হতো, তহলে আমি লালনের শিষ্য হতাম। লালনের আখড়ায় যেতাম। গা্ঁজা টানতাম। গান করতাম। সংসার বৈরাগী হয়ে  ঘরহীন জীবন যাপন করতাম। কি সুখ ই না ছিলো লালনীয় জীবন যাপনে ! 

সন্নাস

দূর পাহাড়ে নির্জন উপতাক্যায় কোনো টিলায় অবস্থিত মঠ,গির্জা কিংবা মন্দির অথবা কোনো মাজারে সন্নাস হয়ে বাকি জীবন কাটাতে ইচছা করছে।

শনিবার, ৯ জুলাই, ২০১৬

ভবতোষের মা

১৯৭০ সালের কথা। তখন আমি বাগবাটী স্কুলের ছাত্র। আমাদের ক্লাশে দুইজন কুমার ( মাটির হাড়ি পাতিল নির্মাতা ৃ) পরিবারের হিন্দু ছাত্র ছিল। ওরা দুজন আপন সহোদর। একজনের নাম ভবতোষ পাল, আরেকজনের নাম পরিতোষ পাল। ওদের দুজনের সাথেই আমার ভাল বন্ধুত্ত ছিল। একদিন ক্লাশ ছুটি শেষে ওরা দুজন আমাকে ওদের বাড়ীতে নিয়ে যায়। ভবতোষদের মা প্রথমে আমাকে সন্দেশ খেতে দিয়েছিল। তারপর ভাত। সেই প্রথম কোন হিন্দু বাড়ীতে আমার ভাত খাওয়া। তাও আবার নিম্ন বর্ণের হিন্দু। আমার মনে আছে পিড়িতে বসে খেয়েছিলাম। খুব যভ্ন করে আমাকে ওদের মা খাওয়াছিল। ভবতোষের মা'র সেই স্নেহমাখা আদর আপ্যায়ন আমি আজো ভুলতে পারিনি।

মঙ্গলবার, ৫ জুলাই, ২০১৬

আমাকে মনে রাখিয়াছে?

জীবনের এই অস্তমিত প্রান্তে আসিয়া মনে হয় এবং বড়ো সাধ হয়, জীবনের সেই প্রথম প্রান্ত থেকে বিভিন্ন অধ্যায়ে যাহাদের সাথে বন্ধুত্ত হইয়াছিল, তাহাদের সবার সাথে যদি একবার করিয়া দেখা হইতো এই জীবনে, মনটা সত্যি অনাবিল আনন্দে ভরিয়া উঠিত। অনেকজন আছে যাহাদের সাথে ২০/৩০/৪০/৫০ বছর ধরিয়া দেখা হয়না । চোখের কোন্ চিক চিক করিয়া ওঠে। তাহারা সবাই কি আমাকে মনে রাখিয়াছে?

পায়ে হাত দিয়ে যাদের সালাম করতাম,

পায়ে হাত দিয়ে ঈদের দিনে যাদের সালাম করতাম, সেই মানুষগুলো দিনে দিনে কমে যাচ্ছে। সবাই এক এক করে পরপারে চলে যাচ্ছেন। প্রথমে গেলেন বড়ো মা, তারপর গেলেন মেঝো মা। তারপর চলে গেলেন বাবা। ২০১০ সাল থেকে যেনো মৃত্যুর মিছিল। তারো আগে বড়ো ভাই,ভাবি চলে গেলেন। বড়ো খালা,মেঝো খালা চলে গেলেন তারপরে। মেঝো বুবু মারা গেল ২০১০ সালে। ২০১২ সালে প্রথম মারা গেলেন শাশুরী মা, তারপর না ফেরার দেশে চলে গেলেন আমার মা। শশুর সাহেব মারা  গিয়েছেন ২০০১ এ।
২০১৫ সালে মারা গেলেন আমার বড়ো বোন। তারপর কে যাবেন, জানিনা ।
ঈদ এলেই এইসব প্রিয় মানুষগুলোকে খুব মিছ করি। যতোদিন মা বে্ঁচে ছিল, একটা দায় ছিলো দেশের বাড়ি যাওয়ার। বাড়িতে যেয়ে মা'কে সালাম করবার। আজ মা'ও নেই। তাই দেশের বাড়ি যাওয়ার কোনো দায়ও নেই।

যা কিছু প্রথম বাবা'র হাত ধরেই

আমার যা কিছু প্রথম বাবা'র হাত ধরেই। ছোটবেলায় ঈদের মাঠে বাবা'র হাত ধরেই নামাজ পড়তে গিয়েছিলাম। বাবা'র হাত ধরেই প্রথম সেই প্রাথমিক স্কুলে যাওয়া । বাবা'র হাত ধরেই প্রথম নানা বাড়িতে গিয়েছিলাম। চৈত্র মাসের ছোনগাছার মেলায় গিয়েছিলাম বাবা'র হাত ধরেই। গারোদহ নদীতে নৌকা বাইছ দেখতে  গিয়েছিলাম বাবার হাত ধরে। আর ধনিদহ বিলে মাছ ধরা দেখাতে নিয়ে গিয়েছিলো বাবা আমার হাত ধরেই। প্রথম সিরাজগন্জ শহরে গিয়েছিলাম বাবা'র হাত ধরে। এমনকি ঢাকা শহরে প্রথম এসেছিলাম বাবাা'র হাত ধরে।
বাবা আজ আর নেই। ১৯৮২ সালের জুলাই মাসের ৭ তারিখে বাবা আমার হাত ছেড়ে দিয়ে চিরদিনের জন্য চলে গেছেন।আজ সেই সাত তারিখ। আজ ঈদের দিন। বাবা নেই। আমি আমার ছেলের হাত ধরে ঈদের মাঠে যাবো।  আামরা দু'জন  বাবা'র জন্য প্রার্থনা করবো। তিনি যেন বেহেস্তবাসী হোন।আমিন।