মঙ্গলবার, ৩১ জানুয়ারী, ২০১৭

ক্লান্ত এক ঋষি

একদিন রাতে স্বপ্ন দেখেছিলাম
শুক্লপঙ্কের আধাখানা চা্ঁদ নেমে এসেছিলো
মনে হলো কোন্ সিংহ দুয়ার খুলে গেলো
কপিলা বস্তু নগরীর কারুকার্যের পথ ধরে
যেনো একা চলেছি মহামতি বুদ্ধের মতো।

আমিতো তোমাকে পাওয়ার জন্যেই ঘর ছেড়েছিলাম
সন্নাসী হয়ে পড়ে থাকলাম গুহায়
ধ্যানমগ্ন মুখ তুলে দেখতাম নীল আকাশ
উড়ন্ত মেঘ জল হয়ে ঝরে পড়তো
আমারও চোখ মুদে জলে ভরতো ঐ মেঘের মতো।

এই গুহায় এই বনান্তরে- উদ্যানের পাশে ছায়াতলে
ক্লান্ত ঋষির মতো শুয়ে আছি জড়া ক্লিষ্ঠতায়
তোমার হাতের স্পর্শ পড়েনি কপালে-শিরায়,
স্বর্গ থেকে অন্য কোনো দেবীও নেমে আসেনি।




তখন অন্ধকার

কতো অমানিশার আধার সরায়ে,
কতো বন্দুর পথ পার হয়ে
কতো ক্লান্তি ঝরে গেলো পথে-

মাঝে ছিলো পাহাড়,নদী,সাগর
ছিলো বিপন্ন কতো উপত্যাকা
 এক পূর্ণিমার চা্ঁদের আলো জ্বেলে
বসে থাকলাম তোমার জন্য্
তুমি আসলে না।

কোথায় কোন্ জঙ্গলে জ্বেলছিলো কে জোনাকি
তুমি মুগ্ধ হলে সে আলোয়
কাছে টানলে সেই ছেলেকেই,
ক্ষণিক ফুৎকারে নিভে যায় সে আলো।

যখন তুমি ফিরে এলে,
তখন পূর্ণিমার চা্ঁদ ঢেকে গেছে কালো মেঘে
তখন কেবলই অন্ধকার।

রবিবার, ২৯ জানুয়ারী, ২০১৭

নদী ও নারী

আমরা যখন ভালোবাসতে লাগলাম
পাহাড় আর মেঘ ঘর্ষণে কেপে উঠলো
তুমি ঘন ঘন দীর্ঘশ্বাস ফেলছিলে -
তোমার চুল বাতাসে উড়ছিলো
শীৎকারে খামছে ধরলে লতার শেকড়
 তারপর বৃষ্টি নামলো
শুকনো নদী জলে ভরে উঠতে থাকলো।

ক্ষণকাল ছিলোো উপভোগের-
আমরা বুঝে নিলাম দেহের ভাষা কি
নদী ও নারী কি - তাও জানলাম।



সারাদিন সারারাত তুমি

সকালে ঘুম ভেঙ্গেই দেখি- ভোরের রোদ্র ছায়া ফেলেছে তোমার মুখে।দুপুরের তপ্ত হাওয়ায় দেখি তোমার আঁচল বাতাসে উড়ছে।বিকেলের ছায়ায় তুমি আমাকে প্রশান্তি দাও।সন্ধ্যায় হয়ে যাও সন্ধ্যা তারার মতো একা। রাতে আমি আর দূরের লুব্দক হয়ে থাকি না, স্বপ্ন দেখি তোমাকে।যখন স্বপ্ন ভাঙ্গে, তখন চোখ মেলে দেখি- তুমি আমার পাশেই শুয়ে আছো।

সম্পর্ক

তোমাকে আমি কোনোদিন দেখি নাই। চিনি নাই।চাই নাই।কোনো স্বপ্নও দেখি নাই কোনোদিন । তারপরেও তোমার সাথে আমার সম্পর্ক হলো- যা এখন কেবলই মায়া।  

ভালোবাসার অমৃত সুধা

দুপুর থেকেই তোমার চুলের ঘ্রাণ নিতে শুরু করেছি।কাল থেকে শীতের শরীরেও তাপ দাহ বেড়েছে।সকালে খেয়েছিলাম এক পিচ পাউরুটি।প্রচন্ড খিদে পেটে। বুভূক্ষু আমি ।আমি একা বসে আছি।ভালো লাগছেনা কোনো রোদ্র ছায়া। যদি তুমি আসো- বুভূক্ষু থাকবেনা উদোরে।অমৃত সুধা পানে ভরে উঠবে খিদে ক্লিষ্ট প্রাণ।

তিরিশ বছর পরে

তিরিশ বছর পরে
একা পেলাম ঘরে
চিকন হয়েছে ললাট
কি দিবো তার পাঠ
পেকে গেছে সব চুল
গালটা এখনো তুলতুল
খুলে দিয়েছো কপাট
 মেলে ধরেছো ললাট
,আশ্লেশ কিছুই নেই
শুধুই জল ঢেলে দেই

তিরিশ বছর পর এলেই যখন ঘরে
ভালোবাসা বুঝে নাও দেহ মন ভরে।

শনিবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০১৭

প্রথম দিন প্রথম রাত

আজ সকালে ঘুম ভাঙ্গার পর নীচের এই কথাগুলো অন্তরের মধ্যে বাজছে।এটি কোনো কবিতা নয়,এটি কেবল নিজের সাথে নিজে কথা বলা,নিজেকে নিয়ে নিজে প্রস্ন রাখা -
প্রথম দিন কবে ছিলো, পথম সেই রাত
কখন থেকে ঠাঁই করে নিয়েছিলে তুমি ?
আগুন জ্বেলে জ্বেলে আসছিলে কবে থেকে-
তোমাকে ছুঁয়েছি কখনো বৃষ্টি স্নাত বিকেলেে
আবার কখনো মধ্য নিশীথের আলো ছায়ায়
শরীর ছুঁয়ে অনুভব করেছি অস্তিত্ব
আদরে আদরে তুমি গলে মোম হয়েছো
ক্লান্ত হওনি কখনো ভালোবাসায়-
আদিগন্ত জ্যোৎস্না কখনোই শেষ হতোনা
কবেই ছিলো সেই প্রথম দিন প্রথম রাত ।

বৃহস্পতিবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০১৭

স্টপ ইট

 রূপবতী রমণীর কাছে যাসনে যুবক
 ঐটি আত্মহননের পথ,যাসনে ,স্টপ ইট !
রাতের নীলে নীলকণ্ঠ পাখী হোসনে
পাগলা মেহের আলী হয়ে বলিস না -
'তফাৎ যাও,দুনিয়া সব জুট হ্যায়।'
যুবক, তুই হেমন্তের সুর ছবি আর গান
বসন্তের ঐ ঘূর্ণী হাওয়ার ধূলি লাগাসনে
ওখানে বিষের সাপ,ছোবল তুলে আছে
যাসনে ঐ রমণীর কাছে - স্টপ,স্টপ ইট।


মৈত্রেয়ী দেবী ও মির্চা এলিয়াদের প্রেম

কোলকাতা শহরের ভবানিপুরে মৈত্রেয়ী দেবী নামে ১৬-বছরের এ তরুণি বাস করতো তার মা, বাবা, বোনের সাথে। মির্চা এলিয়াদের জন্ম রুমানিয়ার বুখারেস্টে। ১৯২৮-৩২ সালে ভারতে 'নোয়েল এন্ড নোয়েল' কোম্পানির প্রতিনিধি হয়ে ২৫০-টাকা বেতনে সে ভারতে আসে চাকুরি করতে। উদ্দেশ্য চাকুরির সাথে ভারতীয় সংস্কৃতি আর জ্ঞান সাধনা। এবং ঘটনাক্রমে  মৈত্রেয়ী'র বাবা ড. সেনের বাড়িতে পেয়িংগেস্ট হয় তখনকার খৃস্টধর্মী ইউরোপিয়ান শেতাঙ্গ মির্চা। এ দার্শনিক বিজ্ঞানীর মেয়ে তৎকালীন ভারতীয় কফিরঙা অমৃতা কলেজছাত্রী, ভাবুক ও কবি। তার কথাবার্তায়, চালচলনে রয়েছে কিছুটা দার্শনিকতার ছাপ। অল্প বয়সী মেয়ের এমন আচরণ মির্চার মধ্যে যার পর নাই বিস্ময়ের সৃষ্টি করে। একদিন সেই মেয়েটিকেই তখনকার ফ্রেন্স ভাষা শেখানোর দায়িত্ব পড়ল মির্চার ওপর। আর মেয়েটিকে দেয়া হলো মির্চাকে ঐ সময়ের কলকাতার বাংলা শেখানোর কাজ। 
১৯৩০-সালে কালচে বাদামি রঙের ভারতীয় এ বালিকার সাথে রোমানিয়ার এ তরুণের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠতে বেশি সময় লাগেনা। এ সম্পর্ক তারা গোপন রাখতেও পারেনি বেশিদিন। অল্পদিনেরই অভিভাবকেরা বিষয়টি জেনে যায়। জাতপাত তথা ধর্মীয় কারণে তরুণটিকে শিক্ষকের বাড়ি থেকে চলে যেতে রূঢ়ভাবে এবং আর কখনোই মেয়েটির সাথে যোগাযোগ না করতেও বলা হয় কঠোরতর নির্দেশে। সন্যাসজীবন শেষে পরবর্তীতে সেই তরুণ পরিচিতি পান বিশ্বখ্যাত দার্শনিক হিসেবে। লেখেন একটি আধা-আত্মজৈবনিক উপন্যাস। উপন্যাসটির ইংরেজি নাম 'বেঙ্গল নাইটস'। মির্চা এলিয়াদও এরপর সংসারি হন। তার স্ত্রীর নাম ছিল Nina Mareş কিন্তু  ঘটনাক্রমে জ্ঞানতাপস মির্চার আগেই মৃত্যুবরণ করে তাকে একাকি রেখে।
 বিশ বছর বয়সে অমৃতার বিয়ে হয়ে যায় কলকাতার ভারতীয় মনমোহন সেনের সাথে। তাদের সন্তানও হয় দুটো। এরপর সে লেখালেখিতে আত্মনিয়োগ করেন, প্রকাশ করতে থাকেন কবিতা ও গদ্যের বিবিধ বইপত্র। ১৯৭২-সালের দিকে লেখকের এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু কোলকাতায় এলে অমৃতা বুঝতে পারেন যে, 'বেঙ্গল নাইটস বইটিতে তাদের দুজনের 'যৌন' সম্পর্কের বর্ণনা করা হয়েছে। ঐ বইতে মির্চা সহজাতভাবে লেখেন, তাদের প্রেমের এক পর্যায়ে প্রায়শ রাতে তার প্রেমিকা তার ঘরে চলে আসতো তথা তাদের মধ্যে স্থাপিত হতো শারীরিক সম্পর্ক। যদিও মির্চার বইর উৎসর্গপত্রে অমৃতাকে লেখা ছিল "..... Tomar Ki moné acché ? .... Yadi thaké, taholé Ki, Kshama Karté Paro ? ...." 'মির্চার এ বর্ণনা পরিপূর্ণ মিথ্যে' - এ সত্য প্রতিষ্ঠা করতেই পাল্টা আরেকটি বই লেখেন মৈত্রেয়ী দেবী বা অমৃতা। সে বইটিই হলো ‘ন হন্যতে’। বাংলা করলে ‘ন হন্যতে’-এর অর্থ দাঁড়ায়, "হত্যা করা যায় না" বা "নিহত হয় না" এমন কিছু। মানবাত্মার আঁধার যে মানব-শরীর, তাকে হত্যা করা যায় কিন্তু আত্মাকে যায় না। 
 ১৯৫৭ শিকাগোতে ইতিহাসের ধর্মীয় অধ্যাপক নিযুক্ত হন মির্চা এলিয়াদ, স্ত্রীীক হারিয়ে নি:সঙ্গ একাকি জীবন কাটাতে থাকেন পুস্তক আর জ্ঞানের রাজ্যে। ১৯৮৬-সনে মির্চার মৃত্যুর আগে অমৃতা একাকী ভারতবর্ষ থেকে শিকাগোতে গমন করেন, কেবল তার ১৬-বছর বয়েসি প্রেমিক মির্চার সাথে দেখা করতে। কিন্তু শেষ জীবনে অমৃতা যখন পৌঁছলো তার বিশ্ববিদ্যালয়ে, মির্চা ততদিনে অন্ধ হয়ে গেছে চিরদিনের জন্যে। তাদের সেই সাক্ষাতের দৃশ্য আমাদের চিত্তকে এতো আলোড়িত করে যে, সারা জীবন তা ভোলার নয়। সাক্ষাতের প্রথমেই মির্চার টেবিলে অমৃতা তার নিজের লেখা ৪০-বছর আগের যে চিরকুটটি দেখতে পায়, তাতে লেখা ছিল - "অজস্র মণিমুক্তা সজ্জিত সুবর্ণ দেবতার মত, অপার অসীস সুষমায় আমি তোমার সামনে সাষ্টাঙ্গে প্রণতা হই, আর তুমি আমাকে বুকে তুলে নাও"। ঐ চিরকুটির কোনে মির্চারও শেষ কথাটি ছিল - "আমার প্রচণ্ড ইচ্ছে করতে লাগলো, অমৃতাকে অন্তত একবার চোখের সামনে দেখি"।
এবং ৪২-বছর পর অশীতিপর বৃদ্ধা অমৃতা যখন পৌছলো বৃদ্ধ অধ্যাপকের কক্ষে মেঝেতে ছড়ানো হাজারো পুস্তকের পাহাড় ডিঙিয়ে, তখন তার কাঙ্খিত ২০-বছরের মির্চা চুলহীন টাক মাথায় থুড়থুড়ে বুড়ো তার দিকে না তাকিয়েই বললো - "তুমি অমৃতা"। এবং প্রলাপের মত যখন মির্চা স্বগতোক্তিতে বলতে লাগলো - "চল্লিশ বছর! হায়! চল্লিশ বছর"। তখন ঐ কথার রেশ টেনে অমৃতা বললো-
- "জান লোকে আমায় জিজ্ঞাসা করে, কতোদিন তুমি আমাদের বাড়িতে ছিলে, আমার মনে পড়ে না, কতো দিন ছিলে বল তো?'
'হাজার বছর-' তবে?... আমি তো সেই তোমাকেই দেখতে এসেছি, যাকে Weapon cannot pierce, fire cannot burn... সংস্কৃতিতে বললে, 'ন হন্যতে হন্য মানে শরীরে-' ।
ফিরে যাচ্ছিল অমৃতা -অবশেষে কথা কইতে কইতে মুখ তুললে অমৃতা দেখলো স্থির দৃষ্টির পাথুরে চোখ মির্চার। চোখের আলো নিভে গেছে তার। এবং অমৃতার কণ্ঠ রুদ্ধ অনুভব করে মির্চা বললো -
......'একটু দাঁড়াও অমৃতা-... এতো দিন এতো সাহস দেখিয়ে, এখন তুমি ভেঙে পড়লে কেন? আমি বলছি, আমি যাব তোমার কাছে, এখানে নয়, সেখানে গঙ্গার তীরে, আমার সত্যরূপ তোমাকে দেখাব I will show you my real self on the shores of the Ganges..।'
এবং অমৃতারূপী মৈত্রেয়ী দেবী তার উপন্যাসটির শেষ বাক্য পর্যন্ত পাঠকদের ধরে রাখেন তার সৎ ভাষণে স্নাত করে যে, "ফিনিক্স পাখি হলেও মির্চার চোখে আলো জ্বালাবেই সে একদিন"। এবং শেষ বাক্যটি মির্চাই বলে - 'যেদিন ছায়াপথে তোমাদের দেখা হবে, তার তো আর বেশি দেরি নেই।'

তথ্য সূত্রঃ  ‘ন হন্যতে’,মৈত্রেয়ী দেবী।

বাঙ্গালী নয় সে

বাঙ্গালী নয় সে,তারপরও ভালোলাগলো তাকে
চোখও বাঙ্গালী নয়- ছিলোনা ভ্রু কাজল আঁকা
তারপরেও ভালোলাগলো ওর খয়েরী ঠো্ঁট
তিব্বতী মূখ তার চুলের রং ছিলো ঘন বাদামী
চন্দনের মাটি মেখে লাল করতো ব্রণের গাল
বাঙ্গালী নয় সে- ছিলো তিব্বতী-
কথা ছিলো বিজু উৎসবের আগেই সে চলে আসবে।

তারপর একদিন -
গুলিতে ঝাঁঝরা হলো মানবেন্দ্র লারমার বুক
অপর্ণচরণের বুকের রক্তে লাল হলো চেঙ্গীর জল
গুলির শব্দে ত্রস্ত হয়ে কাপ্তাই থেকে উড়ে গেলো পাখী
জুম চাযীরাও কোনো ফসল ফলালোনা সে বার
কতো বিজু চলে গেলো ফিরে এলোনা সেই
 পিঙ্গল চোখের  তিব্বতী মেয়েটি আর।



বুধবার, ২৫ জানুয়ারী, ২০১৭

মনে করতে পারছিনা

তিরিশ বছর আগের সেই মুখ মনে পড়ছে
 পুরানো একটি চিঠি, ঝাপসা হয়ে গেছে অক্ষর,
সমস্ত চিঠি জুড়ে কেবলই উইপোকার গন্ধ।
কোথায় সেই সুবাসিত কেশ,মলিন দেখছি চোখ
তিরিশ বছর আগের সেই মুখ মনে পড়ছে।
ধূলো জমে গেছে মুখে, কপালের টিপও দেখা যায়না,
কেমন দেখতে এখন সেই মুখ- মনে করতে পারছিনা ।











কেমন লাগছে তোমার

যে জীবন তোমাকে আজ দিলাম,
 কেমন লাগছে তোমার ?
এই যে রাতের গভীরে এক রাত
 বিষন্নতাহীন এই যে চা্ঁদ
এই যে ্অন্ধকার !
কেমন লাগছে তোমার ?
এই যে স্বেদ রক্ত দিয়ে আ্ঁকা চিহ্ন
এই যে পায়ের ছাপ রাখা হলো
এই যে জীবন তুমি রাঙ্গিয়ে নিলে
 কেমন লাগছে তোমার এ জীবন ?

মঙ্গলবার, ২৪ জানুয়ারী, ২০১৭

এসো জল দেই

বাড়িয়ে দাও হাত এসো স্পর্শ করি
যে হাতে আমার ছো্ঁয়া পড়েনি
সে হাতে কোনো অলংকার মানাবেনা।

এসো বুক বাড়িয়ে দাও,আলিঙ্গন করি
যে বুকে জড়াওনি আমার বুক
সে বুক মরু প্রান্তর হয়ে খা্ঁখাঁ করবে।

ঠো্ঁটওতো শুকনো হয়ে আছে,এসো চুম্বন আঁকি
যে ঠো্ঁটে আমার স্বপ্ন ছো্ঁয়া নেই
সে ঠো্ঁটে কি কৃষ্ণচূড়ার আগুন জ্বলবে !

উপত্যাকায় লতাগুল্মে ছেয়ে ফেলোনা
নদীতে জল ভরো ,খরস্রোতা রাখো মোহনা
এসো জল দেই,সাতার কাটো সহস্র বছর।

সুপ্রিয়তমা তুমি এসো

তুমি ফিরিয়েছো ভালোবাসা, ফিরিয়েছো অভিমান
ফিরাওনি হাহাকার, সৈকত জুড়ে কান্নার শব্দ
তখন একাকী চিল মেঘের নিচে ঘুরে বেড়াচ্ছিলো
অতলান্তের দীর্ঘশ্বাস আছরে পড়েছে বালিয়ারীতে।


 অভিমান দিলে আমি চলে যেতাম অন্য কোথাও
এখানের কোলাহল,সমস্ত নিষ্ঠুরতা রেখে যেতাম
এখানে প্রেম নেই, তিতিক্ষা নেই,আছে শুধু ক্ষরণ
ভালো লাগেনা নিঃসঙ্গতা, চলে যেতাম অন্যলোকে।

সুপ্রিয়তমা তুমি ফিরে এসো জীবনের কাছে,
রক্তাক্ত ক্ষত রেখোনা, দগ্ধ করোনা অন্তর
তোমার সুগন্ধি বুক থেকে অভিমান দাও
 ভালোবাসার আলো জ্বেলে আলোকিত করো ।



তুমিতো আছোই আমার পাশে

ঘরের দুয়ারে সামনে বসন্তের পদধ্বনি শুনিতে পাই।যে বাতাস বইবে আসন্ন বসন্ত দিনে,তা কি আমার জীবনের পূর্ণতাকে ধূলো বালিতে ঢেকে দিবে ? আমার জীবন পূর্ণ হয়ে উপচে পড়ছে। তোমার কাছ থেকে যে ভালোবাসা পেয়েছি,তার শক্তি দিয়ে জীবনের বাকী পথ হেটে চলে যেতে পারবো। আর যদি না পারি তুমিতো আছোই আমার পাশে।

সোমবার, ২৩ জানুয়ারী, ২০১৭

বিস্ময়ে জাগে প্রাণ

হঠাৎ কোনো অলস মুহূর্তে নিজেকে পরিশ্রান্ত লাগলে আত্মজার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকি।কাছে না থাকলেও মুখচ্ছবি সামনে মেলে ধরি।এতো আশা কেন যে বুকে বাজে।এতো মায়াই কেন জীবন জুরে ছেয়ে থাকে।ঘুম ভাঙ্কার পর আজ সকালবেলার আলোর মাঝে এইসব বিস্ময়ই খু্ঁজছিলাম -
'.অসীম কালের যে হিল্লোলে জোয়ার-ভাঁটার ভুবন দোলে.
নাড়ীতে মোর রক্তধারায় লেগেছে তার টান
বিস্ময়ে তাই জাগে আমার প্রাণ।'

শূন্যতার দীর্ঘশ্বাস

সান্ধ্য পরিভ্রমন শেষে ১৩নং লেকের পাড় ধরে একাকী বাসায় ফিরছিলাম । তখন রাত আটটা হবে।স্তব্ধ হয়ে গেছে সব কোলাহল। রাস্তায় শুনশান শূণ্যতা। চলতে চলতে মনে হচ্ছিলো জীবনের এই প্রান্তে কেন এই ক্লান্তি ! পথের পাশে দোকানগুলোর ঝাঁপ বন্ধ হচ্ছিলো। পার্কের পাশে লাইটপোস্টের নীচে একলা মনে গেয়ে চলেছে গিটার হাতে এক উদাসী তরুণ। শ্রোতাবিহীন নিরালায় এক শূন্যতার দীর্ঘশ্বাস যেনো ! নিস্তব্ধতা বিদীর্ণ করে একাকী সে বেজে চলেছে।অনেকটা মন খারাপ করেই বাসায় ফিরে আসি।আসতে আসতে ভাবছিলাম - মানুষের সুখভোগ কতোদিনের ? ঐ ছেলের একাকীত্বের সুরের মাঝে এই বোধটি অনুরণিত হচ্ছিলো।

রবিবার, ২২ জানুয়ারী, ২০১৭

সুজাতা সান্যাল

কালিগঙ্গার বা্ঁকে সেদিন সন্ধ্যায় উঠেছিলো চা্ঁদ
তারায় তারায় ভরে গিয়েছিলো হেমন্তের আকাশ-
রাতের জোনাকীর মতো ব্রণে ভরা তার গাল
'ভালোবাসি' এই কথাটি বলেনি সুজাতা সান্যাল।
সন্ধ্যার সন্নাসীকে কেউ ভালোবাসে নাকি
বু্ঁনো হা্ঁসদের কোনো ঘর আছে নাকি ?
আমারও ঘর নেই চুলো নেই, নেই কোনো চাল
এ কথাটি জেনে গিয়েছিলো সুজাতা সান্যাল।
কালিগঙ্গার জলে ভাসিয়েছিলাম সেদিন ডিঙ্গি নাও
ডেকেছিলাম অন্ধকারে,বলেছিলাম,এসো প্রেম দাও
গাল ভরা হাসি দিয়ে বলেছিলো, দেখা করবো কাল
তারপর কোনো কালেও আসেনি সুজাতা সান্যাল।

তখন বসন্ত সময়

পার্ক রোডের ধারে যেখানে ফার্স্টফুডের দোকান,ওখানেই দাড়িয়ে চুইংগাম চিবুচ্ছিলে তুমি।পরনে তোমার জিন্সটাইট থ্রী কোয়াটার ট্রাউজার্স।রংমাখা সোনালী চুল হাওয়ায় উড়ছে।বা্ঁকা চা্ঁদের মতো দাড়ানো ভঙ্গীতে দারুণ লাগছিলো তোমাকে।তখন ধূলি দাহের বসন্ত সময়।লোমশ পুরুষের বুক খু্ঁজছিলো তোমার চোখ।সাপের মতো পেচানো উত্তরীয়তে তোমারও বুক ঢাকা ছিলো ।আগেই কথা ছিলো- দেখা হবে দুৃ'জনের মাধবীলতার বনে।

তুমি যতো দূরেই থাকো

তুমি যতো দূরেই থাকো -
আমার চোখের চাওয়া তোমার শরীরে লেগে আছে
রাতের স্বপ্ন,সকালবেলার হাসি এখনো জেগে থাকে।
এই যে পৃথিবী,আলো বাতাস,আকাশ ভরা তারা
আমাদের এই দেহ,প্রেম- ,মূত্তিকার এই গন্ধ
জনমে জনমের ভালোবাসা পুনর্জনমে নিয়ে যায়
যেখানেই তুমি থাকো,ম্লান হাসি লেগে থাকে চোখে
তোমার সমুদ্র চোখ তখন লবনাক্ত হয়
অশ্রুর ধারা গড়িয়ে পড়ে উপত্যাকা বেয়ে নদীতে।

আমাদের প্রেম কখনো কা্ঁদেনি-
তুমি যতো দূরেই থাকো,মানিক্যর উজ্জ্বলতায়
 ফিরে আসবে কোটি বছর পর- আরেক সভ্যতায়
যেখানে আমিই তোমার জন্য অপেক্ষায় থাকবো।





শনিবার, ২১ জানুয়ারী, ২০১৭

আমি তুমি আর কবিতা

আমি তুমি আর কবিতা।যখন তুমি থাকো তখন কবিতা থাকেনা।যখন কবিতা থাকে তখন তুমি নেই।শেষ রাতে সে এসেছিলো। তুমি ঘুমিয়ে ছিলে।কিন্তু ক্যানভাসে তুমিই ছিলে।রাতের নিরবতা তখন কেবল ভাঙ্গতে শুরু করেছে।লিখি একটি কবিতা।সকাল হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করি।তোমাকে শোনাতে চাইলাম।আধো জাগরণে বললে - না। তারপরেও পড়ি কয়েকটি পংতি :
'তুমি আসলে দখিনা বাতাস থেমে গেলো
দরজা বন্ধ হয়ে গেলো অকস্মাৎ
কাল সারারাত কোন্ মদিরায় ব্যাকুল হলো।
তোমার লেখা পুরানো চিঠিগুলো জীর্ণ হলো
আবছা হলো সব কালি সব অক্ষর
কাল সারারাত ছিলো সেই সব পুরানো চিঠির।'
দেখলাম, তোমার ঘুম ভেঙ্গে গেলো। শুনতে চাইলে কবিতা।
আমি বললাম - শোনাবো না

যতোক্ষণ দূরে থাকো

যতোক্ষণ অদেখা- ততোক্ষণই রহস্য
যতোক্ষণ উন্মোচন করোনা
ততোক্ষণই অপেক্ষা প্রেমের।

দূর্গম পথে হেটে হেটে তোমাকে খু্ঁজি
চন্দ্রতলায় ঘুরে ঘুরে তোমাকে দেখি                                                                                                           বুকের মধ্যে একান্তে তোমাকেই রাখি।

যতোক্ষণ দূরে থাকো ততোক্ষণই প্রেম
যখন কাছে চলে আসো থাকেনা প্রেম।

প্রিয় যৌনতাগুলি

আমি চেয়েছি রাত্রি, রাত্রির মধ্যে রাত্রি
অন্ধকারের মধ্যে অন্ধকার,
পৃথিবীর নিস্তব্ধ শব্দ, মেঘ থেকে জল
কাঞ্চনজঙ্গা থেকে আসা কুয়াশা -
কোনো অ্ন্ধকারই ঢাকতে পারেনি তোমার নগ্নতা
প্রতি মুহূর্ত স্পর্শ করতে চেয়েছি তোমার শরীর
প্রতি মুহূর্তে উৎসবে মেতেছে প্রিয় যৌনতাগুলি।

এলোমেলো ভয়

তুমি আমার প্র্রেমিকা নও,তবু ভয় হয়
যদি স্পর্শ করি তোমার আঙ্গুল
যদি ধরে ফেলি হাত,তোমার চিবুক,
কপালের টিপ দেখে যদি মনে হয়
ঐ চা্ঁদ আমার,ঐ টিপ আমি এ্ঁকেছি,
ভয় হয় যদি ঠো্ঁট দেখে কে্ঁপে উঠি
যদি চুম্বন পড়ে যায় ঐ জেলমাখা ঠো্ঁটে,
কাজল চোখ দেখে আমি ভয় পাই
যদি কাজল জলে ভিজে নস্ট হয়ে যায়,
ঘোমটা দিয়ে তুমি শাড়ি পড়ে থাকো
ভয় হয়,যদি ভুল করে বউ ডেকে ফেলি।

সুইসাডাল নোট

দেখতে ইচ্ছা করছেনা এই পাপ এই বিষাদ                                                                                                        পৃথিবী বিরাণ চরাচরের মতো ধূধূ করছে
কোথাও নেই কোনো বৃক্ষ কোনো ছায়া।

আমার শরীরের ভিতর এ কিসের নিস্তব্ধতা
নীল মেঘের মধ্যে এ কেমন নীল আলো -
বিষন্নতা সব পালাচ্ছে অনন্ত স্বপ্নের দিকে
পৃথিবীর চোখ নস্ট রমণীর মতো চেয়ে আছে।

শেষ আলিঙ্গন কখন কাকে করেছিলাম মনে নেই
আমার প্রেম নেই,বাইরে এতো কেন আধার !
চলে যাবার সময় কোনো মন খারাপ রাখতে নেই।

ঘুমহীন চোখের পাপড়ি কখনো আর ক্লান্ত হবেনা
দেয়ালে টানানো মা'র পোট্টেট পড়ে ভেঙ্গে যায়
কোনো শব্দে কোনো ক্রন্দনধ্বনিতে ঘুম ভাঙ্গেনা।



শুক্রবার, ২০ জানুয়ারী, ২০১৭

রাজকুমারী

রাজার মেয়ে নয় কিন্তুু নাম তার রাজকুমারী।

স্বপ্ন ভেঙ্গে যায়

বাগানে ফুটেছিলো ফুল কাল সন্ধ্যায়
অরণ্যে ঝরেছিলো শিশির সারারাত
বাতাস আকুল হয়েছিলো গন্ধে
দূরাগত তোমার পদধ্বনি শোনা যাচ্ছিলো
বাজছিলো তোমার পায়ের নুপুর সারারাত।

তুমি আসলে দখিনা বাতাস থেমে গেলো
দরজা বন্ধ হয়ে গেলো অকস্মাৎ
কাল সারারাত কোন্ মদিরায় ব্যাকুল হলো।

তোমার লেখা পুরানো চিঠিগুলো জীর্ণ হলো
আবছা হলো সব কালি সব অক্ষর
কাল সারারাত ছিলো সেই সব পুরানো চিঠির।

অভিজ্ঞান চেয়েছিলাম দিলে চুলের কাটা
তোমার নোখের অঙ্গুরীয় খোলা হয়নি
চুলের সুবাস নিয়েছিলাম সারারাত
বুকের সুবাস নিয়েছিলাম সারারাত।

নাহ ! কাল রাতকে আমি থামিয়ে দিতে চাইনি
ভোর হওয়ার আগেই স্বপ্নগুলো ভেঙ্গে গিয়েছিলো।

জলে ভিজে দেই

কাকের ঠো্ঁটও তৃষ্ণার্ত হয় জলে ভিজতে চায়
আমার মায়া হয়-
তুমিও কাঙ্গাল হও জলের জন্য।
একবার-
স্টেশনে নেমে দেখি,বৃষ্টি,রিক্সা নেই
রেল ক্রসিংএ দাড়িয়ে শুনি হুইসেল
বৃষ্টিতে ভিজে যায় সার্ট ট্রাউজার্স
ঘরে ফিরে আসি।
দেখি -
তৃষ্ণার্ত পানকৌড়ির মতো ছটফট করছো.
আমার আনন্দ হয়-
জলে ভিজে দেই তোমার চোখ মুখ শরীর।

বৃহস্পতিবার, ১৯ জানুয়ারী, ২০১৭

আমি চলে গেলে

আমি না থাকলে রোদ্রের আকাশ মেঘ হয়ে যাবেনা
বৃষ্টিতে ভিজবেনা জমিন,খরো মাটি কাদাজল হবেনা
আমি চলে গেলে শা্ঁশা্ঁ করে চলতে থাকবে এ্যাম্বুলেন্স
বিমর্ষ চিৎকারে কে্ঁদে উঠবেনা হাসপাতালের রোগী।

আমি চলে গেলে কালো পতাকাা উড়বেনা অট্টালিকায়
হকাররা বিলি বন্ধ রাখবে না প্রতিদিনের সংবাদপত্র-
সেদিনের পত্রিকায় থাকবে না কোনো শোক সংবাদ।

নাট্যশালায় অর্কেষ্ট্রা দল বাজাবে বা্ঁশি পিয়ানো
সেখানে কোনো করুণ সুর ধ্বনিত হবেনা,
সবাই গাইবে আনন্দের কোনো কোরাস গান।

আমি চলে গেলে সকাল হবে,সূর্য উঠবে,মেঘ হবে
সন্ধ্যা হবে,রাত হবে- চা্ঁদ উঠবে,জোনাক জ্বলবে
রাতের আকাশে তারা জ্বলবে,লুব্ধক অরূন্ধতী থাকবে
আর থাকবে আত্মজা আর প্রিয়তমা স্ত্রীর চোখে জল।


বিয়ে বার্ষিকী

অনেক বছর আগে আজকের মতো এমনি এক প্রসন্ন বিকেল ছিলো সেদিন।মোঃপুরের এক কাজী সাহেব লক্ষ টাকার দেন মোহরানায় আমাকে তার সমস্ত দায়ভার কা্ঁধে তুলে দিয়েছিলেন।এতো বছর পর আজ মনে হচ্ছে- আমার সমস্ত দায়গুলো কখন কোন্ অলক্ষ্যে সে আমার কাছ থেকে নিয়ে গেছে,আমি জানি নাই।জীবন কখনো পূর্ণতায় ভেসেছে,আবার দুঃখ জড়াও এসেছে । সেই যে দু'জন দু'জনের হাত ধরেছিলাম,এখনো সে হাত ধরে আছি।কবে কখন কার হাতটি আগে নিথর হয়ে যাবে,সেই ভাবনায় দু'জনই বেদনাহত হই। নিঃসঙ্গ সেই একাকী সময়ে এই গানটি কাকে আগে শুনতে হবে ?

তুমি নাহয় রহিতে কাছে
কিছুক্ষণ আরও নাহয় রহিতে কাছে
আরও কিছু কথা নাহয় বলিতে মোরে
এই মধুক্ষণ মধুময় হয়ে নাহয় উঠিত ভরে
আরও কিছু কথা নাহয় বলিতে মোরে...।'

জ্বলে ওঠে তোমার প্রেম

জানালা খুললেই শৈত্য এসে ঘরে ঢোকে
শীতল হাওয়ায় তুমি স্ফিত হয়ে যাও
ভিতরের শুভ্র তুষার জল হয়ে যায়
তুমি শীৎকারে কা্ঁপতে থাকো
তখন আমাকেই আগুন জ্বালাতে হয়
সে আগুন জ্বলতে থাকে তোমার চারপাশে
তুমি উত্তপ্ত হও- জ্বলে ওঠে শরীরের প্রেম।

বুধবার, ১৮ জানুয়ারী, ২০১৭

একাকী

একাকী ছিলাম,ভালো লাগতো তখন নদীর কূলের নির্জনতা
কৃষ্ণ যেমন বা্ঁশী বাজাতো একাকী,
তেমনি আমার একাকীত্বের সুর ভাসতো নির্মল বাতাসে।

একাকী ছিলাম,ভালো ছিলাম-
মায়াবী চোখে তাকিয়ে দেখতাম দূরের আকাশ
দেখতাম পঞ্চমীর চা্ঁদ,সেও একা
আলোয় ভিজতাম একাকী নদীর কূলের নির্জনতায়,
সেই একাকীত্বের ভালোবাসায় দুঃখ থাকতো না
স্বপ্ন দেখতামনা কোনো আশা জাগানিয়ার।

এই শহর,এই কোলাহল,এই রাজপথ,এই অট্টালিকা
ল্যাম্প পোস্টের নীচে ধূসর এই অন্ধকার- ভালো লাগেনা
ইচ্ছে হয়-দূরে কোথাও একাকী যেয়ে বসে থাকি-
বসে থাকি নির্জনতার সেই যমুনা নদীর তীরে।



মঙ্গলবার, ১৭ জানুয়ারী, ২০১৭

জোনাকিরা জ্বলে উঠুক

তোমার সব ভালোবাসা আমাকে দাও
সব স্বপ্ন,আমি চলে যাবো পৃথিবী থেকে দূরে
যেখানে বিদ্বেশ নেই
তোমার সমস্ত রূপ মাধুরী,সব সৌরভ আমাকে দাও
আমি চলে যাবো আকাশে ভেলা ভাসিয়ে
দূর তারার দেশে,যেখানে নেই কালপুরুষ
তোমার দেহবল্লরীর সমস্ত বা্ঁকে
আমাকে পরিব্র্রাজক হতে দাও
আমার আঙ্গুলের জোনাকিরা জ্বলে উঠুক
রজহংসরা ভেসে বেড়াক জলস্রোতে
যেখানে নদী মিশে যায় শরীরের মোহনায়
সেই জল ও নদী আমাকে দাও,আমি চলে যাবো।

সোমবার, ১৬ জানুয়ারী, ২০১৭

শুভ জন্মদিন

আজ আমার জন্মদিন।এ কথা আমি মনে করতে চাইনা।অন্য কেউ মনে করুক বা উইশ করুক, সেটাও চাইনা।জন্মেছিলাম ছায়াঢাকা মায়ায় ভরা নিভৃত এক গ্রামে। কৈশর আর তারুণ্য কেটে গেছে সেখানকার ধুলো বালিতে।কতো জন্মদিনের সন্ধ্যা চলে গেছে নিঃশব্দে মৌনতায়, কতো বসন্ত,যে উৎসবহীন থেকেছে । সেই সময়ে কেউই আমাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা দেয়নি।এমনকি বাবা মা'ও কখনো বলেনি-'আজ তোমার শুভ জন্মদিন।'
আজকের দিনে কেবল প্রাণে বাজছে- ' জীবনে যত পূজা হল না সারা,. জানি হে জানি তাও হয় নি হারা।''

কেউ যদি অপেক্ষায় থাকে

পথ চলতে চলতে হঠাৎ পা অবশ হয়ে আসে।মনে হয় পথের মাঝখানে ধূলো বালির উপর আমি থেমে যাচ্চি।এ রকম থামতে থামতে পা এক ্সময় আর চলতে চাইবে না।এগুতে পারবো না সামনের দিকে, যেখানে অপেক্ষা করছে কেউ একজন।যে আমার হাত ধরে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চায়।

পরস্পরের প্রতি

রাত্রিতে রাত্রি রেখে,অন্ধকারের উপর অন্ধকার,
ঠো্ঁটের উপর ঠো্ঁট রেখে,বুকে রেখে বুক -
শরীর খো্ঁজে শরীর,উরুতে উরু,নতজানু হয় হাটু
পরস্পর পরস্পরের প্রতি যে সম্নোহন,তাই প্রেম -
তাই শুধু দুইটি দেহকে বিমুগ্ধ করে রাখে সারা রাত।

শুক্রবার, ১৩ জানুয়ারী, ২০১৭

কে আর আমার হবে

হঠাৎ কোনো একদিন যদি দেখতে পাই,এই লোকালয়ে কোথাও কেউ নেই।সবাই নির্বাসনে চলে গেছে, তখন কি আমি একা থাকতে পারবো ? আদমও তো একা ছিলোনা।তাকে দেয়া হয়েছিলো একজন হাওয়াকে।আমি কোথায় পাবো একজন হাওয়া ? কে-ই বা  আর আমার হবে,? খু্ঁজেই বা পাবো কাউকে কোনো লোকালয়ে ? নাকি একাকী নিঃসঙ্গ জীবন হবে আমার।  

তুমি কি বাচ্চা মেয়ে

তুমি কি বাচ্চা মেয়ে কিছুই বোঝো না
শরীর জুড়ে লেপটে আছে গোক্ষুর সাপ
ফেলছে বিষের নিঃশ্বাস,সে কি শুনছো না
 অাগুনে পুড়ে ভস্ম হচ্ছে স্থাপিত বন্দর
পোড়া মাংসের গন্ধে দূষিত হয় বাতাস
তুমি কি বাচ্চা মেয়ে এসব বোঝো না !                                                                                                    পাথরের নীচে পিষিত হচ্ছে নরম শরীর
নদীর মতো প্রবাহিত করো জল
চতুর সাপুড়ে পড়ে যায় তার মন্ত্র
গোক্ষুর সাপ দিচ্ছে অমৃত ছোবল
তুমি থেকেছো নির্লিপ্ত করেছো হেম পান
তুমিতো বাচ্চা মেয়ে নও,বুঝেছো সবই।

বৃহস্পতিবার, ১২ জানুয়ারী, ২০১৭

সেই স্বাদহীন ঘ্রাণ

আজ সকালে হাটতে যেয়ে বাসার জন্য কিছু কুল বড়োই কিনে নিয়ে আসি।বিক্রেতা লোকটা বলেছিলো- গাজিপুরের বড়োই স্যার,খুব ভালো হবে। বাসায় এসে দুটো মুখে দিতেই দেখি- ঠোঁট বেয়ে কষ নেমে আসছে,কেমন যেনো ফেনা ফেনা ধরণের।বড়োই এমন হয় আগে জানতাম না।যারা কমলালেবু খায় তারা একে কি বলবে ? কৈশোর বেলায় একবার হৈমন্তী আমাকে দুটো কা্ঁচা ডাশা পিয়ারা খেতে দিয়েছিলো,পিয়ারায় কামড় দিতেই এমনই কসের গন্ধ পেয়েছিলাম।,জিহবা ঠো্ঁট কেমন যেনো তর তর হয়ে উঠেছিলো।অনেক বছর পরে হৈমন্তীর পিয়ারা খাওয়ানোর ঘটনাটি মনে পড়লো,সেই শ্লেশ,সেই গন্ধ,সেই স্বাদহীন ঘ্রাণ।

স্টপ জেনোসাইড

স্টপ জেনোসাইড বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের উপর নির্মিত একটি প্রামাণ্য চলচ্চিত্র। ইংরেজি "স্টপ জেনোসাইড" শব্দগুচ্ছের অর্থ "বন্ধ কর গণহত্যা"। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে ২০ মিনিট দৈর্ঘ্যের এই তথ্যচিত্রটি তৈরি করেন  শহীদ বুদ্ধিজীবি ও বিশিষ্ট চলচ্চিত্রকার  জহির রায়হান।আজ এই মহান চলচ্চিত্রকারের ৪৫তম অন্তর্ধান দিবস।আজকের এই বিশেষ দিনে ওনার প্রতি রইলো আমার বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি।
                                                                                                                                                             ‘স্টপ জেনোসাইড’ প্রামাণ্যচিত্রটি শুরু হয় লেলিনের বাণী দিয়ে। তার পর দেখা যায়, গ্রামের এক কিশোরী ঢেঁকিতে ধান ভানছে। অবিরত ঢেঁকিতে পার দিয়ে চলছে সে। দৃশ্য পরিবর্তনে একসময় সেই কিশোরীর হাসি বাতাসে মিলিয়ে যায়। ব্রাশফায়ারের শব্দে ভারি হয়ে ওঠে বাতাস। যেদিকে তাকানো হয়, সেদিকেই শুধু লাশ আর লাশ।
 এই ছবিতে বাংলাদেশের মানুষ আছে, এর প্রকৃতি আছে, আছে পাকিস্তানিদের অত্যাচার, নির্যাতন, অগ্নিসংযোগের দৃশ্য। নির্যাতিত মানুষের হাহাকার-বিলাপ-অসহায়ত্ব। আছে ভিয়েতনামে মার্কিন বোমাবর্ষণের কিছু স্থিরচিত্র দিয়ে ফুটিয়ে তোলা সেখানকার ভয়াবহতার বয়ান। সায়গনের কোনো এক অসহায় শিশু থেকে ভারত সীমান্তের শরণার্থী শিবিরের লোকজনের ছবি। ডেটলাইন সায়গন থেকে চলে আসে ডেটলাইন বনগাঁয়। ধারাভাষ্যে যখন আমরা শুনি, ‘ডেটলাইন বনগাঁ, স্টপ’ তখন ছবিতে দেখি যুদ্ধ ও গণহত্যার শিকার হয়ে বাংলাদেশের সাধারণ নারী, শিশু বা বৃদ্ধরা ঘর ছেড়ে পালাচ্ছে, শরণার্থীতে পরিণত হচ্ছে।
ছবিতে আমরা শুনি নির্যাতিত মেয়েদের কথা। দেখি সারি সারি মৃতদেহের ছবি, লাশ নিয়ে কুকুর, শেয়াল ও শকুনের টানাটানি। হিটলার, নাৎসি বাহিনী ও তাদের বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞ। জার্মান প্রিজন ক্যাম্প থেকে ভারতের শরণার্থী শিবির। মুক্তিযোদ্ধাদের অপারেশন, তাদের যুদ্ধপ্রস্তুতি সবই। জহির রায়হান ছবিটি শেষ করেন এক ধাক্কা দিয়ে, পর্দাজুড়ে ভেসে ওঠে স্টপ। ধারাভাষ্যে আমরা শুনি স্টপ জেনোসাইড, স্টপ স্টপ স্টপ...।

বুধবার, ১১ জানুয়ারী, ২০১৭

সেই সব রাজকুমারীরা

সেই সব রাজকুমারীরা এখনো আছে-
ডানা মেলে উন্মাতাল হয়ে এখনো উড়ে আসে                                                                                                  নীল মেঘ থেকে জল ঝরায় অসংযত সময়ে,
এসবই পাপ, পাপ করা কি এখন আর সাজে ?
 ওদের রূপ লাবন্য ধূলার ধুলিতে ঢেকে যাক
যতোই নিমগ্ন হই, দূরেই থাক রাজকুমারীরা-
এখন যে আমার সংসার কাল।

সন্ধ্যারাতের শেফালি

প্রথম বাঙালি ক্যাবারে ডান্সার মিস শেফালি তাঁর আত্মজীবনী 'সন্ধ্যারাতের শেফালি'তে বলছেন, 'আমি জানতাম আমার শরীর সুন্দর৷ আমার বুক, আমার কোমর, হাত-পা, আমার কোমর-ছাপানো চুল, এমনকী আমার চাহনি, আমার হাসিও লোকের হার্টবিট বন্ধ করে দিত কয়েক সেকেন্ডের জন্য৷ রাতের কলকাতার হুল্লোড়কে এক লহমায় থামিয়ে দিতে পারতাম আমি।'
রঙ্গমঞ্চের নটীদের ভাগ্য এমনই হয়ে থাকে, নরম শরীরে যৌবনের আগুন জ্বালিয়ে তাঁরা দপ করে জ্বলে উঠে নগরবাসীদের ক্ষণকালের আনন্দ দেন, পানশালায় প্রবল উত্তেজনার সৃষ্টি হয়, কিন্তু দৃষ্টির নগদবিদায় ছাড়া আর কিছুই হয় না। এঁদের খ্যাতি তেমন দীর্ঘস্থায়ী হয় না। খেয়ালি ঈশ্বরও অন্ধকারের জোনাকিকে দীর্ঘজীবনের সৌভাগ্য দেন না। অতি অল্প সময়ের মধ্যে বিস্মৃতির মেঘ এসে সব কিছু দুঃখ ঢেকে দেয়।

তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের নারায়নগঞ্জ থেকে চলে যাওয়া এক বালিকা ভাগ্যের সঙ্গে সংগ্রাম করে হৃদয়হীন এক মহানগরীর মনোমোহিনী হয়ে উঠেছিলেন।সন্ধ্যারাতের শেফালি’টি মঞ্চ আলোকিত করে বসেছিলেন, তাঁর আদি নাম আরতি দাস। এক সময় রোটারি সভাগৃহ থেকে মাত্র কয়েক গজ দূরে চৌরঙ্গির ফারপো নামক তুলনাহীন রেস্তোরাঁয় মহানগরীর হৃদয়েশ্বরী হয়ে তিনি যে দীর্ঘস্থায়ী স্পন্দন তুলেছিলেন, সত্য কথা বলতে কী, সংখ্যাহীন আঘাত ও অপমানের ধারাবাহিক হেমলক বিষ পান করেও বিশ শতকের ক্যাবারে-রানী যে আজও দেহধারণ করে কলকাতা শহরেই বেঁচে রয়েছে, সে খবরটাও নতুন প্রজন্মের মানুষদের কাছে অজানাই রয়ে গিয়েছে।

তথ্য কৃতজ্ঞতা:  শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায়।




ঐ মেয়ে আমার কেউ নয়

ঐ মেয়ে আমার কেউ নয়,ওকে আমি দেখেছিলাম ট্রেনে
দিনাজপুর থেকে পঞ্চগড়,মধ্যরাতের পূর্ণিমার স্বপ্নযাত্রায়
ঐ মেয়ে আমার কেউ হবেনা,সা্ঁওতালী রক্ত ওর শরীরে
মুক্তাও কালো হয়,সাপের মতো বেনী গড়িয়ে গেছে পিঠে
রূপা শুভ্র দা্ঁতগুলো ঝলমলিয়ে উঠেছিলো অন্ধকারে।
স্বপ্নভূক যুবক আমি,আমার স্বপ্নে থাকে বাঙ্গালী রমণী
ওর চোখ বাঙ্গালীর মতোই কৃষ্ণ কালো, কুঞ্চিত ভ্রু-যুগল
পাশ থেকে ওদের একজন ওকে ডাক দেয়- কনিকা,
বুকে ওর উপত্যাকার ঢাল,স্বপ্ন জোনাকীরা জ্বলে ওঠে।
আমি জানি কনিকা আমার কিছু হবেনা কোনোদিন
ওতো অন্য কারো অন্য কোনো সা্ঁওতাল যুবকের
কোমল গান্ধার বুক,অনাবৃত মায়াবী নাভি
কনিকার অতলান্তের আহব্বান কোনোটাই আমার নয়
প্রাচীন অনার্য আমি,সে যাত্রায় ওকে ছু্ঁয়েও দেখিনি।

মঙ্গলবার, ১০ জানুয়ারী, ২০১৭

গতস্য তারুণ্য

ক্রৌঞ্চ চষ্ণুতে যখন রক্তজবা ফুল ফুটেছিলো
তখন চা্ঁদ শূয়েছিলো বেআব্রু হয়ে আকাশে
তখন ছিলো গ্রহণের সময়
তখন মেঘ ঢেকে রেখেছিলো সকল নগ্নতাকে।
নিভৃত গ্রাম থেকে যে বালক হেটে এসেছিলো শহরে
প্রেমের অংকুর শিকড় গাড়েনি মৃত্তিকায়
সে জানেনা কিভাবে ফুল ফোটে
কিভাবে আকাশ নগ্ন হয়ে জ্যোৎস্না ঢালে মায়াবী জমিনে
বালক তুমি গতস্য তারুণ্য- তুমি শুধু ক্ষরণই দেখেছিলে
আহত হয়েছিলে ঊষা হৈমন্তীদের কাছে।


হাম তুম এক কামরা মে

অনেক বছর আগের কথা।তখন আমি পরিকল্পনা কমিশনের একজন তরুণ কর্মকর্ত।আমরা কয়েকজন সহকর্মী একটি সরকারী প্রকল্পের মূল্যায়নের কাজে গিয়েছিলাম চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে।আমাদের Respondent ছিলো সরকারী কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি এবং দৈব চয়নের ভিত্তিতে কিছু জনসাধারণ। Random sampling এ একজোড়া couple পেয়ে যাই, নাম মোহনবা্ঁশি মালাকার আর ওর বউ দিপালী মালাকার।ওদের Interview এর জন্য আমি এবং নাজনীন নামে একজন তরুণী কর্মকর্তা চলে যাই মোহনবা্ঁশি'র বাড়ীতে।ওরা ছিলো নিম্নবিত্তের মানুষ।একটিমাত্র ঘর।কিন্তু ওরা এতোই সরল আর আন্তরিক ছিলো যে,আমাদের ওদের থাকার ঘরটিতেই বসতে দেয়।আমি আর নাজনীন সবে বিশ্ববিদ্যালয় হতে বের হওয়া উচ্ছল ছলছল তরুণ তরুণী।আমাদের স্বাভাবিক কথাবার্তাও প্রেমের কথার মতো মনে হয়।মোহনবা্ঁশি আর দিপালী ধরেই নিয়েছিলো আমি আর নাজনীন স্বামী স্ত্রী অথবা প্রেমিক প্রেমিকা।তখন বেলা গড়িয়ে দুপুর সময়।বাইরে ঝাঁঝা্ঁ রোদ্দুর।পিছনে বা্ঁশ ঝা্ঁরে ঘুঘু ডাকছে।কেমন উদাস এক হাওয়া বইছে বাইরে।ঝরে পড়ছে ঝরা পাতা টিনের চালে।নাজনীনের চোখে চঞ্চলতার দোল।দেখলাম- মোহনবা্ঁশি আর দিপালী আমাদের দু'জনকে ঘরের মধ্যে রেখে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে চলে গেল।বন্ধ ঘরে তখন আমি আর নাজনীন,যেনো সেই ুহিন্দী সিনেমার গানের মতো রোমান্টিক সময় পার করছি-' হাম তুম এক কামরা মে বন্দি হো, আউর চাবি খো যায়....।'

ব্রাত্য এক রমণী

কি নিবে আমার থেকে ? কি আছে আমার দেহে ?
তাকিয়ে থাকো ভ্রস্টের মতো,নামাও চোখ-
 দেখো শিল্প,অমৃত কারুকাজ
প্রাক সভ্যতার কি সভ্যতা ছিলো আমার কাছে ?
ছিলো অগ্নি,পোড়া মাংসের ঘ্রাণ,শুষ্ক পাণীয়
নখ দিয়ে খামছে দিয়েছো মসৃন চামড়া,
ধ্বস্ত করেছো আমার বুক,পাজরের করোটি
চুল ছিড়েছো বন্য শুকুরের মতো,
আদিম দস্যুরাও সভ্য ছিলো,ভালোবাসতো নদী
চুমু খেতো পাথরে,বুকে টানতো সোনালী লতাপাতা
তুুমি ঐ সভ্যতাও জানোনা,দা্ঁতে কামড়ে দাও গ্রীবা
রক্তাক্ত করো কুসুম ঠো্ঁট,নস্ট করো ভ্রূণ
তুমি মনে করো আমি ব্রাত্য এক রমণী-
দেহ খুবলে রক্ত খেয়ে উন্মত্ত আনন্দ করো যতো।


সোমবার, ৯ জানুয়ারী, ২০১৭

দ্রোহী

তোমাকে ভালোবাসতে যেয়েই দ্রোহী হয়েছি
 আমার আর বন্ধু হয়না কেউ                                                                                                                  ভালোবাসা দিবসও  হয়ে গেছে তাই বন্ধুহীন।
 ,
আমি ঈশ্বরের ভক্ত ছিলাম
তারচেয়ে বেশী আসক্ত ছিলাম তোমাতেই
তোমাকে ভালোবাসতে যেয়েই দ্রোহী হয়েছি ঈশ্বরের।

বুকেতে কেমন করে জন্মেছিলো বেলীফুল
 লতাগুল্ম জন্মেছিলো নাভীর নীচে
চারদিকে কেমন কামিনী মৌ মৌ গন্ধ।

ভালোবাসার দিনেও বাগান থাকে ফুলহীন
দ্রোহী হয়েছি তাই সর্প আর ভ্রমরের কাছে,
দ্রোহ প্রেমে দ্রোহ যৌবনে দ্রোহ তোমার ভ্রুণে
  দ্রোহ প্রজন্মের কাছে, দ্রোহী হয়েছো তুমি।

রবিবার, ৮ জানুয়ারী, ২০১৭

টাচ করবে না

 সুচিত্রা সেন আমাদের পাবনারই মেয়ে।প্রকৃত নাম রমা দাস গুপ্ত। 'সাত নম্বর কয়েদী'র সহকারী পরিচালক নীতিশ রায় নাম রাখেন সুচিত্রা সেন।তারপর সব কিংবদন্তী, তারপর তিনি মহানায়িকা।সুচিত্রা সেন তিরোধান হয়েছেন ১৭ জানুয়ারী,২০১৪, তাকে আর পাওয়া যাবে না। কখনই শুনতে চাইবে না-লাইট, ক্যামেরা, অ্যাকশনের শব্দ। যে যায় সে যায়ই, আর আসে না ফিরে।সুচিত্রার অস্তিত্ব জীবন নদীর ঢেউয়ে ভেসে গেছে।
 সুচিত্রা সেনের কথা- 'আমাকে দেখামাত্রই ঝলসে উঠত ক্যামেরার শত সহস্র আলো। সবাই বলত- ওই দেখ সুচিত্রা সেন। আমি বুঝতে পারতাম ওগুলো আর কিছুই নয়, শুধু মোহ।সবাই কি আমাকে চায়, না কি ছুঁতে চায় একটা মোহর আবরণ।সপ্তপদীর রীনা ব্রাউন, দীপ জ্বেলে যাই-য়ের রাধা মিত্র আমি হয়েও আমি নই। মানুষ তো আমায় চেনে না। চেনে ওইসব চরিত্রকে।'
 বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডের ফ্ল্যাটের চারদিকে এখন খা্ঁখা্ঁ শূণ্যতা বিরাজ করছে।শরীরে সুগন্ধী সুবাস মেখে ঐ বাড়ীর সি্ঁড়ি দিয়ে নেমে আসবেনা আর কেউ।এই ফ্ল্যাট এখন যেনো সবার প্রিয় পুণ্যভুমি।ভক্তি আর শ্রদ্ধায় একাকার হয়ে আছে মাধুরীলতায়।সুচিত্রা সেনকে আর ছু্ঁইতে পারবেনা কেউ। সপ্তপদী-র রীনা ব্রাউনের সেই কালজয়ী সংলাপ-কৃষ্ণেন্দুর উদ্দেশ্যে রীনা ব্রাউন বলেছিলো- 'অভিনয় করার সময়েও আমাকে টাচ করবে না।' সত্যি আমরা কেউ এ জন্মে আপনাকে আর টাচ করতে পারবো না।

শনিবার, ৭ জানুয়ারী, ২০১৭

কাহিনীটি যদি এমন হয়-

একটি মেয়ে খা্ঁচায় একটি পাখী লালন পালন করতো।ভালোও বাসতো তাকে।একাকী সময়ে তার সাথে কথা বলতো।গুনগুন করে তার সাথে গানও গাইতো।মেয়েটির প্রেমিক প্রায়ই এই ব্যাপারটি লক্ষ্য করতো এবং মনে মনে ভাবতো পাখীটি তার প্রতিনায়ক।একদিন ছেলেটি মেয়েটিকে বলে - 'পাখীকে বন্দী করে রাখতে নেই।তুমি ওকে ছেড়ে দাও।ডানা মেলে উড়ে যাক আকাশে।'
মেয়েটি প্রেমিকের কথায় পাখীটিকে খা্ঁচা থেকে ছেড়ে দেয়।পাখী উড়ে চলে যায়। কিন্তু ওর গোত্রীয় অন্যান্য পাখীরা ওকে গ্রহণ করেনা। সব পাখী মিলে ওকে ঠকরিয়ে গুরুতর জখম করে ফেলে।একদিন সকালবেলা মেয়েটি দরজা খুলে দেখতে পায়, পাখীটি রক্তাক্ত অবস্থায় তারই দরজার সামনে মরে পড়ে আছে।

প্রস্থানের পথ

আজ স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আমার এক নিকট আত্মীয়কে দেখতে যাই।উনি বেশ কিছু জটিল রোগ ব্যধিতে ভুগছেন।দেখে মনে হলো বেশী দিন বা্ঁচবেন না।আমার একটা ব্যাপার খুব অবাক লাগছিলো, ওনার খুব কাছের প্রিয়জনের কেউ কেউ ওনার মৃত্যু কামনা করছেন,যুক্তি- 'কষ্টের চেয়ে মৃত্যু ভালো'।

আমার নিজের জন্য ভাবনা- এ রকম সিসুয়েশনে আমি যেনো কখনো না পড়ি।আমার প্রিয়জন কোনো এক পরিস্থিতে আমার মৃত্যু কামনা করবে, এ পরিহাস যেনো না আসে,তার আগেই যেনো প্রস্থানের পথটি কুসুমাস্তীর্ণ হয়।

শুক্রবার, ৬ জানুয়ারী, ২০১৭

প্রেমে এতো দ্বিধা

প্রথম দিন চোখের দিকেই তাকিয়ে ছিলাম
নীচের বাকি সব অক্ষতই থাকে
তারপর একদিন দেখেছিলাম ঠো্ঁট ,
রং কি গোলাপী ছিলো ? নাকি মেহগনী
দেখা হয়নি গ্রীবার ভাজ,অক্ষত থাকে বুক
তোমাকে দেখবোই যখন তখন কেন ভয় !
দ্বিধা কেন স্পর্শের, প্রেমে কেন সংকোচ !
তারপর এক বসন্ত দিনে তুমি ধরলে হাত
পুরুষ চিনে নিলে আলিঙ্গনে
ঝা্ঁঝা্ঁ রোদ্দুরে চঞ্চুতে জল খেলো শালিক
তারপর থেকে অপেক্ষা, তারপর কেবল লজ্জা
প্রেম উন্মোচিত হয়নি আর কোনো নক্ষত্র রাতে্ ।

বৃহস্পতিবার, ৫ জানুয়ারী, ২০১৭

প্রথম পুরুষ

নাগাল্যান্ডের পাহাড়ী প্রত্যন্ত এক গ্রামের ঘটনা।ওখানকার গোত্রের নিয়ম অনুযায়ী বিয়ের আগে বর ও কনেকে একদিন একই ঘরে এক সাথে রাখা হয়।যেনো একে অপরে ভাব বিনিময় করে বিয়ে করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসতে পারে।এই অনুষ্ঠানটি খুব উৎসবের সহিত করা হয়। এই রকমই এক অসম্ভব সুন্দর হবু বর কনেকে একই ঘরে রাখা হয়।বাইরে তখন উৎসব চলছে।ঢাক ঢোল গান বাজনা নৃত্য হচ্ছে। দিন শেষে সন্ধ্যায় বর বিষন্ন বদনে ঘর থেকে বের হয়ে আসে।কাছে যেয়ে বরের দিদিমা বরকে জিজ্ঞাসা করে :  কিরে মন খারাপ কেন, পছন্দ হয় নাই ?
বর :  না।
দিদিমা: বলিস কি ! এতো সুন্দরী ছুকড়ি,তাও ভালো লাগলো না !
বর: ও একটা অকর্মা মেয়ে, ওকে বিয়ে করা সম্ভব নয়।
দিদিমা: কেন, কি করেছে ?
বর:  ভার্জিন। আমি ওর প্রথম পুরুষ।
এই কথোপকথন পাশ থেকে শুনে ফেলে বরের ছোট ভাই। সে ওর দিদিমা কে বলে: আমি এই মেয়েকেই বিয়ে করবো।ও বেশ কর্মা হবে, আমি ওর প্রথম পুরুষ নই।

স্পন্দন যেনো থেমে না যায়

চলে যেতে হবে এ কথা মনে হলেই কলম থেমে যায়, হাত পা অবশ হয়ে আসে।মন খারাপ শুরু হয়। মনে হয় তুমি থাকো পাশে।আমাকে শক্তি দাও, চেতনা দাও,প্রেরণা দাও।আমি লিখতে চাই। কবিতায় বলতে চাই- তোমাদের কথা।,আমি বে্ঁচে থাকতে চাই, চলতে চাই পথ আরো অনেক দূর। জীবনের স্পন্দন  এখনই যেনো থেমে না যায়।

ও ক্যাকটাস্ ও কুসুম

কুসুমের ক্ষুদে বার্তা 'ও' নেই, ( 'ও' মানে স্বামী,)
যদি আসো সাকীতে দেখতাম ক্যাকটাস্
বললাম- ক্যাকটাসে তো কা্ঁটা আছে-
'ও'বললো- ('ও' মানে কুসুম) তবুও আসো।
শীতের হাওয়ায় কুসুমের ওড়না উড়ছে
ওড়নায় ঢেকে নেই বুক,ক্যাকটাসের কা্ঁটায় বিদ্ধ
ওখানে কেউ নেই,'ও'খানে আমার হাত
তারপর চুমো (চুমো'র শেষে 'ও')
বলদায় বইছে তখন নির্মল বাতাস,আনন্দ সাকীতে-
বিষন্নতার ওড়না নেড়ে 'ও' (কুসুম) চলে যায়।





বুধবার, ৪ জানুয়ারী, ২০১৭

মোগল হেরেম কে্ঁপে ওঠে

ঘরের মধ্যে গুমোট অন্ধকার আলো জ্বলেনি আজ
কৃষ্ণপক্ষ শক্লপক্ষ দু'পক্ষেই অন্ধকার
বসে আছি খাটের এই পাশে,ভাবলেশহীন
দিয়াশলাই খু্ঁজি বালিশের নীচে
 জ্বালাই আলো ধরাই সিগারেট মুখে পুরে নেই
ঈষৎ আলোয় দেখি ওপাশে শুয়ে আছে রমণী একজন
সিগারেটের টানে জোনাকীর মতো আলো জ্বলে ওঠে
কন্ঠে তার মুক্তার মালা করছিলো ঝিকমিক
হাতে তার রূপার বাজু পায়ে নুপুরের রিনঝিন
সিগারেট টানছি নির্বিকার,ঐ মেয়েতো ভিখারী নয়
সেতো শুয়েছে পাশেই মসৃন নগ্নতায়
ঘাগরায় ঢেকে আছে ঊরু বক্ষযুগল উন্মোচিত
কোন্ গোপন গহ্বর থেকে দ্যূতি ছড়ায় কোহিনুর
মোগল হেরেম যেনো কে্ঁপে ওঠে
জ্বলে ওঠে ঘর দগ্ধ হয় শয্যা ঝলসে যায় শরীর। 

মঙ্গলবার, ৩ জানুয়ারী, ২০১৭

প্রেমের কবিতা

প্রতিটি আলিঙ্গনে উপলব্ধি করি তার শরীরের উত্তাপ
প্রতিটি চুম্বনে নেশায় কা্ঁপে, মুখে ভাসে কামনার ছাপ
পাথরে পাথর ঘর্ষণে হয় আগুন ,দেহের ঘর্ষণে হয় জল
নোঙ্গর ফেলতে হয় নদীতে,কতোটুকু গভীর তার তল।

কাননবালা

এক বার কলকাতা সফরে অঢেল পান হল্লার পর নেশায় চুর অশোক বলছিলেন, ‘‘এখন এই সন্ধ্যায় চাওয়া-পাওয়ার কী-ই বা বাকি রইল, শুধু কাননকে পাশে পাওয়া ছাড়া।’’
                                                                                                                                                           সঙ্গীসাথীরা বন্ধুর এই বাসনাটুকুও বাকি রাখতে চায়নি। তাই ওঁকে প্রায় বেহুঁশ অবস্থায় বৌবাজার পল্লির কাপালিতলা লেনে কাননবালার বাড়ির দোরগোড়ায় ফেলে চম্পট দেয়।
সুদর্শন, সুবেশ, নিদ্রিত পুরুষটিকে বাড়ির বাইরে ভোরবেলা আবিষ্কার করেন কাননই।
ওঁর মাথাটা তুলে নিয়েছিলেন নিজের কোলে। আধো ঘুম ও স্বপ্নের মধ্যে চোখ মেলে নায়িকাকে দেখে অশোকের মনে হয়েছিল স্বপ্নেই আছেন।
কানন জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘‘আপনি কে? কেমন করে এখানে আসা হল?’’
অশোক তখন নাকি চোখ মুদে বলেছিলেন, ‘‘চলে যান, স্বপ্ন ভাঙাবেন না। আমি এখন কানন বালার সঙ্গে আছি।’’

সেই সব প্রেম

বিশ্ববিদ্যালয় জীবনেে -
করেছি রাজনীতি, করেছি মিছিল রাজপথে
 লিখেছি কবিতা  লিখেছি গান লিখেছি প্রেমপত্র
 করেছি প্রেম,পড়ে থেকেছি পার্কে,আর উদ্যানে
ঘুরেছি বুড়িগঙ্গায়,গিয়েছি বলদা গার্ডেনের সাকীতে
বেগম বাজারের গলিতে দাড়িয়ে খেয়েছি বাকরখানি
আজ আর কেউ নেই,না বন্ধু না কোনো প্রেমিকা
চুম্বনগুলো উড়ছে উদ্যানের হাওয়ায় উত্তাপহীন
কাটাবনে দাড়িয়ে হয়না কোনো কথা কারো সাথে
সবাই ভালো আছে,স্বামীর ঘরে বেশ আছে
পুরাতন প্রেম ঢাকা পড়ে গেছে নব প্রেম জালে।

সোমবার, ২ জানুয়ারী, ২০১৭

এলোমেলো ভাবনা

আমি অন্যদের চেয়ে একটু আলাদা ধরনের মানুষ।আমার বেহিসাবি মন ঘুরে বেড়ায় হলুদ পাখীর ডানায়।আমার ভিতরে একাকীত্ব আছে।তীব্র যন্ত্রণাও পেতে হয়।হৃদয়ের পরতে অদ্ভূত ভালোলাগা খেলা করে।নিজেকে খুব সুখী মনে হয়।তাসের ঘরের মতো সে সুখ ভেঙ্গেও যায়।নক্ষত্র রাতে কখনো চা্ঁদের নীচ দিয়ে হেটে বেড়াতে মন চায়।ঘুম ভাঙ্গলে বসে থাকি বিছানায়।বাইরের উদ্ভাসিত জ্যোৎস্না কাছে টানে।ভিতরে ভিতরে একধরণের অঘটন ঘটতে থাকে।কোথায় আমার প্রেমিকারা।আমার বুক কাঁপে।চোখ বন্ধ করে রাখি।জ্যোৎস্না তলে পুকুরপাড় ধরে হেটে যায় ওরা কারা ? চতূর্দিক থেকে নূপুরের নিক্কন,আর নিদ্রাজড়িত হাসি ভেসে আসে।অদূরে কোথাও আলো জ্বেলে জেগে আছে মক্ষিকা'রা। না, এ সব আমি কি ভাবছি ! পাশেই সৌম্য ্স্নিগ্ধ নদীর মতো ঘুমিয়ে আছে একজন মায়াবতী।Why I think others busty ladies.তারচেয়ে মায়াবতীর ঘুম ভাঙ্গা পর্যন্ত অপেক্ষা করি।

সেইসব প্রেম খু্ঁজি

সেইসব প্রগাঢ় প্রেম এখনো গায়ে লেগে আছে
অশ্রু ছলছল চোখে দেখি তোমার মুখচ্ছবি
বিদ্ধস্ত বুকে,দীর্ঘশ্বাস ভরে আছে-
যতোদিন যায়,মনে পড়ে সেইসব দিন
 তোমার শরীরের গন্ধ ভাসে গভীর রাত্রিরে
মুক্তাচোখ জোনাক জ্বলে ঘরের ওপাশে ঝা্ঁরে
 আলো খু্ঁজি,সেইসব প্রেম খু্ঁজি অন্ধকারে।

কাব্য গা্ঁথা

রাতের পবিত্রতা তোমার সারা শরীরে,
পাপগুলো জানালার ওপাশে দাড়িয়ে থাকে
মনে হয় তোমার শরীর এক কাব্য গা্ঁথা
পৃষঠা উল্টায়ে দেখি এর সকল পাতাগুলি
এক একটি পাতায় যেনো মুক্তার দানা
এক একটি কোষে যেনো মানিক্য হীরা
তাজমহলের দ্যূতি ছড়ায় শিরা উপশিরায়
রাতের পবিত্রতা ভাঙ্গে তোমার উন্মত্ততায়
সব পাপ এসে তৈরী করে ক্লেদ
তখন কাব্য গা্ঁথা হয়ে যায় তোমার শরীর।

রবিবার, ১ জানুয়ারী, ২০১৭

পৃথিবীর রূপ রস গন্ধ

ঈশ্বরকে বলবো- অনন্ত মহাকালের দু'একটি মুহূর্তের জন্য কেন আমাকে এখানে পাঠিয়েছে ? আমি মানুষের প্রেম ভালোবাসাকে ছাড়তে পারছিনা।পারছিনা আত্মজার মুখ মলিন করে দিয়ে চলে যেতে।এখানে নদী আছে,নীল আকাশ আছে,পাখী আছে, আছে দোলনচা্ঁপা আর চামেলী ফুলের সুবাস।স্বর্গের প্রতি কোনো আসক্তি নেই। পৃথিবীর রূপ রস গন্ধের কাছেই আমি থেকে যেতে চাই।

মনে নেই

সারারাত যে ছিলো পাশে সকালবেলাা দেখি সে নেই
সাদা হয়ে আছে বিছানা যেনো ধবল আকাশের মেঘ
কাঞ্চনজঙ্ঘা থেকে ভেসে আসছে সকালের রোদ
আমাদের যৌথ শরীর কখন বিচ্ছি্ন্ন হয়েছিলো
কখন ছেদ পড়েছিলো শিশিরের জল পতনের শব্দ
কখন নদীর তরঙ্গ স্রোতে বা্ঁধ ভেঙ্গেছিলো
কখন স্রোতরস গড়িয়ে পড়েছিলো সারা বিছানায়
বিমুগ্ধ সকালবেলায় কোনো কিছুই আর মনে নেই।

যতোক্ষণ প্রেমে থাকো

যতোক্ষণ পাশে থাকো ততোক্ষণই জেগে থাকি
ততোক্ষণই জেগে থাকে শরীর,জেগে থাকে বুক
জেগে থাকে চা্ঁদ জেগে থাকে তারা,দুরের লুব্ধক
যতোক্ষণ শুয়ে থাকো পাশে ততোক্ষণই প্রেম
ততোক্ষণই হেম ততোক্ষণই গরল আর অমৃত
ততোক্ষণই আঁখিতে আ্ঁখি,গ্রীবাতে গ্রীবা
ততোক্ষণই আসক্তি রক্তের নিরাসক্তি স্বেদের
যতোক্ষণ প্রেমে থাকো ততোক্ষণই জেগে থাকি
ততোক্ষণই ভোগ ততোক্ষণই সম্ভোগ মক্ষিকার।




প্রথম ভালোবাসা

তোমার সাথেই প্রথম ভালোবাসা
প্রথম শরীরের ঘ্রাণ তোমার থেকেই-
এর আগে কখনো চূর্ণ হয়নি অহংকার
রোদ্রের নৈঃশব্দে কেটে গেছে দুপুর
কতো আলিঙ্গন ঝরেছে বুকের উপর
লতায় গুল্মে ঘাসে প্রেম ছড়িয়ে গেছে
কেউ কি দেখেছিলো আমাদের গ্রহণকাল
দেখেছিলো প্রথম প্রেম যৌবন-বেলার ?



টক অফ দ্যা টাউন

অনেকদিন আগের বাবলির সাথে এক বিকেলের কথা।পাবলিক লাইব্রেরীতে বসে বাবলীর জন্য অপেক্ষা করছিলাম।পাতা উলটাচ্ছিলাম 'খেলারাম খেলে যা'-র।জাহেদা আমার মনকে স্থির করতে পারেনি।ওকে পাশে রেখে 'বেগম শেফালী মির্জা'।ভালোই লাগছিলো মির্জা বউকে।বাবলী আসলো এক ঘন্টা লেটে।সে এসেই বলে- বাসায় দশটা মিথ্যা কথা বলতেও তো দশ দু'গনা বিশ মিনিট লেগে যায়।
বললাম, কোথায় যাবে ? বাবলী বলে- কোথায় আবার যাবো ? বাইরে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি।
বললাম- ঠো্ঁটের লিপস্টিক এবড়ো থেবড়ো কেন ? টান টান জবাব বাবলীর- সৌমেন ঠিকমতো চুমু খেতে পারেনি।
বললাম- সৌমেন কে ? বাবলীর জবাব- কাল রাতের স্বপ্নের। আমি ওকে চিনিনা।
বাইরে তখনো বৃষ্টি।শাহবাগ বৃষ্টিতে ভিজছে। জলে ভিজছে রিকশাওলা।জলে ভিজছে কাক।জলের ছিটা লাগছে সি্ঁড়িতে বসা এক জোড়া তরুণ তরুণীর। ওরা যুগল কিনা জানিনা।
বাবলীকে বললাম- চলো রিকসায় যেয়ে বসি।হূট তোলা থাকলে তোমাকে নিবিড় ভাবে কাছে পাওয়া যাবে।এবারও বাবলীর উত্তর- না।
বললাম- আসলে তো দেরীতে, এতো চটাং চটাং করছো কেন ? বাবলী একটু রেগে বলে- এ জন্যে অসুল করতে চাও ? কোথায় যাবে ? চলো। বললাম- 'টক অফ দ্যা টাউন'।
'টক অফ দ্যা টাউন' মিরপুর রোডে ধানমন্ডি পা্ঁচ নম্বর সড়কের দোতালাৃতে অবস্থিত একটি ছোট্ট রেস্টুরেন্ট।আমি আর বাবলি সেই রেস্টুরেন্টে চলে যাই। বসে আছি দু'জন পাশাপাশি।শহরের কোনো কথা নেই।বাইরে তখন বৃষ্টি নেই। চীনা মাটির প্লেটে চামচের টুংটাং শব্দ।বাবলীর কাঁচের চুড়ির রিনঝিন শব্দ।বাইরে গাড়ীর হর্ণ।ভালোবাসায় কখন শব্দ হয় ? কখন প্রাণের বীণা বাজে ? আমরা কান পেতেছিলাম বুকের শব্দ শোনার। শুনেছিলামও সেদিন 'টক অফ দ্যা টাউন'এ সারা বিকেল।