বৃহস্পতিবার, ১২ জানুয়ারী, ২০১৭

স্টপ জেনোসাইড

স্টপ জেনোসাইড বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের উপর নির্মিত একটি প্রামাণ্য চলচ্চিত্র। ইংরেজি "স্টপ জেনোসাইড" শব্দগুচ্ছের অর্থ "বন্ধ কর গণহত্যা"। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে ২০ মিনিট দৈর্ঘ্যের এই তথ্যচিত্রটি তৈরি করেন  শহীদ বুদ্ধিজীবি ও বিশিষ্ট চলচ্চিত্রকার  জহির রায়হান।আজ এই মহান চলচ্চিত্রকারের ৪৫তম অন্তর্ধান দিবস।আজকের এই বিশেষ দিনে ওনার প্রতি রইলো আমার বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি।
                                                                                                                                                             ‘স্টপ জেনোসাইড’ প্রামাণ্যচিত্রটি শুরু হয় লেলিনের বাণী দিয়ে। তার পর দেখা যায়, গ্রামের এক কিশোরী ঢেঁকিতে ধান ভানছে। অবিরত ঢেঁকিতে পার দিয়ে চলছে সে। দৃশ্য পরিবর্তনে একসময় সেই কিশোরীর হাসি বাতাসে মিলিয়ে যায়। ব্রাশফায়ারের শব্দে ভারি হয়ে ওঠে বাতাস। যেদিকে তাকানো হয়, সেদিকেই শুধু লাশ আর লাশ।
 এই ছবিতে বাংলাদেশের মানুষ আছে, এর প্রকৃতি আছে, আছে পাকিস্তানিদের অত্যাচার, নির্যাতন, অগ্নিসংযোগের দৃশ্য। নির্যাতিত মানুষের হাহাকার-বিলাপ-অসহায়ত্ব। আছে ভিয়েতনামে মার্কিন বোমাবর্ষণের কিছু স্থিরচিত্র দিয়ে ফুটিয়ে তোলা সেখানকার ভয়াবহতার বয়ান। সায়গনের কোনো এক অসহায় শিশু থেকে ভারত সীমান্তের শরণার্থী শিবিরের লোকজনের ছবি। ডেটলাইন সায়গন থেকে চলে আসে ডেটলাইন বনগাঁয়। ধারাভাষ্যে যখন আমরা শুনি, ‘ডেটলাইন বনগাঁ, স্টপ’ তখন ছবিতে দেখি যুদ্ধ ও গণহত্যার শিকার হয়ে বাংলাদেশের সাধারণ নারী, শিশু বা বৃদ্ধরা ঘর ছেড়ে পালাচ্ছে, শরণার্থীতে পরিণত হচ্ছে।
ছবিতে আমরা শুনি নির্যাতিত মেয়েদের কথা। দেখি সারি সারি মৃতদেহের ছবি, লাশ নিয়ে কুকুর, শেয়াল ও শকুনের টানাটানি। হিটলার, নাৎসি বাহিনী ও তাদের বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞ। জার্মান প্রিজন ক্যাম্প থেকে ভারতের শরণার্থী শিবির। মুক্তিযোদ্ধাদের অপারেশন, তাদের যুদ্ধপ্রস্তুতি সবই। জহির রায়হান ছবিটি শেষ করেন এক ধাক্কা দিয়ে, পর্দাজুড়ে ভেসে ওঠে স্টপ। ধারাভাষ্যে আমরা শুনি স্টপ জেনোসাইড, স্টপ স্টপ স্টপ...।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন