শুক্রবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

বৃহন্নলার যৌনতা

আমি যখন কোথাও বেড়াতে যাই লোকে আমাকে মেয়ে মনে করে।যদিও আমার স্তন মেয়েদের স্তনের মতো কবোঞ্চ নয়।তারপরেও সবাই মেয়েই মনে করে।লোাভাতুর পুরুষ মাপে আমার বুকের স্টাটেস্টিকস।আমি যখন কথা বলি,তখন আমাকে সবাই সন্দেহ করে, মনে করে,আমি কি আসলেই মেয়ে ? ছোটবেলাতে আমার মা আমাকে মেয়েদের জামাকাপড় পরাতো, বন্ধুরাও আমাকে মেয়ে হিসাবেই দেখতো; আমিও নিজেকে মেয়ে বলেই মনে করতাম।কিন্তু আসলেে কি তাই ? অনেক ছোটবেলা থেকে লেডিস লেডিস ডাক শুনে আসছি, কিন্তু আমি কোনও দিনও বলবো না যে আমার মধ্যে যে আচরণ গুলি আসছে তা নারীর মতন। আমি সবসময় বলি যে আমি আমার নিজের মতন। সমাজ যা বলবে বলুক!’আমিতো হিজরা।এই জগত সংসারে আমার কোনো ঘর নেই।আমার আনন্দ কি.কেউ জানে না।আমার যৌনতাগুলো বিকৃত এবং ধিকৃত।

আকাশে নীল নেই

প্রিয়তমা, আমি এক দুঃসহবাসে বেঁচে আছি
হৃদয়ের একূলে ভালোবাসা নেই,
হৃদয়ের ওকূলেও ভালোবাসা নেই
যখন নিঃশেষিত সব আবেগের টান, চুম্বনের আশ্লেশও শুকায়েে যায়                                                                                              মায়াহীন চোখের চাহনী,  ধরিত্রীর বিষাদ হেম – এই ভয় ।”
 আমার সন্ততির জন্য আমার যতো ভয় , যতো যন্ত্রণাক্লিষ্ট হওয়া?
প্রিয়তমা, তোমার আকাশে নীল নেই
তোমার বাতাসে নির্মলতা নেই
 তোমার হৃদয় নেই আর পদ্ম কোমল – নেই তাতে আর কস্তরী আভার গন্ধ ?
তোমার হৃদয়ে আর নীল নেই
আকাশের, যাবতীয় সুনীল আজ ধূসর হয়ে গেছে
 নৈঋত থেকে আসা কালো মেঘে সব নিলীমা আজ ঢেকে গেছে।”

বৃহস্পতিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

শান্তি

মাঝে মাঝে কি যে হয়, প্রিয় মানুষদের ছেড়ে দূরে চলে যেতে মন চায়।মনে হয় একাকীত্বেই শান্তি । যখন দূরে যাই তখন মনে হয়,শান্তি এখানেও নেই।নিঃসঙ্গতার দহনে জ্বলে রক্তক্ষরণের বেদনা।তখন আফসোস করি,মন বলে কেনই বা তাদের ছেড়ে চলে আসলাম। আসলে মানুষ বে্ঁচে থাকে ভালোবাসার মধ্যে আর সেসব ভালোবাসাগুলো প্রিয় মানুষদের মাঝেই থাকে।আর শান্তিটাও সেখানেই।

মহালয়ার সকাল

সকালে ঘুম ভাঙতেই ফেসবুকে মিঠুদি'র টাইমলাইনে বার্তা দেখলাম - মহালয়ার শুভেচ্ছা আর ভালোবাসার কথা। চোখের সামনে ভেসে উঠলো, আমাদের গ্রামের সেই আরেক ঊষাদি'র কথা।সেই সি্নগ্ধ একটা দিনের কথা। ঢোল আর ঢাকের শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গিয়েছিলো।সেদিন ছিলো বৃষ্টি বৃষ্টি দিন।সেদিনও ছিলো এমনি মহালয়ার সকাল।আমরা গিয়েছিলাম ঊষাদি'র বাড়ি।গুরের খাজা আর ছানার সন্দেশ খেতে দিয়েছিলো দিদি।কি্ অকৃত্তিম স্নেহই না করেছিলো দিদি ,কি আনন্দ আর উৎসবই না করতাম সেই সময়ে।

চলে গেছি অনন্তলোক

শ্লেশে নয় আশ্লেশেও নয়
আমাদের ভালোবাসা উত্তাল ছিলো রাঙ্গা বসন্তের যৌবনে
শেষেও নয় অশেষেও নয়
আমাদের ভালোবাসা মগ্ন ছিলো শিমুল কৃষ্ণচূড়ার মৌবনে।
অরন্যেও নয় জনারণ্যেও নয়
আমরা ছিলাম চিত্রা নদীর পাড়ে
মনেও নয় নয়নেও নয়
আমাদের প্রেম মিশে গিয়েছিলো অলকানন্দার ঝারে।
স্বপ্নলোকে নয় আনন্দলোকেও নয়
আমাদের প্রেম দেখেছে বিশ্বলোক
স্বেদেও নয় বিচ্ছেদেও নয়                                                                                                                            আমরাতো চলে গেছি অনন্তলোক।

তারপর হিমঘরে

ইদানিং প্রায় কোনো না কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা লেগেই আছে।ঔষধ খাই ভালো হয়ে যাই।আবার সমস্যা হয় ,আবার ঔষধ খাই ভালো হয়ে যাই। এই ভালো থাকি,এই মন্দ থাকি।এইভাবেই জীবন চলে যাচ্ছে।এইভাবেই বে্ঁচে থাকবো হয়তো আরো ক'টা বছর । মানুষের জীবনে কখনো কখনো দূর্ভাগা সময় আসে, তখন কোনো ঔষধই আর কার্যকর হয় না।তখন তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। স্যালাইন আর অক্সিজেনে দিয়ে রাখে । জীবন প্রাণ শুকায়ে যায় । আইসিইউ-তে ভর্তি করে।লাইফ সাপোর্ট লাগায় । তারপর কোমায় চলে যায় ।পৃথিবীর সমস্ত চিকিৎসা শাস্ত্র একসময় ব্যর্থ হয়ে যায়।তারপর লাইফ সাপোর্ট খুলে ফেলে।তারপর হিমঘরে।

বুধবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

সাদা গোলাপের দেশে

অনেক বছর আগে  একটা লেখা পড়েছিলাম।কাহিনী পুরাটা মনে নেই।কে কখন কোথায় লিখেছিলো তাও জানা নেই।যতোটুকু মনে আছে তাই লিখছি আমার মতো করে -

এক রাজ্যে চারিদিকে কেবলই সাদা গোলাপের সমারোহ।সারা প্রান্তরময় শুধু সাদা গোলাপ আর সাদা গোলাপ।কোথাও কোনো অন্য রঙ্গের গোলাপ নেই।এই সাদা গোলাপের ঝারে একজোড়া টোনা টুনি বাস করতো।ওদের গায়ের পালকগুলোও ছিলো সাদা।একদিন টুনি টোনার কাছে একটি লাল গোলাপ আবদার করে । টোনা মহা চিন্তায় পড়ে যায়।এই সাদা গোলাপের দেশে কোথায় পাবে সে লাল গোলাপ ? তবুও সে লাল গোলাপ আনার জন্য বাসা থেকে বের হয়ে যায়।সকাল গড়িয়ে দুপুর হয়,দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ে যায়, টোনা আর আসে না। টুনি খুব চিন্তায় পড়ে যায়।এবং টোনার খো্ঁজে বের হয়ে পড়ে।অনেক খু্ঁজতে খু্ঁজতে টুনি সাদা গোলাপের প্রান্তরের এক জায়গায় একটি লাল গোলাপ দেখতে পায়। টুনি ভাবে এই লাল গোলাপের কাছেই হয়তো তার টোনা আছে।টুনি আস্তে আস্তে লাল গোলাপটির দিকে এগিয়ে যায়।কাছে যেয়ে টুনি দেখতে পায় - গোলাপের কাটায় বিদ্ধ হয়ে টোনা মরে পড়ে আছে।তার শরীরের সমস্ত সাদা পালকগুলো রক্তে ভিজে লাল গোলাপ হয়ে ফুটে আছে।

মঙ্গলবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

একটি সুইসাইডাল স্টাটাস

স্পর্শ দিয়ে তোমার সাথে আমার সম্পর্কের শুরু। সিনে কমপ্লেক্সের সবগুলো আলো তখন নীভে গিয়েছিলো।
একটি কোমল কঠিন হাত আমার স্নিগ্ধ নরম হাত স্পর্শ করেছিলো।
প্রথম কম্পন সেখান থেকেই ,প্রথম ভালোলাগাও সেখান থেকে
'চিত্রা নদীর পারে'র শেষ দৃশ্য সেদিন আর দেখা হলো না।
তারপর,রিক্সার হুট ফেলে সাহসী যাত্রীর মতো সোয়ার করেছি ঢাকার অনেক রাজপথ
কতো রোদ্দূর, কতো বৃ্ষ্টি কতো মেঘ,কতো ছায়াতল দিয়ে আমরা হেটে গিয়েছি।

আমাদের স্পর্শ গুলো সভ্যের সিমানা ছাড়িয়ে যেতে থাকে
দিয়াবাড়ীর কাশবন, বেড়ীবা্ঁধের পাশে নির্জন একাকী রেস্তোরায় হয়েছে যতো স্পর্শের মহোৎসব।
যে তুমি একদিন ভালোবাসার জন্য ২১৬টি নীলপদ্ম এনে দেওয়ার জন্য পাগল ছিলে
সেই তুমি আমাকে গনিকার মতো করে রেখে দিলে
আমাকে ভালোবাসবার তোমার সময় হয়না
নীল আলোর নীচে নগ্নিকা করে সৌন্দর্য ভোগ  করতে তোমার সময় হয়
বিয়ের কথা  শোনার জন্য তোমার সময় হয়না
আমার উত্তপ্ত শরীর খুবলে খামছে খেতে তোমার সময় হয়।

বার্থ কন্ট্রোল পিল কিনিনি ,আজ ফার্মেসীগুলো ঘূরে ঘুড়ে স্লিপিং পিল কিনেছি
আজ রাত্রে একজন বেশ্যা  ঘুমিয়ে যাবে চিরঘুমে-
love you more than life itself, but you didn't see it.
You didn't realize what you had. Maybe once I'm gone, 







রামগিরির সেই যুবক

 অনেক দিন পর আবারও ক্যাকটাসে মধ্যমা রক্তাক্ত হলো
অর্কিডের নীলাভ আলোয়  চারুলতার বক্ষতল আবারো নীল হলো
কোথায় সেই সুভা কোথায় সেই মহামায়া,নেই কোনো হৈমন্তীবালা
এই শহর এই শহরের আকাশ ট্রয়ের মতো বিধ্ধস্ত মনে হয়
উপত্যাকায় অন্ধকার করা সেই শাল পিয়ালের সবুজ কোথায় হারালো
 সুচিত্রাসেন সুচিত্রাসেন বলে ডেকে ডেকে কণ্ঠ হয়েছিলো একদিন নীলকণঠ

এখনো কোনো পুরোনো পলিমাটির গন্ধে আকুল হয় প্রথম সেইসব যৌবন
এখনো ্স্বপ্ন দ্যাখে এখনো গন্ধে ভাসে বদ্বীপের সেই মৌ মৌ মৌবন
এখনো সন্ধ্যাতারার আড়ালে নিঃশ্ব।স নেয় একাকী কোনো এক লুব্ধক
এখনো আকুল হয়,এখনো যক্ষের মতো বিরহে কা্ঁদে রামগিরির সেই যুবক।

পরাণের গহীন ভিতরে তুমি নেই


'আমি বাংলার আলপথ দিয়ে, হাজার বছর চলি।
চলি পলিমাটি কোমলে আমার চলার চিহ্ন ফেলে।
তেরশত নদী শুধায় আমাকে, কোথা থেকে তুমি এলে ?
আমি তো এসেছি চর্যাপদের অক্ষরগুলো থেকে
আমি তো এসেছি সওদাগরের ডিঙার বহর থেকে।
আমি তো এসেছি কৈবর্তের বিদ্রোহী গ্রাম থেকে।'

আমাদের পরাণের গহীন ভিতর রক্তাক্ত করে দিয়ে তুমি চলে গেলে সৈয়দ হক।
দুঃখের তিমিরে যদি জ্বলে তব মঙ্গল-আলোক,
তবে তাই হোক।মৃত্যু যদি কাছে আনে তোমার অমৃতময় লোক ,তবে তাই হোক।

মা'র অন্তর্ধাণের দিনে

,চোখ খুলে রাখলেও তোমাকে দেখি, চোখ বন্ধ করে রাখলেও তোমাকে দেখি                                                           জেগে থাকলেও তোমাকে দেখি।ঘুমিয়ে থাকলেও তোমাকে দেখি।                                                                   স্বপ্নেও তোমাকে দেখি।তন্দ্রাচ্ছন্নেও তোমাকে দেখি।
মা,তোমাকে দেখতে দেখতে,পথ চলতে চলতে পা আমার থেমে যায়
তোমাকে দেখতে দেখতে  নয়ন আমার জলে ভেসে যায়।
,
মা,আজ তোমার চতুর্থ মৃত্যু বার্ষিকী। চলে যাবার এই দিনে তোমার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।আল্লাহ তোমাকে বেহেস্তে নসিব করুক। আমিন।।





সোমবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

বাজিগর

 মানুষের জীবনের সব বা্ঁকই নির্ঝন্জাট নয়।দুঃখ দুর্দশাও থাকে।থাকে গ্লানি ,থাকে পরাজয়।পরাজিত হয়েই জিততে হয়। তবেই না সে বাজিগর। জীবনকে ছেড়ে চলে যেতে নেই।প্রিয় কোনো মানুষ,বহতা কোনো নদী,অফুরন্ত নীল আকাশ, কোথাও না কোথাও বে্ঁচে থাকার প্রেরণা খু্ঁজে পাওয়া যায়।  

২ নং গলির বাড়িটা

২০১২ সালের সেপ্টেম্বরের কোনো এক সন্ধ্যার কথা। মৃত্যর আগে আমার মা শেষ ২০/২১ দিন মিরপুরে ৬ নং সেকসনে আজমল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলো।আমি প্রতিদিন দুপুর তিনটা থেকে রাত দশটা অবধি হাসপাতালে অবস্থান করতাম। মিরপুরের সাথে আমার অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে।আমার বড়ো বোন থাকতো মিরপুরে ৬ নং সেকসনে ২ নং গলিতে নিজ বাড়ীতে।আমি এই বাড়ী থেকেই দেড় বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস করেছিলাম। বিয়ে করে নববধূকে উঠিয়েছিলাম এই বাড়ীতেই। নব্বই দশকের গোড়ার দিকে আমার বোনরা সপরিবারে কানাডায় স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে যায়।সেই থেকে তারা তাদের বাড়ীটি ভাড়া দিয়ে যায়। আর সেই থেকে আমারও  ঐ বাড়ীটিতে যাওয়া হয়না।
সেদিন হাসপাতালে আমার স্ত্রীকে নিয়ে গিয়েছিলাম। মা'র শরীরটাও ভালো ছিলো না। মনটা তাই খারাপ লাগছিলো ।  তখন সন্ধ্যা হয়েছে। আযান ও নামাজ শেষ হয়ে গেছে।হাসপাতাল থেকে আমার বোনের সেই বাড়ীতে হেটে যেতে পা্ঁচ সাত মিনিটের পথ।ওকে বললাম- চলো যাই আমাদের বাসর বাড়ীটা দেখে আসি। ওকে যেতে আগ্রহী মনে হলো। নিয়নবাতি সবগুলো জ্বলে ওঠে নাই। দুজন আলো আধারিতে হেটে হেটে ২ নং গলির ঐ বাড়ীটার দিকে যেতে থাকি।প্রায় বিশ বছর পর ঐ বাড়ীর দিকে যাওয়া। চেনা পথ সব অচেনা লাগছিলো।একটা সময় বাড়ীটির সামনে চলে আসি।দেখলাম বাড়ির সামনে খালি জায়গা আগাছায় ভরে গেছে। চূন কালি করা হয় নাই বহু বছর।পা আর চলছিলো না। কেমন যেনো থেমে থেমে আসছিলো। আমদেরকে কেউই চেনে না। একবার মনে হলো বাড়ীটার ভিতরে যাই, দেখে আসি আমাদের বাসর রুমটা।কি দ্বিধায় যাওয়া হলো না।এক বিষাদময় দীর্ঘশ্বাস ঝরে পড়লো দুজনেরই বুকের গভীর থেকে।সেই দীর্ঘশ্বাসের উত্তপ্ত বাতাস ঐ বাড়ীতে স্পর্শ হওয়ার আগেই আমরা ফিরে চলে আসি

রবিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

আমার যতো গ্লানি

দিন শেষ হয়ে যায় সন্ধ্যা নেমে আসে। রাতের আঁধার গভীর হতে থাকে। অন্ধকারে পথ চলতে চলতে মনে হয়, একটি উদ্বেগ আক্রা্ন্ত করুণ মুখের কথা, যে মায়াময় চোখের ক্লান্তিতে প্রদীপ জ্বালিয়ে অপেক্ষা করে থাকে আমারই জন্যে।আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখি,দূরের তারাগুলো অশ্রু ছল-ছল করছে।চারদিকের আলো মুখরিত মৌন পথ ধরে যেতে যেতে শ্রান্তিতে মনে হয়– আমার নিঃশেষিত জীবনের করুণ মমতায় বে্ধে্ আছে সেই একজন, যাকে দেনমোহরের প্রতিশ্রুতিতে তার জীবনের সমস্ত দায়ভার আমিই কাধে তুলে নিয়েছিলাম। আজ মনে হয় সেই দায়ভার আর আমার কাছে নেই।কখন কোন্ অলক্ষ্যে তা নিয়ে গেছে সেই একজন,যার দায় আমিই নিয়েছিলাম।

নীল জল আগুন হল তার ছোঁয়ায়

নিঝুম দুপুর।একা বাড়ি।একা আমি।কম্পিউটার টেবিলের সামনে বসে অন্তর্জালে বে্ঁধে আছি। আমেরিকান বান্ধবী Bella Winter এর profile দেখছিলাম ওর মেয়ে Milissa Winterও আমার বন্ধু। আমি যখন Hollywood এ ছিলাম, Milissa ছিলো আমর Class Met, পরবর্তীতে ওর মা আমার বান্ধবী হহে যায়। Twitter এ কাকে Twit করবো ? মা কে না মেয়েকে ?কিছু বাজে যন্ত্রণা পেতে হয় কখনো কখনো। ইনিস্টাগ্রামে বিকিনি পড়া ছবি আপলোড করেছে Milissa.দেখছিলাম ঐসবই।
সান্তা মনিকার নীল জলে ভেসে রয়েছে তাঁর অনাবৃত পিঠ। সেখানে আলতো করে এসে পড়েছে বিকিনির বাঁধন! সেই বাঁধন ছাড়িয়ে যেন পিঠের ডানা-মেলা ট্যাটু নিয়ে আকাশে মুক্তির খোঁজে শরীর ভাসিয়েছে !
দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ। Laptop এর switch off.করে দেই।
এমন অসময়ে কেউ আসে নাকি ? 



শনিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

আমিই ওর নিঃসঙ্গতা

আমিই ওর নিঃসঙ্গতা। আমিই ওর একাকীত্                                                                                                                                     এই অনুভব অনুপ্রবেশ করেছে  নিঃশব্দ পদসঞ্চারে।                                                                                                                               অথবা আমি সেই গন্ধবিধুর বাতাস ভেজা অস্তিত্ব, যা ভেসে বেড়ায় ওর যাপনদুঃখে।                           ...                                                  সোনালি হলুদ চন্দ্রমল্লিকাদের সূর্যের দিকে চোখ, শরীর জুড়ে হাসির হিল্লোল।                                                                                 কিন্তু আমি জানতেই পারি না। এই অনন্ত অন্ধকারের কথা।

আর ওর দিকে তাকিয়ে যেন শুনতে পাই রাতচরা পাখির কান্না ।                                                                                                   মুহূর্ত বিলীন হয়  অনুকম্পার  দিগন্তরেখায়।                                                                                                                                     আমি অনুভব করি মন্দলয়ে... কামনার সুর, আবেগমদির....

আমি ওকে দখল করি . চাঁদের আলোয় ভেসে। বাধা দেয় না।                                                                                                             .আমি দেখি.. ওই হাসিটি এখন ওর ঠোঁটে ...                                                                                                                                  কিন্তু যে  কান্না আমি কোনওদিন স্পর্শ করতে পারব না ...কেমন অক্লেশে গড়িয়ে যায় ওর জ্বরতপ্ত গাল দু'টি বেয়ে ...                        চাঁদের আলো মেখে ... স্বর্ণিল মুক্তা বিন্দু যত..া

লোফার এরিয়া

লেকের পাড়ে হাটতে গেলে সাধারণতঃ ৩ নং সেক্টরের পূর্ব পাড় ধরে আমি হাটি না।দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ওদিকে তো যাওয়াই যায় না।অল্প বয়সী সব চিকনা চিকনা ছেরীরা অল্প বয়সী কতকগুইলা ছেরারে নিয়া জড়াজরি করিয়া বসিয়া থাকে।এদের দেখে বোঝা যায় এরা স্কুল/কলেজ ক্লাস ফা্ঁকিবাজ ছাত্র ছাত্রী।অনেকের পরনে ইউনিফরম।এই ছেরা ছেরীরা লেকের পাড়ে বসিয়া ষে সব লীলাখেলা করে তাহা দেখিয়া আক্কেল আর পেটের ভিতর থাকেনা। একদুল্লা একদুল্লা ছেরীগুলার যাগোরে নাটরের কা্ঁচাগোল্লার মতো বুকটাও ঠিকমতো ওঠে নাই,তাগোর সেলফী তোলা আর খিলখিলাইয়া নিটকানী দেখিয়া মাথা টাসকি খাইয়া যায়।মোবইলে ভিডিও দেখিয়া হাসিতে হাসিতে পাশে বসা রোমিও ছেরার উপর ঢলিয়াা পড়ে। মনে মনে কই,বেশী নিটকাইস না। তুই যা করোস হেগুলাও তর রোমিও ডিভাইস চালাইয়া ভিডিও করিয়া রাখে। ওইগুনা যহন তর রোমিও ইন্টারনেটে ছাড়িয়া দিবো।তখন বুঝবি,তর নিটকানি কই যায়।

আরো অনেক সিন সিনারী আছে,লিখলাম না ওসব। ঘরে আমার পরিবার (বউ) আছে, সে যদি জানে যে আমি ঐ লোফার এরিয়ার দিকে গেছি,তাহলে আমার টেংরী দুইটা ভাঙ্গিয়াই ফেলিবে।

(*** 'নিটকান' অর্থ হাসি, 'একদুল্লা' অর্থ ছোট। টেংরী অর্থ পা। এগুলো সিরাজগঞ্জের আঞ্চলিক শব্দ।)

শুক্রবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

শৈশবের কাছে হেঁটে চলে যাবো

আমি শৈশবের কাছে হেঁটে চলে যেতে চাই। যেথায় কাশবনে হাসে শরতের রোদ্রের আকাশ।।যেথায় যমুনার পাড় ধরে হাঁটবো, আর হাঁটতে থাকবো যতক্ষণ না রমণীদের এলো চুলের মত সন্ধ্যা নেমে না আসে। পাড়ে ফুটে থাকা ফুলে আর সন্ধ্যা প্রান্তরে শুনবো ঝি্ঁঝি্ঁ পোকাদের গান। রাতের মধ্য প্রহরে খু্ঁজবো দূর আকাশে লুব্ধক, স্বাতি, কালপুরুষ। আমি আমার ছোটবোনের বেনী বা্ঁধা চুলের সুবাস নিতে চাই।শুনতে চাই বাবার পু্ঁথি পাঠ ।আর মা'র আচ্ঁলতলায় বসে শীতল হতে চাই সেই দখিনা বাতাসে।

সংসারাসক্তি কতদিন

সংসারীরা বলে, কেন কামিনী-কাঞ্চনে আসক্তি যায় না? তাঁকে লাভ করলে আসক্তি যায়।যদি একবার ব্রহ্মানন্দ পায়, তাহলে ইন্দ্রিয়সুখ ভোগ করতে বা অর্থ, মান-সম্ভ্রমের জন্য, আর মন দৌড়ায় না।

বাদুলে পোকা যদি একবার আলো দেখে, তাহলে আর অন্ধকারে যায় না।

রাবণকে বলেছিল, তুমি সীতার জন্য মায়ার নানারূপ ধরছো, একবার রামরূপ ধরে সীতার কাছে যাও না কেন? রাবণ বললে, তুচ্ছং ব্রহ্মপদং পরবধূসঙ্গঃ কুতঃ -- যখন রামকে চিন্তা করি, তখন ব্রহ্মপদ তুচ্ছ হয়, পরস্ত্রী তো সামান্য কথা!

তবে তাই হোক

শরৎ সন্ধ্যায় আজ রং ছিলো
তোমার মনে আজ ঢং ছিলো
পরনে লাল শাড়ি ছিলো
তোমার সাথে আরি ছিলো
শরীরটাতে নদীর বা্ঁক ছিলো
পরান তোমাকে ডাকছিলো
রাতের মধ্যে স্বপ্ন আছে
বুকের তলায় রত্ন আছে
রূপবতীর রূপ আছে
স্বপ্নলোকে আলো আছে
শরৎ রাতে বাজছে গান 
লীলাবতীর হাসছে প্রাণ
রাতের রংএ রাঙ্গিলো এক রাধা
কৃষ্ণের প্রেমে থাকলো না বাধা
স্পর্শে কা্ঁপলো তার দেহলোক
চাই অমৃতভোগ, তবে তাই হোক।


বৃহস্পতিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

ভালোবাসার পৃথিবী

মানুষ একটা সময়ে স্নিগ্ধ কোমল স্বভাবের হয়ে যায়। সেকি তখন দূরাগত পরপারে্র ডাক শুনতে পায়।এই কারণে ? নাকি কিছু সময় আসে শুধু ভালোবাসবার।পৃথিবীর ধূলো বালি মাটি খরকুটোও তখন প্রিয় হয়ে ওঠে।
কোনো মৃত্যু চেতনা থেকে নয়, মৃত্যু ভয় থেকেও নয়, একটা সময় মানুষ ভালোবাসে চিরদিনের নীল আকাশকে,স্ব্প্ন দেখানো মানুষকে,নদী সাগর জনারণ্যকে।
আমি কি সেই রকম কোনো সময়কাল অতিক্রম করছি ? নিজকে কেমন যেনো কাঙ্গাল লাগে। সবাইকে ভালোবাসতে ই্চ্ছা করে।সবার কাছ থেকে ভালোবাসা পেতে ইচ্ছা করে।আর,পৃথিবীটাকেও কেমন যেনো স্বর্গীয় মনে হয় !


জগতে আনন্দযজ্ঞে


প্রিয় প্রধানমন্ত্রী,আপনি অনেক সাফল্যের পালকের গা্ঁথা জয়মুকুট পড়ে ফিরে আসবেন এ দেশে।আমরা এ জন্য গর্বিত ও আনন্দিত। পুরো জাতীর পক্ষ থেকে যদি কয়েকজন শিশুুু বিমান বন্দরে আপনাকে ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানাতো তাহলে খুশী হতাম।কিন্তু তা না করে,করা হচছে-'জগতে আনন্দযজ্ঞে মহা আয়োজন'।পুরো বিমান বন্দর থেকে গণভবন পর্যন্ত আপনার আগমনের দিন রাস্তা বন্ধ করে লক্ষ মানুষের সমাগম ঘটানোর আয়োজন হচ্ছে।প্রিয় প্রধানমন্ত্রী, এ জন্য আপনার প্রিয় নাগরিকদের কি ভোগান্তি ও কষ্ট হবে তা কি একবার ভেবে দেখেছেন ? পথের উপরে হাজার হাজার গাড়ির যানজট তৈরী হবে।এ যানজট চন্দ্রা মৌচাক ছাড়িয়ে যমুনাপাড়ে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত চলে যাবে। মানুষের জীবন থেমে যাবে রাস্তার উপর। মুমূর্ষ রোগীবাহিত এ্যাম্বুলেন্সগুলি করুণসুরে ভে্ঁপু বাজাতে বাজাতে বন্ধ হয়ে যাবে।রুগীদের আহাজারিতে আকাশ বাতাস ভারি হয়ে উঠবে। প্রিয় প্রধানমন্ত্রী, আপনিই পারেন মানুষের দুর্ভোগ লাঘব করতে,আপনিই পরেন,আপনার আগমনের দিন.এ 'আনন্দযজ্ঞের মহা আয়োজন' থামাতে।

বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

'আল্লাহ আকবার'

নামাজ পড়ার সময় 'আল্লাহ আকবার' এই তাকবির পূণঃ পূণঃ এসে যায়। তাছাড়া আযান ও একামতে তো আছেই।
আল্লাহু আকবার, আল্লাহ মহান- তিঁনি সব কিছু থেকে মহান।মুয়াজ্জিন যখন আযানে বলেন “আল্লাহু আকবার” মানে Allah in Greater then what you are busy with, so now stop whatever you’re doing and go to pray.তাই আমরা যখন বলি আল্লাহু আকবার, এর মানে আল্লাহ সব কিছু থেকে মহান। 
আমাদের গ্রামের মক্তবের মরহম আবুল হুুজুর সাহেব আমাদের নামাজ পড়া শিখানোর সময় বলেছিলো-তুমি যখন 'আল্লাহ আকবার বলিয়া সিজদাহ্ এ যাইবে তখন তোমার কপাল থাকিবে জমিনে,আর তোমার সমূখে থাকিবে পবিত্র কা'বা শরীফ। তখন তুমি উচ্চারণ করিবে- সোবহানা রাব্বিউল আলা।'
জীবন থেকে জীবনান্তরে “আল্লাহু আকবার” ধ্বনিটা আমাদের মন ও মননকে মহত্তম করে রেখেছে।

অথচ “আল্লাহু আকবার” বলে যারা মানুষ জবাই করে এই পবিত্র বানী'টিকে ভীতিকর ও অপবিত্র করে ফেলেছে,আমি তাদের ঘৃণা করি এবং ধিক্কার দেই।

ছত্রিশ চৌরঙ্গী লেন

প্রতিদিন প্রাতঃ ভ্রমনে বের হই। কোনো কোনো দিন স্ত্রী সাথে থাকে, কোনো কোনো দিন থাকে না। কোনো দিন ৭ নং সেক্টর পার্কেে যাই আবার কোনো দিন ১৩ নং সেক্টরের লেকের ধারে। ১৩ নং সেক্টরের লেকের ধারে ওয়াকওয়ে দিয়ে হাটার সময় প্রায় দিনই সত্তোরোর্ধ একজন পৌঢ়া মহিলাকে হাটতে দেখতাম।প্রতিদিন একাই সে হাটতো।কোনোদিন তার সাথে কাউকে হাটতে দেখিনি।না তার স্বামী,,না তার কোনো ছেলেমেয়ে,না তার কোনো নাতি পুতি।আমরা বলাবলি করতাম,হয়তো এই বৃদ্ধার বাসায় কেউ নেই।স্বামী নেই,ছেলেমেয়েরা সবাই দূর প্রবাসে থাকে।একদিন আমার স্ত্রীকে কৌতুক করে বলেছিলাম- তুমি যদি আমার বউ না হয়ে বান্ধবী কিংবা পরস্ত্রী হতে তাহলে ঐ বৃদ্ধার সাথে খাতির করা যেতো।
বউ:  কেন ?
আমি: ৩৬ চৌরঙ্গী লেন
বউ: সেটি আবার কি ?
বুঝতে পারলাম,বউ অপর্না সেনের এই সিনেমাটি দেখেনি। তাকে শুধু এইটুকু বললাম- পৌঢ়ার বাসায় কেউ থাকে না। ডেটিংএর সুবিধা হতো।

গত প্রায় তিন মাস এই পৌঢ়া বৃদ্ধাকে হাটতে দেখিনি।কাল বিকালে অলসভাবে লেকের ধারে একাকী হাটছিলাম। দেখি দুজন মাঝবয়সী মহিলা,ভৃত্যা হবে হয়তো, হুইল চেয়ারে করে এক পৌঢ়া মহিলাকে লেকের  ওয়াকওয়ে দিয়ে ঘুড়ে ঘুড়ে সব দেখাচ্ছে। পৌঢ়াকে চিনতে অসুবিধা হলো না, সেই বৃদ্ধা, একদম শীর্নকায় ও চোখ দুটো কোটরে চলে গেছে।জেনেছিলাম কর্কট রোগে সে আক্রান্ত। বৃদ্ধা মায়া করে দেখছে লেকের গাছগাছালি,পাখি,জল। আমাকেও দেখলো একবার। সেই আগের মতোই আজকেও কোনো কথা হলো না তার সাথে।

মঙ্গলবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

অসভ্যচারিতা

একদম নিরব সুনসান মুহূর্ত,কোথাও কোনো শব্দ নেই।
রাত তখন নিঃশব্দ নিঃস্তব্ধ।
মুঠো ফোন বেজে ওঠে,একটাই কল,তারপর  চুপচাপ ।
 পাশে শুয়ে থাকা মেয়েটার ঘূম ভেঙ্গে যায়।  
সুদূরে কোনো স্বপ্নের কুকুর ক্ষীণ ঘেউ ঘেউ করছে।
 অসভ্য কথাগুলো আর বলা হলো না।
স্বপ্নে কাকে বলেছিলাম,স্পর্শ করো
স্পর্শ করলে শব্দ হয়,কিন্তু তাও হলো না।
 নিঃশব্দে ঝুল বারা্ন্দায় যেয়ে বসে থাকি
চা্ঁদ তখন অস্তিত্বহীন,চলছিলো গ্রহণকাল
ক্রীং ক্রীং বাজলো না আর,কোনো অসভ্যচারিতাও নেই ,
নিশাচর পাখি ডানা ঝাপটে উড়ে যায়
তারপর স্বপ্নহীন মেয়েটার পাশে এসে শুয়ে পড়ি।

এলার্ম

আমি আমার এই দীর্ঘ জীবনে কখনো ঘড়িতে এলার্ম দিয়ে চলিনি। স্কুল কলেজ জীবনে সকালবেলা এমনেতেই ঘুম ভেঙ্গে যেতো অথবা মা ডেকে দিতো।কখনো এলার্ম দিয়ে রাখার প্রয়োজন হয়নি।তারপর বি্শ্ববি্দ্যালয়ের হলে থেকেছি। সেখানেও কখোনো এলার্ম  দেইনি। ঐরকম জরুরী কিছু থাকলে রুমমেটদের বলে রাখতাম তারাই ডেকে দিতো।বিয়ের ঠিক আগে একটি বাড়ীতে একাকী চার বছর থেকেছি। সকাল সাড়ে সাতটায় সরকারী অফিস করেছি।সকালে ঠিক সময়ে ওঠার জন্য কখনো এলার্ম দেইনি।তারপরতো বিয়েই করলাম।ওরকম জরুরী কোনো ডাক থাকলে বউকেই বলে রাখি। সেই আমাকে ডেকে দেয়।
এই কথাগুলো বললাম আমার মেয়ের কারণে।সে সবসময় ঘড়িতে এলার্ম দিয়ে চলে।রাত তিনটা/ চারটা/পা্ঁচটা পর্যন্ত জেগে থাকে।রাত জেগে স্টাডি,ল্যাপটপ,ইন্টারনেট,ফেসবুক,মোবাইল আ্যাপস,ভিডিও গেম,স্কাইপে, হোয়াটসআপে বন্ধুদের সাথে আ্ড্ডা আর গসোপিং করে। পরের দিন হয়তো এগারোটা//বারোটা./দুপুরে ইউনিভার্সিটিতে ক্লাশ। শোবার আগে ঘড়িতে দিয়ে রাখে এলার্ম।কোনো দিন ওর মাকে কিংবা আমাকে বলেনা-'কালকে এতোটার সময় আমাকে ডেকে দিও।' শাসন করবার খুব একটা চেস্টা করি না। যুগের কালচার মেনে নিয়েছি। সবচেয়ে বড়ো কথা-পরীক্ষায় Excellent রেজাল্ট তার।

রীতা রায়

আপনার friend list এ আমার নাম নেই। আমি আপনার একজন follower মাত্র। আগে ফলোয়ার মানে বুঝতাম কারো পিছনে ঘুর ঘুর করে ঘুড়ে বেড়ানো বিশেষ করে মেয়েদের পিছনে। ভাগ্য ভালো facebook এ ফলোয়ারকে সেটা mean করেনা।আর এখন পর্যন্ত আমি আপানার ভাই ব্রাদারও হতে পারি নাই। আপনি বাংলাদেশের জেলাগুলো ঘুড়তে চেয়েছেন।আমি যে জেলায় থাকি,আপনার choice list এ সে জেলারও নাম নেই।কপালের নাম গোপাল ইহাকেই বলে। তারপরেও আপনাকে নিমন্তন্ন দিলাম।আইসেন আামাদের বাড়ি।আপনাকে রিক্সায় করে দিয়াবাড়ীর কাশবন দেখাতে নিয়ে যাবো।ঘরে আমার সুন্দরী বধূ আছে সে আপনার সাথী হবে।আর আপনাকে খাওয়াবো ভেটকি মাছ আর টাকি মাছের ভর্তা,সাথে থাকবে উস্তা ভাজি আর ডাল। কি,আসছেনতো দিদি ?

রীতা দি উত্তরে লিখেছিলো" আজ আমার জন্মদিন। জন্মদিনে এর সুন্দর মেসেজ পেয়ে আপনাকে শুধু বন্ধু নয়, ভাই বলে গ্রহণ করে নিলাম

আমার উত্তর ছিলো:
এতো বড়ো দায় আমাকে দিলেন ।একেবারে হাতে রাখী পড়িয়ে দিলেন। কি যে ভালো লাগছে আমার !,কোথা থেকে এক খন্ড ছায়ামেঘ হঠাৎ আমার মাথার উপরে এসে স্থির হয়ে গেল। আজ আপনার জন্মদিন দিদি। আজ আর কোনো কথা নয়।আজ শুধু এই ভাইয়ের ভালোবাসাগুলো আপনার করে পাঠিয়ে দিলাম।


Chat conversation end

সোমবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

আমার ধর্ম দর্শন

আমি ধর্ম নিয়ে কারো সাথে কোনো তর্ক করিনা।রাস্তা ঘাটে বাসে ট্রেনে চা র দোকানে কেউ যদি ধর্ম নিয়ে আলাপ আলোচনা করে সেখানে আমি involve হইনা। ইন্টারনেটেও তাই। ধর্ম বিষয়ক কোনো পোস্টে like দেই না কিংবা কোনো comments লিখিনা।
আমি ধর্ম ব্যাপারে খুবই অজ্ঞ মানুষ।ছোটবেলায় মা কোরান শরীফ পড়া পর্যন্ত শিখিয়েছিলো।চর্চা না থাকাতে ভুলে গেছি অনেকটা।জের জবর পেশ উচ্চারণ করে করে পড়তে হয়। ১০/১২টি সূরা মখস্থ আছে।তাই দিয়ে নিয়মিত নামাজ পড়ার চেস্টা করি।কালেমা গুলোও জানা আছে।এই পর্য্তই আমার ধর্মবিদ্যা।পাপ পুণ্য যাই করি,ধর্মের প্রতি বিশ্বাস আছে।আল্লাহর প্রতি আস্থা আছে। রসুল পয়গম্বরদের জীবনদর্শন অনসরণ করার চেস্ট করি।

মন দুলছে অকারণ হাসিতে

গত বসন্তেই গাছের পাতাগুলো ঝরে গেছে।ফুলগুলোও ঝরে গেছে তারও আগে।
তারপর গ্রীষ্ম বর্ষায় কোথাও ফুল ফোটেনি।আজ সন্ধ্যায় জানালা খুলে দেখলাম, আঙ্গিনায় হাস্নাহেনা ফুলগুলো সব ফুটে আছে। মৃদুমন্দ বাতাস বইছে।দখিনের জানালা দিয়ে ঘরে সুবাস চলে আসছে ।
তুমিও গন্ধে আকুল হলে।হঠাৎ মন তোমার দুলে উঠলো। হাতের চূড়ি রিনঝিন করে উঠলো। পায়ের নুপুর বেজে উঠলো।আকাশেও চা্ঁদ উঠেছে।বাইরেও জ্যোৎস্নার বান ডেকেছে।তোমার হৃদয় ব্যকুল হচ্ছে। মন যেন দুলছে অকারণ হাসিতে।

ক্লান্তি আমায় ক্ষমা করো প্রভু

জীবনের পিছনের চলার পথ গুলোর দিকে আর ফিরে তাকাতে পারিনা।কোথা' থেকে যে জীবন শুরু হয়েছিলো,আর ,কোথায় পড়ে আছে সেই শুরুর বিন্দু।পায়ের দাগ গুলোও পথের ধূলায় মিলিয়ে গেছে।এই ছায়া সুনিবীর দেশটাতে জন্ম হলো।এ মাটির গন্ধে ভরে গেল মন। এই মাটিতেই শিকড় ছড়ালাম।এই মাটিতেই সংসার হলো।ঘরবাড়ি বৃক্ষ সন্তান এই মাটিতেই।জীবনের সেই শুরু থেকে অনেকদূর চলে এসেছি।পিছনের সবই কেমন যেনো বিস্মৃত হয়ে গেছে।  কতোটুকুই বা পথ চলতে পারবো ? পথের শেষ প্রান্তে কি চলে এসেছি ? পা ষে আর চলছেনা। জীবন থেমে যাচ্ছে।এ কেমন ক্লান্তি আমার!! হায় 'ক্লান্তি আমায় ক্ষমা করো প্রভু।'

রবিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

সে ছিলো প্রথম নদী

সে ছিলো প্রথম জীবনে লেখা একটি কবিতা
কি ছিলো সেখানে উপমা উৎপ্রেক্ষা ?
কোন ছন্দে লেখা হয়েছিলো কবিতার শরীরখানি ?
কবিতাটি ছিলো একটি নদী-
উদ্দাম তরঙ্গমালা, পাহাড়, টিলার বুকচিরে  জলপ্রপাত
প্রথম স্রোতধারা,প্রথম বিমুগ্ধ নিম্নচাপ
ফেনায়িত শভ্র আভা,প্রথম সঙ্গম স্থলের দিকে অভিযাত্রা
নদীর বা্ঁকে বা্ঁকে বু্ঁনো হাসের জল মগ্নতা
সে ছিলো পথম দু'পাড়ে ভাঙ্গন, নোঙ্গর ফেলা ছিলো অতল তলে
নদীর শরীর ছিলো ব্যঞ্জনবর্ণ,অনুপ্রাস ছিলো স্বরধ্বনির
সে ছিলো প্রথম নদী,সে ছিলো প্রথম সা্ঁতার কাটা
প্রথম কোনো শিহরণ,প্রথম জলে ভাসতে থাকা।

আমার শোর্য আমার বীর্য

এই যে পৃথিবী,এই যে গ্রহ নক্ষত্র,চন্দ্র সূর্য তারা,এই যে এর দিন রাত্রি
এই যে জ্যোতির্ময় জগৎ,সবকিছুতেই বিলীন হতে দেখি জীবন
নক্ষত্রেরা পুড়ে ছাই হয়,চন্দ্রগহণে পৃথিবী অ্ন্ধকার হয়, দিন হারিয়ে যায় রাতের গভীরে
পাহাড় পর্বত গিরি নদী সাগরও অবিনশ্বরতা পায়নি
আমার জীবন আমার প্রেম,আমার শোর্য আমার বীর্য আমার তেজ আমার গ্লানি
জ্যোতি ছড়াতে পারেনি,আলোকিত করতে পারেনি অন্য জীবনকে
মহাকালের অতলে আমি লীন হয়ে গেছি
আমাকে আর আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়না
আমি এখন অন্য জীব ,,পাখি চিল সরীসৃপ কিংবা পানকৌড়র মতো অন্য কোনো কিছু।

শনিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

সব চিত্রকল্পগুলি

এই ভর দুপুরে কোথায় যাবো ? যাবোই যখন তার চেয়ে চলে যাই 
দিয়াবাড়ীর কাশবন পেড়িয়ে বিলের ওধার
বসে বসে দেখা যাক কানি বক ছুটে যচ্ছে দূর প্রান্তরের দিকে
 নীলাভ কস্তরী ফুলের উপরে হলুদ আলো ঝরে পড়ছে
বিল থেকে ডাঙ্গায় হাটছে একটা কচ্ছপ
কোত্থেকে একটা বেজি দৌড়ে গেল নলডাঙ্গার আড়ালে
কেমন যেনো মগ্নতা,কেমন যেনো নগ্নতা ,পানকৌড়ি রক্তে ভাসে বিলের জল                                                                                           কেউ কি লেখে এইসব,কেউ কি দেখে এই সব                                                                                                                                  আমার কোনো অভিমান হয় না,বিষাদও নেই
পাতার উপর স্তব্ধ পা ফেলে আমি হেঁটে যাই
দূরে, উত্তরের দিকে, যেখানে সন্ধার পাখিরা নীড় হারায়
যেখানে তুমিও হারিয়ে যাও।হারিয়ে যায় সব চিত্রকল্পগুলি।

শুক্রবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

ধরিত্রীর সৌ্ন্দর্য সুধা

দেখতে দেখতে জীবনটার আয়ু ফুড়িয়ে গেল।এতো চিৎকার করে এই পূথিবীতে এসেছিলাম আর সেই পৃথিবীটাকেই ভালো করে দেখা হলো না।জীবনে কিছুই হতে পারিনি কিন্তু জীবনটা শুধু শুধু ব্যস্ততায় কেটে গেছে। এখন জীবন যতোটুকু আছে সেটুকুতে এই সংসারে আর থাকতে চাইনা।সংসার বিবাগী হতে মন চায়।ভরা পূর্নিমা রাতে জ্যোৎস্না তলায় হেটে হেটে ঘর হতে বেড়িয়ে পড়তে ই্চছা করে। কোথায় পৃথিবীর রূপ আছে, কোথায় গেলে দেখতে পাবো ধরিত্রীর সৌ্ন্দর্য সুধা।আমি পৃথিবী দেখার জন্য পরিব্রাজক হতে চাই।আমাকে তোমরা কেউই পিছন থেকে ডাক দিবে না।আমার যে সময় নেই।

শান্তি কোথায় আছে

যখন মন ভালো লাগেনা তখন কোনো কিছুই ভালো লাগে না।প্রিয় রবীন্দ্র সঙ্গীত বাজিয়ে শুনি,ভালো লাগেনা।কালবেলা,কালপুরষ,উত্তারাধীকার পড়ি,মন ভালো হয়না। হুমায়ুন,মিলন,হিমু,শুভ্র,নুরজাহানদের কাছে যাই,তাও ভালো লাগেনা।পথের পা্ঁচালী,তিতাস,কাঞ্চনজজ্ঞা দেখলেও মন ভালো হয়না।
আমার কেবলই দুপুরের রোদ্রে হাটতে ইচ্ছা করে।পার্কে বেঞ্চে বসে একাকী সিগারেট খেতে ই্চ্ছা করে।বাউলের দোতারা শুনতে ইচ্ছা করে।গত সোমবার থেকে ঠাকুরবাড়ীর জারুল বনের কথা মনে পড়ছে খালি। ছোটবেলায় সেখানে ঝরা পাতা ঝরতে দেখেছিলাম।
মানুষ মদ, গা্ঁজা, ভাং খায়।নর্তকীর নাচ দেখে।বেশ্যাদের কাছে যায়।আমিতো পতিত নই যে পতিতালয়ে যাবো।
আমি হেম করবীর ছায়াতলে একাকী ঘুরে বেড়াই।কোথায় কোন্ প্রান্তরে অপেক্ষায় আছে মায়াময়ী দুটি চোখ। আমি সে চোখে খু্ঁজে বেড়াই একদন্ড শান্তি। ঈশ্বরই জানে,আমার শান্তি কোথায় আছে।

বৃহস্পতিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

দাও দাও দাও

'প্রেমের জোয়ারে ভাসাবে দোঁহারে-- বাঁধন খুলে দাও, দাও দাও দাও।
ভুলিব ভাবনা, পিছনে চাব না,-- পাল তুলে দাও, দাও দাও দাও।
প্রবল পবনে তরঙ্গ তুলিল, হৃদয় দুলিল, দুলিল দুলিল--
পাগল হে নাবিক, ভুলাও দিগ্‌বিদিক,-- পাল তুলে দাও, দাও দাও দাও॥'

আজ সকালে তারা বাংলায় রবি ঠাকুরের এই গানটি একটি মেয়ে গাচ্ছিলো। শিল্পীকে আমি চিনিনা,নামও জানিনা। দরাজ দিল কণ্ঠ তার।এই গান শুনে আজকের সকালটা আমার মনোরম হয়ে উঠলো।মনে হইলো আমারও হৃদয় খুলিয়া গেলো।মনের গাঙে নৌকা পাল তুলিলো।আমার সকল কর্মের শুরুটা থামিয়া গেলো।গানটি গাওয়া শেষ হয়ে গিয়েছে।কিন্তু সুরের সেই অনুরণন আমার কানে কানে,আমার প্রাণে প্রাণে এখনো রয়ে গেছে

ভরা থাক স্মৃতি সুধায়

কারো সাথে ত্রিশ বছর,কারো সাথে পয়ত্রিশ বছর পর আজ দেখা।হঠাৎ করেই বন্ধু ফজলুর রব স্বপনের আমন্ত্রণ। হঠাৎ করেই চিপাচসের পুরানো বনধুদের কাছে পাওয়া।কতো যে কথা হলো আমদের। কতো যে স্মৃতিকথা, কতো প্রাণের কথোকথা।এক অন্তহীন ভালোলাগায় ভরে উঠেছিলো আজ সন্ধ্যায় স্বপনের ধানমন্ডির বাসায়। আমাদেরর আড্ডায় ছিলো চাষী সিরাজ, খায়রুল আনোয়ার, দেলোয়ার জগলু,সশীল সূত্রধর, ফজলুর রব স্বপন, ফারহানা সবপন, আমি ও হ্যাপি রহমান।ফারহানা ভাবির রান্না করা খিচুরী এবং সিরাজগজ্ঞের দই ও মিষ্টি আমাদের আড্ডাকে আরো বেশী প্রাণবন্ত করেছিলো।সময়গুলোো দ্রুত ফুরিয়ে গেল । রাত হয়ে গেল অনেক। আমরা চলে এলাম। পুরানো এই বন্ধুদের সাথে আজকের এই আড্ডায় যে আনন্দ পেলাম তা ভরা থাক স্মৃতি সুধায়।

কি নাম ছিলো মেয়েটার

সেই গা্ঁয়ের বালিকাটির কথা মনে পড়ে। কি ছিলো ওর নাম। নামটাও দেখছি ভুলে গেছি। কি মিষ্টি ছিল ঠোঁটের গড়ন। যেনো সৃষ্টি সুখের উল্লাসে। তীব্র চাহনি ছিল, দৃষ্টিসুখ ছিলো।কার যেন অন্তর কা্ঁপাতো । কি নাম ছিলো মেয়েটার ? কলাপাতায় প্রেমপত্র লিখিছি।চিঠি ছিঁড়ে ছিলাম অবলীলায়? প্রেমপত্রও ছিঁড়েছি, ছিছি।  গোল্লাছুট খেলতাম। ছো্ঁয়াছুয়ির  খেলা খেলতাম।কি নিষ্ঠুর খেলাধূলা ছিল, তখন। পাপ হয়েছিল নিশ্‌চয়। গান গেয়েছিলোো সন্ধ্যা পূজায়।কি নামে ওকে যেনো ডাকতাম। ধূপের সুবাসেও সেই নামটি মনে করতে পারছিনা।


শূণ্য মন্দির মোর

বিলাসকুঞ্জের দিকে চেয়ে কেমন করে কাটবে জীবন ? আর কার সাথে সন্ধ্যা নিলবাহিত যমুনাতীরে হাত-ধরাধরি করে ঘুরে বেড়াবে নীলাম্বরতলে ?

কার জন্য প্রত্যুষে উঠে পুষ্পকুঞ্জে ফুল কুড়াবে?
কার শ্রীমুখ অলকা-তিলকা দিয়ে সাজাবে?
চন্দন ঘষে কপালে বিন্দু এ্ঁকে দিবে?
কার জন্য ফল-ফুলের নৈবেদ্য তৈরী করবে?
কার জন্য সদ্যবিকশিত শতদলের প্রতিটি দল নিয়ে সযত্নে পুষ্পশয্যা তৈরী করবে?

মিলনপর্ব শেষ হয়ে গিয়েছে। মন্দির খালি হয়ে গিয়েছে—।সে চলে গিয়েছে।

বুধবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

চাঁদ হয়ে ফিরে আসবে

তোমাকে ছো্ঁয়ার আগেই চা্ঁদ পশ্চিম আকাশে ডুবে গেছে।সব আলো নীভে গেছে তোমার বন্ধ চোখের নীচে।সেই উষ্ণতার আনন্দ আর পাওয়া হলো না। সব জ্যোস্না তোমাকে পাওয়ার আগেই আকাশলীনে হারিয়ে গেলো।
জোৎস্না বিধোত হয়ে তুমি কি আবার চাঁদ হয়ে ফিরে আসবে ?


এসো নুপূর নিক্কন রিনিঝিনিতে

 আমরা চলেছি রামগিরি মেঘ ঝন্ঝার পর্বতমালায়
আমরা বে্ঁধেছি শ্বেত তুষারগুচ্ছে প্রেম বাসর ঘর 
নবীন ফুলের শেফালীতে আমরা গে্ঁথেছি মালা।
এসো বধূ,এসো প্রিয়ে,তোমার রাঙ্গা চরণ ফেলিয়ে, 
এসো বন মল্লিকার ঝাড় ডিঙ্গিয়ে, 
এসো রক্তিম চা্ঁদের আলো-ঝলমল-রামগিরি পর্বতে-
এসো অঙ্গ দুলিয়ে নুপূর নিক্কন রিনিঝিনিতে মিলন সঙ্গীতে।

প্রিয় পাখির জন্য

আমার মেয়ে  খাচায় দুটো পাখি লালন করে। ছোটো টিয়ে পাখির মতো দেখতে। মেয়েকে বলেছিলাম, এই পাখি গুলোর নাম কি? মেয়ে বলেছিলো- বাংলা নাম জানিনা, ইরেজীতে ওদের 'বাজিজ' ডাকে। একদিন দুপুরবেলা মুসুলধারে বৃ্ষ্টি হচছে, মেয়ে তখন ইউনিভার্সিটি ক্লাসে। আমার মুঠোফোনে ওর ফোন আসে। মেয়ে বললো: বাবা,বৃষ্টি হচ্ছে খুব। আমার পাখিগুলো বারান্দায়।ভিজে যাবে,তুমি ভিতরে এনে রাখো।' আর একদিন- সেদিন ছিলো মেয়ের জন্মদিন,আমি ওকে বললাম: মা, আজ তো তোমার জন্মদিন, চলো,দিয়াবাড়ির কাশবনে পাখি দুটোকে খা্ঁচা থেকে মুক্ত করে দিয়ে আসি' মেয়ে রাজি হয়নি।একটু আগে দুটো পাখির একটি পাখি মারা গেছে। যেয়ে দেখি: মৃত পাখিটিকে  হাত বুলিয়ে মেয়ে অঝোর ধারায় কা্ঁদছে। ওকে বোঝালাম- মা,পাখি মারা গিয়েছে তাই কি হয়েছে, পৃথিবীতে কতো মানুষ কতো প্রিয়জন মারা যাচ্ছে,এতো সামান্য একটি পাখি।' তারপরেও মেয়ের কান্না থামছেনা।


মঙ্গলবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

যতনের যতটুকু আলো

যেদিন আমার শরীরটা খারাপ থাকে সেদিন আমার স্ত্রীর আদর যত্নটা একটু বেশী পাই।গোসলের জন্য কুসুম কুসুম গরম পানি।সুগন্ধি চালের নরম ভাত। কা্ঁচা পে্ঁপে ভর্তা, উস্তা ভাজি, ছোট দেশী মুরগীর তরকারী। রাতে শোবার আগে গরম দুধ, মুখে ঔসধ তুলে খাইয়ে দেওয়া, ঘুমানোর আগে গায়ের উপর চাদর ঠিকঠাক করে দেওয়া- এসবই আমি সযত্নে তার কাছ থেকে পেয়ে থাকি।
রাত গভীর হলে ঘুমে এবং জাগরণে আমি বুঝতে পারি একটি কোমল স্নিগ্ধ হাত বারে বারে আমার কপাল ছু্ঁয়ে পরখ করে দেখছে, আমার শরীরের তাপমাত্রা, হাতের উপর হাত রেখে অনুভব করছে- আমার নাড়ির স্পন্দন ঠিক আছে কি না !

রবিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

রাতের শব্দ

 গভীর রাতে ঘুম ভেঙ্গে গেলে চোখ দুটো না খুলেই অন্ধকারের গায়ে কান পেতে থাকি, নিস্তব্ধ রাতের ভিতরে কোনো একটা উৎস থেকে পায়ের শব্দ ভেসে আসতো। প্রথম প্রথম হৃৎপিন্ডের শব্দ ভেবে ভুল করতাম; পরে বুঝেছি, ওটা আসলে রাতের শব্দ। আবার কোনো  কোনো রাতে অশ্বের পায়ের  মতো খট খট শব্দ শুনতে পেতাম। একদিন দরজা খুলে দেখি ,অশ্ব উঠোনে দাড়িয়ে আছে ,কিন্তু কোনো আরোহি নেই।আর একদিন আমি নিজেই রাতের গভীরে অশ্বারোহী হয়ে যাই।নিঝুুম নৈঃশব্দ ভেঙ্গে তেপান্তরের দিকে ছুটতে থাকি।দেখতাম সেখানে কেবলই শূণ্য মাঠ খাঁ খা্ঁ করছে।জনমানবহীন,কারো পায়ের শব্দ নেই।তারপর দেখি সবই ভ্রম ছিলো। রাতের শব্দরাই  আমার চারপাশে জেগে আছেং। 

স্বপ্নের পৃথিবী

কোনো মেঘ নেই।কি অপরূপ পশ্চিমের আকাশ।সূর্য্য ডুবে যাবে।আলো চলে যাবে।কিন্তু এতে আমার কোনো আক্ষেপ নেই। কারন, একটু পরেই আধারের আকাশে তারা'রা জ্বলে উঠবে।তখন পৃথিবীটাকে আরো বেশী স্বপ্নের মনে হবে।



উৎসবের এই দিনে

আমার কাছে ঈদের আনন্দটা আগের মতো আর অন্তর থেকে উৎসারিত হয় না। ২০১২ সালে মা মরে যাওয়ার পর থেকে এমনটি হচ্ছে।আমার ঈদের কেনাকাটা শুরু হতো মা'র জন্য শাড়ি কেনা দিয়ে।মা প্রতি ঈদে তার ছেলেমেয়ে ও নাতি পুতিদের কাছ থেকে ১০/১২ টা শাড়ি গিফট পেতো। কিন্তু ঈদের দিন মা আমার দেওয়া শাড়িটিই পড়তো। ২০১২ সালে ঈদুল ফিতরের পর পরেই মা মারা যান। ঐ ঈদেও আমি তাকে শাড়ি কিনে দিয়েছিলাম।কে জানতো ঐটি আমার শেষ শাড়ি দেওয়া হবে। মা যেদিন মারা যায় সেদিনও আমার দেওয়া ঈদের শাড়িটিই তা্ঁর পড়নে পড়া ছিলো।

আজ ঈদের দিন। উৎসবের আনন্দ সারা বাড়ীময়। ছেলেমেয়েরা নতুন কাপড়চোপড় পড়বে।ওদের বন্ধু বান্ধবরা আসবে।আমি এবং আমার স্ত্রীও নতুন কাপড় পড়বো।সবাই ঘুরবে ফিরবে বেড়বে।সবার আনন্দের সাথে আমাকেও আনন্দ করতে হবে।তারপরেও উৎসবের এই দিনে কি এক অসীম শূণ্যতা আমার অন্তরের মধ্যে হাহাকার করে উঠছে-
'প্রমোদে ঢালিয়া দিনু মন,তবু প্রাণ কেন কাঁদে রে।
চারি দিকে হাসিরাশি,তবু প্রাণ কেন কাঁদে রে।।"


প্রথম কোরবানী ঈদের স্মৃতি

তখন আমার বয়স পা্ঁচ কি ছয় হবে।কোরবানীর ঈদ। নামাজ শেষে গরু কোরবানী হবে। এই আনন্দ আর উচ্ছাসের  সে কি সাজ সাজ রব। তখন ্গ্রামে একই সমাজ ভূক্ত লোকেরা একটা নির্দিস্ট স্থানে কোরবানী দিতো। সেখানেে আমাদেরও একটি গরু কোরবানী হবে। আমি আমার বড়ো বোনের হাত ধরে কোরবানী দেওয়া দেখতে যাই। দেখলাম বাবার মাথায় টুপি। হাতে ধারালো এত্তো বড়ো এক তরবারি ! গরুটাকে কয়েকজন মানুষ পা বে্ঁধে আরমোরা করো মাটিতে শোয়ায়ে ফেললো।বাবা আসলো ছুরি হাতে গরুটার মাথার কাছে। তারপর ছুরি দিয়ে গরুটাকে জবাই করে ফেললো।গলা দিয়ে তীব্র বেগে ফিনকি দিয়ে রক্ত বেরুছে আর গরুটা গোঙ্গাচ্ছে।এ দৃশ্য দেখে ভয়ে আমার বোনকে জরিয়ে ধরি। আমার শরীষ কা্ঁপছিলো।এবং কা্ঁদছিলাম। আমার বোন অনেকটা জড়িয়ে ধরে আমাকে বাড়ীতে নিয়ে আসে। মা আমাকে সোনা রূপা ধোয়া পানি খাওয়ায়ে দেয়। মসজিদের ইমাম সাহেবের কাছে নিয়ে যায়। হুজুর আমার বুকে এবং মাথায় ঝারফুক দিয়ে দেয়। তারপরেও সেইরাতে আমার শরীরে জ্বর এসেছিলো।

শনিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

No Man's Land

এই যে পৃথিবী,এর মানুষ,নদী,সাগর,ভালোবাসা সমস্ততেই ফাঁকি।সবই যেনো শূন্যতায় ভরা। শূন্য ছাড়া কোনও উত্তর নেই। সম্ভাবনা নেই। আলো নেই- জন নেই কেবল খাঁ খাঁ করে গ্রাস করতে ছুটে আসে অন্ধকার। নিজেকে খুঁজে নেবার মতো লোকারণ্য নেই, পথ নেই, শহর-গ্রাম কিছু নেই। কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বাতাস যেন বলে যায় ‘You have your way. I have my way. As for the right way, the correct way, and the only way, it does not exist.’ জন্ম থেকে আজ পর্যন্ত অসংখ্য ডেডলাইন পেরিয়ে এখন 'No Man's Land'-এ হতবিহ্বল আমি ঠায় দাঁড়িয়ে আছি। যেখানে এসে আর বলতে ইচ্ছে হয়না, ‘শোনো, একবার ফিরে এসো, হাত ধরে নিয়ে যাও আমায় সেই রূপকথার দেশে, ঘুমিয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত একটু ছুঁয়ে থাকো’। 

শুক্রবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

এই পথ যেনো শেষ না হয়

আমি নিরন্তর পথ চলছি।এ চলার যেন শেষ নেই।কাশবনের ছায়া দিয়ে,,পলাশ ডাঙ্গার মাঠ মাড়িয়ে,পদ্মফুলের গাং পেরিয়ে. যে পথ  চলে গেছে সামনে, সেই পথ দিয়ে আমি দেশ গা্ঁ ছাড়িয়ে চলে গেছি বহূদর ! আমি একাই পথ চলেছি।পথ চলবে বলে যারা আমার সাথী হয়েছিলো,তারা মাঝ পথ থেকেই আমাকে ফেলে চলে যায়।
তারপর কখন কোন্ স্বর্নালী প্রভাত বেলায় তুমি আমার পথের প্রান্তে এসে সাথী হলে।
তারপর থেকে তোমাকেই নিয়েই পথ চলছি, আর এই পথ চলা যেনো কোনো দিন শেষ না হয়।

বৃহস্পতিবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

কৃষ্ণা তোমাকে অভিবাদন

এই মেয়েটির নাম কৃষ্ণা। লোকাল বাসের যাত্রি। ক'দিন আগে এভাবেই সে বিদেশের মাটিতে আমাদের জাতীয় পতাকা উড়িয়ে এসেছিলো। কেউ স্যালুট দিক আর না দিক আমি এই মেয়েটাকে স্যালুট দিতে চাই।কৃষ্ণা তোমাকে অভিবাদন।


মন ভালো মন খারাপ

কারণে অকারনে প্রায়ই মনখারাপ হয়। আর কেন যে এতো মন খারাপ হয় তা আমি নিজেও জানিনা।এই অহেতুক মনখারাপগুলো কষ্টই কেবল বাড়িয়ে দেয়।আবার এর উল্টো ব্যাপারও আছে,  হয়তো পথের ধারে ফুটে আছে নয়নতারা,অপরাজিতা,বনমল্লিকা, আকাশে উড়ছে একা শঙ্খচিল, ফুল থেকে ফুলে ঘুরে বেড়া্চ্ছে হলুদ প্রজাপতি, তা দেখেও মনটা ভালো হয়ে যেতে পারে।

কোনো এক সন্ধ্যায়

 কোনো এক অন্ধকারের সন্ধ্যায়  ছুটে চলেছিলাম এই নগরীর পথ ছেড়ে এক অনির্দিষ্টের পথে।অতীত আর অনাগত ভবিষ্যত কেমন যেন ডেকে চলেছিল আমাকে। আমি ছিলাম ঘর আর পথের মাঝে ভাসমান প্রবাহে। ফিরে গিয়েছিলাম আমার সুবর্ন গ্রামে,যমুনার তীরে আমার  কৈশরে। যেখানে নস্টালজিক  থমকে দাড়িয়ে আছে । যেখানে দীর্ঘশ্বাস ঝরে পড়ে নদীর মোহনায়। 

সব পথ শেষ হলো

অনেক সময় অনেক সুন্দর সু্দর গানের কথা বা লাইন মনে করতে পারিনা। এই যেমন এই গানটি।
'সব পথ শেষ হলো, আর বাকি নাই পথ চলিতে,
তোমার আঙ্গিনাটুকু পার হতে থেমে গেছি 
কতোবার চলিতে চলিতে.......'

এই গানের কথাগুলো ভুলে যাওয়াটাই এখন স্বাভাবিক। কারণ আমার আর পথ চলার দরকার নেই।কারো আঙ্গিনা বারে বারে পার হবারও প্রয়োজন নেই। হাজার বছর ধরে পথ হেটে শেষ পর্য্ন্ত  আমি একজনেরই আঙ্গিনায় এসে থেমে গেছি।এবং এখানেই থীতু হয়েছি।

জীবন চলছে

আমি খুবই সাধারণ একজন মানুষ । এখনো পাটিতে বসে ভাত খাওয়া আমার পছন্দ ।এখনো মায়ের হাতে তাল পাাতার পাখার বাতাস গায়ে লাগাতে ইচছা করে। কবিতার খাতায় হিবিজিবি লিখে সময় কাটাতে ভালোবাসি। এখনো স্বপ্ন দেখি । আবার যাপিত জীবনে অনেক স্বপ্নই ভেঙ্গে যায়। তারপরও আবারো স্বপ্ন দেখি। এইভাবেই জীবন চলছে।কখনো অনাড়ম্বরে,কখনো দহনে, কখনো বা আনন্দে !

বুধবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

অলকানন্দায়

আমাদেরর ভালোবাসার প্রথম লগ্ন লেগেছিলো অলকানন্দায়
তারপর হলুদের রঙ্-এ রঙ্গিন হয়েছিলো তার সাদা শাড়ি
তারপর অরণ্যের দুয়ার খুলে যায়,
তারপর বন উপবন নমিত হয় সাগরর দিকে।
ঝিরঝির ধারায় ভিজে অসভ্য হয়ে যায় তার সকল 'বাস
চন্দনের গন্ধে কামাতুর হয়ে ওঠে যতো বন হরিণী
পাখী,সর্প,সরিসৃপ,পশু,পঙ্গপাল শৃঙ্গারে জন্য আকুল হয়
বৃক্ষ,লতাগূল্ম,বনরাজিতে লাগে হাওয়া,
মেঘ গুরুগম্ভিরে শীৎকার ধ্বনি বাজতে থাকে                                                                                                                                                                                                                                        আকাশ ভেঙ্গে অঝোর ধারায় বৃষ্টি নামে
 তার নির্বাস সফেদ শরীর স্নাত হতৃে থাকে
 তখন অলকানন্দা ঝরে পড়ে ঢেকে দেয় সকল নগ্নতা।




মঙ্গলবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

তুমি অমরাবতী

আমি বাল্মিকী নই আমি বিশ্বামিত্রও নই তারপরেও তুমি হয়েছো আমার মেনকা,
এ কোন্ অপ্সরী তুমি- তুমি আমার তপস্যা ভেঙ্গে দিলে ! তোমাকে কি দেখেছিলাম পুষ্করতীর্থে স্নানরত ?
তুমি কি দশ বছর ধরে আমার মগ্ন চৈতন্যে সহবাসে ছিলে ! আমিতো সম্ভোগ চাইনি- চেয়েছি হেম,চেয়েছি অমরত্ব !
তোমাকে বিরহিনী করে দক্ষিন থেকে চলে যাই উত্তরে, হিমাচলে কৌশিকী নদীর তীরে- 
এ কোন্ বিষন্নতা আমার ! কার জন্য তপস্যাা আমার,আমিতো মহর্ষি হতে চাইনা.
কোন্ দেবরাজ আবার তোমাকে পাঠালো রম্ভা রূপে- তুমি এসে এবারও আমার ধ্যান ভেঙ্গে দিলেে !
তুমি ইন্দ্রিয়েও আসলে না,রতিক্রিয়াতে আসলেনা- কার শাপে পাষাণি হলে ! হয়ে গেলে তুমি অমরাবতী।



সোমবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

রূপান্তরের কবিতা


( আনুমানিক খ্রিস্ট পূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীতে গ্রিসের লেসবস দ্বীপে জন্মগ্রহণ করেছিলেন স্যাফো। এই মহিলা কবির লেখার প্রতিটি পরতে পরতে নারী শরীরের বন্দনা ছিলো।শরীর-শরীর সম্পর্ক থেকে উত্তীর্ণতার একটা আকুতি ছিলো, স্বপ্নদর্শী বলে একটু বাড়িয়ে নিতো কল্পনাটা -- তাঁরা প্রেমে কাতরাতো শরীরে শরীরে। যে আকুতি,যে স্বপ্নসম্ভাবনা উথলে ওঠে সবার মধ্যে। স্যাফো মনে করতেন-পুরুষের জয়াকাঙ্খা, পুরুষের আগ্রাসী মনোভাব, পুরুষের যুদ্ধ সম্ভাবনা হিংস্রের হয়, সেই পুরুষত্বকেও সে নাকচ করে। স্যাফো'র ভাবনা,রমণী কর্তৃক রমণ ও শরীরের যৌনচিহ্ন পুরুষের মতোই আনন্দময় ।)
যে চুম্বন নয় শুধু
ঠোঁটে ঠোঁট মেশা-
যে আশ্লেষ নয় শুধু
স্তনস্পর্শে স্তনের আকুল ফুটে ওঠা-
যে সঙ্গম নয় শুধু
যোনিতে যোনিতে ডুবে যাওয়া-
যে শীৎকার নয় শুধু
শৃঙ্গজয় সেরে নিচে নামা-
অথচ এসবও থাকে।
এসবের ছলে
বিশ্বাস গচ্ছিত থাকে,
ঐ ঠোঁটে
ঐ যোনিমূলে
স্তনপুষ্পে,
নিহিত শীৎকারে।।
( প্রায় দেড় হাজার বছর আগের স্যাফো'র একটি কবিতা থেকে অনুদিত )

রবিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

অসংখ্য শব

অসংখ লাশ আর লাশের গন্ধের মধ্যেই জন্ম আমার 
এই জন্মের অথবা আগমনের উপরে কোন নিয়ন্ত্রন ছিল না আমার, 
প্রজন্মান্তরের এক শিকল আর আমারই ইতিহাসের শিকার আমি, 
পূর্বপুরুষ দের জীবন থেকে বিরতিহীন। 
আমার পরের বা তার ও পরের প্রজন্মের শিশুরা, ওদেরও মুক্তি নেই। 
অল্পকিছুদিন পরেই, ঠিক আমার মতই তাদেরকে বুঝতে হবে, ঠিক আমি যেমন উদগ্রীব হয়ে বুঝে নিতে বাধ্য হয়েছিলাম, 
শব, অসংখ্য শব কাঁধে নিয়ে জন্ম তাদের।

( একটি প্যালেসটাইনের কবিতার ভাবানুবাদ )

কেউ অপেক্ষায় নেই

 কবি হতে চেয়েছি রাত্রিদিন। দুহাতে পায়রা উড়িয়েছি। অকাতরে প্রেম নিয়েছি । বড়ো করে চুল রেখেছি। আতেল মনে করেছি নিজকে। লেখার টেবিলে  কেটেছে সারাবেলা, চেতনায় দিয়েছি শান। রাজকুমারের মতো হেঁটে গেছি সহস্র দৃষ্টির সামনে দিয়ে। অপাপবিদ্ধতা নয়,একধরণের ভান ছিল,কারোর দিকে ফিরে না তাকানো। আজ দূর,বহুদূর হেঁটে এসে দেখি কেউ আমাকে অনুসরণ করেনি। দেখি শূণ্যতা চারদিক,দেখি কেউ আমার জন্য অপেক্ষায় নেই ।  



আমাদের 'উত্তরদা'

এ, টি, এম হাই নামে চিনতো না কেউ তাকে । চিনতো উত্তরদা নামে। চোখের দেখা দিতো না সে কাউকে। এই অদৃশ্য মানুষটিই ছিলো চিত্রালীর পাঠকদের আত্মার আত্মীয় । চিত্রালীতে -'আপনাদের চিঠি পেলাম' নামে একটি বিভাগ ছিলো। পাঠকরা যে কোন বিষয় নিয়ে লিখতে পারতো সেখানে, আর এগুলোর উত্তর দিতেন একজনই-,নাম তার "উত্তরদা"।আমি 'চিপাচস' করতাম।সেই সুবাদে প্রায়ই চিত্রালী অফিসে যাওয়া হতো আমার।কিন্তু উত্তরদা"র দেখা পেতাম না কখনো । তাকে প্রথম দেখেছিলাম -ধানমন্ডিতে সোভিয়েত কালচারাল সেন্টারে।সক্রেটিসের মতো চেহারার এক মানুষ ! সুন্দর ছিল তার কথাবার্তা। দরদ ছিল তার আচড়নে। তারপর তার সংস্পর্শে আসা। তারই ঐকান্তিক অনুপ্রেরণায় গড়ে উঠছিলো আমাদের "চিপাচস"।তিনি ছিলেন আমাদের গুরু। আজ তার ১৫তম মৃত্যু বা্র্ষিকী।আজকের এই দিনে আমাদের এই গুরুকে জানাই হাজার সালাম ও শ্রদ্ধাঞ্জলি।

শনিবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

আগুনের পরশমণি

আজ এই গানটি খুব করে কানে বাজছে। শুনতেও ইচ্ছা করছে। কেউ যদি খালি গলায় দরদ দিয়ে গেয়ে শোনাতো গানটা -
'আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে।
এ জীবন পুণ্য কর দহন-দানে॥
আমার এই দেহখানি তুলে ধরো,
তোমার ওই দেবালয়ের প্রদীপ করো--'

ময়ুরাক্ষী, তুমি

তোমার কি নেই কি আছে
 তোমার অনেক কিছুই আছে
যুবুতী যুবুতী যৌবন আছে
 পুষ্পিত পুষ্পিত ভালোবাসা আছে

কাবিননামা চাইলে নাও
ময়ুরাক্ষী, তুমি আমারই হয়ে যাও।


হারমনিকা বাজাও

আজকে সবকটা জানালা খুলে দেওয়ার দিন। আজ শহীদেরা আসবে । ঘর থেকে বেড়িয়ে পড়ো।হারমনিকা বাজাও।জয় বাংলা বলে আগে বাড়ো।


আমার সব স্বপ্ন

যেকোন দূরত্ব থেকে
 আমার সব স্বপ্ন তোমা কেইঅনুসরণ করে

আমিও তোমার চোখে দেখি
আমার দিকেই কেউ চোখ পেতে আছে।



সূর্য্যাস্তের সময়

এখন সূর্য্যাস্তের সময়।আর একটি দিন মহাকালের গর্ভে বিলীন হয়ে গেল।মানুষ যতোটুকু না পায়,তার চেয়ে বেশী হারায়।সম্মূখে আধা্ঁরের সময়।আকাশে আজ চাঁদ থাকবে না। তারারা হয়তো জ্বলবে। আকাশ কখনো মহাকালে হারিয়ে যায়না।রাতও একাকী একসময় শেষ হয়ে যাবে।মানুষ তখন আর একটা নতুন সকালের জন্য অপেক্ষা করে।

শুক্রবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

মা'র দেওয়া কা্ঁথা

কাল রাত দশটার দিক শরীরটা হঠাৎ খারাপ হয়ে যায়। শ্বাস কষ্ট হচ্ছিলো খুব। শুয়ে পড়ি বিছানায়। শরীরটা কে্ঁপে কে্ঁপে উঠছিলো।তাপমাত্রাও বেড়ে ষায়। হ্যাপিকে বললাম,কা্ঁথাটা শরীরে জড়িয়ে দিতে।এই কা্ঁথাটি অনেক স্মৃতিময়। আমার মা আমাকে দিয়েছিলো । কা্ঁথার দু'দিকে মা'রই ব্যবহার করা পরনের দু'টি কাপড়। হালকা নক্সি সেলাই করা।হ্যাপি জড়িয়ে দেয় কা্ঁথাটি।ঔষধও খাইয়ে দেয়। হ্যাপির মুখটা মলিন দেখলাম।কা্ঁথা আমার গায়ে জড়ানো, আস্তে আস্তে শরীরটা স্নিগ্ধ সতেজ হয়ে উঠতে থাকে।ভালো লাগছিলো খুব এবংএক পর্যায়ে ঘুমিয়ে যাই।

বৃহস্পতিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

খালেদা, তোমাকে স্বাগতম

খালেদা, রূপকল্প (Digital) জগতে তোমাকে স্বাগতম।এ কি করলে তুমি ! এ কোন্ অন্তর্জালে (Internet) বে্ঁধে ফেললে তোমাকে। এটি অসম্ভব এক নেশার ভূবন ! এখানে মানুষ মায়াবী আবেশে বু্ঁদ হয়ে থাকে সকাল সন্ধ্যা রাত্রিরে।যাক ভালোই করেছো।একে অপরের বন্ধু কিংবা ফলোয়ার হওয়ার সুযোগ হলো। শোনো খালেদা, এখানে বন্ধুদের সাথে আবার তুচ্ছ তাচ্ছিলো বা ধমকা ধামকি করো না। ওরা কিন্তু সোজা তোমাকে unfriend কিংবা unlike করে  দেবে। এই post-এ তোমার একটি রূপময়ী ছবি ব্যবহার করলাম। উদ্দেশ্য বেশী করে like পাবো । এটাও একটা ইন্টারনেট পলিটিকস্। এই ট্রিকস্ গুলো তুমিও আস্তে আস্তে বুঝতে পারবে।

চার পর্যায়ে জীবন

 চার পর্যায় মানুষের জীবন । ১.জন্ম থেকে মৃত্য সন্ধিক্ষণ পূর্ব : মানুষের এই সময়টুকু হচ্ছে মায়াময়।পৃথিবীর সব রূপ রস সুধা সে ভোগ করে। ২. মৃত্যু সন্ধিক্ষণ: এ সময়টুকুতে মানুষ জীবনেও থাকেনা,মরনেও থাকেনা। সে কোনো কথা বলতে পারেনা। তার কাছে যারা বসে থাকে,তাদেরকেই কেবল সে দেখতে পায়। ৩. মৃত শরীর: আত্মাহীন দেহ পৃথিবীতে যতোক্ষণ থাকে। চির নিদ্রার মতো এ জীবন। যে নিদ্রা কোনো দিন ভাঙ্গবে না। কবর দেওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত প্রিয়জনেরা তার নিথর দেহ দেখতে পারে। ৪.কবর জীবন: স্পন্দনহীন মৃত দেহটি মাটির নীচে কবর দেয়া হয়। ধরায় তার আর কোনো অস্তিত্ত থাকেনা। তাকে আর কেউ দেখতে পায়না। কবরের মাটির সাথে তার দেহ মিশে যায় ।

কুসুমে কুসুমে চরণচিহ্ন দিয়ে যাও

ঘুম ভেঙ্গেই দেখছি সোনালি রোদের সকাল। চোখ মেলেই স্মরণেে আনছি প্রিয় মানুষগুলোর মুখচ্ছবি।বিহবল হয়ে ভাবছি জীবনের সুন্দর মুহূর্তগুলির কথা। যাদের ভালোবাসা আমার চারপাশ ঘিরে রয়েছে।.মেঘগুলো আজ ধূসর ডানা মেলে উড়ে যাচ্ছে। স্বপ্নের পাখিরা নীল প্রতীক্ষায়। ক্লান্ত দুপুর আজ থমকে দাঁড়াবে না বাড়ির উঠোনে। এই স্নিগ্ধ প্রভাতে তুমি এসে 'কুসুমে কুসুমে চরণচিহ্ন দিয়ে যাও'।