বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

ছত্রিশ চৌরঙ্গী লেন

প্রতিদিন প্রাতঃ ভ্রমনে বের হই। কোনো কোনো দিন স্ত্রী সাথে থাকে, কোনো কোনো দিন থাকে না। কোনো দিন ৭ নং সেক্টর পার্কেে যাই আবার কোনো দিন ১৩ নং সেক্টরের লেকের ধারে। ১৩ নং সেক্টরের লেকের ধারে ওয়াকওয়ে দিয়ে হাটার সময় প্রায় দিনই সত্তোরোর্ধ একজন পৌঢ়া মহিলাকে হাটতে দেখতাম।প্রতিদিন একাই সে হাটতো।কোনোদিন তার সাথে কাউকে হাটতে দেখিনি।না তার স্বামী,,না তার কোনো ছেলেমেয়ে,না তার কোনো নাতি পুতি।আমরা বলাবলি করতাম,হয়তো এই বৃদ্ধার বাসায় কেউ নেই।স্বামী নেই,ছেলেমেয়েরা সবাই দূর প্রবাসে থাকে।একদিন আমার স্ত্রীকে কৌতুক করে বলেছিলাম- তুমি যদি আমার বউ না হয়ে বান্ধবী কিংবা পরস্ত্রী হতে তাহলে ঐ বৃদ্ধার সাথে খাতির করা যেতো।
বউ:  কেন ?
আমি: ৩৬ চৌরঙ্গী লেন
বউ: সেটি আবার কি ?
বুঝতে পারলাম,বউ অপর্না সেনের এই সিনেমাটি দেখেনি। তাকে শুধু এইটুকু বললাম- পৌঢ়ার বাসায় কেউ থাকে না। ডেটিংএর সুবিধা হতো।

গত প্রায় তিন মাস এই পৌঢ়া বৃদ্ধাকে হাটতে দেখিনি।কাল বিকালে অলসভাবে লেকের ধারে একাকী হাটছিলাম। দেখি দুজন মাঝবয়সী মহিলা,ভৃত্যা হবে হয়তো, হুইল চেয়ারে করে এক পৌঢ়া মহিলাকে লেকের  ওয়াকওয়ে দিয়ে ঘুড়ে ঘুড়ে সব দেখাচ্ছে। পৌঢ়াকে চিনতে অসুবিধা হলো না, সেই বৃদ্ধা, একদম শীর্নকায় ও চোখ দুটো কোটরে চলে গেছে।জেনেছিলাম কর্কট রোগে সে আক্রান্ত। বৃদ্ধা মায়া করে দেখছে লেকের গাছগাছালি,পাখি,জল। আমাকেও দেখলো একবার। সেই আগের মতোই আজকেও কোনো কথা হলো না তার সাথে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন