রবিবার, ১ জানুয়ারী, ২০১৭

টক অফ দ্যা টাউন

অনেকদিন আগের বাবলির সাথে এক বিকেলের কথা।পাবলিক লাইব্রেরীতে বসে বাবলীর জন্য অপেক্ষা করছিলাম।পাতা উলটাচ্ছিলাম 'খেলারাম খেলে যা'-র।জাহেদা আমার মনকে স্থির করতে পারেনি।ওকে পাশে রেখে 'বেগম শেফালী মির্জা'।ভালোই লাগছিলো মির্জা বউকে।বাবলী আসলো এক ঘন্টা লেটে।সে এসেই বলে- বাসায় দশটা মিথ্যা কথা বলতেও তো দশ দু'গনা বিশ মিনিট লেগে যায়।
বললাম, কোথায় যাবে ? বাবলী বলে- কোথায় আবার যাবো ? বাইরে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি।
বললাম- ঠো্ঁটের লিপস্টিক এবড়ো থেবড়ো কেন ? টান টান জবাব বাবলীর- সৌমেন ঠিকমতো চুমু খেতে পারেনি।
বললাম- সৌমেন কে ? বাবলীর জবাব- কাল রাতের স্বপ্নের। আমি ওকে চিনিনা।
বাইরে তখনো বৃষ্টি।শাহবাগ বৃষ্টিতে ভিজছে। জলে ভিজছে রিকশাওলা।জলে ভিজছে কাক।জলের ছিটা লাগছে সি্ঁড়িতে বসা এক জোড়া তরুণ তরুণীর। ওরা যুগল কিনা জানিনা।
বাবলীকে বললাম- চলো রিকসায় যেয়ে বসি।হূট তোলা থাকলে তোমাকে নিবিড় ভাবে কাছে পাওয়া যাবে।এবারও বাবলীর উত্তর- না।
বললাম- আসলে তো দেরীতে, এতো চটাং চটাং করছো কেন ? বাবলী একটু রেগে বলে- এ জন্যে অসুল করতে চাও ? কোথায় যাবে ? চলো। বললাম- 'টক অফ দ্যা টাউন'।
'টক অফ দ্যা টাউন' মিরপুর রোডে ধানমন্ডি পা্ঁচ নম্বর সড়কের দোতালাৃতে অবস্থিত একটি ছোট্ট রেস্টুরেন্ট।আমি আর বাবলি সেই রেস্টুরেন্টে চলে যাই। বসে আছি দু'জন পাশাপাশি।শহরের কোনো কথা নেই।বাইরে তখন বৃষ্টি নেই। চীনা মাটির প্লেটে চামচের টুংটাং শব্দ।বাবলীর কাঁচের চুড়ির রিনঝিন শব্দ।বাইরে গাড়ীর হর্ণ।ভালোবাসায় কখন শব্দ হয় ? কখন প্রাণের বীণা বাজে ? আমরা কান পেতেছিলাম বুকের শব্দ শোনার। শুনেছিলামও সেদিন 'টক অফ দ্যা টাউন'এ সারা বিকেল।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন