সোমবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

ওপারে কতো সুখ

 ছোট্ট একটি গ্রাম। নাম নীলকন্ঠহার পাড়া। গ্রামটির ধার দিয়ে বয়ে গিয়েছে একটি নদী, নাম শঙ্খনদী। তবে আমি বলছি নীলকন্ঠহার পাড়ার কথা। এই গ্রামে অনেক দিন আগে এক দম্পতি বাস করতেন নদীর ধারে ঘর বানিয়ে। স্বামী কাজে যেতেন কিন্তু স্ত্রী সারাক্ষণ ঘরে মন মরা হয়ে বসে থাকতেন। ঘরে স্বামী ফিরলে বলতেন, “নদীর ওপার টা কত সুন্দর তুমি ওপারে কেন ঘর বানালে না। ওপারের রং কি সুন্দর সোনার মতন বালি , নীল রঙ্গের পাহাড় , আর সবুজ রঙ্গের গাছ পালা। মেঘ ঢাকা পাহাড় আর তাতে বিদ্যুতের ঝলকানি সব মিলিয়ে ছবির মতন লাগে। এপারটা দেখো কিছুই আকর্ষণ নেই যেন খাঁ খাঁ লাগে। আমার ভালো লাগে না। তুমি ওপারে ঘর করো। আমি ওপারে থাকবো। ”

স্বামী আশ্চর্য হয়ে বলতেন ঠিক আছে একদিন ওপারে নিয়ে যাবো তোমাকে। তারপর বলবে কোথায় ঘর করলে ভালো হবে। এক ছুটির দিনে স্বামী স্ত্রী তে ওপারে গেলেন। স্ত্রী ওখানে পৌঁছে বললেন এ কোথায় নিয়ে এলে তুমি ? এতো আমার সেই নদীর ওপার নয়। এখানে পাহাড় গর্তে ভরা। মরা গাছের ডালে ন্যাড়া পাহাড় অতি কদাকার লাগছে। এটা সে জায়গা নয় ।
স্বামী বোঝান স্ত্রীকে, তুমি ভুল করছো। এটাই সেই জায়গা, যা তুমি ওপার হতে দেখতে। এখন দেখো আমাদের ওপার কেমন দেখাচ্ছে ? কি সুন্দর দেখেছো ! সবুজ গাছ পালা, ধানের ক্ষেত, সরু বাঁকা নদী বয়ে গিয়েছে। সব মিলিয়ে চিত্রকরের হাতে তূলির টানে আঁকা চিত্রপট। দেখো আমি কতো সুন্দর জায়গায় তোমাকে রেখেছি অথচ তুমি আমার তৈরি ঘরকে হতাদর করেছো। এখন বলো কোথায় তুমি থাকবে? এখানে না ওখানে ? তুমিতো সৃষ্টিকর্তার সৃষ্ট দুটো চিত্রপটই দেখলে !

ঈশ্বর আমাদের দুটি জিনিষ দিয়েছেন, তৃষ্ণা ও তৃপ্তি।  তুমি তৃষ্ণার বশবর্তী হয়ে ঈশ্বরের সৃষ্টিকে তুলনা করে মনে তৃপ্তি পাচ্ছিলেনা। তাই অতৃপ্ত তোমার আকাঙ্ক্ষা। যা আছে তাতে তুমি তৃপ্ত হলে তোমার আকাঙ্ক্ষা হতোনা, কিন্তু অতৃপ্ত হলে আকাঙ্ক্ষা হবে। তাই আকাঙ্ক্ষাকে সীমিত রাখো। স্বামীর কথায় স্ত্রী হতবাক। স্ত্রী তার ভুল বুঝতে পারেন।

-------------------------------------------------------------------
ঋণ :  একটি বিদেশী  ই -ম্যাগাজিন থেকে নেয়া থিম্ অবলম্বনে।

K.T
24/8/2017

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন