রফিক আজাদের কবিতার পংতির মতো- মাধবী এসেই বলে যাই।আমি বলি কোথায় যাবে ? সে বলে,'কোথায় নিয়ে যাবে ?' আজ আমরা বংশী নদীর পারে যাবো।ওখানে নদীর জল দেখবো,নৌকা দেখবো।গাছের ছায়ায় বসে থাকবো।মাধবী বলে- 'এই কাঠপোড়া রোদ্রের দুপুরে যাবে বংশী নদীর পারে ! আমার খিদে লেগেছে।আগে খাওয়াও, তারপর যাবো।' আমরা নীলক্ষেতের ভাই ভাই হোটেলে কাচকি মাছ দিয়ে ভাত খেয়ে নেই।তারপর চাঁন খাঁর পুল থেকে লোকাল বাসে উঠে সোজা চলে আসি সাভার বাজারে ।
বাস স্টান্ডের অদূরে দেখি গাঁধা টানা একটি ছোট টমটম দাড়িয়ে আছে।কোচোয়ানকে বলি, তোমার টমটম কি যাবে ?
কোচোয়ান: কোথায় যাবেন স্যার ?
আমি: রাজা হরিশচন্দ্রের বাড়ী।
কোচোয়ান: আমি চিনিনা।
আমি: ( মাধবীকে দেখিয়ে ) ওকে চেনো ?
কোচোয়ান: না
আমি: উনি হচ্ছে রাজা হরিশচন্দ্রের বড়ো মেয়ে। নাম: রাজকুমারী অনুদা ।
মাধবী: তুুমি আমাদের বংশী নদীর তীরে নিয়ে চলো।
কোচোয়ান: চলেন।
টমটম চলছে।মনে হচ্ছে এ যেন সাম্ভার নগরী। বারশত বছর আগে লাল পোড়ামাটির পথ ধরে আমরা চলছি বংশী নদীর তীরে।টমটমের মুখোমুখি আমি আর মাধবী বসে আছি।মাধবীকে রাজকুমারী অনুদার মতোই লাগছিলো।চুল হাওয়ায় উড়ছে।রোদ্র এসে পড়েছে ওর চোখে মুখে।ওড়না গলা থেকে দুই দিক থেকে বুুকের উপর দিয়ে সাপের মতো নীচে নেমে পড়েছে।ওকে খুব রোমান্টিক লাগছে।
আমাদের টমটম এসে থামে বংশী নদীর তীরে।কোচোয়ানকে বললাম- তুমি ঐ বটবৃক্ষ তলায় যেয়ে অপেক্ষা করো।আমরা ফিরবো দুই ঘন্টা পর।
কোচোয়ান: স্যার, হরিশচন্দ্রের বাড়ী যাইবেন না।
আমি: যাবো।বংশী নদীর হাওয়া খেয়ে আসি, তারপর যাবো।
কোচোয়ান: হুজুর আপনার পরিচয়টা একটু দিবেন।
আমি : আমার নাম গোপীনাথ।আমি ময়নামতির মহারানীর পুত্র। রাজা হরিশচন্দ্রের হবু জামাতা।
কোচোয়ান: জ্বী,আচ্ছা।
তখন বিকেলের রোদ।বংশী নদীর কূল ধরে আমরা হেটে হেটে চলে যাই আরো সামনের দিকে।নদীর তীরে একটি জারুল গাছের নীচে দুজন ঘাসের উপর বসে পড়ি। হেমন্তের বংশী নদী।নদীর জল অর্ধেক হয়ে আছে।দু'একটা নৌকা এলোমলো ভাবে চলছে।একটু পর পর বংশী নদীর শীতল হাওয়া আমাদের শরীরে এসে লাগছিলো। চারদিকে জন মানবহীন।কেমন সুনসান নিরবতা ।
মাধবী: আমার ভয় লাগছে।
আমি: তাহলে চলে যাবে ?
মাধবী: না।যাবো না।
আমি: কেন যাবে না ?
মাধবী: ভালো লাগছে।
নদীর কূল থেকে একটু দূরে একটি পরিত্যক্ত নাট মন্দির দেখতে পাই।আমরা আস্তে আস্তে ঐ নাট মন্দিরের দিকে এগিয়ে যাই।দু'জন সন্তর্পণে মন্দিরের ভিতরে ঢুকে পড়ি।ভিতরে ঢুকে মন্দির দেখে বিস্মিত হই।কি অদ্ভূত কারুকার্যখচিত মন্দির। দেখি ভিতরে রাজা হরিশচন্দ্র ও রানী কর্ণবতী প্রার্থনায় রত।পাশে একজন পুরোহিত জপমালা জপছে।একটু পর রাজা রানীর প্রার্থনা শেষ হয়।পিছনে মুখ ফিরিয়েই তারা আমাদের দেখতেে পায়।
রানী: মা অনুদা তুমি এসেছো।
রাজা: বাবা গোপীনাথ তুমি এসেছো।
রাজা হরিশচন্দ্র পুরোহিতকে কহিলেন- এদের ধর্ম ও ভগবান মতে বিবাহের ব্যবস্থা করো।পুরোহিত তাই করিলেন।
মন্দিরের সাথেই স্বর্ণকূটিেরের মতো একটি ছোট কক্ষে আমাদের প্রবেশ করানো হলো। রানী মা কহিলেন- তোমরা এখানে বিশ্রাম নাও।এই বলে রানী মা কক্ষের দরজা বাহির থেকে বন্ধ করে চলে গেলেন।আমরা দুজন পালঙ্কের উপর যেয়ে বসলাম।
আমি : অনুদা,প্রিয়সী আমার- এই ক্ষণ কেমন লাগছে ?
অনুদা: জ্বী জাহাপনা, এই ক্ষণটির জন্য এতোকাল অপেক্ষায় ছিলাম।
আমি: এসো আরো কাছে এসো।
অনুদা: জ্বী, আসছি।
আমি: এই ক্ষণ শুধু তোমার আমার !
তখন সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে।চোখ মেলে দেখি চারদিকে কেমন যেনো অন্ধকার।সবকিছুই অপরিচীত লাগছে। চেয়ে দেখি- আমি আর মাধবী জীর্ণ এই নাট মন্দিরের মেঝেতে পাশাপাশি শুয়ে আছি।বাইরে থেকে কোচোয়ান ব্যাটা ডাকছে- 'হুজুর ! হূজুর ! গোপীনাথ স্যার ! আর কতোক্ষণ দেরী হইবে ? যাইবেন না !
বাস স্টান্ডের অদূরে দেখি গাঁধা টানা একটি ছোট টমটম দাড়িয়ে আছে।কোচোয়ানকে বলি, তোমার টমটম কি যাবে ?
কোচোয়ান: কোথায় যাবেন স্যার ?
আমি: রাজা হরিশচন্দ্রের বাড়ী।
কোচোয়ান: আমি চিনিনা।
আমি: ( মাধবীকে দেখিয়ে ) ওকে চেনো ?
কোচোয়ান: না
আমি: উনি হচ্ছে রাজা হরিশচন্দ্রের বড়ো মেয়ে। নাম: রাজকুমারী অনুদা ।
মাধবী: তুুমি আমাদের বংশী নদীর তীরে নিয়ে চলো।
কোচোয়ান: চলেন।
টমটম চলছে।মনে হচ্ছে এ যেন সাম্ভার নগরী। বারশত বছর আগে লাল পোড়ামাটির পথ ধরে আমরা চলছি বংশী নদীর তীরে।টমটমের মুখোমুখি আমি আর মাধবী বসে আছি।মাধবীকে রাজকুমারী অনুদার মতোই লাগছিলো।চুল হাওয়ায় উড়ছে।রোদ্র এসে পড়েছে ওর চোখে মুখে।ওড়না গলা থেকে দুই দিক থেকে বুুকের উপর দিয়ে সাপের মতো নীচে নেমে পড়েছে।ওকে খুব রোমান্টিক লাগছে।
আমাদের টমটম এসে থামে বংশী নদীর তীরে।কোচোয়ানকে বললাম- তুমি ঐ বটবৃক্ষ তলায় যেয়ে অপেক্ষা করো।আমরা ফিরবো দুই ঘন্টা পর।
কোচোয়ান: স্যার, হরিশচন্দ্রের বাড়ী যাইবেন না।
আমি: যাবো।বংশী নদীর হাওয়া খেয়ে আসি, তারপর যাবো।
কোচোয়ান: হুজুর আপনার পরিচয়টা একটু দিবেন।
আমি : আমার নাম গোপীনাথ।আমি ময়নামতির মহারানীর পুত্র। রাজা হরিশচন্দ্রের হবু জামাতা।
কোচোয়ান: জ্বী,আচ্ছা।
তখন বিকেলের রোদ।বংশী নদীর কূল ধরে আমরা হেটে হেটে চলে যাই আরো সামনের দিকে।নদীর তীরে একটি জারুল গাছের নীচে দুজন ঘাসের উপর বসে পড়ি। হেমন্তের বংশী নদী।নদীর জল অর্ধেক হয়ে আছে।দু'একটা নৌকা এলোমলো ভাবে চলছে।একটু পর পর বংশী নদীর শীতল হাওয়া আমাদের শরীরে এসে লাগছিলো। চারদিকে জন মানবহীন।কেমন সুনসান নিরবতা ।
মাধবী: আমার ভয় লাগছে।
আমি: তাহলে চলে যাবে ?
মাধবী: না।যাবো না।
আমি: কেন যাবে না ?
মাধবী: ভালো লাগছে।
নদীর কূল থেকে একটু দূরে একটি পরিত্যক্ত নাট মন্দির দেখতে পাই।আমরা আস্তে আস্তে ঐ নাট মন্দিরের দিকে এগিয়ে যাই।দু'জন সন্তর্পণে মন্দিরের ভিতরে ঢুকে পড়ি।ভিতরে ঢুকে মন্দির দেখে বিস্মিত হই।কি অদ্ভূত কারুকার্যখচিত মন্দির। দেখি ভিতরে রাজা হরিশচন্দ্র ও রানী কর্ণবতী প্রার্থনায় রত।পাশে একজন পুরোহিত জপমালা জপছে।একটু পর রাজা রানীর প্রার্থনা শেষ হয়।পিছনে মুখ ফিরিয়েই তারা আমাদের দেখতেে পায়।
রানী: মা অনুদা তুমি এসেছো।
রাজা: বাবা গোপীনাথ তুমি এসেছো।
রাজা হরিশচন্দ্র পুরোহিতকে কহিলেন- এদের ধর্ম ও ভগবান মতে বিবাহের ব্যবস্থা করো।পুরোহিত তাই করিলেন।
মন্দিরের সাথেই স্বর্ণকূটিেরের মতো একটি ছোট কক্ষে আমাদের প্রবেশ করানো হলো। রানী মা কহিলেন- তোমরা এখানে বিশ্রাম নাও।এই বলে রানী মা কক্ষের দরজা বাহির থেকে বন্ধ করে চলে গেলেন।আমরা দুজন পালঙ্কের উপর যেয়ে বসলাম।
আমি : অনুদা,প্রিয়সী আমার- এই ক্ষণ কেমন লাগছে ?
অনুদা: জ্বী জাহাপনা, এই ক্ষণটির জন্য এতোকাল অপেক্ষায় ছিলাম।
আমি: এসো আরো কাছে এসো।
অনুদা: জ্বী, আসছি।
আমি: এই ক্ষণ শুধু তোমার আমার !
তখন সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে।চোখ মেলে দেখি চারদিকে কেমন যেনো অন্ধকার।সবকিছুই অপরিচীত লাগছে। চেয়ে দেখি- আমি আর মাধবী জীর্ণ এই নাট মন্দিরের মেঝেতে পাশাপাশি শুয়ে আছি।বাইরে থেকে কোচোয়ান ব্যাটা ডাকছে- 'হুজুর ! হূজুর ! গোপীনাথ স্যার ! আর কতোক্ষণ দেরী হইবে ? যাইবেন না !
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন