শুক্রবার, ৩ মার্চ, ২০১৭

অপর পৃষ্ঠায়

সব চিঠিই আগুন জ্বেলে আমি পুড়ে ফেলেছিলাম।দুই একটা কোথাও রয়ে গিয়েছিলো।তেমনই একটি চিঠি পেলাম আজ অনেক পুরোনো বুক শেলফের বইয়ের ফাঁক থেকে।চিঠির অনেক অক্ষর অনেক শব্দ অস্পষ্ট হয়ে গেছে।পড়া যায়না ঠিক মতো।তবুও যতোটুকু পাঠোদ্ধার করতে পেরেছি,তাই এখানে উল্লেখ করছি। আজ থেকে অনেক বৎসর আগে চিঠিটি লিখেছিলো খাগড়াছড়ি থেকে লাবন্য চাকমা।

প্রিয় অমিত,
আমাদের কলেজ গ্রীষ্মের ছুটি হয়ে গেছে।ঘর থেকে বেশী বের হতে পারিনা।বাড়ীর সবাই আমার এতো কাছে কাছে থাকে যে,আমি তোমাকে ঠিকমতো চিঠিও লিখতে পারিনা।তোমার কথা মনে পড়ে আমাকে কাঁদতে হয়,সে কান্নাগুলোও অনেক সময় গোপনে কাঁদি।সালেহ আহমেদ দাদা খবর পাঠিয়েছে,পোস্ট অফিসে নাকি তোমার বেশ কয়েকটি চিঠি এসে রয়েছে। ভাবছি দু'একদিনের ভিতর পোস্ট অফিসে যাবো।যেয়ে তোমার চিঠি গুলো নিয়ে আসবো এবং আমারগুলো পোস্ট করে আসবো।
তোমার সাথে মনে হয় এ জীবনে আর দেখা হবেনা।পাহাড় খুবই অস্থির হয়ে উঠেছে।প্রীতির লোকেরা আমাদের বাড়ী এসে ধমকি ধামকি দিচ্ছে।হয়তো সীমান্তের ওপারে চলে যেতে হতে পারে।ওখানে তো আরো গভীর অরণ্য।সেই অচেনা বন বাদার থেকে তোমাকে কি ভাবে চিঠি লিখবো ? তোমাকে চিঠি না লিখলে তুমিতো আমাকে ভুলে যাবে।তোমাকে কতোদিন বলেছিলাম,এই অভাগীকে এসে নিয়ে যাও।তুমি এলেনা।

তোমার জন্য আমাকে কাঁদতে হয়।সে কান্না মিশে যায় চেঙ্গী নদীর জলে।কতো হাহাকার আর দীর্ঘশ্বাস গোলাবাড়ীর এই উপত্যাকায় মিলিয়ে গেছে।সেই সব দেখেছে খাগড়াছড়ির আকাশ,আর এই নির্জন পাহাড়ি উপত্যাকার পাখীরা।এই দেশ,এই পাহাড়,এই অরণ্য........ ( অপর পৃষ্ঠায়).

অপর পৃষ্ঠায় যেয়ে দেখি সব লেখা অস্পষ্ট আর ঝাপসা হয়ে গেছে।পড়া সম্ভব হয়নি।একদম নীচে নামটা শুধু পড়া গেলো। ......,লাবণ্য।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন