বুধবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

যীশু কন্যা

সে ছিলো বাবার আদরের মেয়ে।বাবা ছিলো অশিক্ষিত এক গায়েন।বাবার মুখের গান শুনতে শুনতে সে বড়ো হয়।বাবার গাওয়া সব গান সে তার কণ্ঠে ধারণ করে।মেয়েটির বয়স যখন বারো,তখন ওর বাবা মারা যায়।এরপর এই বালিকাই গান গেয়ে মা'র সংসারের খরচ নির্বাহ করে।

তখন ১৯৭১ সাল।ময়মনসিংহ দূর্গাপুর অঞ্চলে সীমান্তবর্তী একটি পাহাড়ী গ্রাম।সেদিন সেই গ্রামে একটি নতুন গির্জা উদ্বোধন হবে।সেই অনুষ্ঠানে মেয়েটি গান গাবে।গান সে শুরুও করেছিলো।হঠাৎ পাকিস্তানী মিলেটারী সেখানে এসে উপস্হিত হয়।এবং অতর্কিত গুলি চালাতে থাকে।অনেক লোক মারা যায়।কিছু লোক এদিক সেদিক পালিয়েও যায়।মেয়েটি তার গান গাওয়া বন্ধ করেছিলো না। ভেবেছিলো তার গান শুনে মিলেটারীরা গুলি চালাবেনা। ওরা ওর গান শুনেওছিলো-,কিন্তু গণহত্যা বন্ধ করেনি।

 হত্যাযজ্ঞ সম্পন্ন করে পাকিস্তানী সৈ্ন্যরা সেখান থেকে চলে যায়।আশে পাশে থেকে পালানো মানুষগুলো ফিরে আসতে থাকে।গির্জা প্রাঙ্গনে অসংখ্য লাশ তারা পড়ে থাকতে দেখতে পায়।মেয়েটির মা মেয়ের খোঁজে গি্র্জার ভিতর প্রবেশ করে।সে দেখতে পায়,তার মেয়ে ধর্ষিত হয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় যীশু মূর্তির সামনে মেঝেতে মরে পড়ে আছে।মেয়েটির মায়ের আর্ত চিৎকারে সেদিন সেই পাহাড়ী গ্রামের আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠেছিলো।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন