বৃহস্পতিবার, ২৯ জুন, ২০১৭

বকুল তলায়

কিশোর বয়সে আমি একবার সরিষাবাড়ী থানার পিংনার চিতলি পাড়া নামে এক গ্রামে বেড়াতে গিয়েছিলাম । ঐ গ্রামেই দেখেছিলাম-শান বাঁধানো পুকুর । আমার মনে আছে সেদিন আকাশে উঠেছিলো চাঁদ।জ্যোৎস্নায় ডুবে যাচ্ছিলো বৃক্ষ লতা গুল্ম।ঝোঁপে ঝাঁরে জোনাকিরা সব জ্বলে উঠেছিলো। আমরা অনেক রাত পর্যন্ত ঘাটের বকুলতলায় বসে গল্প করেছিলাম। সেই রাত, সেই ঘাট, সেই জল, সেই বকুলের মৌ মৌ গন্ধ আজো আমাকে উতলা করে রাখে।

তারও অনেক পরে শিলাইদহ কুঠিবাড়ীতে এই রকমই শান বাঁধানো পুকুর দেখেছিলাম। আজ থেকে শতো বছর আগে কবিগুরু তার তরুণী বধূ মৃণালিনী দেবীকে নিয়ে এই পুকুর ঘাটে বকুলের তলায় বসে কতো গান গেয়েছিলো । কতো কবিতা লিখেছিলো । এতো বৎসর পরে আজো সেখানে চাঁদ ওঠে। এখনো সেই ঘাট আছে, এখনো দূরের পদ্মা থেকে বয়ে আসে শীতল হাওয়া। শুধু কবিগুরু নেই। মৃণালিনী দেবী নেই।

হঠাৎই পূর্ণিমা এলে ঘর হতে বেরিয়ে পড়তে মন চায়। শান বাঁধানো পুকুরপাড় আমাকে টানে। বকুল ফুল ঝরে পড়া দেখতে আমার মন চায়। আমার খুব শখ হয় আমরা দুজন এমনি কোনো চাঁদনী রাতে যেয়ে বসে থাকি কোনো বকুলের তলায়।
                                                                 



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন