বৃহস্পতিবার, ১৫ জুন, ২০১৭

বিদিশার অন্ধকার

কোনো এক শণিবারের বিকেলে চন্দ্রিমা উদ্যানের লেকের ধারে বসে বিদিশা আমার হাত ধরে বলেছিলো- 'আমি তোমাকে ভালোবাসি।' সেদিন সেই মনোরম বিকেলে বিদিশার কানের কাছে মুখ রেখে কানে কানে আমিও বলেছিলাম-
' তোমাকেও আমি ভালোবাসি।' আমাদের ভালোবাসার কথা শুনে উদ্যানের সকল ঘাস সেদিন সবুজ হয়ে উঠেছিলো। লেকের জল হয়ে উঠেছিলো চঞ্চল। শিরিষ আর ছাতিম গাছ থেকে ঝরা পাতাগুলো ঝরে পড়ছিলো আমাদের উপর।'

তারপর কতো বিকেল, কতো সন্ধ্যায় আমি আর বিদিশা কতো যে ভালোবাসা রচনা করেছি, সেকথা জানে চন্দ্রিমা উদ্যানের ঘাস আর লেকের জল। দিনগুলি আমার কাটছিলো ভালোই বিদিশার ভালোবাসা নিয়ে। হঠাৎ একদিন সব এলোমেলো হয়ে গেলো । এক ধূসর সন্ধ্যায় চন্দ্রিমার ঘাসে বসে বিদিশা আমাাকে বলেছিলো- ' তোমার সাথে আমার ঘর বাঁধা হবেনা।' সেদিন সেই সন্ধ্যায় আমি বিদিশার কাছে এর কোনো কারণ জানতে চাইনি। সোজা ঘাসের উপর দিয়ে হেটে হেটে রাজপথে এসে জনারণ্যে মিশে গিয়েছিলাম। পিছনে আর ফিরেও তাকাইনি ।

তারপর অনেক বছর চলে গেছে। একদিন বিকাল বেলা খুব মন খারাপ লাগছিলো। ভাবলাম- চন্দ্রিমা উদ্যান থেকে একটু বেড়িয়ে আসি। আমি বসেছিলাম যেয়ে সেইখানে, যেখানে বসে বিদিশার হাতে হাত রেখে বলেছিলাম- 'ভালোবাসি'। এতো বছর পরে আজ নিজেকে খুবই অপরাধি মনে হচ্ছিলো,আফসোস করছিলাম- কেনো সেদিন বিদিশাকে বলিনি- 'কি তোমার অসুবিধা ছিলো, কেনো তোমার বিয়ে করা সম্ভব নয়,?'

লেকের ধারে বসে থাকতে কেমন যেনো হাঁপিয়ে উঠছিলাম। উদ্যানের ঘাসগুলো সেদিনের মতো সবুজ ছিলোনা । লেকের জল কেমন অস্বচ্ছ, ঘোলাটে হয়ে আছে। শিরিষ ও ছাতিম গাছ থেকে মরা পাতাগুলো ঝরে পড়ছিলো। সারা উ্দ্যান জুড়ে কেমন আঁধার নেমে আসতে থাকে, কেমন যেনো বিদিশার মতো অন্ধকার !

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন