রবিবার, ২৩ জুলাই, ২০১৭

কঙ্কাবতী

অনেক বছর আগের কথা। কুস্টিয়ার জগতি স্টেশনে বসে আছি, আসবো রাজবাড়িতে। দেখি অদুরেই পুরোনো একটি কাঠের বেন্চিতে একটি সাঁওতাল পরিবার বসে আছে। তাদের সাথে সতেরো আঠারো বছরের একটি তরুণী। গায়ের রং ধুসর কালো। অপূর্ব দেহ বল্লরী তার ! গোপনে দেখছিলাম সেই মেয়েটিকে। সেদিন ওকে দেখে তারুন্যের উদ্দাম দোলায় দুলে উঠেছিলাম। মনে হয়েছিলো, আহা! যদি হতে পারতাম কোনো সাঁওতালী যুবক! ঠিক ঘটক পাঠিয়ে দিতাম ওদের বাড়িতে। ঐ মেয়ের নাম কি ছিলো, তা আমার জানা হয় নাই। হয়তো কঙ্কনা, কঙ্কাবতী, কৃষ্ণা, কৃষ্ণকলি এইরকম কোনো নাম হবে। হঠাৎ উল্টো দিক থেকে একটি ট্রেন আসে। সাঁওতাল পরিবারটি এবং ঐ মেয়েটিও সেই ট্রেনে উঠে চলে যায়। তারও অনেক পরে আমার প্রতিদিনের রোজ নামচায় লিখেছিলাম নীচের এই পংক্তিগুলো --
সাঁওতাল মেয়েটিকে দেখেছিলাম আমি
জগতি ইস্টিশানের প্লাটফরমে,
সারা পিঠ ঢেকেছিলো তার ঘন কালো চুলে
গলায় ছিলো চলনবিলের শুভ্র মুক্তার মালা
তারপর অনেকদিন সে আমার স্বপ্নে ছিলো--
তারপর অনেক হয়েছে ভ্রম
জগতি স্টেশন থেকে ট্রেনটা ছেড়ে গেলো যেই
বুকের পাজরে হাতড়িয়ে দেখি
সেখানে সেই মেয়েটি আর নেই।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন