বুধবার, ৫ এপ্রিল, ২০১৭

পৃথিবী ( The Earth )

সে এক অস্থির সময়ের কথা। দেশ সবে স্বাধীন হয়েছে। পুরো দেশ একটি ধবংস স্তুপ। বঙ্গবন্ধুকে সবকিছু গড়ে নিতে হচ্ছিলো। গ্রামে গঞ্জে তখনো পুরোপুরি আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয় নাই। আমার তখন কিশোর বয়স। আমাদের গ্রামের একটি গরীব মেয়ে অভাবের তাড়নায় পয়সার বিনিময়ে নিজের দেহ দান করতো কারো কারো কাছে। একদিন সন্ধ্যারাতে জানতে পারলাম, ঐ মেয়েটিকে আজ রাতেই মেরে ফেলবে,গ্রামেরই কিছু যুবক শ্রেণীর মানুষ। মেয়েটির অপরাধ,সে গ্রামের যুবকদের চরিত্র নস্ট করে ফেলছে।

খবরটি শোনার পর মনটা ভালো লাগছিলোনা। কেমন যেনো ভারাক্রান্ত হয়ে উঠেছিলাম। আমি নিতান্তই একজন কিশোর বালক ছিলাম,কি-ই-বা আমি করতে পারি ? মেয়েটি যেহেতু আমার গ্রামেরই,তাই ওকে দেখেছিও অনেক।মেয়েটার মুখচ্ছবি কেবল চোখে ভেসে উঠছিলো। অনেক অজানা আশংকা ও ভয় নিয়ে সে রাতে আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।

সকালবেলা ঐ 'কিছু যুবক শ্রেণীর মানুষ'দেরই একজনের কাছ থেকে রাতের প্রত্যক্ষ ঘটনা জানতে পারি। প্রথমে তারা মেয়েটিকে ওদের বাড়ী থেকে উঠিয়ে নেয়।,পরে দূরে নির্জন নদীর কূলে একটি পিটেসরা গাছের নীচে ওকে নিয়ে যায়।সেখানে সবগুলো যুবক পালাক্রমে মেয়েটিকে ধর্ষণ করে এবং পরে চোখ বেঁধে বেওনেট দিয়ে খুচিয়ে খুচিয়ে হত্যা করে এবংং সেখানেই গর্ত খুরে মাটির নীচে ওকে পুতে রাখে।

ধর্ষণ শেষে ওরা যখন মেয়েটির চোখ বাঁধবে, তখন নাকি মেয়েটি অনুনয় করে বলেছিলো- 'তোমরা শেষবারের মতো একটিবার আমাকে এই পৃথিবীকে দেখতে দাও।' মেয়েটি অন্ধকারের মাঝেই চোখ মেলে দেখেছিলো চারদিকের রাতের পৃথিবীকে,দেখেছিলো তারাভরা রাতের আকাশকে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন