বৃহস্পতিবার, ৮ অক্টোবর, ২০১৫

জীবন যখন শুকায়ে যায়

আজ থেকে তিন বছর আগে এমনি এক স্নিগ্ধ শারদীয় দিবাশেষে রাতে আমার মা না ফেরার দেশে চলে যান। দুপুর থেকেই মা কেমন যেন নিরব হয়ে যায়। মা কোন কথা বলছিলনা কারো সাথে। শুধু তাকিয়ে থাকছিল সবার দিকে। কোন খাবার গ্রহন করতে চায়নি। আসলে মা তখন জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে। সে যে জীবনও নেই, মরনেও নেই। রাত বারোটা পার হয়ে গেছে। মা'র শয্যাপাশে আমি আর আমার ছোট বোন। আমি মা'র পায়ের কাছে বসে আছি, আর আমার বোন মা'র মাথার কাছে বসে। আমি মা'র চোখের দিকেই তাকিয়ে আছি। মা খুব স্নিগ্ধ ভাবে তাকিয়ে দেখছিল আমাকে।
আমি মা'র Puls দেখার জন্য মা'র্ পা ধরলাম। আমার হাতে মা'র নাড়ির স্পন্দন খুব সুন্দরভাবে অনুভব করছিলাম। আমি মনে মনে গুনছিলাম এক দুই তিন চার........ মা'র নাড়ির স্পন্দনে আমার চোখে হাসির ঝিলিক দেখা দেয়,....মা'র চোখের দিকে আমি তাকিয়েই আছি। আর গুনছিলাম নাড়ির স্পন্দন ...পনোর..ষোল..সতেরো....। আমার মুখ মলিন হলো, আমার হাতেই মা'র নাড়ির স্পন্দন থেমে গেল। মা তখনো তাকিয়ে,আছে, মনে হলো শেষ বারের মতো দেখে নিলো তার প্রিয় সন্তানকে। তারপর চিরতরে চোখ বন্ধ করে ফেললো। ঘড়ির কাটায় তখন রাত বারোটা পনেরো মিনিট। রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙ্গে তখন কেবলই কান্নার শব্দ চারদিকে ধ্বনিত হছ্ছিল ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন