১৯৭২ সাল। মুক্তিযুদ্ধের পর আমাদের স্কুল প্রথম খোলে। সম্ভবত ফেব্রুয়ারি মাস হবে। আমি বাগবাটি হাই স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্র। আমাদের ক্লাশে প্রায় ষাট জনের মতো ছাত্র ছিলাম। প্রথম দিনের ক্লাশে অনেকেই এসেছে, আবার অনেকে আসে নাই। আমরা সবাই একে অপরের খোঁজ খবর নিছ্ছিলাম। মুক্তিযুদ্ধের সময় কে কোথায় ছিলাম, কেমন ছিলাম, কার কি বিপদ হয়েছিল , সেইসব অগ্নিঝরা দিনগুলোর অভিগ্গতার কথা বলাবলি করছিলাম। আমার এক সহপাঠি বন্ধু শুকুর আলিকে খূঁজছিলাম ক্লাশে। শুকুর ক্লাশে নেই। ওর গ্রামের আর একজন ছাত্রের মাধ্যমে জানা গেল,শুকুর মুক্তিযুদ্ধের সময় নৌকাযোগে যমুনা নদী দিয়ে কুড়িগ্রামের রৌমারি হয়ে ভারতের আসামের ধুবুরীর চরে চলে গিয়েছিল। ওখানে মুক্তিযোদ্ধার ট্রেনিং গ্রহনকালীন সময়ে ক্যাম্পে কলেরায় আক্কারান্ত হয়ে মারা যায়। এবং সেখানেই ওকে সমাধিস্থ করা হয়। খবরটি শুনে খুব মন খারাপ হয়ে যায়। অঝোর ধারায় কেঁদেছিলাম অনেক।
শুকুর আলিকে আমি আজো মনে রেখেছি।
"........মুক্তির মন্দির সোপানতলে
কত প্রাণ হলো বলিদান
লেখা আছে অশ্রুজলে
কত বিপ্লবী বন্ধুর রক্তে রাঙা
শুকুর আলিকে আমি আজো মনে রেখেছি।
"........মুক্তির মন্দির সোপানতলে
কত প্রাণ হলো বলিদান
লেখা আছে অশ্রুজলে
কত বিপ্লবী বন্ধুর রক্তে রাঙা
বন্দীশালায় ঐ শিকল ভাঙা
তারা কি ফিরিবে আর
তারা কি ফিরিবে এই সুপ্রভাতে......।
তারা কি ফিরিবে আর
তারা কি ফিরিবে এই সুপ্রভাতে......।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন